ইসরায়েলের ফোন হ্যাকিং সফটওয়্যার পেগাসাস দিয়ে যাদের ফোনে আড়ি পাতা হয়েছিল, তাদের মধ্যে আছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইম্যানুয়েল মাখোঁ, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান, দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসাসহ ১৪ জন রাষ্ট্রনেতা ও সরকারপ্রধান।
ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে এ তথ্য। এতে বলা হয়, পেগাসাসের বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান ইসরায়েলের এনএসও কোম্পানির ফাঁস হওয়া ডেটাবেসে এই নেতারা ছাড়াও ৩৪ দেশের কূটনীতিক, সেনাপ্রধান ও শীর্ষ রাজনীতিবিদদের ফোন নম্বর চিহ্নিত হয়েছে।
ফাঁস হওয়া তালিকায় থাকা বেশ কিছু ফোন নম্বর সরবরাহ করেছে এনএসওর গ্রাহক কয়েকটি দেশের সরকার। ইসরায়েলি স্পাইওয়্যার প্রতিষ্ঠানটির দাবি, ফাঁস হওয়া ডেটাবেসের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই।
এনএসওর দাবি, প্রতিষ্ঠানটির গ্রাহকদের কারও লক্ষ্য ছিলেন না ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট। অর্থাৎ নিজস্ব স্পাইওয়্যার পেগাসাস ব্যবহারের মাধ্যমে মাখোঁর ওপর প্রতিষ্ঠানটি নজরদারি করেনি।
তালিকায় থাকা নম্বরের মানেই সেটিতে আড়ি পাতা হয়েছিল, এমনটা নয় বলে দাবি এনএসওর।
কিন্তু তালিকাটিতে যাদের ফোন নম্বর আছে, তাদের সঙ্গে এনএসওর বিভিন্ন সরকারি গ্রাহকদের কোনো না কোনো স্বার্থ জড়িত বলে ধারণা করা হচ্ছে। এদের মধ্যে অনেকের ওপর পরবর্তী সময়ে নজরদারি হয়েছে বলে তাদের ফোনের ফরেনসিক বিশ্লেষণের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ অস্বীকার করে এনএসওর দাবি, সন্ত্রাসবাদ ও অপরাধী কার্যকলাপের বিরুদ্ধে বৈধ অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে শুধু সরকারি গ্রাহকদের সেবা দেয় নজরদারিতে সহযোগিতা করে প্রতিষ্ঠানটি।
পেগাসাসের মাধ্যমে নজরদারির অভিযোগ সম্মিলিতভাবে খতিয়ে দেখছে ওয়াশিংটন পোস্ট, দ্য গার্ডিয়ানসহ ১০টি দেশের সংবাদমাধ্যমের একটি আন্তর্জাতিক কনসোর্টিয়াম।
ব্যক্তিগত ফোন নম্বর বাছাইয়ের ধরন গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করে নজরদারিতে জড়িত সরকারগুলোকে চিহ্নিত করার চেষ্টা করেছেন অনুসন্ধানী সংবাদকর্মীরা।
ফোনে নজরদারির শিকার শীর্ষ রাজনীতিবিদদের তালিকায় আছেন:
দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা। তার ফোনে আড়ি পাতা হয়েছিল ২০১৯ সালে। রুয়ান্ডা সরকার তার ওপর নজরদারি চালিয়েছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইম্যানুয়েল মাখোঁ। ২০১৯ সালের কোনো একসময়ে মরক্কোর সরকার তার ফোনে আড়ি পাতে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিষয়টি প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানানো হয়েছে মাখোঁর কার্যালয় থেকে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক তেদ্রোস আধানম। তার প্রতিও ২০১৯ সালে আগ্রহ দেখায় মরক্কো সরকার।
গত সপ্তাহে পদত্যাগ করা লেবাননের সাবেক প্রধানমন্ত্রী সাদ হারিরি। ২০১৮ ও ২০১৯ সালে তার ফোন নম্বর নজরদারির জন্য বাছাই করে সংযুক্ত আরব আমিরাত।
ইউরোপিয়ান কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট চার্লস মিশেল। তিনি বেলজিয়ামের প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন ২০১৯ সালে তার ফোন নম্বরও সরবরাহ করে মরক্কো সরকার।
মরক্কোর রাজা ষষ্ঠ মোহাম্মদ। নিজ দেশের নিরাপত্তা বাহিনীই ২০১৯ সালে তার ওপর নজরদারির উদ্যোগ নেয়।
মরক্কোর প্রধানমন্ত্রী সাদেদিন ওসমানি। তার ওপরেও ২০১৮ ও ২০১৯ সালে নিজ দেশ থেকেই কেউ নজরদারি চালায়।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। ২০১৯ সালে ভারতের অনুরোধে তার ওপর নজরদারির উদ্যোগ নেয়া হয়।
