পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়ে লেনদেন শুরুর পর বিচার-বিবেচনা না করেই উচ্চমূল্যে শেয়ার কিনে আবার ক্ষতির মুখে পড়েছেন বিনিয়োগকারীরা।
১০ টাকায় তালিকাভুক্ত ই জেনারেশনের শেয়ার টানা ৯ কার্যদিবসে সর্বোচ্চ পরিমাণে বেড়ে ৪২ টাকা ৮০ পয়সা হয়ে যাওয়ার পর শুরু হয় মূল্য পতন।
বৃহস্পতিবার দিন শেষে শেয়ারের দাম দাঁড়িয়েছে ৩২ টাকা ৫০ পয়সায়।
আরেক কোম্পানি লুব রেফ ২৭ টাকায় তালিকাভুক্ত হয়ে দুই কার্যদিবসে সর্বোচ্চ পরিমাণে বেড়ে ৬০ টাকা ৭০ পয়সা হওয়ার পর শুরু হয় মূল্য পতন।
বৃহস্পতিবার দিন শেষে শেয়ারের দাম দাঁড়িয়েছে ৪৩ টাকা ১০ পয়সা।
কেবল এই দুটি শেয়ার নয়, গত কয়েক মাসে দেখা গেছে একই চিত্র। ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স, এক্সপ্রেস ইন্স্যুরেন্স, রবি, এসোসিয়েট অক্সিজেন, ডমিনোজ স্টিল, এনার্জি প্যাক, মীর আকতার, তাওফিকা ফুডসের শেয়ারের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছে।
নতুন শেয়ার লেনদেন শুরুর পর প্রথম দুই কার্যদিবসে ৫০ শতাংশ বাড়ার সুযোগ আছে। এরপর থেকে স্বাভাবিক নিয়মে ১০ শতাংশ বাড়া বা কমার সুযোগ থাকে।
একটি ছাড়া প্রতিটি শেয়ারের ক্ষেত্রেই দেখা গেছে, যে দামেই তালিকাভুক্ত হোক না কেন, প্রথম দুই দিন ৫০ শতাংশ করে বেড়েছে। এরপর কোনো কোনো কোম্পানি টানা ৪ থেকে সর্বোচ্চ ১৪ কার্যদিবস প্রতিদিনই সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ করে বেড়েছে।
কোম্পানির আর্থিক পরিস্থিতি বিনিয়োগকারীরা বিবেচনা করেন কি না, এ নিয়ে প্রশ্ন ওঠে এ কারণেই।
আর এসব শেয়ারের প্রতিটিই বিনিয়োগকারীদের পকেট ফাঁকা করেছে। এরপর পুঁজিবাজারকেন্দ্রিক বিভিন্ন ফেসবুক পেজে নিয়ন্ত্রক সংস্থার তীব্র সমালোচনা করে নানা পোস্ট দিয়ে আসছেন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা।
নতুন শেয়ার নিয়ে বিনিয়োগকারীদের এই হুলুস্থুলের সুযোগ নিচ্ছেন প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা। তারা উচ্চমূল্যে শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছেন।
সদ্য তালিকাভুক্ত পাঁচ কোম্পানির মধ্যে চারটির তথ্যে দেখা গেছে, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা তাদের অংশের শেয়ারের একটি অংশ বিক্রি করে তুলে দিয়েছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে।
টানা ৮ দিন বেড়ে দর হারাল ১০ টাকা
প্রযুক্তি খাতের কোম্পানিটি লেনদেন শুরু করে ২৩ ফেব্রুয়ারি। ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের প্রতিটি শেয়ার দর মাত্র আট কার্যদিবস সর্বোচ্চ পরিমাণে বেড়ে হয়ে যায় ৪২ টাকা ৮০ পয়সা।
৪ মার্চ সর্বোচ্চ দর ওঠার পর সেদিনই অবশ্য দাম কমে ৩৯ টাকা ৪০ পয়সায় নেমে আসে।
৩ মার্চ সপ্তম কার্যদিবসে ৩৯ টাকা ৮০ পয়সায় শেয়ারটির লেনদেন হয় সর্বোচ্চ সংখ্যায়। হাতবদল হয় ৩৭ লাখ ৩২ হাজার ৬১০টি।
আর সর্বোচ্চ দর ওঠে অষ্টম কার্যদিবসে দর হারানোর দিন হাতবদল হয় হয় ২৭ লাখ ২৪ হাজার ৮০৬টি।
এই শেয়ারটির ক্ষেত্রে দাম যত বেড়েছে, লেনদেনও তত বাড়তে দেখা যায়।
প্রথম দিন ১৫ টাকায় হাতবদল হয় ২০১টি শেয়ার। দ্বিতীয় দিন ২২ টাকা ৫০ পয়সায় হাতবদল হয় ৯ হাজার ৩৩২টি, তৃতীয় দিন ২৪ টাকা ৭০ পয়সায় হাতবদল হয় ২৫ হাজার ৭৯৬টি, চতুর্থ কার্যদিবসে ২৭ টাকা ১০ পয়সায় হাতবদল হয়েছে এক লাখ ৪৩ হাজার ৪৭টি শেয়ার।
পঞ্চম কার্যদিবসে ২৯ টাকা ৮০ পয়সায় হাতবদল হয় ১ লাখ ৬৪ হাজার ৮৬৮টি শেয়ার।
ষষ্ঠ কার্যদিবসে ৩২ টাকা ৭০ পয়সায় হাতবদল হয় ৩৪ লাখ ৫৮ হাজার ৭১৬টি শেয়ার।
ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম কার্যদিবসে যারা শেয়ার কিনেছেন, তারা এরপর কেবল হতাশই হয়েছেন। টানা ঊর্ধ্বগতি থেকে এবার টানা পতন দেখছেন তারা।
বর্তমানে এর শেয়ার দর ৩২ টাকা ৫০ পয়সা। ফলে সর্বোচ্চ দামে যারা শেয়ার কিনেছেন তারা এখন শেয়ার প্রতি ১০ টাকার বেশি লোকসানে আছেন।
ই জেনারেশনের প্রধান অর্থ কর্মকতা (সিএফও) মো. মাজহারুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘পুঁজিবাজারে লাখ লাখ বিনিয়োগকারী। আমরা সেদিকে নজর দিতে চাচ্ছি না। আমাদের ব্যবসা ভালো হলে বিনিয়োগকারীরা অবশ্যই শেয়ার কিনবেন। তবে আমাদের কোম্পানির অগ্রগতি প্রত্যাশা অনুযায়ী অনেক ভালো।’
দাম বাড়ার পর প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রি করে দিয়েছেন। আর কিনেছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা।
লেনেদেন শুরুর সময় প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে এই কোম্পানির ৩৬.৪২ শতাংশ বা ২ কোটি ৭৩ লাখ ১৫ হাজার শেয়ার ছিল।
ফেব্রুয়ারি শেষে হিস্যা কমে দাঁড়িয়েছে ৩৫.৩৯ শতাংশ শেয়ার।
শুরুতে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ই জেনারেশনের শেয়ার ছিল ২৬. ১৯ শতাংশ। বর্তমানে আছে ২৭.২২ শতাংশ।
দুই দিন বেড়ে পাঁচ দিন কমল লুব রেফের দাম
বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে লুব রেফ (বাংলাদেশ) লিমিটেডের শেয়ার বিনিয়োগকারীরা পেয়েছেন ২৭ টাকা করে।
৯ মার্চ লেনদেন শুরুর দিন ৫০ শতাংশ দর বৃদ্ধির সুযোগ ছিল। বেড়েছেও তা। সেদিন দর বেড়ে হয় ৪০ টাকা ৫০ পয়সা। কিন্তু এই দরে বিক্রেতা ছিল না বললেই চলে। হাতবদল হয় কেবল ৪২১টি শেয়ার।
পরের দিন দাম বাড়ার সর্বোচ্চ সীমা ছিল ৬০ টাকা ৭০ পয়সা পর্যন্ত। এই দামেই বিক্রি সেদিনের শেয়ার। সর্বোচ্চ দামে হাতবদল হয় মোট এক কোটি ৩২ লাখ ১৩ হাজার ২৭টি শেয়ার।
পরের দিন লেনদেন শুরুর পর দাম আরও এক টাকা বাড়ার পরই পড়তে থাকে। টানা ৫ কার্যদিবস দাম কমে এখন দর দাঁড়িয়েছে ৪৩ টাকা ১০ পয়সা।
৪০ টাকা ৫০ পয়সায় বিক্রেতা না থাকলেও বিনিয়োগকারীরা ৪৩ টাকা ১০ পয়সায় ৩০ লাখ ৬৭ হাজার ২৪টি শেয়ার বিক্রি করেছেন আরও কমে যাওয়ার আশঙ্কায়।
নতুন শেয়ার হিসেবে সম্প্রতি প্রথমবারের মতো এই কোম্পানিটি পর পর তিন দিন সবচেয়ে বেশি দাম হারানোর তালিকায় ছিল।
সদ্য তালিকাভুক্ত হওয়ায় কোম্পানির শেয়ার বিক্রিতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগাকরীরা কতটা সক্রিয় তা এখনও প্রকাশ করা হয়নি।
তবে লেনদেনের শুরুতে দেয়া তথ্য অনুযায়ী মোট শেয়ারের ৩৩ দশমিক ৪২ শতাংশ শেয়ার রয়েছে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে। সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে কাছে ২৯ দশমিক ৫০ শাতংশ শেয়ার।
তৌফিক (সৌভাগ্য) দিল না তাওফিকা
১০ ফেব্রুয়ারি লেনদেনে শুরুর পর ১০ টাকায় তালিকাভুক্ত হয়ে টানা বাড়তে বাড়তে বাড়তে ২৭ টাকা ১০ পয়সায় উঠে যায় এই কোম্পানিটির শেয়ার।
এরপর কমতে কমতে বর্তমানে লেনদেন হচ্ছে ২১ টাকা ৮০ পয়সায়।
এই কোম্পানির ক্ষেত্রেও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা মুনাফা নিয়ে শেয়ার তুলে দিয়েছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে।
লেনদেন শুরুর দিন সময়ে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ১৪ দশমিক ১১ শতাংশ বা ১ কোটি ১৯ লাখ ৯৩ হাজার শেয়ার ছিল।
