চার বছর ধরে বন্ধ থাকা এমারেল্ড অয়েল যখন উৎপাদনে আসার ঘোষণা দিয়ে প্রস্তুতি নিচ্ছে, সে সময় কোম্পানির শেয়ারদর তিন গুণের বেশি বেড়েছে।
একে অস্বাভাবিক ভেবে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি তদন্তের ঘোষণা দিয়েছে। তবে মূল্য সংবেদনশীল তথ্য ছাড়াই এক বছরে ৭ থেকে ৮ বা ১০ গুণের বেশি দাম বেড়েছে, এমন কোম্পানির নাম নেই তদন্ত শুরুর নির্দেশ দেয়া ৯ কোম্পানির তালিকায়।
২০১০ সালের মহাধসের পর গত বছরের জুলাই থেকে পুঁজিবাজারের কোম্পানিগুলো তাদের হারিয়ে ফেলা শেয়ারদর ফিরে পাচ্ছে, তখন দ্বিতীয়বার এই ধরনের নির্দেশনা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে যে উৎকণ্ঠা বাড়াচ্ছে, এটা স্পষ্ট।
মঙ্গলবার লেনদেন চলাকালে দুপুরের দিকে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি জানায়, আনোয়ার গ্যালভানাইজিং, বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইনস্যুরেন্স, বিকন ফার্মা, জিবিবি পাওয়ার, এমারেল্ড অয়েল, ন্যাশনাল ফিড মিল, পেপার প্রসেসিং অ্যান্ড প্যাকেজিং, ঢাকা ডায়িং এবং ফুয়াং সিরামিক কোম্পানির অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির বিষয়টি তদন্ত হবে।
বিএসইসির পরিচালক শেখ মাহবুব উর রহমান, সহকারী পরিচালক জিয়াউর রহমান, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) উপমহাব্যবস্থাপক শফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া ও সেন্ট্রাল ডিপজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিডিবিএল) অ্যাপ্লিকেশন সাপোর্ট বিভাগের প্রধান মইনুল হক এই তদন্ত করবেন। কমিটির প্রধান হিসেবে কাজ করবেন শেখ মাহবুব উর রহমান।
আগামী ৬০ কার্যদিবসের মধ্যে কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এই নির্দেশ আসার সময় লেনদেন চলছিল। আর বাজার আগের দিনের চেয়ে বেশি ছিল ৩২ পয়েন্ট। লেনদেনও আগের দিনের প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত ছিল। তবে গণমাধ্যমে নির্দেশনার খবরটি আসার পর শুরু হয় দরপতন। অবশ্য শেষ বেলায় সবচেয়ে বড় বাজার মূলধনের ব্যাংক খাতের শেয়ারগুলোর অল্প করে দর বৃদ্ধি আর আর্থিক খাতে উল্লম্ফনের পর দিন শেষে সূচক কমে ১০ পয়েন্টের মতো।
লেনদেন শেষে সেই ৯ কোম্পানির শেয়ারের মূল্যবৃদ্ধির তদন্ত নিয়ে আলোচনা-পর্যালোচনা শুরু হয় পুঁজিবাজারসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ফেসবুক পেজে। তখনই স্পষ্ট হয় যে, একধরনের আতঙ্ক ছড়িয়েছে। ফলে সেই নির্দেশনার প্রভাবটি মূলত পড়েছে দ্বিতীয় দিন।
দ্বিতীয় দিন একপর্যায়ে সূচক কমে যায় ৭৭ পয়েন্ট। তবে দিন শেষে ক্রয়চাপে তা আগের দিনের চেয়ে ৫ পয়েন্ট বেড়েছে। তবে বাজার নিয়ে যে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে, সেটা স্পষ্ট। লেনদেন একদিনেই কমেছে ৬১২ কোটি টাকা।
গত এক বছরে পুঁজিবাজারে স্থিতিশীলতার আভাসে শতাধিক কোম্পানির শেয়ার দর শতকরা হিসেবে ১০০ শতাংশের বেশি বেড়েছে। ৩০০ থেকে ৪০০ শতাংশ বা তার চেয়ে বেশি বেড়েছে এমন কোম্পানিরও অভাব নেই।
