দুর্গাপূজায় সারা দেশে উৎসবমুখর পরিবেশের মধ্যে ১৩ অক্টোবর ভোরে কুমিল্লার একটি পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন শরিফ পাওয়ার পর ছড়িয়ে পড়ে সহিংসতা। নানুয়ার দীঘিরপাড়ের ওই মণ্ডপে চলে ব্যাপক ভাঙচুর, আক্রান্ত হয় নগরীর আরও বেশ কিছু পূজামণ্ডপ। পরে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে চাঁদপুর, নোয়াখালী, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়।
নানুয়ার দীঘিরপাড়ের মণ্ডপে কীভাবে উত্তেজনার শুরু এবং মূল মণ্ডপের বাইরে পূজার থিম হিসেবে হনুমানের মূর্তির ওপর পবিত্র কোরআন শরিফ রাখায় কারা জড়িত, তা নিয়ে নিউজবাংলার অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য।
এ বিষয়ে নিউজবাংলায় প্রকাশিত বিভিন্ন প্রতিবেদন আলোচিত হয় দেশজুড়ে। নিউজবাংলার কুমিল্লা প্রতিনিধি মাহফুজ নান্টুর করা প্রতিবেদনগুলো অনুসন্ধানী সাংবাদিকতায় যোগ করে নতুন মাত্রা। সংবাদকর্মী নান্টুর সাহসিকতা এবং পেশাদারত্ব প্রশংসিত হয় সব মহলে।
আরও পড়ুন: কুমিল্লায় মণ্ডপে কোরআন রাখল কারা
পেশাদার ও সাহসী সাংবাদিকতার জন্য মাহফুজ নান্টুকে সম্মাননা দিয়েছে নিউজবাংলা পরিবার। এ উপলক্ষে শনিবার প্রতিষ্ঠানের প্রধান কার্যালয়ে অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
নান্টুর হাতে শুভেচ্ছা স্মারক ও চেক তুলে দেন নিউজবাংলার সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি চৌধুরী নাফিজ সরাফাত। উপস্থিত ছিলেন নিউজবাংলার নির্বাহী সম্পাদক হাসান ইমাম রুবেল, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক শেখ জাহিদুর রহমান, হেড অফ নিউজ সঞ্জয় দে, কনসালট্যান্ট নিউজ শিবব্রত বর্মণ, কান্ট্রি ডেস্ক ইনচার্জ রাকিব খানসহ বিভিন্ন বিভাগের কর্মীরা।
দৈনিক বাংলার নির্বাহী সম্পাদক শরিফুজ্জামান পিন্টুও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: মণ্ডপে কোরআন রাখায় প্রধান সন্দেহভাজন যুবক ইকবাল
অনুষ্ঠানে নিউজবাংলার হেড অফ নিউজ সঞ্জয় দে দুর্গাপূজার সময়ে বিভিন্ন জায়গায় সাম্প্রদায়িক হামলার সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের পেশাদার অবস্থান তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, ‘সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনাগুলো সারা দেশের জন্য ছিল দুর্ভাগ্যজনক। সংবাদকর্মী হিসেবে আমরা এসব হামলার নেপথ্যে কারণ অনুসন্ধান ও জড়িতদের চিহ্নিত করার চেষ্টা করেছি। এক ধরনের সুশৃঙ্খল টিমওয়ার্ক ছিল আমাদের কর্মীদের মধ্যে।’
কুমিল্লার হামলার পেছনের ঘটনা তুলে ধরতে মাহফুজ নান্টুর ভূমিকা ও পেশাদারত্বের প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘নান্টুকে পেয়ে নিউজবাংলার প্রত্যেক কর্মী গর্বিত। কুমিল্লার ঘটনার সময়ে তিনি রাত-দিন কাজ করেছেন, যেকোনো নির্দেশনা দেয়ামাত্র তিনি ঝাঁপিয়ে পড়ে ভেতরের তথ্য বের করে এনেছেন। তার কারণেই আমরা ওই সময়ে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য প্রতিবেদন প্রকাশ করতে পেরেছি।’
