২০১৮ সালের মাঝামাঝি সময়ে হঠাৎ করেই প্রকৌশল খাতের কোম্পানি বিডিঅটোকারের দর বাড়তে থাকে। বছর কয়েক আগেও ১০ টাকার নিচে লেনদেন হতে থাকা দুর্বল মৌলভিত্তির কোম্পানির শেয়ারদর বাড়তে বাড়তে ৫০০ টাকা ছাড়িয়ে যায়।
এর পেছনে কী কারণ, সে রহস্য কখনো জানা যায়নি। একপর্যায়ে কোম্পানিটির লেনদেন স্থগিত করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা। সেটির দর কমতে কমতে এখন দাঁড়িয়েছে ১৪৭ টাকা ৩০ পয়সায়।
দাম আরও কমতে পারত। কিন্তু করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের শুরুতে বাজারে যে ধস দেখা দেয়, তখন পতন ঠেকাতে সর্বনিম্ন যে দাম বা ফ্লোর প্রাইস বেঁধে দেওয়া হয়, সে জন্যই এর চেয়ে নিচে নামতে পারছে না দাম।
২০২০ সালে শেয়ারপ্রতি ৩০ পয়সা লভ্যাংশ দেয়া শেয়ারটির বিষয়ে এই ফ্লোর প্রাইসেও বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ নেই বললেই চলে। বৃহস্পতিবার দুইবারে কেবল ৬১টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে।
একই বছর অস্বাভাবিক বাড়ে মুন্নু স্টাফলারের দাম। ৩৫০ শতাংশ বোনাস শেয়ার দেয়ার পর কোম্পানিটির দাম ওঠে ৫ হাজার ৬৩৪ টাকা।
২০১৮ সালে ৩৫০ শতাংশের পরের বছর ২০ শতাংশ এবং ২০২০ সালে ১০ শতাংশ বোনাস শেয়ার দেয় কোম্পানিটি।
সাড়ে ৫ হাজার টাকায় যিনি কোম্পানিটির শেয়ার কিনেছেন, তার এখন দাম পড়েছে ২ হাজার ৩৪৫ টাকা। কিন্তু কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হচ্ছে তিন ভাগের এক ভাগেরও কম দামে।
ফ্লোর প্রাইস ৭৯৪ টাকা ৮০ পয়সাতেও এখন ক্রেতা পাওয়া যায় না। সব শেষ কার্যদিবসে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে মাত্র ১২টি।
আড়াই বছর আগে মুন্নু সিরামিকের ৪০ টাকার নিচের শেয়ার ছোটে পাগলা ঘোড়ার মতো। একপর্যায়ে দাম ছাড়িয়ে ১১ গুণ হয়ে যায়।
ওই বছর ৩০ শতাংশ, পরের বছর ১০ শতাংশ এবং ২০২০ সালে ৫ শতাংশ বোনাস দেয়ার পর এখন দাম পড়ে ২৯৩ টাকা।
প্রায় প্রতিদিন চাহিদার তুঙ্গে থাকা এই কোম্পানিটির শেয়ারেরও চাহিদা নেই ফ্লোর প্রাইসে। ১২৬ টাকা ৮০ পয়সায় কেবল ৯১৫টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে বৃহস্পতিবার।
একইভাবে প্রায় ২ হাজার টাকা উঠে যাওয়া জেমিনি সি ফুডের দাম বিএসইসি ঠেকিয়ে রেখেছে ১৪১ টাকায়।
বছর দুয়েক আগে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের কোম্পানি কেপিসিএলের দামও বাড়তে বাড়তে ১৩০ টাকা ছাড়িয়ে যায়। সেই কোম্পানির তিনটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের একটি বন্ধ হয়ে গেছে; দুটি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে আগামী মে মাসে। এখন বিনিয়োগকারীদের মাথায় হাত। দামও কমতে কমতে ঠেকেছে ৪৩ টাকায়।
গত কয়েক বছরে পুঁজিবাজারে অনেক কোম্পানির শেয়ার দর নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়েছে। তলানি থেকে তা আকাশচুম্বী হয়ে যাওয়ার পেছনে কোনো কারণ কখনো খুঁজে পাওয়া যায় না।
দাম যখন বাড়তে থাকে, তখন শেয়ারের চাহিদাও বেড়ে যায়। একপর্যায়ে দাম কমতে থাকে। আর পুঁজিবাজারকেন্দ্রিক বিভিন্ন ফেসবুক পেজে রাগ ঝাড়েন বিনিয়োগকারীরা, যারা আরও বাড়বে ভেবে উচ্চমূল্যে শেয়ার কিনে ধরা খেয়েছেন।
কেউ কেউ বের হন বিপুল পরিমাণ লোকসান দিয়ে, কেউ আবার পরে আবার বাড়বে ভেবে শেয়ার ধরে রাখেন। কিন্তু সেই স্বপ্ন কখনো আর পূরণ হয় না।