এর মধ্যে কিছু কোম্পানির দর বৃদ্ধি নিয়ে প্রশ্ন আছে। তবে বন্ধ থাকা বেশ কিছু কোম্পানিতে প্রাণ ফেরাতে বিএসইসির বোর্ড পুনর্গঠন করে দেয়া, দুটির এরই মধ্যে উৎপাদনে ফিরে আসা, আরও একটি উৎপাদন শুরুর ঘোষণা দেয়ায় বাকি কোম্পানিগুলো নিয়েও আগ্রহী হয়ে উঠেছে বিনিয়োগকারীরা। এতে ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের যে শেয়ারদর দুই টাকা বা আশেপাশে নেমে এসেছিল, সেগুলোর বেশ কয়েকটি তিন থেকে চারগুণ বেড়েছে।
পুঁজিবাজার চাঙা থাকার প্রভাবেও কোম্পানিগুলোর আয় বেড়েছে দুটি কারণে। প্রথমত, শেয়ারের দাম বাড়ায় সেগুলো বিক্রি করে মুনাফা করেছে তারা; দ্বিতীয়ত, লোকসানের বিপরীতে সঞ্চিতি সংরক্ষণ করতে হচ্ছে না। বরং আগের সংরক্ষণ করা সঞ্চিতি এখন ব্যবহার করা যাচ্ছে।
তবে তদন্ত শুরুর ঘোষণা দেয়া এই ৯টি কোম্পানি নয়, বরং এগুলোর শেয়ারদর যে হারে বেড়েছে, তার চেয়ে বেশি হারে বেড়েছে এমন কোম্পানির অভাব নেই।
যেমন বেক্সিমকো লিমিটেডের শেয়ারদর বেড়ে প্রায় ৮ গুণ হয়েছে, ১০ গুণের মতো হয়েছে প্রভাতী ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারদর। সাম্প্রতিক সময়ে অনেক কমলেও ৫ গুণের মতো বেড়েছে পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্সের দর। এই আদেশ আসার দিনও সর্বোচ্চ পরিমাণে বাড়া বন্ধ থাকা তাল্লু স্পিনিংয়ের দরও বেড়েছে ব্যাপকভাবে।
নয়টি কোম্পানি কোন বিবেচনায় বাছাই করা হলো- জানতে চাইলে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র রেজাউল করিম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এ বিষয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। কোম্পানিগুলো সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করেই কমিশন এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
দারুণ খবরে বেড়েছে এমারেল্ড অয়েলের দর
যে নয়টির বিষয়ে তদন্ত হবে, তার মধ্যে এই কোম্পানির প্রকাশিত মূল্য সংবেদনশীল তথ্য আছে। ২০১৭ সালে বেসিক ব্যাংক কেলেঙ্কারিতে বন্ধ হয়ে যাওয়া কোম্পানিটির উৎপাদন আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে নতুন মালিকানায় আবার চালুর ঘোষণা এসেছে। এখানে উৎপাদিত ধানের কুঁড়ার তেল দেশের পাশাপাশি জাপানে রপ্তানির পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
এই কোম্পানিটির বোর্ড পুনর্গঠন করে দিয়েছে বিএসইসি নিজেই। জাপান প্রবাসী এক বাংলাদেশির ‘মিনোরি বাংলাদেশ’ নামে কোম্পানির মালিকানায় আসছে। আগের মালিকদের খেলাপি ঋণের দায় তারা নিয়ে এর বিপরীতে শেয়ারগুলো ধারণ করতে চায় তারা। ব্যাংকের সঙ্গেও আলোচনা ইতিবাচকভাবেই এগিয়েছে।
বন্ধ হয়ে যাওয়ার আগে কোম্পানিটি ধানের কুঁড়ার তেল উৎপাদনকারী দেশসেরা প্রতিষ্ঠান ছিল। ‘স্পন্দন’ নামে সেই তেলের ব্র্যান্ড তখন দেশে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়েছিল এবং এই তেলের মার্কেট শেয়ারের সিংহভাগই ছিল তাদের নিয়ন্ত্রণে।
কোম্পানির শেয়ারদরও একপর্যায়ে ৬০ টাকার কাছাকাছি ছিল। পরে যদিও উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাওয়ার আগে আগে তা ৩০ টাকার ঘরে নেমে এসেছিল। সেই সময়ের তুলনায় এই তেলের দাম এখন দ্বিগুণ প্রায়।
ঢাকা ডায়িংয়ের দাম বৃদ্ধি কি অস্বাভাবিক?