এ ছাড়াও তালিকায় আছেন মেক্সিকোর সাবেক প্রেসিডেন্ট ফিরিপ কালডেরন ও যুক্তরাষ্ট্রের ইরান পরমাণু চুক্তিবিষয়ক কূটনীতিক রবার্ট ম্যালে। ম্যালের ওপরেও ২০১৯ সালে নজরদারির আগ্রহ দেখিয়েছিল মরক্কো।
এনএসওর দাবি, যুক্তরাষ্ট্রের কোনো ফোন নম্বরে আড়ি পাতায় প্রতিষ্ঠানটির নজরদারি প্রযুক্তি ব্যবহার করা সম্ভব নয়।
মাখোঁ, রাজা ষষ্ঠ মোহাম্মদ বা তেদ্রোস আধানমের ফোনে কখনও নজরদারি করেনি বলেও দাবি করেছে এনএসও।
এনএসওর আইনজীবীরা জানান, পেগাসাস ব্যবহার করে নজরদারির জন্য নম্বর বাছাই হয়েছিল মানেই এই নয় যে নজরদারি চালানো হয়েছে।
নজরদারি প্রতিষ্ঠানটির দাবি, গ্রাহকদের বিষয়ে তথ্য নেই তাদের কাছে। নজরদারির পর অনুসন্ধান হলেই কেবল এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটিকে তথ্য দিতে বাধ্য থাকে গ্রাহকরা।
ফরেনসিক পরীক্ষায় ফাঁস হওয়া ডেটাবেস থেকে প্রাপ্ত ৬৭টি ফোন নম্বরের নমুনা পরীক্ষা করে ৩৭টিতে পেগাসাস ব্যবহার করে নজরদারির প্রমাণ মিলেছে। সবগুলো ফোন নম্বরই মানবাধিকারকর্মী, সাংবাদিক ও আইনজীবীদের।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের সিকিউরিটি ল্যাব এসব ফরেনসিক বিশ্লেষণে সহযোগিতা করেছে।
ফাঁস হওয়া তথ্যে আভাস মিলেছে, মিসরের প্রধানমন্ত্রীসহ দেশটির বেশ কয়েকজন শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তাদের ওপরে নজরদারির আগ্রহ দেখিয়েছিল সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। যদিও স্বৈরশাসক হিসেবে পরিচিত মিসরের প্রেসিডেন্ট আব্দেল ফাত্তাহ আল-সিসির সঙ্গে সৌদি ও আমিরাতের সুসম্পর্ক বিদ্যমান।
এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রঘেঁষা ইরাকের প্রেসিডেন্ট বারহাম সালেহর ওপরেও নজরদারি করতে চেয়েছিল সৌদি ও আমিরাত।
এ বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি সৌদি আরব বা আরব আমিরাত।
আরও পড়ুন:ফরিদপুরের মধুখালীর পঞ্চপল্লীতে দুই ভাইকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় ডুমাইন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ১ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বারের সম্পৃক্ততার তথ্যপ্রমাণ পেয়েছে জেলা প্রশাসন।
জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে শুক্রবার সন্ধ্যায় মধুখালীর ঘটনা পরবর্তী সামগ্রিক বিষয় নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান ডিসি কামরুল আহসান তালুকদার।
সংবাদ সম্মেলনে চেয়ারম্যান শাহ আসাদুজ্জামান তপন ও ওয়ার্ড মেম্বার অজিত কুমার সরকারকে ধরিয়ে দিতে পারলে বা তাদের ধরতে কোনো প্রকার তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করলে আর্থিক পুরস্কারের ঘোষণা দেন তিনি।
ডিসি বলেন, ‘চেয়ারম্যান ও মেম্বার এখন পলাতক। এরই মধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের শনাক্ত করতে বিভিন্ন জেলায় অভিযান পরিচালনা করেছে। বিমানবন্দর ও সীমান্তে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে, যাতে তারা দেশত্যাগ করতে না পারে।
‘এ বিষয়ে রাষ্ট্রীয়ভাবে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। চেয়ারম্যান ও মেম্বারকে ধরিয়ে দিতে যেকোনো প্রকার তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করলে তাদের পুরস্কৃত করা হবে।’
গত ১৮ এপ্রিল রাতে ডুমাইন ইউনিয়নের কৃষ্ণনগর গ্রামের পঞ্চপল্লীতে মন্দিরে আগুন লাগার ঘটনাকে কেন্দ্র করে সন্দেহের জেরে দুই শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় আহত হন আরও পাঁচ শ্রমিক।
পিটুনিতে হতাহতের ঘটনায় তিনটি মামলা করা হয়। এরই মধ্যে তিন মামলায় পুলিশ ১২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
আরও পড়ুন:ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির নোয়াখালী জোনের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
