ইসরায়েলের ফোন হ্যাকিং সফটওয়্যার পেগাসাস দিয়ে যাদের ফোনে আড়ি পাতা হয়েছিল, তাদের মধ্যে আছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইম্যানুয়েল মাখোঁ, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান, দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসাসহ ১৪ জন রাষ্ট্রনেতা ও সরকারপ্রধান।
ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে এ তথ্য। এতে বলা হয়, পেগাসাসের বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান ইসরায়েলের এনএসও কোম্পানির ফাঁস হওয়া ডেটাবেসে এই নেতারা ছাড়াও ৩৪ দেশের কূটনীতিক, সেনাপ্রধান ও শীর্ষ রাজনীতিবিদদের ফোন নম্বর চিহ্নিত হয়েছে।
ফাঁস হওয়া তালিকায় থাকা বেশ কিছু ফোন নম্বর সরবরাহ করেছে এনএসওর গ্রাহক কয়েকটি দেশের সরকার। ইসরায়েলি স্পাইওয়্যার প্রতিষ্ঠানটির দাবি, ফাঁস হওয়া ডেটাবেসের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই।
এনএসওর দাবি, প্রতিষ্ঠানটির গ্রাহকদের কারও লক্ষ্য ছিলেন না ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট। অর্থাৎ নিজস্ব স্পাইওয়্যার পেগাসাস ব্যবহারের মাধ্যমে মাখোঁর ওপর প্রতিষ্ঠানটি নজরদারি করেনি।
তালিকায় থাকা নম্বরের মানেই সেটিতে আড়ি পাতা হয়েছিল, এমনটা নয় বলে দাবি এনএসওর।
কিন্তু তালিকাটিতে যাদের ফোন নম্বর আছে, তাদের সঙ্গে এনএসওর বিভিন্ন সরকারি গ্রাহকদের কোনো না কোনো স্বার্থ জড়িত বলে ধারণা করা হচ্ছে। এদের মধ্যে অনেকের ওপর পরবর্তী সময়ে নজরদারি হয়েছে বলে তাদের ফোনের ফরেনসিক বিশ্লেষণের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ অস্বীকার করে এনএসওর দাবি, সন্ত্রাসবাদ ও অপরাধী কার্যকলাপের বিরুদ্ধে বৈধ অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে শুধু সরকারি গ্রাহকদের সেবা দেয় নজরদারিতে সহযোগিতা করে প্রতিষ্ঠানটি।
পেগাসাসের মাধ্যমে নজরদারির অভিযোগ সম্মিলিতভাবে খতিয়ে দেখছে ওয়াশিংটন পোস্ট, দ্য গার্ডিয়ানসহ ১০টি দেশের সংবাদমাধ্যমের একটি আন্তর্জাতিক কনসোর্টিয়াম।
ব্যক্তিগত ফোন নম্বর বাছাইয়ের ধরন গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করে নজরদারিতে জড়িত সরকারগুলোকে চিহ্নিত করার চেষ্টা করেছেন অনুসন্ধানী সংবাদকর্মীরা।
ফোনে নজরদারির শিকার শীর্ষ রাজনীতিবিদদের তালিকায় আছেন:
দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা। তার ফোনে আড়ি পাতা হয়েছিল ২০১৯ সালে। রুয়ান্ডা সরকার তার ওপর নজরদারি চালিয়েছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইম্যানুয়েল মাখোঁ। ২০১৯ সালের কোনো একসময়ে মরক্কোর সরকার তার ফোনে আড়ি পাতে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিষয়টি প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানানো হয়েছে মাখোঁর কার্যালয় থেকে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক তেদ্রোস আধানম। তার প্রতিও ২০১৯ সালে আগ্রহ দেখায় মরক্কো সরকার।
গত সপ্তাহে পদত্যাগ করা লেবাননের সাবেক প্রধানমন্ত্রী সাদ হারিরি। ২০১৮ ও ২০১৯ সালে তার ফোন নম্বর নজরদারির জন্য বাছাই করে সংযুক্ত আরব আমিরাত।
ইউরোপিয়ান কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট চার্লস মিশেল। তিনি বেলজিয়ামের প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন ২০১৯ সালে তার ফোন নম্বরও সরবরাহ করে মরক্কো সরকার।
মরক্কোর রাজা ষষ্ঠ মোহাম্মদ। নিজ দেশের নিরাপত্তা বাহিনীই ২০১৯ সালে তার ওপর নজরদারির উদ্যোগ নেয়।
