বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

আকর্ষণ নেই ব্যাংকের নতুন শেয়ারেও

  •    
  • ২২ মার্চ, ২০২১ ১৯:২৬

বিনিয়োগের ক্ষেত্রে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সমজাতীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর কেমন অবস্থা সেটিও বিবেচনা করা হয়। তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলোর শেয়ার দরে খুব বেশি ভালো না হওয়ায় এই ব্যাংকটিতেও আগ্রহ দেখায়নি বিনিয়োগকারীরা: আবু আহমেদ

গত এক বছরেও পুঁজিবাজারের এমন দিন আসেনি।

নতুন কোম্পানির শেয়ার লেনদেন শুরু, অথচ প্রথম দিন ৫০ শতাংশ বাড়ার যে সুযোগ সেটি হয়নি এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক এনআরবিসির ক্ষেত্রে।

১০ টাকায় তালিকাভুক্ত ব্যাংকের লেনদেন শুরু হয়েছিল সর্বোচ্চ সংখ্যক বেড়ে ১৫ টাকাতেই। তবে পরে দাম কমে যায়। এক পর্যায়ে দাম কমে ১১ টাকা ৯০ পয়সায় নেমে যায়। তবে শেষ পর্যন্ত ১৩ টাকা ২০ পয়সায় লেনদেন শেষ হয়।

এক যুগ পর সোমবার প্রথম ব্যাংক হিসেবে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হলো চতুর্থ প্রজন্মের ব্যাংক এনআরবিসি।

পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির নীতিমালা অনুযায়ী লেনদেন শুরু হলে প্রথম দুই কার্যদিবসে কোনো প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দর ৫০ শতাংশ করে এবং পরের কার্যদিবসে ১০ শতাংশ করে বাড়তে বা কমতে পারে।

মিউচ্যুয়াল ফান্ড ছাড়া গত এক বছর তালিকাভুক্ত সব কোম্পানির শেয়ার পর প্রথম দিন ৫০ শতাংশ বেড়েছে। তবে এই দামে বেশিরভাগ কোম্পানির বিনিয়োগকারীরা শেয়ার ছাড়তে রাজি হয়নি। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দ্বিতীয় দিনও ৫০ শতাংশ দাম বেড়েছে। এমনও দেখা গেছে টাকা ৯ দিন এমনকি ১৫ দিন সর্বোচ্চ পরিমাণ দাম বেড়ে আকাশচুম্বি হয়েছে দাম।

আবার প্রথম কার্যদিবসে ৫০ শতাংশ বেড়ে খুব যে বেশি লেনদেন হয়েছে এমন নয়। সম্প্রতি তালিকাভুক্ত ই জেনারেশনের শেয়ার প্রথম কার্যদিবসে হাতবদল হয় মাত্র ২০১টি। লুব রেফের শেয়ার হাতবদল হয় ৪২১টি। মীর আকতার শেয়ার প্রথম দিন লেনদেন হয় ৭৩০টি। অর্থাৎ সর্বোচ্চ দামেও বলতে গেলে কোনো বিক্রেতাই ছিল না এসব কোম্পানির।

তবে কোনো কোম্পানির দাম অসীম পরিমাণ বাড়তে পারে না। এমনও দেখা গেছে, নতুন কোম্পানির শেয়ার দর একটা পর্যায়ে উঠার পর পরে ধস নেমেছে। এমন দেখা গেছে ৫০ শতাংশ দাম পড়ে গেছে। আর এই প্রক্রিয়ায় বিনিয়োগকারীরা বিপুল পরিমাণ অর্থ হারিয়ে লোকসানে পড়েছে।

তবে এনআরবিসি ব্যাংকের ক্ষেত্রে কী হয়, তা নিয়ে দৃষ্টি ছিল বিনিয়োগকারীদের। কারণ, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ৩০টি ব্যাংকের মধ্যে বেশিরভাগের দামই অভিহিত মূল্যের আশেপাশে আছে। এমনকি গত পাঁচ বছর ধরে টানা ভালো লভ্যাংশ দিয়ে আসছে, এমন প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দরও ১৫ টাকার নিচে আছে।

এনআরবিসির শেয়ার প্রথম দিনই হাতবদল হয়েছে ৩ কোটি ২২ লাখ ৯৩ হাজার ৭০৫টি। অর্থাৎ আইপিওতে যারা ১০ টাকায় শেয়ার পেয়েছেন, তারা এটি ধরে রাখা বুদ্ধিমানের কাজ বলে মনে করছেন না।

কোম্পানিটি মোট ১২ কোটি শেয়ার ছেড়ে ১২০ কোটি টাকা তুলেছে।

কেন এমন হলো

পুঁজিবাজার বিশ্লেষক আবু আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ইতিপূর্বে পুঁজিবাজারে আসা নতুন কোম্পানির শেয়ারের বিপুল পরিমাণ লোকসান গুণছে বিনিয়োগকারীরা। সেখানেও তাদের বিনিয়োগ আটকে আছে। এখন নতুন যে ব্যাংকটির লেনদেন শুরু হয়েছে সেটিতে তারা সচেতন হয়ে বিনিয়োগ করেছে।

‘এছাড়া বিনিয়োগের ক্ষেত্রে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সমজাতীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর কেমন অবস্থা সেটিও বিবেচনা করা হয়। তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলোর শেয়ার দরে খুব বেশি ভালো না হওয়ায় এই ব্যাংকটিতেও আগ্রহ দেখায়নি বিনিয়োগকারীরা।’