প্রায় সব খাতের শেয়ার নিয়েও এ ধরনের ঘটনা ঘটে। তবে ব্যতিক্রম বলতে গেলে আছে ব্যাংক খাত।
২০১০ সালে পুঁজিবাজারে উত্থানের সময় এই খাতের শেয়ারেও ব্যাপক উল্লম্ফন হয়। তবে ধসের পর থেকে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ ক্রমেই কমেছে এই খাত নিয়ে।
এই খাতের শেয়ারের দর সেভাবে খুব একটা বাড়েও না, আবার পতন হলেও অন্যান্য খাতের মতো ধপাস করে পড়েও না।
গত বছরের ডিসেম্বর থেকে পুঁজিবাজারের উত্থানের সময়ও এই চিত্র দেখা যায়। টানা দেড় মাস প্রায় সব খাতের শেয়ারের দর উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বাড়লেও ব্যাংক খাতের দর বৃদ্ধি বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সীমিত ছিল পয়সার হিসাবে।
আবার দুই সপ্তাহে দর সংশোধনের সময়ও দেখা যায়, বেশির ভাগ ব্যাংকের শেয়ারের দর কমেছে পয়সার হিসাবে। কোনো কোনোটির দর কমেছে ১০ শতাংশ বা আশেপাশে।
কিন্তু দর সংশোধনে অনেক কোম্পানি দর হারিয়েছে ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ।
পুঁজিবাজারে ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর সমিতি মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ছায়েদুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ব্যাংকের শেয়ারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ থাকলেও দাম না বাড়ায় মূলত সে আগ্রহকে ধরে রাখা যায় না। এ ছাড়া পুঁজিবাজারের পোর্টফোলিও ম্যানেজাররাও স্বল্প সময়ে মুনাফা পাওয়া যায় সেগুলোকে বাছাই করেন।’
পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী খন্দকার ফারুক বলেন, ‘বেশ কিছু ব্যাংকের শেয়ারে বিনিয়োগ আছে। পুঁজিবাজার ভালো থাকায় প্রত্যাশা ছিল ব্যাংকের শেয়ারের ও দাম বাড়বে। কিন্ত সে অনুযায়ী বাড়েনি। ফলে মুনাফা হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘মুনাফা না হওয়ায় মূলত এ খাতে নতুন বিনিয়োগ করিনি। পুঁজিবাজারের সবচেয়ে শক্তিশালী এ খাতের কেন এত করুণ অবস্থা তা নিয়ন্ত্রক সংস্থার যাচাই করা উচিত।’
পুঁজিবাজার বিশ্লেষক আবু আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ব্যাংকের শেয়ার বিনিয়োগকারীরা কিনতে চান না এটা ঠিক নয়; বরং এ খাতে মুনাফা না থাকায় আগ্রহ হারান বিনিয়োগকারীরা।’
তিনি বলেন, ‘নানা কারণে ব্যাংকের শেয়ারের দর বাড়ে না। এ সময় ব্যাংকগুলো বোনাস লভ্যাংশ দিয়ে পরিশোধিত মূলধন বাড়িয়েছে। এমনও ব্যাংক আছে যাদের শেয়ার শত কোটির বেশি। ফলে এক-দুই দিন শেয়ার কিনে এ খাতের শেয়ারের দর বাড়ানো সম্ভব হয় না।’
গত পাঁচ বছরে সবচেয়ে বেশি মুনাফা দিয়েছে ব্যাংক। এমনও ব্যাংক আছে সেগুলো ব্যাংকে এফডিআরের চেয়ে বেশি মুনাফা দিয়েছে। এমন অন্তত ১০টি ব্যাংক আছে, যাতে বিনিয়োগ করে বিনিয়োগকারীরা লাভবান হয়েছেন।
বর্তমানে এফডিআরের মুনাফা ৬ থেকে ৭ শতাংশে নেমেছে। তার শেয়ার দরের সঙ্গে তুলনা করে নগদ মুনাফার যে ইল্ড, তা ১৬ শতাংশও দিয়েছে কোনো কোনো ব্যাংক।
নড়চড় কম
আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের দর দীর্ঘ সময় পড়ে থাকলেও গত ১৮ জানুয়ারি মাসের সর্বোচ্চ দর ওঠে ২৩ টাকায়। তারপর থেকে এখন পর্যন্ত এ দামের শেয়ার বিক্রির সুযোগ পাননি বিনিয়োগকারীরা। বর্তমানে ব্যাংকের শেয়ার ২২ টাকায় লেনদেন হচ্ছে।
ব্যাংক এশিয়ার শেয়ার গত ১৪ জানুয়ারি মাসের সর্বোচ্চ দর ওঠে ১৮ টাকা ০১ পয়সা। বর্তমানে লেনদেন হচ্ছে ১৬ টাকা ৪০ পয়সায়।