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক শেখ জাহিদুর রহমান বলেন, ‘সাম্প্রদায়িক ইস্যু খুবই স্পর্শকাতর। এ বিষয়ে সঠিক তথ্য তুলে ধরা সংবাদমাধ্যমের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। কুমিল্লার ঘটনার সময়ে আমরা নিউজরুমের সবাই আলোচনার মাধ্যমে পেশাদারত্ব বজায় রেখে খবর প্রকাশ করেছি। সব দিক সতর্কতার সঙ্গে যাচাই করে সত্যটিকে সামনে এনেছি। এ ক্ষেত্রে নান্টুর সহযোগিতা ছিল অসাধারণ।’
একটি বস্তুনিষ্ঠ সংবাদমাধ্যম গড়ে তোলার পেছনে চৌধুরী নাফিজ সরাফাতের সার্বক্ষণিক সমর্থন ও সহায়তার প্রশংসা করেন শেখ জাহিদ। নিউজবাংলার প্রত্যেক কর্মীকে সর্বোচ্চ পেশাদারত্ব বজায় রেখে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
আরও পড়ুন: পাশের মসজিদ থেকে কোরআন এনে মণ্ডপে রাখেন ইকবাল
দৈনিক বাংলার নির্বাহী সম্পাদক শরিফুজ্জামান পিন্টু বলেন, ‘কুমিল্লার সাম্প্রদায়িক হামলার সময় নিউজবাংলা যখন একের পর এক প্রতিবেদন প্রকাশ করছিল, তখন মূলধারার অন্য সংবাদমাধ্যমগুলোর চেষ্টা ছিল কতটা আড়াল করে নিউজ প্রকাশ করা যায়। তবে দিন শেষে দেখা গেল নিউজবাংলার অবস্থানই সঠিক।’
নিউজবাংলার অগ্রগতি ‘দৃশ্যমান’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘যে পরিস্থিতিতে (করোনা মহামারি) নিউজবাংলা যাত্রা করেছিল, সেটা একটা প্রতিকূল পরিস্থিতি। সেখান থেকে এক বছরের কিছু বেশি সময়ের মধ্যে এমন জায়গায় পৌঁছানো ঈর্ষণীয় সাফল্য। নিউজবাংলা ছাড়াও উদ্যোক্তাদের আরও দুটি প্রতিষ্ঠান- দৈনিক বাংলা ও সিটিজেন টেলিভিশন আসছে। এগুলো একসঙ্গে মিলে স্বাধীন সাংবাদিকতার জন্য একটি বড় ভূমিকা রাখবে বলে আমি আশা করি।’
আরও পড়ুন: কুমিল্লার সেই মসজিদের বারান্দায় আর কোরআন রাখা হবে না
নিউজবাংলার নির্বাহী সম্পাদক হাসান ইমাম রুবেল বলেন, ‘নান্টু জটিংস আকারে তথ্যগুলো পাঠাতেন। আমরা সেগুলো আমাদের সম্পাদকীয় নীতিমালার আলোকে কোনো ধরনের দুর্বলতা বা বিভ্রান্তির সুযোগ না রেখে সংবাদ আকারে প্রকাশ করেছি। এ ইস্যুটিতে আমরা একটি পেশাদার টিম হিসেবে দাঁড়াতে পেরেছিলাম। এ অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে আগামীতে আরও অনেক সাহসী কাজ আমরা করতে পারব।’
তিনি বলেন, ‘এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ঢাকার বাইরের সহকর্মীদের এ বার্তা দিতে চাই যে ভালো কাজ করলে সর্বোচ্চ স্বীকৃতি দিতে আমরা প্রস্তুত। আমরা সবাইকে নিয়ে একটি তীরে পৌঁছাতে চাই। আমাদের সেই তীর হচ্ছে দেশের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য নিউজ পোর্টালে পরিণত হওয়া।
নিউজবাংলার সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি চৌধুরী নাফিজ সরাফাতকে ধন্যবাদ জানিয়ে হাসান ইমাম রুবেল বলেন, ‘তিনি স্বাধীন সাংবাদিকতাকে ধারণ করেন। তিনি আমাদের জন্য পেশাদার সাংবাদিকতা করার পরিবেশ নিশ্চিত করেছেন। আমরা এই পরিবেশটি ধরে রাখতে চাই।’
আরও পড়ুন: ইকবালের ভিডিওতে সিসিক্যাম ঘুরল কেন?