মরক্কোর প্রধানমন্ত্রী সাদেদিন ওসমানি। তার ওপরেও ২০১৮ ও ২০১৯ সালে নিজ দেশ থেকেই কেউ নজরদারি চালায়।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। ২০১৯ সালে ভারতের অনুরোধে তার ওপর নজরদারির উদ্যোগ নেয়া হয়।
এ ছাড়াও তালিকায় আছেন মেক্সিকোর সাবেক প্রেসিডেন্ট ফিরিপ কালডেরন ও যুক্তরাষ্ট্রের ইরান পরমাণু চুক্তিবিষয়ক কূটনীতিক রবার্ট ম্যালে। ম্যালের ওপরেও ২০১৯ সালে নজরদারির আগ্রহ দেখিয়েছিল মরক্কো।
এনএসওর দাবি, যুক্তরাষ্ট্রের কোনো ফোন নম্বরে আড়ি পাতায় প্রতিষ্ঠানটির নজরদারি প্রযুক্তি ব্যবহার করা সম্ভব নয়।
মাখোঁ, রাজা ষষ্ঠ মোহাম্মদ বা তেদ্রোস আধানমের ফোনে কখনও নজরদারি করেনি বলেও দাবি করেছে এনএসও।
এনএসওর আইনজীবীরা জানান, পেগাসাস ব্যবহার করে নজরদারির জন্য নম্বর বাছাই হয়েছিল মানেই এই নয় যে নজরদারি চালানো হয়েছে।
নজরদারি প্রতিষ্ঠানটির দাবি, গ্রাহকদের বিষয়ে তথ্য নেই তাদের কাছে। নজরদারির পর অনুসন্ধান হলেই কেবল এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটিকে তথ্য দিতে বাধ্য থাকে গ্রাহকরা।
ফরেনসিক পরীক্ষায় ফাঁস হওয়া ডেটাবেস থেকে প্রাপ্ত ৬৭টি ফোন নম্বরের নমুনা পরীক্ষা করে ৩৭টিতে পেগাসাস ব্যবহার করে নজরদারির প্রমাণ মিলেছে। সবগুলো ফোন নম্বরই মানবাধিকারকর্মী, সাংবাদিক ও আইনজীবীদের।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের সিকিউরিটি ল্যাব এসব ফরেনসিক বিশ্লেষণে সহযোগিতা করেছে।
ফাঁস হওয়া তথ্যে আভাস মিলেছে, মিসরের প্রধানমন্ত্রীসহ দেশটির বেশ কয়েকজন শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তাদের ওপরে নজরদারির আগ্রহ দেখিয়েছিল সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। যদিও স্বৈরশাসক হিসেবে পরিচিত মিসরের প্রেসিডেন্ট আব্দেল ফাত্তাহ আল-সিসির সঙ্গে সৌদি ও আমিরাতের সুসম্পর্ক বিদ্যমান।
এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রঘেঁষা ইরাকের প্রেসিডেন্ট বারহাম সালেহর ওপরেও নজরদারি করতে চেয়েছিল সৌদি ও আমিরাত।
এ বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি সৌদি আরব বা আরব আমিরাত।
আরও পড়ুন:কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে মোবাইল ফোনে কথা বলার সময় ঢলে পড়া এক পর্যটককে মৃত বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে শনিবার সকাল পৌনে ৯টার দিকে ওই পর্যটক অসুস্থ হয়ে পড়েন বলে জানান সাগরে গোসলরত পর্যটকদের নিরাপত্তায় নিয়োজিত সি সেইফ লাইফ গার্ডের সুপারভাইজার মো. ওসমান গণি।
প্রাণ হারানো মতিউর রহমানের (৪০) বাড়ি কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলায়।
ওসমান গণি বলেন, ‘শনিবার সকাল থেকে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে সি সেইফ লাইফ গার্ডের কর্মীরা গোসলরত পর্যটকদের নিরাপত্তায় দায়িত্বরত ছিলেন। সকাল পৌনে ৯টার দিকে সৈকতের বালিয়াড়িতে ওই পর্যটক ঘোরাঘুরি করছিলেন। একপর্যায়ে ফোনে কথা বলার সময় তিনি বালিয়াড়িতে ঢলে পড়ে অবচেতন হন।’
তিনি জানান, লাইফ গার্ড কর্মীরা ঘটনাটি দেখে তাৎক্ষণিক ওই পর্যটককে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাকে মৃত বলে জানান।
কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) আশিকুর রহমান বলেন, ‘সকাল ৯টার পরপরই সৈকতের লাইফ গার্ড কর্মীরা এক পর্যটককে অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসেন, কিন্তু হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু ঘটে।’
আরএমও বলেন, তীব্র গরমে হিট স্ট্রোকে নাকি অন্য কোনো কারণে ওই পর্যটক মারা গেছেন, তা ময়নাতদন্তের পর নিশ্চিত হওয়া যাবে।
