জিমন্যাস্টিকসের বিভিন্ন ইভেন্টে নারী জিমন্যাস্টদের সাধারণত পরতে হয় সংক্ষিপ্ত পোশাক। অলিম্পিকস ও অন্যান্য বৈশ্বিক আসরে নারীদের জন্য প্রচলিত জিমন্যাস্টিকস কস্টিউম পরিচিত লিওটার্ড নামে, যেগুলো কোমর পর্যন্ত ঢাকা।
তবে এবারের অলিম্পিকসে জার্মানির নারী জিমন্যাস্টিকস দল ঘটিয়েছে ব্যতিক্রমী ঘটনা। আসরে তারা বেছে নিয়েছে প্রায় পুরো শরীর ঢাকা ইউনিটার্ড পোশাক।বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, নারীদের যৌনউদ্দীপক হিসেবে উপস্থাপন এড়াতে এবং নিজস্ব স্বাচ্ছন্দ্য নিশ্চিতের জন্যই এমন পোশাক জার্মান নারী জিমন্যাস্টদের।
দলের অনেক সদস্যের পরনে দেখা গেছে পা ও হাত ঢাকা বডিস্যুট। এর আগে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে তারা এই কস্টিউম পরে প্রথম পারফর্ম করেন।
অলিম্পিকসের অনুশীলনেও তারা বডিস্যুট পরছেন বলে জানিয়েছেন তৃতীয়বার অলিম্পিকসের আসরে আসা জিমন্যাস্ট এলিজাবেথ জাইটস।
তিনি বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘যেটা পরে আরাম সেটাই পরেছি। আমরা দেখাতে চেয়েছিলাম, প্রতিটি নারী ও প্রতিটি মানুষ কী পরবেন সেই সিদ্ধান্ত তাদেরই নেয়া উচিত।’
নিচের দিকে প্লাম রং এবং ওপরের দিকে সাদা রঙা কস্টিউম পরেই জার্মান নারী জিমন্যাস্টরা রোববারের কোয়ালিফাইং রাউন্ডে অংশ নেন। জিমন্যাস্ট জারাহ ফজ জানান, কোচের সঙ্গে পুরো দল বসেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
ফজ বলেন, ‘আমরা বিমের ওপর শুধু একটা পোশাকে পরিণত হয়েছিলাম। কয়েকজন মেয়ে বলেছেন, তারা অনুশীলনে আরও স্বস্তিতে থাকতে চান। প্রচলিত পোশাকে বিভিন্ন ইভেন্টের সময় সারাক্ষণ অস্বস্তিতে থাকতে হয় এই ভেবে যে, আমাদের লিওটার্ড (জিমন্যাস্টিকসের পোশাক) কোন দিক দিয়ে ফসকে যাচ্ছে।’
আর্টিস্টিকস জিমন্যাস্টিকসের বাছাইপর্বে জার্মানির এলিজাবেথ জাইটস। ছবি: এএফপি
গত কয়েক বছরে জিমন্যাস্টিকসে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন হয়রানি ও নিপীড়নের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ইউনিটার্ডের মতো পুরো দেহ ঢাকা পোশাক পরার সিদ্ধান্তকে গুরুত্বপূর্ণ সংকেত হিসেবে চিহ্নিত করেছেন জাইটস।
প্রায় দুই দশক ধরে প্রায় ২৬৫ জন অ্যাথলিট ও জিমন্যাস্টকে যৌন হয়রানির জন্য ২০১৭ সালে কারাদণ্ড পান যুক্তরাষ্ট্রের জিমন্যাস্টিকস টিমের চিকিৎসক ল্যারি নাসার। বর্তমানের সুপারস্টার জিমন্যাস্ট ও অলিম্পিকস স্বর্ণজয়ী সিমোন বাইলসও তার হয়রানির শিকার হয়েছেন।
এর বাইরেও বিভিন্ন সময়ে হয়রানির অভিযোগ এসেছে। গ্রিসের সাবেক এক জিমন্যাস্ট তার কোচের বিরুদ্ধে ‘প্রায় নির্যাতনের’ মতো হয়রানির অভিযোগও এনেছেন।