ঢাকা ডায়িংয়ের কোনো ঘোষণা নেই। কোম্পানিটি তার দীর্ঘ লোকসান কাটিয়ে মুনাফায় ফিরেছে। ২০১৫ সালের পর ২০২০ সালের জন্য কোম্পানিটি প্রথমবারের মতো লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। চলতি বছরও মুনাফায় আছে।
মাঝে লভ্যাংশ না দেয়া বছরগুলোতে ২০১৬ সালে শেয়ার প্রতি লোকসান ছিল ৩ টাকা ৩০ পয়সা। পরের তিনি বছর শেয়ারপ্রতি যথাক্রমে ৩ টাকা ৯৬ পয়সা, ৪ টাকা ১০ পয়সা ও ৪ টাকা ২৫ পয়সা লোকসান দেয়া কোম্পানিটি ২০২০ সালে শেয়ার প্রতি ১৭ পয়সা আয় করে ১ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছে।
দুই বছর হিসাব না দেয়া কোম্পানিটির ২০২০ সালের হিসাব প্রকাশ পেয়েছে সম্প্রতি। আর এরপর ২০২০-২১ অর্থবছরে তিনটি প্রান্তিকের হিসাব প্রকাশ হয় একবারে। আর গত ৩০ জুন সমাপ্ত অর্থবছরে মার্চ পর্যন্ত তৃতীয় প্রান্তিকে শেয়ার প্রতি ৪৭ পয়সা মুনাফা করেছে তারা। ফলে এবার আরও ভালো মুনাফার প্রত্যাশা বিনিয়োগকারীরা করতেই পারেন।
বুলবুল আহমেদ নামে এক বিনিয়োগকারী বলেছেন, এই কোম্পানি যে মুনাফায় ফিরছে তার কোনো ইঙ্গিত ছিল না। কারণ, গত কয়েক বছর কোম্পানিটি প্রান্তিকের হিসাব দেয়নি। এখানে বরং বিএসইসিকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করা যায়।
দুর্বলতা কাটিয়ে আগাচ্ছে ন্যাশনাল ফিড
২০১৫ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ন্যাশনাল ফিডমিল গত তিন বছরে বেশ চাপে ছিল। লোকসানে না থাকলেও ২০১৮ সালে শেয়ার প্রতি ৫৬ পয়সা, ২০১৯ সালে ১৫ পয়সা আর ২০২০ সালে আয় ছিল ১৭ পয়সা। তবে ২০২০-২০২১ অর্থবছরে তাদের আয় ব্যাপকভাবে বেড়েছে। গত জুনে সমাপ্ত অর্থবছরে তৃতীয় প্রান্তিক মার্চ পর্যন্ত শেয়ার প্রতি ১ টাকা ২৫ পয়সা আয় ছিল তাদের।
এটি প্রকাশিত মূল্য সংবেদনশীল তথ্য আর চাপ থেকে বেরিয়ে আসলে কোম্পানির প্রতি বিনিয়োগকারীরা আকৃষ্ট হবে, এটা অস্বাভাবিক নয়। ২০১৮ সালে ৩ শতাংশ, ২০১৯ সালে ১ শতাংশ আর ২০২০ সালে ২ শতাংশ নগদের পাশাপাশি ৮ শতাংশ বোনাস পেয়েছেন বিনিয়োগকারীরা।
এখন যে দাম, শেয়ারটির সর্বোচ্চ দাম তার চেয়ে প্রায় ৫০ শতাংশ বেশিও ছিল। গত জুনে দাম ছিল ৪৪ টাকা ৮০ পয়সা। সেখান থেকে সংশোধন হয়ে দাম এখন ৩০ টাকার কিছু বেশি।
এটাও ঠিক যে, পুঁজিবাজারে ধস নামার পর শেয়ারটির দাম কমে ৮ টাকা ৭০ পয়সায় নেমে এসেছিল। কিন্তু ধসের বাজারের শেয়ারদরকে মান হিসেবে ধরে নেয়া ঠিক কি না, সে প্রশ্ন অবান্তর নয় মোটেও।
কেবল বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইনস্যুরেন্স কেন
বিএসইসি যে বিমা কোম্পানিটিকে বেছে নিয়েছে সেটির দাম গত এক বছরে অস্বাভাবিক বেড়েছে সত্য। তবে যখন দাম বাড়ছিল, সে সময় কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে এখন যখন পড়তির দিকে, তখন কেন তারা উদ্যোগী হয়েছে, সে প্রশ্ন রেখেছেন পাপ্পু নামে এক বিনিয়োগকারী।
গত এক বছরে সাধারণ বিমার মধ্যে অস্বাভাবিক দাম কেবল বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্সের বাড়েনি। এই খাতের প্রায় সব কোম্পানিরই উল্লম্ফন ঘটেছে দামে। বরং গত জুন থেকে বাড়তি দাম কমে কমতে শুরু করেছে। এই কোম্পানির সর্বোচ্চ দাম ছিল ১৫৮ টাকা, এখন তা ১১০ এর ঘরে নেমে এসেছে।
এর চেয়ে বেশি দাম বেড়েছে প্রভাতী, পাইওনিয়ারের দর। ১৭ শতাংশ বোনাস শেয়ার যুক্ত হওয়ার পরও গত বছর ২০ টাকার নিতে থাকা প্রভাতীর দাম এখনও ১৮০ টাকার ঘরে, আর ১০ শতাংশ বোনাস শেয়ার সমন্বয়রে পর গত বছর ৩০ টাকার নিচে থাকা পাইওনিয়ারের দর এখন ১৩০ টাকার আশেপাশে।
২০২০ সালের জুলাইয়ের শুরুতে প্রভাতীর দাম ছিল ২০ টাকার কম আর পাইওনিয়ারের ৩০ টাকার আশেপাশে। সে সময় বিএনআইসিএলের দরও ছিল প্রভাতীর কাছাকাছি।