ব্র্যাক ব্যাংকের গত এক মাসে সর্বোচ্চ দর উঠেছে ১৭ জানুয়ারি ৫১ টাকা ১০ পয়সা। বর্তমানে লেনদেন হচ্ছে ৪৯ টাকায়।
সিটি ব্যাংকের একই দিনে মাসের সর্বোচ্চ দর ছিল ৩৩ টাকা ১০ পয়সা। বর্তমানে লেনদেন হচ্ছে ৩০ টাকা ৩০ পয়সায়।
ঢাকা ব্যাংকের শেয়ারের গত জানুয়ারির শেষ দিকে মাসের সর্বোচ্চ দর উঠে ১৩ টাকায়। বর্তমানে লেনদেন হচ্ছে ১২ টাকায়।
ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের শেয়ারের মাসের সর্বোচ্চ দর ৭০ টাকা ২০ পয়সা ওঠে গত ১৭ জানুয়ারি। তারপর আর এই দামে আসেনি। বর্তমানে লেনদেন হচ্ছে ৬৩ টাকা ৯০ পয়সায়।
ইস্টার্ন ব্যাংকের মাসের সর্বোচ্চ দর ওঠে ১৮ জানুয়ারি ৩৯ টাকা ০২ পয়সা। বর্তমানে লেনদেন হচ্ছে ৩৭ টাকা ৬০ পয়সায়।
এক্সিম ব্যাংকের মাসের সর্বোচ্চ দর ওঠে ২১ জানুয়ারি ১৩ টাকা ০২ পয়সা। তরপর আর দাম বাড়েনি। বর্তমানে লেনদেন হচ্ছে ১২ টাকায়।
ন্যাশনাল ব্যাংকের শেয়ারের সর্বোচ্চ দর ছিল গত এক মাসে ৯ টাকা ৬০ পয়সা। ১৭ জানুয়ারির পর এ ব্যাংকের শেয়ারের দর আর বাড়েনি। বর্তমানে লেনদেন হচ্ছে ৮ টাকা ৬০ পয়সায়।
এনসিসি ব্যাংকের শেয়ারের দর গত এক মাসে সর্বোচ্চ হয়েছিল ১৭ জানুয়ারি। তখন দর ওঠে ১৪ টাকা ৪০ পয়সা। সে সময় এই ব্যাংকের শেয়ার কিনে এখনো মুনাফার অপেক্ষায় বিনিয়োগকারীরা। বর্তমানে লেনদেন হচ্ছে ১৩ টাকা ৬০ পয়সায়।
এসআইবিএলের মাসের সর্বোচ্চ দর উঠেছিল ২১ জানুয়ারি ১৪ টাকা ২০ পয়সা। এই ব্যাংকের শেয়ার নিয়ে এখনো মুনাফা পাননি বিনিয়োগকারীরা। বর্তমানে এসআইবিএলের শেয়ার লেনদেন হচ্ছে ১৩ টাকা ২০ পয়সায়।
কী হয়েছিল ১৭ জানুয়ারি
চলতি বছরের শুরুতে পুঁজিবাজার ২০১০ সালের মহাধসের পর চাঙা অবস্থায় ফিরে আসে। প্রায় প্রতিদিনই লেনদেন হয়েছে ১ থেকে ২ হাজার কোটি টাকা। এ সময়ে সর্বোচ্চ লেনদেন আড়াই হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়। তার মধ্যে ১৭ জানুয়ারিও পুঁজিবাজারে লেনদেন হয় ২ হাজার ৩৮৫ কোটি টাকা।
লেনদেনের এমন অবস্থায় দাম বাড়ে ব্যাংকের শেয়ারের। সেদিন তালিকাভুক্ত ৩০টি ব্যাংকের মধ্যে কমেছে চারটির দর। অপরিবর্তিত ছিল তিনটি। আর বাড়ে বাকি ২৩টির দর।
সবচেয়ে বেশি দর বাড়া ১০টি কোম্পানির পাঁচটিই ছিল ব্যাংকের। দর বাড়ার এমন অবস্থার পর আগ্রহী হন বিনিয়োগকারীরা। কিন্তু সেদিনের পর ব্যাংকের শেয়ারের দর আর বাড়েনি। এখন শুধুই কমছে।
আরও পড়ুন:অস্ট্রেলিয়া-বাংলাদেশ বিজনেস এক্সপো ২০২৫-এ যোগদানের জন্য ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) ৯ সদস্যের একটি বাণিজ্য প্রতিনিধিদল মঙ্গলবার অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেছে।
এই এক্সপো ১ ও ২ অক্টোবর, ২০২৫ তারিখে অস্ট্রেলিয়ার সিডনি মেসোনিক সেন্টারে (এসএমসি) অনুষ্ঠিত হবে। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
ডিসিসিআই বাণিজ্য প্রতিনিধিদলের সফরকালে অস্ট্রেলিয়ান ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও ব্যবসায়িক সহযোগিতার সুযোগ অনুসন্ধান করবেন। পাশাপাশি অনুষ্ঠানে পণ্য প্রদর্শনী, নেটওয়ার্কিং সেশন, বিটুবি মিটিং এবং বিষয়ভিত্তিক সেমিনারে অংশগ্রহণের সুযোগ থাকবে। যেখানে বাংলাদেশের পণ্য ও সেবার প্রসার, আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্ব শক্তিশালী করা এবং বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সুযোগ পাবে।