ফেব্রুয়ারি শেষে তা ১ দশমিক ৪৬ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১২ দশমিক ৬৫ শতাংশ।
শুরুতে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে শেয়ার ছিল ২৭ দশমিক ৬৫ শতাংশ আর এখন আছে ২৯ দশমিক ১১ শতাংশ।
সবচেয়ে বেশি আলোচনা তিন কোম্পানির দরপতনে
এ্যানার্জিপ্যাক পাওয়ার জেনারেশন লিমিটেডের বিনিয়োগকারীরা প্রাথমিক গণপ্রস্তাবে –আইপিওতে প্রতিটি শেয়ার পেয়েছেন ৩১ টাকা দরে। লেনদেন শুরু হওয়ার ৫ কার্যদিবসের মধ্যে শেয়ারের দর ১০০ টাকা উপরে উঠে।
বৃহস্পতিবার কোম্পানির প্রতিটি শেয়ার দর দাঁড়ায় ৪৬ টাকা ৫০ পয়সায়।
এ কোম্পানিটির ক্ষেত্রেও দেখা গেছে বেশি দরে শেয়ার বিক্রি করে বের হয়ে গেছে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগাকরীরা।
লেনদেন শুরুর সময় প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ছিল ২২ দশমিক ৮০ শতাংশ শেয়ার।
ফেব্রুয়ারি শেষে তা কমে দাঁড়িয়েছে ১৭ দশমিক ৮৫ শতাংশ।
বিক্রি করা প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের ৪ দশমিক ৯৫ শতাংশ শেয়ারের পুরোটাই কিনেছে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা।
শুরুতে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে শেয়ার ছিল ২৩ দশমিক ০৭ শতাংশ। এখন আছে ২৮ দশমিক ০২ শতাংশ।
৫৪ টাকায় লেনদেন শুরু করা মীর আকতার হোসেন লিমিটেডের শেয়ার দর দ্বিতীয় দিনই উঠে যায় ১১৭ টাকায়। এই শেয়ারটির এখন দাম ৭৬ টাকা ৮০ পয়সা।
প্রথম দিন শেয়ারের দাম বাড়ার সুযোগ ছিল ৮১ টাকা পর্যন্ত। এই দামে শেয়ার বিক্রি হয়েছে মাত্র ৭৩০টি। অথচ পরে এর চেয়ে কম দামে শেয়ার বিক্রি হয়েছে লাখ লাখ।
বৃহস্পতিবার ৭৬ টাকা ৮০ পয়সায় বিক্রি হয়েছে ৮ লাখ ৭৬ হাজার ৬৯৯টি।
এই কোম্পানির ক্ষেত্রেও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরাও হিস্যা কমেছে।
লেনদেন শুরুর সময় কোম্পানির ৮ দশমিক ৬০ শতাংশ শেয়ার ছিল প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে। ফেব্রুয়ারি শেষে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ৭০ শতাংশ।
প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীা বিক্রি করছেন ৩৫ লাখের বেশি শেয়ার, যা এখন সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে।
শুরুতে এই কোম্পানির ৪২ দশমিক ৮২ শতাংশ শেয়ার ছিল সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে। এখন আছে ৪৫ দশমিক ৭২ শতাংশ।
চলতি বছর নতুন কোম্পানির মধ্যে সবচেয়ে বেশি লোকসান হয়েছে রবির শেয়ার কিনে। ১০ টাকায় তালিকাভুক্ত বহুজাতিক কোম্পানিটির শেয়ার দর টানা ১৫ কার্যদিবস বেড়েছে সর্বোচ্চ পরিমাণ।
৭৭ টাকা ১০ পয়সা দাম উঠার দিন সেদিনই দাম কমে যায়। এরপর কমতে কমতে এখন দাম দাঁড়িয়েছে ৪৬ টাকা ৬০ পয়সা।
লেনদেন শুরুর সময় রবির শেয়ারের ২.৯৬ শতাংশ ছিল প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে। তাদের কোটার এক তৃতীয়াংশ শেয়ারই বিক্রি করে দেয়া হয়েছে। বর্তমানে কোম্পানিটির ২ দশমিক ০৩ শতাংশ শেয়ার আছে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে।
সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে শুরুতে শেয়ার ছিল ৭ দশমিক ০৪ শতাংশ। সেটি বেড়ে এখন হয়েছে ৭.৯২ শতাংশ।
বিশ্লেষক ও নিয়ন্ত্রক সংস্থার মন্তব্য
পুঁজিবাজার বিশ্লেষক আবু আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা লেনদেনের প্রথম কয়েকদিন শেয়ার বিক্রি না করায় দর বাড়তে থাকে। পরে যখন সর্বোচ্চ দর উঠে তখনই বেশি দরে শেয়ার বিক্রি করতে থাকে। আর সাধারণ বিনিয়োগকারীরা তা কিনলেও পরে আর মুনাফা করতে পারে না।’