কেবল এই তিনটি নয়, নানা সিদ্ধান্ত আর গুঞ্জনে বিমা খাত গত বছরের জুলাই থেকে ব্যাপক চাঙা থাকে গত জুন পর্যন্ত। জুনের মাঝামাঝি থেকে দর সংশোধন শুরু কলে কোম্পানিগুলো বরং ৩০ শতাংশ বা তার চেয়ে বেশি দর হারানোর পর বিনিয়োগকারীরা এখন হতাশ।
যখন দাম কেবল বাড়ছিল, সে সময় বারবার প্রশ্ন উঠেছে এ নিয়ে। কিন্তু বিএসইসি কোনো পদক্ষেপেই নেয়নি।
ওটিসি থেকে ফেরা কি কেবল পেপার প্রসেসিংয়ের দাম বেড়েছে?
আর পেপার প্রসেসিং সম্প্রতি ওটিসি মার্কেট থেকে পুঁজিবাজারে আসার চার কোম্পানির একটি। গত ১৩ জুন ফেরা চারটি কোম্পানির মধ্যে শতকরা হারে সবচেয়ে বেশি দাম বেড়েছে এই কোম্পানিটির।
ফেরার দিন শেয়ারপ্রতি দাম ছিল ১৭ টাকা আর বিএসইসি তদন্তের ঘোষণা দেয়ার দিন দাম ছিল ১৬৪ টাকা ৭০ পয়সা। অর্থাৎ সাড়ে ৯ গুণ বেড়েছে দাম। নির্দেশনা আবার পর দাম কমে এক পর্যায়ে ১৪৫ টাকায় নেমে এলেও পরে তা আবার বেড়ে ১৭০ টাকাও ছাড়িয়ে যায়।
প্রায় এক্ই হারে বেড়েছে তমিজউদ্দিন টেক্সটাইলের দর। ওটিসি থেকে শেয়ার প্রতি ১২ টাকা দামে ফেরা কোম্পানিটির শেয়ারদর এক পর্যায়ে টানা বেড়ে ৯৪ টাকায় উঠে গিয়েছিল। এরপর কিছুটা কমে তা এখন ৮০ টাকার বেশি।
শেয়ারপ্রতি দর ১০০ টাকার বেশি বেড়েছে মনস্পুল পেপারেরও। সেটি অবশ্য ৫০ টাকা দাম নিয়ে ফিরেছিল মূল মার্কেটে। অন্যদিকে ১০ টাকায় ফেরা মুন্নু ফেব্রিকস ৩৭ টাকায় উঠার পর তা কমে ২০ টাকার ঘরে নেমে বিনিয়োগকারীদেরকে ব্যাপক লোকসান ফেলেছে।
প্রশ্ন উঠেছে ওটিসি থেকে ফেরা দুটি কোম্পানির দামই একই রকম হারে বাড়লেও একটি রেখে একটির তদন্ত কেন। এই প্রশ্নের কোনো ব্যাখ্যা বিএসইসি দেয়নি।
ফুওয়াং সিরামিকস
ফুওয়াং সিরামিকদের দর অস্বাভাবিভাবে বেড়েছে সত্য, কিন্তু সেটার পেছনে কারণ নেই, এমন নয়। বিএসইসি বেশ কিছু বন্ধ, লোকসানি বা উদ্যোক্তা পরিচালকের শেয়ার সংখ্যা কম, এমন কোম্পানিগুলোর বোর্ড পুনর্গঠন করে সেগুলোকে জীবন দেয়ার চেষ্টা করছে।
ফুওয়াং সিরামিক বন্ধ কোম্পানি না হলেও এতে উদ্যোক্তা পরিচালকের শেয়ার সংখ্যা বেশ কম। আর তাদের শেয়ারের হিস্যা বাড়াতে হবে। না করলে পরিণতি কী হয়, তা ফুওয়াং ফুডের ক্ষেত্রে দেখা গেছে। উদ্যোক্তা পরিচালকরা বাজার থেকে শেয়ার কিনে তাদের হিস্যা ৩০ শতাংশে উন্নীত না করায় সেটির বোর্ড পুনর্গঠন করে দিয়েছে বিএসইসি।
বিকন ফার্মা
বিকম ফার্মার দর গত দুই বছরে ১০ গুণ হয়ে গেছে। আর এক বছরে বেড়েছে তিন গুণের বেশি। এক পর্যায়ে কোম্পানিটির শেয়ার দর এই খাতের সবচেয়ে শক্তিশালী কোম্পানি স্কয়ারের দরকে ছাড়িয় যাওয়া নিয় তৈরি হয় প্রশ্ন।
তবে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় ব্যাপকভাবে বেড়েছে। মহামারিকালে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়, এমন একটি ওষুধ বানায় কোম্পানিটি। আর দেশে একমাত্র তারাই উৎপাদন করে সেটি।
দুই বছর আগে যে শেয়ার ২০ টাকার ঘরে নিয়মিত লেনদেন হতো, আর শেয়ার প্রতি আয় ছিল ৫০ পয়সার আশেপাশে। চলতি বছর তৃতীয় প্রান্তিক পর্যন্ত শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ৩ টাকা ২৭ পয়সা। ৩০ জুন অর্থবছরের হিসাব প্রকাশ হলে বোঝা যাবে চূড়ান্ত আয়ে প্রবৃদ্ধি কত হলো।
ক্যান্সারের ওষুধ প্রস্তুত করা কোম্পানিটি ২০১৬ সালে শেয়ার প্রতি ২৭ পয়সা আয় করেছিল। পরের বছর তা হয় ৪৫ পয়সা। ২০১৮ সালে তা আরেকটু বেড়ে হয় ৫৫ পয়সা, আর ২০১৯ সালে ৫১ পয়সা।
তবে ২০১৯ সালে শেয়ারপ্রতি আয় তিনগুণ বেড়ে হয় ১ টাকা ৬৫ পয়সা আর চলতি বছর ৯ মাসেই আগের বছরের তুলনায় দ্বিগুণ আয় করে ফেলেছে তারা। এই বিষয়টিই প্রলুব্ধ করতে পারে বিনিয়োগকারীদের।