এক্সপোতে তৈরি পোশাক, জুতা, পাটজাত পণ্য, ফার্মাসিউটিক্যালস, মেডিকেল ডিভাইস, তথ্যপ্রযুক্তি, শিক্ষা, খাদ্য ও ফলমূল, পর্যটন, কৃষি, ফার্নিচার, হস্তশিল্প এবং রিয়েল এস্টেট প্রভৃতি বিষয়র ওপর প্রাধান্য দেওয়া হবে।
ডিসিসিআই থেকে অংশগ্রহণকারী ৯টি প্রতিষ্ঠান হলো: টেক্সট্রেড করপোরেশন, ফিঙ্গারটাচ সার্ভিসেস, ফারইস্ট হোল্ডিংস লিমিটেড, পেন্টাগন ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড, চৌধুরী শাজ্জাদ মনোয়ার চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস, নায়িশা এন্টারপ্রাইজ লিমিটেড, টোরি ক্রেডিট রিপোর্টস অ্যান্ড কালেকশনস লিমিটেড, টেকফিনা বিপিও অ্যান্ড করপোরেট অ্যাডভাইজারি লিমিটেড এবং আল-আরাফাহ পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড।
সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের চুক্তির আওতায় প্রায় ১ লাখ ৮০ হাজার মেট্রিক টন সার আমদানি এবং একটি গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়ক সম্প্রসারণ সংক্রান্ত প্রস্তাবসহ বেশ কয়েকটি প্রস্তাব অনুমোদনের সুপারিশ করেছে।
অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে কৃষি মন্ত্রণালয় ও সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ কর্তৃক উত্থাপিত প্রস্তাবগুলো পর্যালোচনা করা হয়।
কমিটি বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) মাধ্যমে দেশের ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণের লক্ষে ডিএপি ও টিএসপি সার আমদানির পাঁচটি পৃথক প্রস্তাব অনুমোদনের সুপারিশ করে।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, চীনের ব্যানিয়ান ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডিং লিমিটেড থেকে ৩৭৮ কোটি ৮৩ লাখ টাকায় ৪০ হাজার মেট্রিক টন ডিএপি সার (৩য় লট) আমদানি করা হবে। যার প্রতি মেট্রিক টনের দাম ধরা হয়েছে ৭৭২ দশমিক ৫০ মার্কিন ডলার।
এছাড়া, মরক্কোর ওসিপি নিউট্রিক্রপস থেকে ২১৫ কোটি ২৮ লাখ টাকায় (প্রতি টন ৫৮৫.৩৩ ডলার) ৩০ হাজার মেট্রিক টন টিএসপি সার (৬ষ্ঠ লট), ২১৫ কোটি ২৮ লাখ টাকায় (প্রতি টন ৫৮৫.৩৩ ডলার) ৩০ হাজার মেট্রিক টন টিএসপি সার (৭ম লট), ৩৭২ কোটি ৮৬ লাখ টাকায় (প্রতি টন ৭৬০.৩৩ ডলার) ৪০ হাজার মেট্রিক টন ডিএপি সার (৫ম লট) এবং ৩৭২ কোটি ২৫ লাখ টাকায় (প্রতি টন ৭৬০.৩৩ ডলার) ৪০ হাজার মেট্রিক টন ডিএপি সার (৬ষ্ঠ-ঐচ্ছিক ১ম লট) আমদানি করা হবে।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কৃষকদের জন্য সারের সরবরাহ নির্বিঘ্ন রাখতে চীন ও মরক্কোর সঙ্গে সরকারের নিয়মিত রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের চুক্তির অংশ হিসেবে এই আমদানি করা হবে।
এছাড়াও আজকের ক্রয় কমিটি সভা সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের ‘আশুগঞ্জ নদীবন্দর-সরাইল-ধরখার-আখাউড়া স্থলবন্দর মহাসড়ককে ৪-লেন জাতীয় মহাসড়কে উন্নীতকরণ (১ম সংশোধিত)’ শীর্ষক প্রকল্পের প্যাকেজ নং ডব্লিউপি-০১ (পার্র্ট-১) এর আওতায় আশুগঞ্জ গোলচত্ত্বর থেকে সরাইল গোলচত্ত্বর পর্যন্ত (১১.৫৬ কিলোমিটার) সড়ক নির্মাণ কাজের ভেরিয়েশন অর্ডার-১ (ভিও-১) এর প্রস্তাব অনুমোদনের সুপারিশ করেছে।
মূল চুক্তিমূল্য ছিল ৫৫৩ কোটি ৪৩ লাখ টাকা যেখানে ভেরিয়েশন অর্ডারে ১৬৩ কোটি ৮৩ লাখ টাকা যোগ করা হয়েছে এবং সংশোধিত মোট চুক্তি মূল্য দাঁড়িয়েছে ৭১৭ কোটি ২৭ লাখ টাকা।