বিএসইসি নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র রেজাউল করিম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আগে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের জন্যও কোটা ছিল এবং তা লক-ইন ছিল। কিন্ত সে সময় বলা হলো লক-ইন থাকায় শেয়ার সরবরাহ ঘাটতি দেখা দিচ্ছে। ফলে দাম বেড়ে যেত। এ কারণে লক উঠিয়ে দেয়া হয়েছে।’
আরও পড়ুন:বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব নাসরীন জাহান বলেছেন, সমন্বিত প্রয়াসের মাধ্যমে হজ ও ওমরাহ পালনকে সহজ এবং সুন্দর করতে আমাদের প্রয়াস অব্যাহত থাকবে।
আজ শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে তিন দিনব্যাপী জাতীয় পর্যায়ে হজ ও ওমরাহ মেলা ২০২৫ এর সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
তিনি বলেন, গত বছরের হজ ব্যবস্থাপনা চমৎকার ছিল। হজের ব্যয় কমিয়ে আনতে ত্রিশ হাজার টাকা বিমান ভাড়া কমানো হয়েছিল। এবছর হজ যাত্রী পরিবহনে যুক্ত থাকা অন্যান্য এয়ার লাইন্সের সাথে আলোচনার মাধ্যমে আরো সাশ্রয়ী ভাড়া নির্ধারণের চেষ্টা করবো।
শুধু বিমান ভাড়া কমানো হলে হজের খরচ খুব কমে যাবে বিষয়টি এমন নয় উল্লেখ করে বিমান সচিব বলেন, হজের যে আরো চার পাঁচটি খরচের খাত রয়েছে সেটি বিবেচনায় নিতে হবে। এসময় তিনি হজ ও ওমরাহ পালনকারীদের সর্বোত্তম সেবাদানের জন্য হজ এজেন্সিগুলোর মনোযোগ আকর্ষণ করেন।
হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) তিন দিন ব্যাপী এই হজ ও ওমরাহ মেলার আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) মু: আ: আউয়াল হাওলাদার, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব (হজ) ড. মো: মঞ্জুরুল হক,বিমান বাংলাদেশ এর পরিচালক (বিপনন) আশরাফুল আলম, হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) এর মহাসচিব ফরিদ আহমেদ মজুমদার এবং শাহজালাল ইসলামি ব্যাংক এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোসলেহ উদ্দিন আহমেদ।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন হজ এজেন্সীজ এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) এর সভাপতি সৈয়দ গোলাম সরওয়ার।
পরে প্রধান অতিথি হজ ও ওমরাহ মেলায় অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন।
যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের শীর্ষ বৈঠক পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে কী বলা হচ্ছে, তা জানার জন্য ইউক্রেনের খারকিভ শহরে মধ্যরাত পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকেন স্থানীয় বাসিন্দা পাভলো নেব্রোয়েভ।
খারকিভ থেকে এএফপি এ খবর জানায়।
তিন বছরের বেশি সময় ধরে ইউক্রেনে চলা রাশিয়ার হামলার ব্যাপারে আলোচনার জন্য ট্রাম্প ও পুতিন আলাস্কায় বৈঠকে বসেন।
তবে, বৈঠকে ইউক্রেন ইস্যুতে কোনো অগ্রগতি হয়নি। উল্টো এই সময়ে ইউক্রেনের খারকিভে শক্তিশালী আক্রমণ চালিয়েছে রাশিয়া। অবশ্য বৈঠকের আগে থেকেই এই আয়োজনকে পুতিনের জন্য চূড়ান্ত বিজয় হিসেবে বিবেচনা করছিলেন অনেকে।
৩৮ বছর বয়সী থিয়েটার ম্যানেজার পাভলো বলেন, ‘আমি দেখলাম, প্রত্যাশা অনুযায়ীই (বৈঠকের) ফলাফল এসেছে। আমি মনে করি, এটা পুতিনের জন্য কূটনৈতিকভাবে বড় ধরনের বিজয়।’
তিনি আরো বলেন, ‘তিনি (পুতিন) নিজের বৈধতা সম্পূর্ণরূপে আদায় করেছেন।’
২০২২ সালে হামলা চালানো শুরুর পর থেকে রুশ নেতাকে পশ্চিমা বিশ্বে এড়িয়ে চলার যে প্রবণতা ছিল, ট্রাম্প এবার পুতিনকে যুক্তরাষ্ট্রে আমন্ত্রণ জানানোর মধ্য দিয়ে সেটির অবসান হলো।