জিবিবি আওয়ার আর আনোয়ার গ্যালভানাইজিংয়ের দর বৃদ্ধির ব্যাখ্যা পাওয়া কঠিন
গত এক বছরে জ্বালানি খাতের শেয়ারগুলো ঝিমিয়ে থাকলেও জিবিবি পাওয়ারের শেয়ার দর বেড়ে তিন গুণ হয়ে গেছে। শেয়ার প্রতি আয় আহামরি বেড়েছে, এমন নয়।
গত বছর শেয়ার প্রতি ১ টাকা ১৪ পয়সা আয় করা কোম্পানিটি এবার ৯ মাসে শেয়ার প্রতি সমপরিমাণ আয় করেছে। অর্থাৎ আয় বেড়েছে ২৫ শতাংশ।
আনোয়ার গ্যালভানাইজিংয়ের দাম বৃদ্ধিও প্রশ্নের বাইরে নয়। এক বছরে ৭৩ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৩৩৪ টাকায় উঠে যায় শেয়ার দর। এ সময়ে শেয়ার প্রতি আয় খুব একটা বেড়েছে এমন নয়। গত বছর শেয়ার প্রতি ২ টাকা ৩ পয়সা আয় করা কোম্পানিটি গত ৩০ জুলাই সমাপ্ত অর্থবছরে প্রথম তিন প্রান্তিকে শেয়ার প্রতি ২ টাকা ১৪ পয়সা আয় করেছে। অর্থৎ আয় বেড়েছে ৩০ শতাংশের মতো। কিন্তু শেয়ারদর বেড়েছে সাড়ে চার গুণের বেশি।
তদন্তের নির্দেশ নিয়ে বিএসইসির পিছু হটার কাহিনি
গত ১২ জানুয়ারিও বিএসইসির এমন একটি নির্দেশনা চাঙা পুঁজিবাজারে অস্থিরতা তৈরি করে। সে সময় জানানো হয়, গত ৩০ কার্যদিবসে যেসব কোম্পানির শেয়ার দর ৫০ শতাংশ বেড়েছে বা কমেছে সেসব কোম্পানির বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দেয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
নির্দেশনাটি আসে লেনদেনের পরে। আর পরের দিন ডিএইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স এর পতন হয় ৯১ পয়েন্ট। আর সেই দিনই সেই নির্দেশনাটি প্র্রত্যাহার করা হয়।
নতুন নির্দেশনায় ঘুরে দাঁড়ায় পুঁজিবাবার। এরপর অবশ্য মার্জিন ঋণের সর্বোচ্চ সুদহার ১২ শতাংশ করার আদেশ জারির পর ১৪ জানুয়ারি থেকে এপ্রিলের শুরু পর্যন্ত দীর্ঘ সংশোধনে যায় পুঁজিবাজার। আর সেই নির্দেশনা আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত স্থগিত করার পাশাপাশি মার্জিন ঋণের অনুপাত বাড়ানোর পর ৫ এপ্রিল থেকে ঘুড়ে দাঁড়ায় পুঁজিবাজার।
তদন্তে ঘোষণা দেয়া কি জরুরি?
বিনিয়োগকারীরা বলছেন, টানা এক দশকের মন্দাভাবের পর পুঁজিবাজার যখন স্থিতিশীলতার দিকে যাচ্ছে, লেনদেন যখন তিন হাজার কোটি টাকা ছুঁইছুঁই হয়ে শেয়ারগুলো হারানো দর ফিরে পাওয়ার অবস্থায়, সে সময় এই ধরনের তদন্ত বিজ্ঞপ্তি দিয়ে করার কিছু নেই। বিএসইসি অভ্যন্তরীণ তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে পারে।
অবশ্য পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ও ব্র্যাক ইপিএল ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের প্রধান গবেষণা কর্মকর্তা দেবব্রত কুমার সরকার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘তদন্তের আগে নির্দেশনা জারি করার অর্থ হচ্ছে সে কোম্পানিকে সর্তক করা। বিনিয়োগকারীদের সে কোম্পানিতে বিনিয়োগের বিষয়ে অ্যালার্ম দেয়া।’
বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ছায়েদুর রহমান বলেন, ‘অতিমূল্যায়িত কোম্পানির তদন্তের পরের চেয়ে আগে জানানোই ভালো। কারণ, আগে জানালে বিনিয়োগকারীদের সতর্ক হওয়ার সুযোগ থাকবে।’
তবে এবারের নির্দেশনাটি অন্য রকম জানিয়ে দেবব্রত কুমার বলেন, ‘এর আগেও বিএসইসি কোনো কোম্পানি অস্বাভাবিক দাম বাড়লে সেগুলো তদন্ত বিষয়টি জানিয়েছেন। তবে এখন যে নির্দেশনা দিয়েছে সেটি স্পষ্ট করে বলে দেয়া আছে যে, এসব কোম্পানির ক্ষেত্রে কোন ইনসাইডার ট্রেডিং হয়েছে কি না সেটি তদন্ত করা হবে। ফলে এ নির্দেশনা কে নেতিবাচকভাবে বিবেচনা করার সুযোগ নেই।