সম্মাননা পাওয়ায় উচ্ছ্বসিত মাহফুজ নান্টু বলেন, ‘ওই সময়ে আমার নির্ঘুম রাত কেটেছে। সব সময় ভেবেছি একটি মিশনে আছি, আমাকে এগিয়ে যেতে হবে। সহকর্মীদের অনুপ্রেরণায় আমি দিন-রাত কাজ করেছি।’
নিউজবাংলার প্রতিবেদন কুমিল্লার সর্বমহলে প্রশংসিত হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘পুলিশের একজন ডিআইজি বলেছেন, তিনি বহুদিন এ ধরনের প্রতিবেদন পড়েননি। এখন যেকোনো ঘটনার ক্ষেত্রে প্রশাসন চায় নিউজবাংলায় আগে প্রকাশিত হোক।’
আনুষ্ঠানিকভাবে কাজের স্বীকৃতি দেয়ায় নিউজবাংলা কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানান তিনি।
আরও পড়ুন: কোরআন রাখতে আরেকটি মন্দিরেও গিয়েছিলেন ইকবাল
অনুষ্ঠানে নিউজবাংলার সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি চৌধুরী নাফিজ সরাফাত প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের পেশাদার মনোভাবের প্রশংসা করেন।
তিনি বলেন, ‘নান্টু আমাদের গর্বিত করেছে। আমাদের প্রতিষ্ঠানকে গর্বিত করেছে। সংবাদমাধ্যম খুবই স্পর্শকাতর জায়গা। এখানে আমরা সংবাদকর্মীদের ওপরেই পুরোপুরি নির্ভর করি, আমরা কখনই তাদের কাজে ইন্টারফেয়ার করি না।’
তিনি বলেন, ‘কুমিল্লার যেসব প্রতিবেদনের জন্য নিউজবাংলা আলোচিত হয়েছে, আমি আশা করি আগামীতেও আপনারা এ ধরনের সংবাদ প্রকাশ করবেন। আমার অনুরোধ, আপনারা কখনও প্রভাবিত হয়ে প্রতিবেদন করবেন না, যেটা সত্য সেটাই আপনারা প্রকাশ করবেন। এই জায়গায় কোনোভাবেই ছাড় দেয়া যাবে না। এ জন্য যতটুকু সহযোগিতা লাগবে, আমরা করে যাব।
‘আমি চাই, শুধু কুমিল্লায় নয়, নিউজবাংলা সারা দেশে মানুষের নির্ভরতার সংবাদমাধ্যমে পরিণত হোক।’
আরও পড়ুন:ডিমকে অত্যাবশ্যকীয় খাদ্য হিসেবে ঘোষণার আহ্বান জানিয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, ডিম সহজলভ্যতার দিক থেকে খুব গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি বলেন, ডিম প্রাপ্যতার কোনো বৈষম্য থাকবে না। সব শ্রেণি-বর্ণ নির্বিশেষে যাদের ডিম বেশি দরকার, তাদের জন্য তা সরবরাহ করতে হবে।
তিনি জানান, ডিমের মূল্য কমাতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে।
রাজধানীর ফার্মগেটে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশে (কেআইবি) শুক্রবার দুপুরে বিশ্ব ডিম দিবস-২০২৪ আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
ডিমের উৎপাদন বাড়াতে গ্রামের নারীদের হাঁস-মুরগি পালনে উৎসাহিত করতে আহ্বান জানিয়ে ফরিদা আখতার বলেন, ‘আগে গ্রামীণ নারীরা হাঁস-মুরগি পালন করতেন। গ্রামেই পাইকারদের কাছে বিক্রি করতেন। এতে তারা অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে অবদান রাখতে পারতেন। ‘সেই অবস্থা আবার ফিরিয়ে আনতে হবে। এ জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নিতে হবে।’
উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘বছরের আশ্বিন-কার্তিক মাসে সবজির সরবরাহ কমে যাওয়ায় ডিমের চাহিদা বাড়ে। ডিম সাধারণ খামারি থেকে কয়েক দফা হাত বদল হয়ে ভোক্তার কাছে যায়। এ কারণেই ডিমের দাম বেড়ে যায়।’
তিনি বলেন, ‘এ জন্য উৎপাদক থেকে ভোক্তা পর্যন্ত সরাসরি কীভাবে ডিম পৌঁছানো যায়, সে ব্যাপারে চিন্তাভাবনা চলছে। এ ছাড়া রমজানে ডিমের ব্যবহার কমে যায়।
‘তাই মজুত নয়, চাহিদার আলোকে আমাদের কোল্ডস্টোরেজ করার চিন্তা করতে হবে। বন্যার কারণে দেশের অনেক খামার নষ্ট হয়েছে। এসব খামার উৎপাদনে যেতে কিছুটা সময় লাগছে। সব মিলিয়ে সরবরাহে সমস্যা হচ্ছে।’
সিন্ডিকেটের কারণে ডিমের মূল্য বাড়ে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এসব বিষয় নিয়ে কাজ করছে সরকার। বাজারে নিয়মিত অভিযান চলছে। পাইকারিতে কিছুটা দাম কমেছে। দ্রুতই দাম নাগালে আসবে।’
আরও পড়ুন:বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দেশের পূজামণ্ডপগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিতে তৎপর রয়েছে বলে শুক্রবার জানিয়েছেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।
রমনা কালী মন্দির পরিদর্শনকালে দুর্গাপূজা উপলক্ষে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শুভেচ্ছা জ্ঞাপনকালে তিনি এ কথা জানান।