শীর্ষ বৈঠকে আমন্ত্রণ না পাওয়া ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এটাকে পুতিনের একার বিজয় হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
বৈঠকে ইউক্রেনকে না রাখায় নেব্রোয়েভ শুধু ক্ষুব্ধই হননি, বরং এই বৈঠককে সময়ের অপচয় মনে করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘এটা অর্থহীন একটি বৈঠক ছিল। ইউক্রেন সম্পর্কিত সমস্যাগুলো ইউক্রেনের সঙ্গে, ইউক্রেনীয়দের অংশগ্রহণে এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের উপস্থিতিতে সমাধান করা উচিত।’
মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার চিত্রকোট ইউনিয়নে গোয়ালখালি এলাকায় বিসিকের অধিগ্রহণকৃত ৪০ একর জমির উপর নির্মিত হবে 'ভ্যাকসিন প্লান্ট'। যেখানে ঔষধের পাশাপাশি তৈরি হবে অ্যান্টিভেনম।
প্রকল্পটি গোপালগঞ্জে বাস্তবায়ন করার কথা থাকলেও সেই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করা হয়েছে বলে জানান স্বাস্থ্য উপদেষ্টা।
শনিবার সকালে প্রকল্প এলাকা পরিদর্শনে এসে এসব তথ্য জানান স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম।
এসময় তিনি জমি রেজিষ্ট্রেশন সংক্রান্ত কার্যক্রম দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা প্রদান করেন।
উপদেষ্টা বলেন, গোপালগঞ্জে ভ্যাকসিন প্লান্ট একদম একপাশে হয়ে গেছে। ভ্যাকসিনটা যখন তৈরি হবে তখন এটা ফ্রিজিং করে সারা বাংলাদেশে পাঠাতে হবে। সেজন্য আমার এমন একটা জায়গা দরকার যেখান থেকে সহজে যাতায়াত ব্যবস্থা নিয়ে আমরা পাঠাতে পারবো। সেক্ষেত্রে গোপালগঞ্জটা সেজন্য আমাদের জন্য উপযুক্ত হয় না।
আর এখানে যে সমস্ত টেকনোলজিস্ট, বিশেষজ্ঞ লাগবে এটা সবসময় সেখানে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে না। তাই এটা আমরা এখানে করার চেষ্টা করছি। এবং এখানে ৪০ একর জমি বিসিকের কাছ থেকে নিয়েছি। সে অনুযায়ী আমাদের একটা প্ল্যান্ট- এটা এখানেই হবে যাতে করে আমাদের সমস্ত ঔষধ তৈরি করতে পারি, ভ্যাকসিন আমরা এখানে তৈরি করতে পারি এবং একইসাথে আমরা চিন্তা করছি- অ্যান্টিভেনম যেটা হয়, যেটা আমাদেরকে পাশের দেশগুলো থেকে আনতে হয়। অনেক সময় সাপের ভ্যারাইটি একরকম না, কোন কোন সময় সাপের কারণে যে ভ্যাকসিনটা দেয়া হয় ওটা কখনো কাজ করে, কখনো করে না। কাজেই আমরা এখন চেষ্টা করছি- আমাদের যেহেতু অনেক সাপ আছে, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে সাপের বিষ এনে এখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে এন্টিভেনম তৈরি করা হবে। আমাদের দেশের সাপ দিয়ে দেশেই ভ্যাকসিন-অ্যান্টিভেনম তৈরি হবে।
ভ্যাকসিন প্লান্ট নির্মাণে সময় প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, এটা সিস্টেমের ব্যাপার। বর্তমানে হাসপাতালগুলোতে দেশের মধ্যে উৎপাদিত প্রায় ৭০ শতাংশ ঔষধ সরবরাহ করা হচ্ছে। কোয়ালিটিতে দেশের বাইরের তুলনায় এটি কোন অংশেই কম না। এটাকে ১০০ শতাংশে উন্নিত করতে হলে আমাদের আরও কিছু মেশিনারিজ আনতে হবে। মেশিনারিজগুলো আমরা চেষ্টা করবো যত দ্রুত আনা যায়। সবকিছু মিলিয়ে এগুলো আনতে প্রায় ৬ মাসের মত লেগে যাবে।