ছায়েদুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিএসইসি যে নির্দেশনা দিয়েছে সেখানে নেতিবাচক কিছু আছে বলে আমি দেখছি না। নির্দেশনা স্পষ্ট করে বলে দেয়া আছে আইনের ভিত্তিতে তদন্ত করা হবে।’
তিনি বলেন, ‘পুঁজিবাজারে সূচক উত্থান-পতন থাকবে এটা স্বাভাবিক বিষয়। এখানে নির্দেশনা ভূমিকা আছে এটি আমি মনে করি না।’
আরও পড়ুন:সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন চলছে দেশের দুই পুঁজিবাজারে। লেনদেনের শুরুতে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৪৬৭ পয়েন্টে। শরিয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৫ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৭৭ কোম্পানির মধ্যে ২২৯টির দর বেড়েছে, ৬২টির কমেছে এবং ৮৬টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
প্রথম দুই ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৭৫ কোটি টাকার বেশি।
এদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ২৯ পয়েন্ট।
সিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৭ কোম্পানির মধ্যে ৩১টির দর বেড়েছে, ২৯টির কমেছে এবং ১৭টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রথমার্ধে সিএসইতে ৩ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে সূচকের বড় পতন হয়েছে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম। চট্টগ্রামে লেনদেন কিছুটা বাড়লেও কমেছে ঢাকায়।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ৪ পয়েন্ট এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৬ কোম্পানির দাম কমেছে বেশিরভাগের। ১০০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২১৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড তিন ক্যাটাগরিতেই তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে। লভ্যাংশ দেয়া ভালো কোম্পানির শেয়ার এ ক্যাটাগরির ২১৭ কোম্পানির মধ্যে ৪৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হলেও দর কমেছে ১২৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৪১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডেও। ১০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ১০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির ইউনিটের দাম।
১৮ কোম্পানির ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। ফাইন ফুডস সর্বোচ্চ ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
ঢাকার বাজারে সারাদিনে মোট ২৩৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ২৭৮ কোটি টাকা।
৯.৬৬ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার। অন্যদিকে ৭.৫২ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকায় মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৮৪ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ৯৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সোনালি ব্যাংক ফাস্ট মিউচুয়াল ফান্ড এবং ৯ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে এসকে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ।
সপ্তাহের পঞ্চম কার্যদিবসে (মঙ্গলবার) লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় উত্থানে শুরু হয়েছে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে, বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৫ পয়েন্ট বেড়েছে। শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৪ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ৯ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৭৬টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ারের দাম বেড়েছে ২৩৬টির, কমেছে ৭৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৬২টি কোম্পানির শেয়ার দাম।