মঙ্গলবারও ব্যাংকটির ৫০ শতাংশ শেয়ার দর বাড়ার সুযোগ আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তখন বলা যাবে, কোম্পানিটির প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ কেমন।’

এনআরবিসির স্বাস্থ্য

লেনদেন শুরুর আগের দিন ব্যাংকটি তাদের জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর’২০ সময়ের আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সেখানে ব্যাংকটির আয়ের উল্লম্ফন দেখা গেছে।

জানানো হয়েছে, এ সময়ে ব্যাংকটির শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ২ টাকা ৪১ পয়সা। সেখানে আগের বছরের একই সময়ে ছিল মাত্র ৩৬ পয়সা।

২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত অর্থবছরে ব্যাংকটি বিনিয়োগকারীদেরকে শেয়ার প্রতি ৯০ পয়সা নগদ ও দুই শতাংশ অর্থাৎ প্রতি ১০০ শেয়ারে দুটি বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ হিসেবে দিয়েছে। ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত অর্থবছরের জন্য লভ্যাংশ ঘোষণার তারিখ আসবে যে কোনো দিন।

নতুন শেয়ারের কেমন অবস্থা

এনআরবিসি কমার্শিয়াল ব্যাংকের লেনদেন শুরু করার আগে সর্বশেষ ১০ টাকায় তালিকাভুক্ত ই জেনারেশনের শেয়ার টানা ৯ কার্যদিবসে সর্বোচ্চ পরিমাণে বেড়ে ৪২ টাকা ৮০ পয়সা হয়ে যাওয়ার পর শুরু হয় মূল্য পতন।

সোমবার দিন শেষে শেয়ারের দাম দাঁড়িয়েছে ৩০ টাকা ৯০ পয়সায়।

আরেক কোম্পানি লুব রেফ ২৭ টাকায় তালিকাভুক্ত হয়ে দুই কার্যদিবসে সর্বোচ্চ পরিমাণে বেড়ে ৬০ টাকা ৭০ পয়সা হওয়ার পর শুরু হয় মূল্য পতন।

বৃহস্পতিবার দিন শেষে শেয়ারের দাম দাঁড়িয়েছে ৪০ টাকা ৬০ পয়সা।

কেবল এই দুটি শেয়ার নয়, গত কয়েক মাসে দেখা গেছে একই চিত্র। ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স, এক্সপ্রেস ইন্স্যুরেন্স, রবি, এসোসিয়েট অক্সিজেন, ডমিনোজ স্টিল, এনার্জি প্যাক, মীর আকতার, তাওফিকা ফুডসের শেয়ারের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছে।

ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের লেনদেন শুরু হয়েছে ২১ ডিসেম্বর। লেনদেন শুরু হওয়ার ৯ কার্যদিবসে ১০ টাকার শেয়ারের সর্বোচ্চ দর উঠে ৫৩ টাকা ৮০ পয়সায়। বর্তমানে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হচ্ছে ৩৪ টাকা ৬০ টাকা।

ই-জেনারেশন লিমেটেড ২৩ ফেব্রুয়ারি। কোম্পানিটির শেয়ার দর মাত্র সাত কার্যদিবসে উঠে ৩৯ টাকা ৪০ পয়সায়। এক মাসেরও কম সময় লেনদেনে কোম্পানির শেয়ার দর এখন ৩০ টাকা ৯০ পয়সা।

এক্সপ্রেস ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের প্রতিটি শেয়ার বর্তমানে লেনদেন হচ্ছে ২৪ টাকা ৮০ পয়সায়। কোম্পানিটি পুঁজিবাজারে লেনদেন শুরু করে গত বছরের আগস্টে। সে সময় কোম্পানিটির শেয়ারের সর্বোচ্চ দর উঠেছিল ৪৪ টাকা ৭০ পয়সা।

এনার্জিপ্যাক পাওয়ার জেনারেশন লিমিটেড পুঁজিবাজারে লেনদেন শুরু করে ১৯ জানুয়ারি। লেনদেন শুরু হওয়ার পাঁচ কার্যদিবসে প্রতিষ্ঠানটির সর্বোচ্চ দর উঠে ১০১ টাকা ৬০ পয়সা। বর্তমানে কোম্পানিটির শেয়ার দর ৪৫ টাকা ৬০ পয়সা।

মীর আকতার হোসেন লিমিটেডের লেনদেন শুরুর দুই কার্যদিবসে শেয়ার প্রতি দর উঠে ১১৭ টাকা। তারপর কোম্পানির শেয়ার দরের যে পতন তা আর ঠেকানো যায়নি। বর্তমানে কোম্পানির শেয়ার লেনদেন ৭১ টাকা ৯০ পয়সায়।

রবি আজিয়াটা লিমিটেড পুজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়েছে ২৪ ডিসেম্বর। ১০ টাকার অভিহিত মূল্যের প্রতিটি শেয়ার মাত্র ১৫ কার্যদিবসে উঠে ৭৭ টাকা। বর্তমানে লেনদেন হচ্ছে ৪৬ টাকা ৮০ পয়সায়।

তওফিকা ফুড অ্যান্ড এগ্যো ইন্ডাস্ট্রিস ১০ ফেব্রুয়ারি লেনদেন শুরু করার পর টানা বেড়ে ছাড়ায় ২৭ টাকা। বর্তমানে লেনদেন হচ্ছে ২১ টাকা ৩০ পয়সায়।

এ বিভাগের আরো খবর