মতিউরের মরদেহ কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে বলেও জানান এ চিকিৎসক।
আরও পড়ুন:বাগেরহাটের খুলনা-মোংলা মহাসড়কে ট্রাকের চাপায় তিন ভ্যানযাত্রী নিহত হয়েছেন।
উপজেলার চেয়ারম্যান বাড়ি মোড় এলাকায় শনিবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
প্রাণ হারানো তিনজন হলেন বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার ঝনঝননিয়া গ্রামের সাঈদ মোড়ল (৪৫), একই গ্রামের মো. আজাদ (৩৫) ও কুমরাই গাববুনিয়া গ্রামের মো. মনি (৪৫)।
এ ঘটনায় ট্রাকটির চালক যশোরের চৌগাছার চানাদা-আফরা গ্রামের বাসিন্দা গাজি সাফায়েত হোসেনকে (১৮) আটক ও ট্রাকটি জব্দ করা হয়।
বাগেরহাট জেলা পুলিশের মিডিয়া সেলের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বাবুল আক্তার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, সকালে মোংলাগামী একটি ট্রাক বিপরীত দিক থেকে আসা একটি যাত্রীবাহী ভ্যানকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলে একজন নিহত ও দুইজন গুরুতর আহত হন। পরে আহতদের রামপাল উপজেলা হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানে তাদের মৃত্যু হয়।
তিনি জানান, দুর্ঘটনার পরপরই পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা দুর্ঘটনাস্থলে গিয়ে সাঈদ মোড়লের মরদেহসহ আহত দুইজনকে ট্রাকের চাকার নিচ থেকে উদ্ধার করে রামপাল উপজেলা হাসপাতালে পাঠায়।
খুলনা-মোংলা জাতীয় মহাসড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে বলে জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন:দেশের তিন জেলার ওপর দিয়ে অতি তীব্র এবং পাঁচ জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বা দাবদাহ বয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর।
রাষ্ট্রীয় সংস্থাটি শনিবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এমন বার্তা দিয়েছে।
পূর্বাভাসে সিনপটিক অবস্থা নিয়ে বলা হয়, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দুই-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্যান্য জায়গায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
তাপপ্রবাহ বা দাবদাহ নিয়ে বলা হয়, রাজশাহী, চুয়াডাঙ্গা ও পাবনা জেলার ওপর দিয়ে অতি তীব্র দাবদাহ এবং টাঙ্গাইল, বগুড়া, বাগেরহাট, যশোর ও কুষ্টিয়া জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। মৌলভীবাজার, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও বান্দরবান জেলার পাশাপাশি রংপুর, ময়মনসিংহ ও বরিশাল বিভাগ এবং ঢাকা, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের অবশিষ্টাংশের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের দাবদাহ বয়ে যাচ্ছে, যা অব্যাহত থাকতে পারে।
দেশের কোনো অঞ্চলের তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৭ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে সেখানে মৃদু তাপপ্রবাহ বা দাবদাহ বইছে ধরা হয়।
তাপমাত্রা ৩৮ থেকে ৩৯ দশমিক ৯ ডিগ্রির মধ্যে থাকলে মাঝারি এবং ৪০ থেকে ৪১ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে তীব্র দাবদাহ ধরা হয়। অন্যদিকে তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার বেশি হলে বলা হয় অতি তীব্র দাবদাহ।
চুয়াডাঙ্গায় শুক্রবার বেলা তিনটায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪২ দশমিক সাত ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা চলতি মৌসুমে দেশের সর্বোচ্চ। একই দিনে পাবনার ঈশ্বরদীতে ৪২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।