কাজটি ভারতের মুম্বাই-ভিত্তিক আফকনস ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড কর্তৃক সম্পন্ন হবে।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নকশা ও কাজের পরিধি পরিবর্তনের কারণে অতিরিক্ত ব্যয় যোগ হয়েছে, যা প্রকল্পের মান উন্নয়ন ও স্থায়িত্ব নিশ্চিত করার জন্য জরুরি।
এর পাশাপাশি, আজ অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন, ২০০৬ এর ধারা ৬৮ (১) ও পিপিআর, ২০০৮ এর বিধি ৭৬(২) অনুসারে জিটুজি ভিত্তিতে চাল ক্রয়ের প্রস্তাব অনুমোদনের সুপারিশ করা হয়।
বিশ্ব রেটিনা দিবস ২০২৫ উপলক্ষে জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল (এনআইওএইচ) এবং রোশ বাংলাদেশ যৌথ উদ্যোগে ‘ব্রিজিং পলিসি, টাস্ক শিফটিং অ্যান্ড ইনোভেশন: ট্যাকলিং ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠক আয়োজন করেছে। খাত সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের অংশগ্রহণে এ আলোচনা অনুষ্ঠান সম্প্রতি (২৮ সেপ্টেম্বর) ঢাকার প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে অনুষ্ঠিত হয়।
অংশীজনদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নীতি-নির্ধারক, স্বাস্থ্যসেবা বিশেষজ্ঞ, আন্তর্জাতিক এনজিও ও বেসরকারি খাতের প্রতিনিধিগণ। এ সময় তারা বাংলাদেশে ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি (ডিআর) মোকাবিলায় কার্যকর উদ্যোগ নিয়ে আলোচনা করেন।
ডায়াবেটিস রোগের সাথে প্রত্যক্ষভাবে সম্পৃক্ত ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি রোগটি বাংলাদেশের মানুষের অন্ধত্বের অন্যতম প্রধান কারণ। রোগটি খুব দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে এটি বর্তমান সময়ে একটি জনস্বাস্থ্য সমস্যায় রূপ নিয়েছে। এ রোগ নিয়ে জনসচেতনতা, রোগ নির্ণয় কর্মসূচি, স্বাস্থ্যখাতের প্রস্তুতি ও সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পক্ষের মধ্যে সমন্বয়ের অভাবে রোগ শনাক্তকরণ ও চিকিৎসা সেবার পরিসর সীমিত রয়ে গেছে। এ প্রেক্ষাপটে, গোলটেবিল বৈঠকে স্ক্রিনিং, রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসার ক্ষেত্রে বিদ্যমান যে দূর্বলতাগুলো রয়েছে, তা চিহ্নিত করা এবং সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের মাধ্যমে একটি সমন্বিত জাতীয় পদক্ষেপ গ্রহণের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
এ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ও নীতিনির্ধারকগণ; স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের (ডিজিএইচএস) সদস্যবৃন্দ, এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়াও, জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক, জ্যেষ্ঠ চক্ষু বিশেষজ্ঞবৃন্দ, রেটিনা বিশেষজ্ঞ, অপথালমোলজিক্যাল সোসাইটি অব বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ভিট্রিও-রেটিনা সোসাইটি, বারডেম ও বিএডিএস -এর প্রতিনিধিগণ এ গুরুত্বপূর্ণ আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন।
জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. জানে আলম মৃধা তার উপস্থাপনায় বলেন, “ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথির সফল ও কার্যকর স্ক্রিনিং প্রোগ্রামের জন্য বিভিন্ন খাতের অংশগ্রহণে একটি কার্যকর ওয়ার্কিং কমিটি গঠন অত্যন্ত জরুরি।”