কুমিল্লার ম্যাজিক প্যারাডাইজ পার্কে শুক্রবার এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
ব্যাংকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর মুহাম্মদ মুনিরুল মওলা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
প্রতিষ্ঠানটির সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট মাকসুদুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর মুহাম্মদ কায়সার আলী, ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর মুহাম্মদ শাব্বির এবং সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট আবু ছাঈদ মো. ইদ্রিস।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন নোয়াখালী জোনপ্রধান এ. এফ. এম আনিছুর রহমান।
সম্মেলনে ব্যাংকের কুমিল্লা জোনপ্রধান মুনিরুল ইসলাম, সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট খালেদ মাহমুদ রায়হান, এফসিসিএসহ প্রধান কার্যালয়ের নির্বাহী, নোয়াখালী জোনের অধীন শাখাগুলোর প্রধান, উপশাখা ইনচার্জ, সব পর্যায়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:বিএনপির সঙ্গে দাসত্বের তকমা লেগে আছে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ক্ষমতা পাওয়ার জন্য বিদেশি প্রভুদের দাসত্ব করে সাবেক ক্ষমতাসীন দলটি।
জাতীয় নেতা শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের ৬২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় তিন নেতার মাজারে তার সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে এ কথা বলেন তিনি।
বিএনপির বিষয়ে কাদের বলেন, ‘তারা জনগণের সমর্থনকে মূল মনে করে না। তারা মনে করে যে, বিদেশি প্রভুরদের দাসত্ব করলে ক্ষমতা রক্ষা করা যায়, ক্ষমতায় যাওয়া যায়।’
তার অভিযোগ, দাসত্ব করে কীভাবে ক্ষমতায় যাওয়া যায়, সেই দুরভিসন্ধি করছে বিএনপি।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে বিএনপিকে গণতান্ত্রিক দল আমি মনে করি না। কারণ তাদের ইতিহাসটাই হলো গণতন্ত্র হত্যার। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার কোনো নজির নেই। তারা গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে, প্রহসনে পরিণত করেছে এবং গণতান্ত্রিক বিধি-বিধান তারা দলের মধ্যে কোনোদিন মানেনি।
‘আজকে দলটির যে নেতারা বড় কথা বলেন, তারা কবে দলীয় কাউন্সিল করেছে এবং তাদের কোথায় কাউন্সিল হয়েছে? সাত-আট বছর আগে লা মেরিডিয়ানে তাদের কেন্দ্রীয় কমিটির মিটিং হয়েছে। ৫০১ জনের জাম্বুজেট মার্কা কমিটি। কাজেই যাদের নিজেদের দলের ভেতরেই গণতন্ত্র নেই, তারা দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবে, এ আশা আমরা করি না।’
তিন নেতার মাজারে শনিবার আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সহযোগী সংগঠন শ্রদ্ধা নিবেদন করে। প্রথমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে ও পরে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে ওই সময় উপস্থিত ছিলেন দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা।
পরে সাংবাদিকদের কাছে বাংলার সাধারণ মানুষের কল্যাণে শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের অবদান তুলে ধরেন কাদের।
তিনি বলেন, ‘তিনি (শেরো বাংলা) আপাদমস্তক একজন পারফেক্ট বাঙালি ছিলেন। এ দেশে সাধারণ মানুষের মাঝে যারা রাজনীতিকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন, তাদের মধ্যে অন্যতম জাতীয় নেতা শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক। সাধারণ মানুষকে এই দেশে স্বাধীনতার মন্ত্রে উজ্জীবিত করেছিলেন সর্বকালের সবার সেরা বাঙালি জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান। শেরে বাংলাকে গ্রাম- বাংলার কৃষকরা কোনোদিন ভুলতে পারবে না।