তিনি বলেন, জমি আমাদের নামে রেজিষ্ট্রি করে দেয়া হবে, পাশের নদী শাসন করতে হবে। এরপরে মেশিনারিজ, প্ল্যান এগুলো পাশ করাতে হবে। ধরে নেন আগামী আড়াই থেকে তিন বছর লাগতে পারে। পরে উপদেষ্টা ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরিদর্শন করেন।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ইডিসিল এর গোপালগঞ্জ প্লান্টের ভ্যাকসিন ইউনিট এবং মানিকগঞ্জ প্ল্যান্ট স্থানান্তর করে এখানে আনা হবে। এজন্য ৪০ একর জায়গার সংস্থান করা হয়েছে। এসময় স্বাস্থ্য উপদেষ্টা চট্টগ্রামে প্রক্রিয়াধীন এন্টি ভেনম প্ল্যান্টও এখানে স্থানান্তরের নির্দেশনা প্রদান করেন। এটি সামগ্রিক বিবেচনায় লাভজনক হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যাক্ত করেন।
এসময় ইডিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সামাদ মৃধাসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
পরিকল্পনা কমিশন থেকে জানা গেছে, ৩ হাজার ১২৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ভ্যাকসিন প্লান্টটি নির্মাণ করা হচ্ছে। এই কারখানায় ১৫ ধরনের টিকা উৎপাদন করে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করা সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে। প্লান্টটিতে ২০২৮ সালের মধ্যে ছয় ধরনের ও ২০২৯ সালে আরও ৯ ধরনের টিকা উৎপাদনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়। ২০৩০ সালে এ প্রকল্পের কাজ শেষ হবে।
সনাতন হিন্দু সম্প্রদায়ের আরাধ্য ভগবান শ্রী কৃষ্ণের জন্মতিথি ও শুভ জন্মাষ্টমীতে কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) হিন্দু সম্প্রদায় ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও আনন্দ উৎসবের মধ্য দিয়ে দিনটি পালন করেছেন। এ উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ে পূজা-অর্চনা, ধর্মালোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
শনিবার (১৬ আগস্ট) দুপুর দুইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পূজা উদযাপন পরিষদের আয়োজনে বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনে অনুষ্ঠানটি আয়োজিত হয়।
এর পূর্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের থানা গেটসংলগ্ন স্থানে পূজা ও প্রার্থনা সম্পন্ন হয়।
আলোচনা সভায় হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য প্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক ড. অরবিন্দ সাহা’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ ও বিশেষ অতিথি হিসেবে চুয়াডাঙ্গা’র অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক নয়ন কুমার রাজবংশী, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন প্রসাশক এ্যাড. সুব্রত কুমার চক্রবর্তী, ঝিনাইদহ জেলার স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক এবং উপসচিব রথীন্দ্রনাথ রায় উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া, অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. পরেশ চন্দ্র বর্মণ, বিশেষ আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. তপন কুমার রায়। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোহা. শাহীনুজ্জামান এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী, বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং শিক্ষার্থীরা।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ধর্মীয় অনুষ্ঠান আয়োজনের ক্ষেত্রে বরাবরই স্পেশাল। পবিত্র কুরআনেই বলা হয়েছে কেউ অন্য ধর্মের অবতারকে গালি দিবে না তাহলে তোমার ধর্মকে গালি দিবে না। মদিনা সনদেও রাসুলুল্লাহ (সা.) অন্যান্য ধর্ম পালনকে স্বীকৃতি দিয়েছেন। ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালনে আপনাদের মধ্যে যেন কোনো সংকীর্ণতা না আসে। সমান মর্যাদা সহকারে আপনারা আপনাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করতে পারবেন এই নিশ্চয়তা আমি দিচ্ছি। সকল ধর্মের মূলমন্ত্র হলো মানবিকতা। আমি এখানে আসার পর ইসলামিক এন্ড কম্পারেটিভ রিলিজিয়ন নামে একটি নতুন ফ্যাকাল্টি চালু করেছি। এই ফ্যাকাল্টি চালু হলে হিন্দুধর্ম ও অন্যান্য ধর্মের গবেষণা চালু করা যাবে।
