বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

লভ্যাংশই বলে ব্যাংক খাত ভালো অবস্থানে: অর্থমন্ত্রী

  •    
  • ১৯ আগস্ট, ২০২১ ১৭:০৫

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘ব্যাংকগুলো শেয়ার হোল্ডারদের ভালো লভ্যাংশ দিচ্ছে। যদি প্রফিট না হতো, তা হলে এত বেশি লভ্যাংশ দিতে পারত না। রাষ্ট্রায়ত্ত খাতের ব্যাংকগুলোও স্বাস্থ্যকর অবস্থায় আছে।’

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলো যে লভ্যাংশ বিতরণ করেছে, তাতে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, এই খাত অতীতের যে কোনো সময়ের তুলনায় ভালো চলছে।

বৃহস্পতিবার অর্থনৈতিক ও ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকেদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেছেন তিনি।

পুঁজিবাজার নিয়েও বেশ আশাবাদী মুস্তফা কামাল। তবে সাম্প্রতিক চাঙাভাবের সুযোগে কেউ কারসাজি করছে কি না, সেই বিষয়টি নিয়ে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির সঙ্গে আলোচনা করার কথা জানিয়েছেন তিনি।

এক প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, ‘ব্যাংকগুলো শেয়ার হোল্ডারদের ভালো লভ্যাংশ দিচ্ছে। যদি প্রফিট না হতো, তা হলে এত বেশি লভ্যাংশ দিতে পারত না। রাষ্ট্রায়ত্ত খাতের ব্যাংকগুলোও স্বাস্থ্যকর অবস্থায় আছে।’

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত যে ৩২টি ব্যাংক রয়েছে, তার মধ্যে একটি সদ্য লেনদেন শুরু করেছে। গত অর্থবছরে যে ৩১টি ব্যাংক ছিল, তার মধ্যে কেবল একটি লোকসানের কারণে লভ্যাংশ দিতে পারেনি। বাকি ব্যাংকগুলোর মধ্যে ২৫টি হয় নগদ বা বোনাস শেয়ারের পাশাপাশি নগদেও লভ্যাংশ দিয়েছে।

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। ফাইল ছবি

সব বিলিয়ে ব্যাংকগুলো ২ হাজার ৪৮৮ কোটি ৫৮ লাখ ৭২ হাজার ৬৯৮ কোটি ৭০ পয়সা নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। আর চলতি বছর অর্ধবার্ষিকে ব্যাংকগুলোর সিংহভাগই গতবছরের একই সময়ের তুলনায় বেশি আয় করেছে।

কোনো ব্যাংকের আয় দেড়গুণ হয়েছে, কোনো ব্যাংকের দুই গুণ, কোনো ব্যাংকের প্রায় আড়াই গুণ, কোনো ব্যাংকের তিন গুণের বেশি আবার কোনো ব্যাংকের আয় প্রায় চার গুণ হয়ে গেছে গত বছরের একই সময়ের তুলনায়।

তবে করোনার সময় খেলাপি ঋণও বেড়েছে খানিকরা। যদিও খেলাপির ভার বেশি পুঁজিবাজারের বাইরের ব্যাংকগুলোতে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘এক সময় ব্যাংকগুলো নগদ লভ্যাংশ দিত না। এখন তারা দিচ্ছে। ব্যাংকগুলো আগের চেয়ে শক্তিশালী অবস্থানে আছে বলেই শেয়ারধারীদেরকে ভালো লভ্যাংশ দিচ্ছে।’

আমানতকারীরা কী পাচ্ছে

এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, আমানতের সুদ হার ৩ শতাংশ, অথচ মূল্যস্ফীতি সাড়ে পাঁচ শতাংশ। আমানতকারীরা কী পাচ্ছেন?

জবাবে উল্টো অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘তাদের (আমানতকারীদের) অসুবিধা কী হচ্ছে?’

তিনি বলেন, ‘পৃথিবীর অনেক দেশেই ব্যাংকে টাকা রাখলে কিছুই পাওয়া যায় না। সে তুলনায় আমরা ভালো আছি।’

কেন্দ্রীয় ব্যাংক সম্প্রতি সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ব্যাংকে আমানতের সুদহার মূল্যস্ফীতির হারের চেয়ে কম হতে পারবে না

মন্ত্রী বলেন, কয়েক বছর ধরেই দেশে মূল্যস্ফীতির হার গড়ে পাঁচ থেকে সাড়ে পাঁচ শতাংশ। পৃথিবীর অনেক দেশের তুলনায় বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি স্থিতিশীল।

শেয়ারধারীরা এখন যে হারে নগদ লভ্যাংশ পাচ্ছে, ব্যাংকে সঞ্চয়ী হিসেবে টাকা রাখলেও এই হারে সুদ পাওয়া যায় না। সুদের হার কমতে কমতে কোনো কোনো ব্যাংক দেড় থেকে দুই শতাংশ নামিয়ে আসার পর কেন্দ্রীয় ব্যাংক সম্প্রতি সুদহার বাড়াতে হস্তক্ষেপ করেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, সুদহার কখনও মূল্যস্ফীতির চেয়ে কম হতে পারবে না। ফলে সুদহার সাড়ে ৫ শতাংশের বেশি করতে হবে।