এই সময়ে লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৯০ কোটি টাকার বেশি।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক ৮ পয়েন্ট বেড়েছে। লেনদেন হওয়া ৭৫টি কোম্পানির মধ্যে ৩৭টির শেয়ারদর বেড়েছে, ১৯টির কমেছে এবং ১৯টি কোম্পানির শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন ২ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে সূচকের পতন দিয়ে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথমার্ধে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সূচক কমেছে ১৬ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস কমেছে ২ পয়েন্ট।
বাছাই করা কোম্পানির ব্লুচিপ শেয়ার ডিএস-৩০ কমেছে ৯ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০৩ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭৭ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথমার্ধে ঢাকার বাজারে লেনদেন ১৩০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
একই দশা চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই)। সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৩ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৮ কোম্পানির মধ্যে ২৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৬৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথমার্ধে ৩ কোটি টাকার ওপর শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
টানা দুদিন পতনের পর সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের প্রথম ঘণ্টার লেনদেনেও অব্যাহত আছে পতনের ধারা, সূচক কমেছে ঢাকা-চট্রগ্রাম দুই বাজারেই।
লেনদেনের শুরুতেই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৯ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১ এবং বাছাইকৃত ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৩ পয়েন্ট।
এই সময়ে লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ কোম্পানি দর হারিয়েছে। ১০৯টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৭৯টি কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৯২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় ঢাকার বাজারে প্রায় ৬৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
ঢাকার মতো চট্টগ্রামের বাজারেও বজায় আছে পতনের ধারা, সেখানে সার্বিক সূচক কমেছে ৩২ পয়েন্ট।
চট্টগ্রামে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৩টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১৬টির, কমেছে ৪৪টির এবং অপরিবর্তিত আছে ১৩টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দিনের শুরুতে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে ১ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