তিনি আরও বলেন, হিন্দু ধর্ম মতে, যখন পৃথিবীতে অধর্মের চর্চা বেড়ে যায়, সাধারণ মানুষের জীবনযাপন যখন দূর্বিষহ হয়ে যায় তখন দুষ্টের দমন এবং শিষ্টের লালনের জন্য শ্রী কৃষ্ণ অবতার হিসেবে আগমন করেন। কুরআন ব্যক্তিমানুষ এবং সমাজকে এড্রেস করেছে। উপমহাদেশের ভক্তিবাদের জন্য বিভিন্ন ধর্মের মধ্যে সাজশ আছে। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ছাত্র ধর্মীয় পরিচয় ভুলে মানুষ পরিচয় নিয়ে তারা পাশাপাশি থাকবে এই চেতনা লালন করতে হবে। সনাতন ধর্মীয় অনুভূতিতে কেউ আঘাত করলে মানববন্ধন না করে আমার কাছে আসলে আমি সমাধান করে দিবো।
বিশ্ববিদ্যালয়ে কেউ যদি এথিজম চর্চা করে এবং কোনো ধর্মকে স্ট্রাইক করে তাহলে তাকে যুক্তি দিয়ে দমন করতে হবে কারণ বর্তমান পৃথিবী হলো যুক্তিতর্কের পৃথিবী। আধুনিক পৃথিবী শক্তির পৃথিবী না বরং যুক্তির পৃথিবী।”
উল্লেখ্য, ধর্মালোচনা অনুষ্ঠানে উপাচার্যের নিকট একটি স্থায়ী মন্দিরের দাবি জানান অধ্যাপক ড. অরবিন্দ সাহা।
স্বাস্থ্য খাত সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের টানা আন্দোলন থামছে না। বরং আন্দোলন আরও জোরদার করার ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।
শনিবার (১৬ আগস্ট) দুপুর সাড়ে ১২টায় বরিশাল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী মহিউদ্দীন রনি এই ঘোষণা দেন।
রনি অভিযোগ করে বলেন, আমরা ন্যায্য দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু দুঃখজনক হলো, শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে শান্তিপূর্ণ অনশনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের একটি গ্রুপ বারবার হামলা চালিয়েছে। এই ঘটনার সঙ্গে হাসপাতালের পরিচালকসহ প্রশাসন-সমর্থিত একটি চক্র জড়িত। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরিশালে এসে উস্কানিমূলক বক্তব্য দেওয়ার পরই ন্যাক্কারজনক এই হামলার ঘটনা ঘটে।
তিনি আরও জানান, হামলার পর সংশ্লিষ্টরা উল্লাস করে খিচুড়ি পার্টি” এবং ১৫ আগস্ট উপলক্ষে কাঙালীর ভোজের আয়োজন করেছে যা দেখে সাধারণ মানুষ ক্ষুব্ধ হয়েছে।
রনি দৃঢ় কণ্ঠে বলেন, এই আন্দোলন থামবে না। যতদিন না দালালচক্র ভেঙে প্রকৃত স্বাস্থ্য ব্যবস্থা গড়ে ওঠে, ততদিন আমরা রাজপথ ছাড়ব না। ছাত্র আন্দোলন বন্ধ হয়ে গেছে এমন অপপ্রচার চালানো হলেও বাস্তবে আন্দোলন চলছে এবং চলমান থাকবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, আগামীকাল (রোববার) সকাল ১১টায় বরিশাল সদর রোডের অশ্বিনী কুমার হল টাউন হল চত্বর থেকে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হবে। এ কর্মসূচিতে বরিশালবাসীসহ দেশের সর্বস্তরের জনগণকে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২০ দিন ধরে দেশের বিভিন্ন স্থানে স্বাস্থ্য খাত সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। চিকিৎসা সেবায় অব্যবস্থাপনা, সিন্ডিকেট ও দালালচক্র ভেঙে সাধারণ মানুষের জন্য দালালমুক্ত ও মানসম্মত স্বাস্থ্য ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠাই তাদের প্রধান লক্ষ্য। শিক্ষার্থী, শিক্ষক, শ্রমিক, অভিভাবকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ এই আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন। তবে আন্দোলনকারীরা প্রায়ই হামলা ও বাধার মুখে পড়ছেন।