ব্যাংকগুলো আমানতের সুদহার বাড়ালে ঋণের সুদহারও নিশ্চিতভাবেই বাড়িয়ে দেবে। সরকারের উদ্যোগে ঋণের সর্বোচ্চ সুদহার ৯ শতাংশ নির্ধারণ করা হলেও এখন সাড়ে ৬ থেকে ৮ শতাংশে ঋণ দিচ্ছে বেশিরভাগ ব্যাংক। এখন আমানতের সুদহার বাড়ানো হলে ব্যাংকগুলো নিশ্চিতভাবেই এই সুদহার আরও বাড়াবে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন ব্যাংক খাতের জন্য ঋণ ও আমানতের সুদ হার ৯/৬ বেঁধে দিয়েছিল, তখন এটা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়েছে। আমি মনে করি, তখন প্রধানমন্ত্রী যে উদ্যোগ নিয়েছিলেন, তা ছিল সময়োচিত পদক্ষেপ। তারই সুফল ফল পাচ্ছে দেশের ব্যাংকিং খাত।’

মুস্তফা কামাল বলেন, ‘সরকারি মালিকানাধীন ব্যাংকগুলো ভালোভাবে চলছে। তাদের বলে দেয়া হয়েছে, আয় করে ব্যয় করতে হবে। সরকারের তরফ থেকে আর কোনো সহযোগিতা করা হবে না।’

পুঁজিবাজারে হস্তক্ষেপ নয়

এক সাংবাদিক জানতে চান, শেয়ারবাজার আবার নতুন উচ্চতায় উঠেছে। এখানে নতুন করে অস্থিরতা তৈরির শঙ্কার আছে। এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী হস্তক্ষেপ করবেন কি-না?

জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের অর্থনীতি এখন সুদৃঢ়। যে কারণে পুঁজিবাজার চাঙা হচ্ছে। এখানে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা চলতে দেয়া যাবে না। তারপরও আমি বিষয়টি আমলে নিয়েছি। পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলব।’

২০১০ সালের মহাধসের পর গত এক বছরে পুঁজিবাজার আবার চাঙা হয়ে উঠেছে। ২০২০ সালের ২ জুলাই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ছিল তিন হাজার ৯৮৬ পয়েন্ট। টানা দুই দিন সূচক কমার পরেও এখন সেই সূচক ৬ হাজার ৭৬০ পয়েন্ট।

বিনিয়োগকারীরা যে অনেক বেশি সক্রিয় হয়ে উঠেছে, সেটি লেনদেনেই স্পষ্ট। চলতি সপ্তাহে ইতিহাসের চতুর্থ সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে। গত ১৬ আগস্ট হাতবদল হয়েছে ২ হাজার ৯৫৩ কোটি টাকার শেয়ার।

সূচকের অবস্থান এখন ২০১০ সালের ৮ ফেব্রুয়ারির পর সর্বোচ্চ। সেদিন ডিএসই সূচক ছিল ৬ হাজার ৮২২ পয়েন্ট।

পুঁজিবাজারের চাঙাভাবের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছে বন্ধ ও লোকসানি কোম্পানিগুলোর শেয়ারের অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধি। এর পেছনে কারসাজি আছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

গত বছর করোনার কারণে ৬৬ দিনের সাধারণ ছুটি শেষে ২ জুলাই পুঁজিবাজার খোলার পর থেকেই দেখা দিয়েছে চাঙাভাব

নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি সম্প্রতি ৯টি কোম্পানির শেয়ারের দর বৃদ্ধির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে এই ৯টি কোম্পানির মধ্যে বেশ কয়েকটির মূল্য সংবেদনশীল তথ্য আছে। আরও অন্তত ২০ থেকে ২৫টি কোম্পানির শেয়ারদর কী কারণে বাড়ছে, তা নিয়ে তৈরি হয়েছে বিস্ময়।

অন্যান্য প্রসঙ্গ

আরেক সাংবাদিক জানতে চান এনবিআরে জনবল নিয়োগের প্রস্তাব দীর্ঘ দিন ধরে ঝুলে আছে, এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী কিছু জানেন কিনা।

অর্থমন্ত্রী বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে তিনি অবগত নন। খোঁজ নিয়ে দেখবেন এবং এনবিআরের চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলবেন।

মুস্তফা কামাল বলেন, রাজস্ব আয়কে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে। আর্থিক বিভাগের নতুন সচিব নিয়োগ পেয়েছেন।

বৃহস্পতিবারের বৈঠকে ১ হাজার ৯৬ কোটি টাকা ব্যয়ে আটটি দরপ্রস্তাবের অনুমোদন দেয়া হয়।

এ বিভাগের আরো খবর