তাপমাত্রার বিষয়ে অধিদপ্তর জানায়, সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিভাব বিরাজমান থাকতে পারে।
আরও পড়ুন:মাদারীপুরের কালকিনিতে প্রবাসীর বাড়িতে হামলা ও লুটপাটের ঘটনায় মামলা করায় ফের হামলার ঘটনা ঘটেছে।
এ সময় ‘হাতবোমার’ আঘাতে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা।
উপজেলার আলীনগর ইউনিয়নের দক্ষিণ কানাইপুরে শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। আহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
স্থানীয়রা জানান, গত ২৬ মার্চ সন্ধ্যায় দক্ষিণ কানাইপুরের প্রয়াত মালেক সরদারের ছেলে দুবাই প্রবাসী রিপন সরদার বাড়িতে আসেন। এ খবর পেয়ে পূর্ব শত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষ একই এলাকার আনসার হাওলাদারের ছেলে দেলোয়ার হাওলাদার লোকজন নিয়ে রিপনের বাড়িতে হামলা চালায়। এ সময় ঘরে থাকা মূল্যবান আসবাবপত্র ভাঙচুর ও লুট করে নিয়ে যায় হামলাকারীরা।
এ ঘটনায় পরবর্তীতে গত ২৩ এপ্রিল রিপন সরদারের স্ত্রী রুনিয়া বেগম বাদী হয়ে কালকিনি থানায় ২২ জনের নামে একটি মামলা করেন।
স্থানীয়দের ভাষ্য, এরই জেরে শুক্রবার সন্ধ্যায় রিপনের চাচাত ভাই ও আলীনগর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান শাহীদ পারভেজের সমর্থক জামাল সরদার স্থানীয় বাজারে যান। মাঝপথে সাবেক চেয়ারম্যান মিলন সরদারের কর্মী মহসিন লোকজন নিয়ে কুপিয়ে তাকে জখম করে বলে অভিযোগ ওঠে।
পরে উভয়পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় একাধিক হাতবোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে আহত হন অন্তত ১৫ জন।
মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আলাউল হাসান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, এলাকায় উত্তেজনা থাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। রিপন হাওলাদারের আগের ঘটনার মামলা দায়েরকে কেন্দ্র করেই এ হামলার ঘটনা ঘটেছে।
আরও পড়ুন:দাবদাহ আর বৃষ্টিহীনতায় পুড়ছে মাদারীপুরের পাটক্ষেত। বৈশাখের তপ্ত রোদে পাটক্ষেত নিয়ে বিপাকে পড়েছেন চাষিরা। পাটের জমিতে ঘন ঘন সেচ দেয়ায় যেমন উৎপাদন খরচ বাড়ছে, তেমনি খরায় জমির আগাছা পরিষ্কার করতে পারছেন না কৃষকরা।
এমনটা চলতে থাকলে উৎপাদন অনেকটা হুমকির মুখে পড়বে বলেও আশঙ্কা কৃষকদের।
সদর উপজেলার খোয়াজপুর ইউনিয়নের মধ্যচক এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দিনের তীব্র দাবদাহে পাট গাছ শুকিয়ে যাচ্ছে। ক্ষেতেই মরে যাচ্ছে পাট গাছ। কোথাও শুকিয়ে মাঠ ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। ফলে ঘন ঘন সেচ দিয়েও গাছের আশানুরূপ পরিবর্তন আনতে পারছেন না।
অনাবৃষ্টির কারণে পাট গাছের বৃদ্ধি না হওয়ায় জমিতে আগাছার পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে। সব মিলিয়ে উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পাচ্ছে দ্বিগুণ হারে।
কৃষকরা জানান, এবার প্রতি বিঘা পাট চাষ করতে খরচ হয়েছে ১৯ হাজার ৫০০ টাকার মতো। যা গতবারের চেয়ে অন্তত দুই হাজার বেশি। এরপরে গাছ শুকিয়ে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষার জন্য সেচ দিচ্ছেন তারা। ফলে আরও বাড়তে পারে উৎপাদন ব্যয়।
খোয়াজপুরের কৃষক আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘কয়েকদিনের প্রচণ্ড গরমে মাঠ ফেটে চৌচির। পাটগাছ শুকিয়ে যাচ্ছে। একটুখানি বড় হয়ে শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন চললে এবার পাট আবাদ ধসে পড়বে। অনেকেই সেচ দিলেও এক দুই দিন পরে আবার শুকিয়ে যায়। এতে মরার উপর খাড়ার ঘা হয়ে উঠছে।’