বৃষ্টি আর প্রচণ্ড রোদ হলেই প্রয়োজন হয় ছাতার। ঝমঝম আর টিপটিপ বৃষ্টি যেটাই বলেন, বৃষ্টিতে ছাতার কোনো জুড়ি নাই।
একসময় দেখা যেতো গ্রামে গ্রামে ফেরী করে ছাতা মেরামত করতে আসতো কারিগররা। আর মুহূর্তেই অস্থায়ী এই দোকানগুলোতে থাকতো উপচে পড়া ভিড়। এই পেশাতে অনেকেই জীবিকা নির্বাহ করত। কিন্ত সভ্যতার বিকাশের মাধ্যমে আজ আর চোখেই পরে না ছাতা মেরামত কারিগরদের। যেন পেশাটি বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্তে অবস্থান করছে।
সরেজমিনে দেখা যায় পঞ্চগড় জগদল বাজার এলাকায় ছাতা মেরামত করছিলেন এনামুল। তিনি একটি দোকানের সামনে অস্থায়ী বসেছেন। হরেকরকমের ভাঙ্গা ছাতা মেরামত করছেন। আর কাজ বুঝে বেশ দামও নিচ্ছেন।
ছাতা মেরামত করতে আসা দুলাল বলেন, আমার বয়স ৪০বছর। ছোটবেলায় দেখতাম মোড়ে মোড়ে ছাতা মেরামতের মিস্ত্রি পাওয়া যেতো। কিন্ত এখন আর ছাতা মিস্ত্রিদের চোখেই পড়ে না। তাছাড়া, ছাতা মেরামত করতে যে টাকা লাগে, তার সাথে কিছু টাকা দিয়ে নতুন ছাতা কেনা যায়।
ছাতা মিস্ত্রি এনামুল বলেন, বর্ষা মৌসুমে আমাদের কাজের হিড়িক পরে যেতো। আর এক মৌসুমে কাজ করেই চলতাম সারাবছর। কিন্ত আজকাল মানুষের রুচি বিদেশীদের মতো হয়ে গেছে।
ছাতার কোনো অংশ নষ্ট বা ছিঁড়ে গেলে এখন আর মেরামত করতে চান না। আগে মানুষ এতটা সৌখিন ছিল না। একটা ছাতা দিয়ে যুগ পার করে ফেলত। আর এখন মানুষ একটা ছাতা বেশী দিন ব্যবহার করে না। একটু থেকে একটু সমস্যা হলেই নতুন ছাতা কিনে নেয়।
যেখানে আগে মোরে মোরে ছাতা মেরামত করার কারিগর পাওয়া যেত, সেখানে এখন ৪ থেকে ৫ টা বাজার বা এলাকা ঘুরলে একজন ছাতা মেরামত করার কারিগর পাওয়া যায়। দিন যত যাচ্ছে ততই বিলুপ্তির পথে চলে যাচ্ছে এই পেশা।
নওগাঁর রাণীনগর রেলওয়ে স্টেশনে ট্রেনে কাটা পড়ে বাবু প্রামানিক (৫৫) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে।
শনিবার সকালে রাজশাহী থেকে চিলাহাটিগামী তিতুমির এক্সপ্রেস ট্রেনে এই দূর্ঘটনাটি ঘটে। নিহত বাবু প্রামানিক নওগাঁ সদর উপজেলার শিমুলিয়া উত্তরপাড়া গ্রামের মৃত শমসের প্রামানিকের ছেলে।
স্থানীয় ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, শনিবার সকালে বাবু প্রামানিক স্ত্রীর ওপর অভিমান করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। গ্রাম থেকে কিছু দুরে রাণীনগর রেলওয়ে স্টেশন। তাই অভিমানে ট্রেনে কাটা পড়ে মারা যেতে পারে। পরে পরিবারের সদস্যরা জানতে পেরে মরদেহ বাড়ি নিয়ে আসে।
রাণীনগর রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার আব্দুল খালেক বলেন, তিতুমির এক্সপ্রেস ট্রেনটি রাজশাহী থেকে চিলাহাটি যাচ্ছিল। এসময় সকালে বাবু প্রামানিক রেললাইন পার হওয়ার সময় ট্রেন দূর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান।
সান্তাহার রেলওয়ে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মাহফুজ বলেন, তিতুমির এক্সপ্রেস ট্রেনটি রানীনগর রেলওয়ে স্টেশনে উত্তরপাশে আসলে বাবু প্রামানিক নামে ওই ব্যক্তি অসাবধানতাবসত রেললাইন পার হচ্ছিলেন। ট্রেন আসলেও স্থানীয়রা তাকে অনেকবার ডাকলেও তিনি কোন কর্নপাত করেননি। এতে ট্রেনের ধাক্কায় রেললাইনে কাটা পড়ে মারা যান তিনি। মরদহে উদ্ধার করা হয়েছে। আইনানুগ প্রক্রিয়া শেষে নিহতের স্বজনরা মরদেহ নিয়ে গেছে।
মন্তব্য