‘তিনি চিরদিন তাদের কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন প্রজাস্বত্ব আইন এবং ঋণ সালিশি বোর্ড গঠন করে তিনি মহাজনদের নিপীড়ন-অত্যাচার থেকে বাংলার কৃষককূলকে রক্ষা করেছিলেন। সে জন্য তিনি এখনও স্মরণীয় হয়ে আছেন। আজকের দিনে আমাদের যে প্রত্যয়, যে অঙ্গীকার, সেটা হচ্ছে যে স্বপ্ন দেখেছিলেন বঙ্গবন্ধু, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, মওলানা ভাসানী, শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক—অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গঠনের।’
আরও পড়ুন:কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে মোবাইল ফোনে কথা বলার সময় ঢলে পড়া এক পর্যটককে মৃত বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে শনিবার সকাল পৌনে ৯টার দিকে ওই পর্যটক অসুস্থ হয়ে পড়েন বলে জানান সাগরে গোসলরত পর্যটকদের নিরাপত্তায় নিয়োজিত সি সেইফ লাইফ গার্ডের সুপারভাইজার মো. ওসমান গণি।
প্রাণ হারানো মতিউর রহমানের (৪০) বাড়ি কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলায়।
ওসমান গণি বলেন, ‘শনিবার সকাল থেকে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে সি সেইফ লাইফ গার্ডের কর্মীরা গোসলরত পর্যটকদের নিরাপত্তায় দায়িত্বরত ছিলেন। সকাল পৌনে ৯টার দিকে সৈকতের বালিয়াড়িতে ওই পর্যটক ঘোরাঘুরি করছিলেন। একপর্যায়ে ফোনে কথা বলার সময় তিনি বালিয়াড়িতে ঢলে পড়ে অবচেতন হন।’
তিনি জানান, লাইফ গার্ড কর্মীরা ঘটনাটি দেখে তাৎক্ষণিক ওই পর্যটককে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাকে মৃত বলে জানান।
কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) আশিকুর রহমান বলেন, ‘সকাল ৯টার পরপরই সৈকতের লাইফ গার্ড কর্মীরা এক পর্যটককে অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসেন, কিন্তু হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু ঘটে।’
আরএমও বলেন, তীব্র গরমে হিট স্ট্রোকে নাকি অন্য কোনো কারণে ওই পর্যটক মারা গেছেন, তা ময়নাতদন্তের পর নিশ্চিত হওয়া যাবে।
মতিউরের মরদেহ কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে বলেও জানান এ চিকিৎসক।
আরও পড়ুন:বাগেরহাটের খুলনা-মোংলা মহাসড়কে ট্রাকের চাপায় তিন ভ্যানযাত্রী নিহত হয়েছেন।
উপজেলার চেয়ারম্যান বাড়ি মোড় এলাকায় শনিবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
প্রাণ হারানো তিনজন হলেন বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার ঝনঝননিয়া গ্রামের সাঈদ মোড়ল (৪৫), একই গ্রামের মো. আজাদ (৩৫) ও কুমরাই গাববুনিয়া গ্রামের মো. মনি (৪৫)।
এ ঘটনায় ট্রাকটির চালক যশোরের চৌগাছার চানাদা-আফরা গ্রামের বাসিন্দা গাজি সাফায়েত হোসেনকে (১৮) আটক ও ট্রাকটি জব্দ করা হয়।
বাগেরহাট জেলা পুলিশের মিডিয়া সেলের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বাবুল আক্তার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, সকালে মোংলাগামী একটি ট্রাক বিপরীত দিক থেকে আসা একটি যাত্রীবাহী ভ্যানকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলে একজন নিহত ও দুইজন গুরুতর আহত হন। পরে আহতদের রামপাল উপজেলা হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানে তাদের মৃত্যু হয়।
তিনি জানান, দুর্ঘটনার পরপরই পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা দুর্ঘটনাস্থলে গিয়ে সাঈদ মোড়লের মরদেহসহ আহত দুইজনকে ট্রাকের চাকার নিচ থেকে উদ্ধার করে রামপাল উপজেলা হাসপাতালে পাঠায়।
খুলনা-মোংলা জাতীয় মহাসড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে বলে জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন:দেশের তিন জেলার ওপর দিয়ে অতি তীব্র এবং পাঁচ জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বা দাবদাহ বয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর।