উত্থান দিয়ে সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসের লেনদেন শুরু হলেও শেষ হয়েছে সূচকের পতনের মধ্য দিয়ে। দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ঢাকা-চট্টগ্রামের তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৪৬ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস কমেছে ১২ পয়েন্ট এবং বাছাই করা কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ১৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৮ কোম্পানির মধ্যে বেশিরভাগের দাম ছিল নিম্নমুখী। ৫৪ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৩০৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৫ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড- তিন ক্যাটাগরিতেই কমেছে শেয়ারের দাম। লভ্যাংশ দেওয়া ভালো শেয়ারের এ ক্যাটাগরিতে তালিকাভুক্ত ২২০ কোম্পানির মধ্যে ৩২ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হয়েছে। দর কমেছে ১৭৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ১০ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডের বেশিরভাগের। ৩২ কোম্পানির দর পতনের বিপরীতে দর বেড়েছে ২ এবং অপরিবর্তিত আছে ২ কোম্পানির।
২২ কোম্পানির ৯ কোটি ১৪ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। এসইএমএল লেকচার ইকুইটি ম্যানেজমেন্ট ফান্ড সর্বোচ্চ ২ কোটি ৪৪ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
সূচকের পাশাপাশি লেনদেন কমেছে ঢাকার বাজারে। সারাদিনে মোট ৩৪৩ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৩৬৪ কোটি টাকা।
৮.১১ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার ফার্স্ট বাংলাদেশ ফিক্সড ইনকাম ফান্ড। অন্যদিকে ১৬ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে মিডাস ফাইন্যান্সিং।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকার মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ৩৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ২০১ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ১১৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৭ কোটি ৬৭ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৭ কোটি ২৯ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সেকেন্ড মিউচুয়াল ফান্ড এবং ১৩ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে ডিএসই'র মতো সিএসইতেও তলানিতে মিডাস ফাইন্যান্সিং।
শেষ কার্যদিবসে ঢাকার পুঁজিবাজারে লেনদেন চলছে উত্থানে, বেড়েছে প্রধান সূচক। অন্যদিকে বিগত দিনের মতো এখনো পতন থেকে বের হতে পারেনি চট্টগ্রামের বাজার।
লেনদেনের প্রথম দুই ঘন্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৮ পয়েন্ট।
এর বাইরে বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) শরীয়াভিত্তিক সূচক ডিএসএসের উত্থান দশমিকের ঘরে থাকলেও ব্লু-চিপ শেয়ারের সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ২ পয়েন্ট।
সূচক কিছুটা বাড়লেও বিগত কয়েকদিনের টানা পতনে লেনদেন অনেকটাই কমে এসেছে। এতদিন প্রথমার্ধে লেনদেন ২০০ কোটি ছাড়িয়ে গেলেও, এদিন লেনদেন হয়েছে ১৫০ কোটিরও কম।
দাম বেড়েছে লেনদেন অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির। ১৬১ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৩২ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৯৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
এদিকে এখনো পতন থেকে বের হতে পারেনি চট্টগ্রামের বাজার। লেনদেনের প্রথমার্ধে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সার্বিক সূচক হারিয়েছে ৭৩ পয়েন্ট।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির। ৩৩ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে ৬৬ কোম্পানির হয়েছে দরপতন, অপরিবর্তিত আছে ২৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
পুঁজিবাজারের প্রথম দুই ঘন্টায় সিএসইতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ২ কোটি ৩০ লাখ টাকা।
মন্তব্য