সেনাপ্রধান বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দেশব্যাপী পূজামণ্ডপগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সবসময় প্রস্তুত ও তৎপর রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য দেশের প্রতিটি নাগরিকের জন্য নিরাপত্তা ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখা। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষ যেন উৎসবমুখর পরিবেশে তাদের ধর্মীয় উৎসব পালন করতে পারে, সেটি আমাদের মূল উদ্দেশ্য।
‘আমরা অতীতের মতোই সকল ধর্মের মানুষদের মধ্যে সহযোগিতা ও সম্প্রীতি বজায় রাখব এবং দেশের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করব।’
নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ নাজমুল হাসান ও বিমান বাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খান ওই সময় উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:মিয়ানমারের নৌবাহিনীর হাতে বাংলাদেশি এক জেলে হত্যার প্রতিবাদ জানিয়ে এ ঘটনায় শুক্রবার গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ঢাকা।
সরকারি এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘গত ৯ অক্টোবর মিয়ানমারের নৌবাহিনীর হাতে কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার শাহপরীর দ্বীপের কোনাপাড়ার উসমান (৬০) নামের বাংলাদেশি জেলেকে হত্যার ঘটনায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মিয়ানমার সরকারের কাছে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে।’
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিবাদলিপিতে উল্লেখ করা হয়, ঢাকায় মিয়ানমার দূতাবাসে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এই মর্মান্তিক ঘটনায় বাংলাদেশ গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।’
এতে বলা হয়, মিয়ানমারকে বাংলাদেশের ভূখণ্ডের জলসীমার অখণ্ডতাকে সম্পূর্ণভাবে সম্মান করতে এবং কোনো উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।
প্রতিবাদে টেকনাফ উপজেলার সেন্ট মার্টিন দ্বীপের কাছে মাছ ধরার সময় উসমানের মালিকানাধীন একটি নৌকাসহ ৫৮ বাংলাদেশি জেলে ও ছয়টি মাছ ধরার নৌকা অপহরণের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।
বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড ও মিয়ানমার নৌবাহিনীর মধ্যে যোগাযোগের পর অবশেষে বৃহস্পতিবার দুই দফায় নৌকাসহ জেলেদের ছেড়ে দেয়া হয়।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ঢাকা এ ধরনের অযৌক্তিক কর্মকাণ্ডের পুনরাবৃত্তি রোধে অবিলম্বে পদক্ষেপ নেয়ার জন্য মিয়ানমার সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
আরও পড়ুন:স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, শারদীয় দুর্গাপূজার দশমী পর্যন্ত বিশেষ নিরাপত্তা থাকবে। এবার সবচেয়ে নির্বিঘ্নে ও শান্তিপূর্ণভাবে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে।
রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দিরে বৃহস্পতিবার পূজামণ্ডপ পরিদর্শনে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘এবার পূজা উপলক্ষে চার কোটি টাকার অনুদান দেয়া হয়েছে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যেখানে যতটা দরকার, সেই পরিমাণ সশস্ত্র বাহিনী দেয়া হয়েছে।
‘স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আট দফা নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য সেভাবেই কাজ চলছে।’
তিনি বলেন, ‘মাঝে মাঝে দুই-একটা ঘটনা ঘটে। এটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা। বাংলাদেশ পূজা কমিটির মহাসচিব আমাকে জানিয়েছেন, পূজাকে কেন্দ্র করে কোনো ঘটনা ঘটতে পারে, এমন কোনো তথ্য তার কাছে নেই।’
মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘বাংলাদেশের সব নাগরিকের নিরাপত্তা দেয়ার দায়িত্ব আমাদের। ৩৬৫ দিনই দেশের মানুষ নিরাপদে থাকবে। মাঝে মাঝে যা ঘটে তা বিচ্ছিন্ন ঘটনা।’