রাষ্ট্রীয় সংস্থাটি শনিবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এমন বার্তা দিয়েছে।
পূর্বাভাসে সিনপটিক অবস্থা নিয়ে বলা হয়, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দুই-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্যান্য জায়গায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
তাপপ্রবাহ বা দাবদাহ নিয়ে বলা হয়, রাজশাহী, চুয়াডাঙ্গা ও পাবনা জেলার ওপর দিয়ে অতি তীব্র দাবদাহ এবং টাঙ্গাইল, বগুড়া, বাগেরহাট, যশোর ও কুষ্টিয়া জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। মৌলভীবাজার, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও বান্দরবান জেলার পাশাপাশি রংপুর, ময়মনসিংহ ও বরিশাল বিভাগ এবং ঢাকা, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের অবশিষ্টাংশের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের দাবদাহ বয়ে যাচ্ছে, যা অব্যাহত থাকতে পারে।
দেশের কোনো অঞ্চলের তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৭ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে সেখানে মৃদু তাপপ্রবাহ বা দাবদাহ বইছে ধরা হয়।
তাপমাত্রা ৩৮ থেকে ৩৯ দশমিক ৯ ডিগ্রির মধ্যে থাকলে মাঝারি এবং ৪০ থেকে ৪১ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে তীব্র দাবদাহ ধরা হয়। অন্যদিকে তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার বেশি হলে বলা হয় অতি তীব্র দাবদাহ।
চুয়াডাঙ্গায় শুক্রবার বেলা তিনটায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪২ দশমিক সাত ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা চলতি মৌসুমে দেশের সর্বোচ্চ। একই দিনে পাবনার ঈশ্বরদীতে ৪২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।
তাপমাত্রার বিষয়ে অধিদপ্তর জানায়, সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিভাব বিরাজমান থাকতে পারে।
আরও পড়ুন:মাদারীপুরের কালকিনিতে প্রবাসীর বাড়িতে হামলা ও লুটপাটের ঘটনায় মামলা করায় ফের হামলার ঘটনা ঘটেছে।
এ সময় ‘হাতবোমার’ আঘাতে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা।
উপজেলার আলীনগর ইউনিয়নের দক্ষিণ কানাইপুরে শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। আহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
স্থানীয়রা জানান, গত ২৬ মার্চ সন্ধ্যায় দক্ষিণ কানাইপুরের প্রয়াত মালেক সরদারের ছেলে দুবাই প্রবাসী রিপন সরদার বাড়িতে আসেন। এ খবর পেয়ে পূর্ব শত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষ একই এলাকার আনসার হাওলাদারের ছেলে দেলোয়ার হাওলাদার লোকজন নিয়ে রিপনের বাড়িতে হামলা চালায়। এ সময় ঘরে থাকা মূল্যবান আসবাবপত্র ভাঙচুর ও লুট করে নিয়ে যায় হামলাকারীরা।
এ ঘটনায় পরবর্তীতে গত ২৩ এপ্রিল রিপন সরদারের স্ত্রী রুনিয়া বেগম বাদী হয়ে কালকিনি থানায় ২২ জনের নামে একটি মামলা করেন।
স্থানীয়দের ভাষ্য, এরই জেরে শুক্রবার সন্ধ্যায় রিপনের চাচাত ভাই ও আলীনগর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান শাহীদ পারভেজের সমর্থক জামাল সরদার স্থানীয় বাজারে যান। মাঝপথে সাবেক চেয়ারম্যান মিলন সরদারের কর্মী মহসিন লোকজন নিয়ে কুপিয়ে তাকে জখম করে বলে অভিযোগ ওঠে।
পরে উভয়পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় একাধিক হাতবোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে আহত হন অন্তত ১৫ জন।
মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আলাউল হাসান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, এলাকায় উত্তেজনা থাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। রিপন হাওলাদারের আগের ঘটনার মামলা দায়েরকে কেন্দ্র করেই এ হামলার ঘটনা ঘটেছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য