আর মাদারীপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, জেলায় এবার ৩৭ হাজার ৪০২ হেক্টর জমিতে পাট উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এরই মধ্যে অধিকাংশ জমিতে বপন কাজ শেষ হয়েছে এবং অনেক স্থানে চারা বড় হয়ে গেছে, কিন্তু রোগের কারণে পাটের ক্ষতি হওয়ায় চাষিদের বিকেলে পানি সেচ দেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন কৃষি কর্মকর্তারা।
এ ব্যাপারে কৃষি সম্প্রাসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক আবদুল মতিন বিশ্বাস বলেন, ‘এই গরমে পাটের কিছুটা ক্ষতি হচ্ছে সেটা অস্বীকার করার উপায় নেই, তবে কৃষকদের বলছি, যেন বিকেলে সেচের মাধ্যমে পাট গাছ জীবিত রাখে। এতে গাছ মরবে না।’
মাদারীপুর জেলায় অন্যতম অর্থকরী ফসল হিসেবে পাটের অবস্থান শীর্ষে। গত বছর পাটের মূল্য ভাল পাওয়ায় কৃষকরাও এবার বেশি জমিতে পাট চাষ করেছেন।
আরও পড়ুন:রাজধানীর খিলগাঁওয়ের গোড়ানে খেলতে গিয়ে একটি ভবনের ছাদ থেকে পড়ে এক শিশু নিহত হয়েছে।
শুক্রবার দুপুর ২টার দিকে পাঁচ তলা ভবনটির ছাদ থেকে পড়ে নিহত হয় সে।
নিহত শিশুর নাম খাদিজা আক্তার (৫)। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন শিশুটির ফুফা মোহাম্মদ ইসহাক মিয়া (২০ বছর)।
খাদিজার বাবা মোহাম্মদ ফয়সাল আহমাদ জানান, দুপুরে পাঁচ তলার ছাদে খাদিজা খেলাধুলা করার সময় ছাদ থেকে নিচে পড়ে যায়। এ সময় খাদিজার ফুফা দৌড়ে ধরতে গেলে তিনিও নিচে পড়ে যান।
তিনি জানান, পরে তাদেরকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে আসলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় খাদিজা রাত সাড়ে ৮টার দিকে মারা যায় এবং ফারিয়ার ফুফাকে ভর্তি রাখা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের গ্রামের বাড়ি ঝালকাঠি জেলার কাঠালিয়া থানা এলাকায়। খিলগাঁওয়ের গোড়ান নবাবীর মোড় বতর্মানে১৪৮ /১ রায়হান সাহেবের বাড়ির ভাড়াটিয়া আমরা।
ঢামেক পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ মহম্মদ বাচ্চু মিয়া বলেন, শিশুটির মরদেহ ঢামেক মর্গে রাখা হয়েছে। ময়নাতদন্ত ছাড়া স্বজনদের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে বলে খিলগাঁও থানার সাথে কথা হয়েছে।
তীব্র থেকে অতি তীব্র মাত্রায় পাবনা জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তাপপ্রবাহ। অসহনীয় দাবদাহে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। গত তিন-চার দিন তাপমাত্রা কিছুটা কমলেও শুক্রবার চলতি মৌসুমে জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে।
এদিন পাবনার ঈশ্বরদীতে ৪২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে যা জেলায় চলতি মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড। বৃহস্পতিবার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত রবিবার (২১ এপ্রিল) ঈশ্বরদীতে প্রথমবার ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।
ঈশ্বরদী আবহাওয়া অফিসের সহকারী পর্যবেক্ষক নাজমুল হক রঞ্জন জানান, জেলার তাপমাত্রা আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
অতি তীব্র তাপদাহে পাবনার মানুষের দৈনন্দিন কাজ ব্যাহত হচ্ছে। বিশেষ করে কৃষক, রিকশাচালক, ভ্যানচালক, ইটভাটার শ্রমিকসহ দিনমজুরদের জন্য অসহ্য হয়ে পড়েছে। এছাড়াও তীব্র গরমে ডায়রিয়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুসহ সব বয়সের মানুষ।
মন্তব্য