আরও পড়ুন:বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গত ১৬ জুলাই পুলিশের গুলিতে নিহত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) ছাত্র আবু সাঈদের ছোট বোন সুমি খাতুনকে প্রতিষ্ঠানটিতে চাকরি দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শওকাত আলী বুধবার সন্ধ্যায় তার অফিসকক্ষে সেমিনার অ্যাটেনডেন্ট পদে সুমি খাতুনের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেন।
ওই সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের দায়িত্বপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড. মো. তাজুল ইসলাম, অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার (সংস্থাপন শাখা) ড. জিয়াউল হকসহ শহীদ আবু সাঈদের দুই বড় ভাই রমজান আলী ও আবু হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে নিয়ন্ত্রণকক্ষ চালু করেছে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বৃহস্পতিবার শুরু হয়েছে নিয়ন্ত্রণকক্ষের কার্যক্রম। এ কার্যক্রম সোমবার পর্যন্ত চলবে।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ‘শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপনকালীন সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কোনোরূপ বিঘ্ন ঘটলে নিয়ন্ত্রণকক্ষের ০১৭৬৬৮৪৩৮০৯ এই মোবাইল নম্বরে অবহিত করা যাবে। এ ছাড়া বাংলাদেশ সচিবালয়ের ছয় নম্বর ভবনে ১৪ তলায় ১৪২৪ নম্বর কক্ষেও সরাসরি তথ্য প্রদান করা যাবে।
‘ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের একজন সিনিয়র সহকারী সচিবকে এই নিয়ন্ত্রণ কক্ষের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। গতকাল (বুধবার) ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রশাসন-২ শাখা হতে এ সংক্রান্ত পত্র জারি করা হয়েছে।’
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ‘রিসেট বাটন’ নিয়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন, তার ব্যাখ্যা দিয়েছে তার প্রেস উইং।
গণমাধ্যমে বৃহস্পতিবার পাঠানো বিবৃতিতে প্রেস উইংয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, “‘রিসেট বাটন’ চাপার কথাটি উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনীতি, যা বাংলাদেশের সব গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করেছে, অর্থনীতিকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে ঠেলে দিয়েছে এবং কোটি মানুষের ভোটাধিকার ও নাগরিক অধিকার হরণ করেছে, সেটি থেকে বের হয়ে এসে নতুনভাবে শুরু করার কথা বুঝিয়েছেন। তিনি কখনোই বাংলাদেশের গর্বিত ইতিহাস মুছে ফেলার কথা বলেননি।
“এখানে উল্লেখ্য যে, কেউ যখন কোনো ডিভাইসে রিসেট বোতাম চাপেন, তখন তিনি নতুন করে ডিভাইসটি চালু করতে সফটওয়্যার সেট করেন। এতে হার্ডওয়্যার পরিবর্তন হয় না।”
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, “১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশের হার্ডওয়্যার। সম্প্রতি ভয়েস অব আমেরিকাকে দেয়া অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সাক্ষাৎকার ঘিরে কেউ কেউ ভুল ব্যাখ্যা দিচ্ছেন। অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস গত ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নিতে ঢাকায় আসার পর হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের বলেন, ‘জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে জনগণ নেতৃত্ব দিয়েছে। এটি আমাদের দ্বিতীয় স্বাধীনতা। প্রথম স্বাধীনতা ১৯৭১ সালে দেশের গৌরবময় স্বাধীনতা যুদ্ধ।’”
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘প্রসঙ্গত, ১৯৭১ সালে অধ্যাপক ইউনূস মিডল টেনেসি স্টেট ইউনিভার্সিটির সহকারী অধ্যাপক ছিলেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণার পরপরই তিনি বাংলাদেশ সিটিজেনস কমিটি গঠন করেন এবং বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিতে মার্কিন সরকারকে রাজি করানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্রব্যাপী প্রচারণা শুরু করেন। পাকিস্তানি সেনাবাহিনী কর্তৃক বাংলাদেশে সংঘটিত গণহত্যা সম্পর্কে বিশ্বকে অবহিত করার জন্য তিনি বাংলাদেশ নিউজলেটার প্রকাশ করেছিলেন।’
মন্তব্য