বেসরকারি খাত, আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা এবং এনজিও: অর্বিস ইন্টারন্যাশনাল, হেলেন কেলার ইন্টারন্যাশনাল, দ্য ফ্রেড হলোস ফাউন্ডেশন, সাইটসেভার্স বাংলাদেশ, গুড পিপল ইন্টারন্যাশনাল এবং রোশ বাংলাদেশের নিজস্ব বাণিজ্যিক, মার্কেট অ্যাকসেস ও নীতিনির্ধারণী দলও আলোচনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
দেশের বাজারে নিজেদের নতুন স্মার্টফোন অনার এক্স৭ডি উন্মোচনের ঘোষণা দিয়েছে গ্লোবাল এআই ডিভাইস ইকোসিস্টেম প্রতিষ্ঠান অনার। জনপ্রিয় এক্স সিরিজের সর্বশেষ সংযোজন এ ফোনটি শক্তিশালী বাজেট স্মার্টফোন হিসেবে স্মার্টফোন বাজারে নতুন মানদণ্ড স্থাপন করবে। আগামী অক্টোবর মাসের শুরুর দিকে বাজারে আসবে নতুন এ স্মার্টফোন।
আগ্রহী ক্রেতারা আগামী ৪ অক্টোবর থেকে অনারের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে গিয়ে স্মার্টফোনটি অগ্রিম বুকিং দিতে পারবেন। অগ্রিম বুকিং দেয়া যাবে আগামী ১১ অক্টোবর পর্যন্ত। যারা শুরুতেই অগ্রিম বুকিং করবেন, তারা উপহার হিসেবে পাবেন অনারের ইয়ারবাডস।
দামের ক্যাটাগরিতে প্রথমবারের মত অনার এক্স৭ডি -তে বিশেষ ‘ইনস্ট্যান্ট এআই বাটন।’ ব্যবহারকারীদের সুবিধার্থে তৈরি এই বাটন দু’টি মোডে কাজ করবে। এ বাটনে একবার ক্লিক করেই নির্দিষ্ট অ্যাপ চালু করা যাবে কিংবা ব্যাকগ্রাউন্ড ক্লিনিং মত কাজও সহজে করা যাবে। আবার একটু বেশিক্ষণ ধরে এ বাটনে ক্লিক করে রিয়েল-টাইম অনুবাদ ও কনটেন্ট তৈরির মত অত্যাধুনিক এআই ফিচার ব্যবহার করা যাবে।
দীর্ঘস্থায়িত্ব বিবেচনায় নিয়ে ফোনটিতে ব্যবহার করা হয়েছে বিশাল ৬৫০০ মিলিঅ্যাম্পিয়ার আওয়ার ব্যাটারি। টানা পাঁচ বছর পর্যন্ত সুপার-ডিউরেবল পারফরমেন্স নিশ্চিত করবে এ স্মার্টফোন। ডাবল-সেল ব্যাটারি কাঠামো থাকায় ব্যবহারকারীরা স্মার্টফোনটি দ্রুত চার্জ করতে পারবেন; পাশাপাশি, উপভোগ করবেন ফোন ব্যবহারে অধিক সুরক্ষা ও দীর্ঘমেয়াদি স্থায়িত্ব।
এছাড়া, স্মার্টফোনটিতে আইপি৬৫ রেটিং পাওয়া, অর্থাৎ পানি ও ধুলো প্রতিরোধী। পাশাপাশি, এসজিএস প্রিমিয়াম পারফরমেন্সও সার্টিফিকেশনও রয়েছে ফোনটির। ফলে, হাত থেকেও পরে গেলেও স্মার্টফোনটি অনার এক্স৯সি -এর মত সুরক্ষিত থাকবে।
উদ্ভাবনের মাধ্যমে ক্রেতাদের স্মার্টফোনে দৈনন্দিন ব্যবহারের জন্য এআই প্রযুক্তির অভিজ্ঞতা নিশ্চিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ অনার। ক্রেতারা এই ফোনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে আরও বিশেষায়িত ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা উপভোগ করবেন।
নতুন অনার এক্স৭ডি -এর বাজারমূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ২২,৯৯৯ টাকা। ফোনটিতে রয়েছে ৮+৮ জিবি র্যাম ও ২৫৬ জিবি রম।
বাংলাদেশের জনপ্রিয় অভিনেতা সিয়াম আহমেদ এখন থেকে ইউনাইটেড আইগ্যাস এলপিজি লিমিটেড-এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। তুরস্কের শীর্ষস্থানীয় এলপিজি ব্র্যান্ড আইগ্যাস, যার রয়েছে ৬৫ বছরের বৈশ্বিক অভিজ্ঞতা, এবং বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠী ইউনাইটেড গ্রুপ-এর যৌথ উদ্যোগেই গঠিত ইউনাইটেড আইগ্যাস এলপিজি লিমিটেড।
সম্প্রতি রাজধানীর ইউনাইটেড গ্রুপ হেড অফিসে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে এই চুক্তি স্বাক্ষর হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইউনাইটেড গ্রুপের পরিচালক জনাব খন্দকার জায়েদ আহসান, ইউনাইটেড আইগ্যাস এলপিজি লিমিটেড-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) জনাব হারুন ওর্তাজসহ কোম্পানির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
এই চুক্তির অধীনে সিয়াম আহমেদ আইগ্যাস ইউনাইটেড-এর ব্র্যান্ড প্রচারণায় অংশ নেবেন। চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে সিয়াম আহমেদ বলেন:
“প্রতিটি পরিবারের জন্য নিরাপত্তা ও নির্ভরযোগ্যতা সবসময়ই অগ্রাধিকার পায়, আমার পরিবারও এর ব্যতিক্রম নয়। আইগ্যাস ইউনাইটেড মানে কোয়ালিটিসম্পন্ন একটি এলপিজি কোম্পানি যাদের আছে আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা। বাংলাদেশের লাখো পরিবারের জন্য নিরাপদ ও নির্ভরযোগ্য জ্বালানির সমাধান নিশ্চিত করতে কাজ করছে এমন একটি ব্র্যান্ডের সঙ্গে যুক্ত হতে পেরে আমি গর্বিত।”
অনুষ্ঠানে ইউনাইটেড আইগ্যাস এলপিজি লিমিটেডের সিইও জনাব হারুন ওর্তাজ বলেন:
“আমরা আনন্দিত যে সিয়াম আহমেদকে আইগ্যাস ইউনাইটেড ব্র্যান্ডের সাথে যুক্ত করতে পেরে। তরুণ প্রজন্ম ও পরিবারগুলোর কাছে তার জনপ্রিয়তা ও ইতিবাচক প্রভাব আমাদের ব্র্যান্ডের সাথে পুরোপুরি সামঞ্জস্যপূর্ণ। সিয়াম আহমেদ-এর সঙ্গে আমাদের ব্র্যান্ডের এই অংশীদারিত্ব ভোক্তাদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ককে আরও সুদৃঢ় করবে।”
সারাদেশের নারী উদ্যোক্তাদের দক্ষতা উন্নয়ন উদ্যোগের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্ক (বিডিওএসএন)-এর সহযোগিতায় নরসিংদীর নারী উদ্যোক্তাদের জন্য ডিজিটাল সক্ষমতা উন্নয়ন কর্মশালার আয়োজন করেছে ব্র্যাক ব্যাংক।
গত ৯ থেকে ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ নরসিংদীর কো-অপারেটিভ জোনাল ইনস্টিটিউটে তিন দিনব্যাপী আয়োজিত এই কর্মসূচিতে অংশ নেন ৩০ জন সম্ভাবনাময় নারী উদ্যোক্তা। এই আয়োজনে নারী উদ্যোক্তাদের নিবিড় প্রশিক্ষণ, পরামর্শদান ও নেটওয়ার্কিংয়ের মাধ্যমে তাঁদের ব্যবসা সম্প্রসারণ ও বাজারে প্রবেশের সুযোগ দানের পাশাপাশি দেশের অন্যান্য নারীদের ‘উদ্যোক্তা স্বপ্ন’ পূরণেও উদ্বুদ্ধ করা হয়।
গেটস ফাউন্ডেশনের সহায়তায় পরিচালিত ব্র্যাক ব্যাংকের সিগনেচার উদ্যোক্তা উন্নয়ন কর্মসূচি ‘আমরাই তারা’-এর অংশ হিসেবে এই প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়। এই ডিজিটাল সক্ষমতা উন্নয়ন কর্মসূচির মূল লক্ষ্য হলো নারীদের জন্য অর্থায়ন, পরামর্শ ও দক্ষতা উন্নয়ন সুবিধা সহজলভ্য করার মাধ্যমে তাঁদের ব্যবসায়িক জ্ঞান বৃদ্ধি ও ব্যবস্থাপনা সক্ষমতা শক্তিশালী করা।
আয়োজনে বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্ক টিমের অভিজ্ঞ প্রশিক্ষকরা অংশগ্রহণকারী নারী উদ্যোক্তাদের ই-কমার্স ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ভিত্তিক ব্যবসায়ে সফল হওয়ার অন্যতম কৌশল হিসেবে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের কার্যকর ব্যবহারের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিডিওএসএন-এর সভাপতি মুনীর হাসান এবং ব্র্যাক ব্যাংকের এসএমই ব্যাংকিংয়ের হেড অব কটেজ অ্যান্ড মাইক্রো বিজনেস কাজী দিলরুবা আক্তার।
ব্র্যাক ব্যাংকের এমন উদ্যোগ নিয়ে ব্যাংকটির অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড হেড অব এসএমই ব্যাংকিং সৈয়দ আব্দুল মোমেন বলেন, “নারী উদ্যোক্তারা দেশের অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গুরুত্বপূর্ণ চালিকাশক্তি। ‘আমরাই তারা’ উদ্যোগের মাধ্যমে আমরা তাঁদের অর্থায়ন সুবিধা প্রদানের পাশাপাশি ডিজিটাল জ্ঞানও সমৃদ্ধ করছি, যাতে তাঁরা এই দ্রুত পরিবর্তনশীল সেক্টরে সফল হতে পারেন। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, নারী উদ্যোক্তারা সফল হলে সমাজ সমৃদ্ধ হয় এবং জাতীয় অর্থনীতিও শক্তিশালী হয়।”
এ পর্যন্ত ব্র্যাক ব্যাংক দেশের ২০টি জেলায় ৩,০০০-এরও বেশি নারী উদ্যোক্তাদের জন্য দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণের আয়োজন করেছে। ভবিষ্যতে এ কর্মসূচি দেশের প্রতিটি জেলায় সম্প্রসারণের পরিকল্পনা রয়েছে ব্যাংকটির।
দেশের এসএমই এবং নারী উদ্যোক্তাদের পূর্ণাঙ্গ আর্থিক অংশীদার হিসেবে তাঁদের জন্য সহজ অর্থায়ন, সক্ষমতা উন্নয়ন এবং ডিজিটাল টুলসের ব্যবহার শেখানোর মাধ্যমে তাঁদের সফল ব্যবসায় গড়ে তুলতে সহায়তা করছে ব্র্যাক ব্যাংক। এভাবে ব্র্যাক ব্যাংক জাতীয় অর্থনীতিতে অবদান রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
ব্র্যাক ব্যাংক পিএলসি.:
ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই) খাতের অর্থায়নে অগ্রাধিকার দেয়ার ভিশন নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংক পিএলসি. ২০০১ সালে যাত্রা শুরু করে, যা এখন পর্যন্ত দেশের অন্যতম দ্রুত প্রবৃদ্ধি অর্জনকারী একটি ব্যাংক। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে ‘BRACBANK’ প্রতীকে ব্যাংকটির শেয়ার লেনদেন হয়। ১৯১টি শাখা, ৯৭টি উপশাখা, ৩৩০টি এটিএম, ৪৪৬টি এসএমই ইউনিট অফিস, ১,১২১টি এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট এবং দশ হাজারেরও বেশি মানুষের বিশাল কর্মীবাহিনী নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংক কর্পোরেট ও রিটেইল সেগমেন্টেও সার্ভিস দিয়ে আসছে। ব্যাংকটি দৃঢ় ও শক্তিশালী আর্থিক পারফরম্যান্স প্রদর্শন করে এখন সকল প্রধান প্রধান মাপকাঠিতেই ব্যাংকিং ইন্ডাস্ট্রির শীর্ষে অবস্থান করছে। বিশ লাখেরও বেশি গ্রাহক নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংক বিগত ২৪ বছরেই দেশের সবচেয়ে বৃহৎ জামানতবিহীন এসএমই অর্থায়নকারী ব্যাংক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। দেশের ব্যাংকিং খাতে সুশাসন, স্বচ্ছতা ও নিয়মানুবর্তিতায় অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে ব্র্যাক ব্যাংক।
৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ তারিখে ইউনিয়ন ব্যাংক পিএলসি. এর পরিচালনা পর্ষদের নির্বাহী কমিটির ২৫তম সভা ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়, গুলশান-১, ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন ইউনিয়ন ব্যাংক পিএলসি. এর নির্বাহী কমিটির সম্মানিত চেয়ারম্যান জনাব মুঃ ফরীদ উদ্দীন আহমদ। সভায় নির্বাহী কমিটির সদস্য ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কমিটির চেয়ারম্যান জনাব মোঃ হুমায়ুন কবীর ও ড. শহিদুল ইসলাম জাহীদ এবং ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও জনাব মোঃ হুমায়ুন কবির উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব মোহাম্মদ ইকবাল এবং জনাব মিজানুর রহমান কার্যপোলক্ষ্যে সভায় যোগদান করেন।
মন্তব্য