শেরপুরের অ্যাথলেট জহির রায়হান টোকিও অলিম্পিক গেইমস-এ বাংলাদেশের হয়ে দৌড়ানোর সুযোগ পাওয়ায় তাকে সম্বর্ধনা জানালেন জাতীয় সংসদের হুইপ আতিউর রহমান আতিক। তিনি জহিরকে এক লাখ টাকা অনুদান দেয়ার ঘোষণাও দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার বিকেলে সাড়ে তিনটায় শহরের চকবাজারস্থ জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে জহিরকে সম্বর্ধনা দেয়া হয়।
হুইপ আতিক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খেলাধুলা খুবই পছন্দ করেন। তিনি সব ধরনের খেলাধুলাকে এগিয়ে নিতে কাজ করে যাচ্ছেন।
টোকিও অলিম্পিকে জহিরের সাফল্য কামনা করে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই এটি শেরপুরবাসীর জন্য একটি গর্বের বিষয়’
হুইপ আতিকসহ সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং অলিম্পিকে ভালো ফলাফল করার জন্য দোয়া কামনা করেন জহির।
অনুষ্ঠানে শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ দত্ত, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ারুল হাসান উৎপল, দপ্তর সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন, শেরপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি শরিফুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মেরাজ উদ্দিন, জেলা ক্রীড়া সংস্থার অতিরিক্ত সাধারণ সম্পাদক মানিক দত্ত, সহসভাপতি ক্রীড়াবিদ মনি, নির্বাহী সদস্য জাকির হোসেন বাবুল, জেলা ফুটবল এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক হাকিম বাবুলও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
শহরের একটি বেসরকারি স্কুলে ভর্তি করান বড় ছেলে রাসেল ও দ্বিতীয় পুত্র জহির রায়হানকে। বড় ছেলে রাসেল নিয়মিত স্কুল করলেও তৃতীয় শ্রেণিতে ওঠার পর খেলা-ধুলার প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠে জহির রায়হান। স্কুলেও উপস্থিত থাকত অনিয়মিত।
প্রথমে বাবা মা বকাবকি করলেও শেষ পর্যন্ত তাকে ফুটবল অনুশীলন করার জন্য ভর্তি করায় ‘ফর ফুটবল শেরপুর’ এর কোচ সাধান বসাকের কাছে। সেখানে সে ভালো ফুটবলার হিসেবে নিজেকে মেলে ধরতে সক্ষম হয়।
পরে বিকেএসপি প্রতিভা অন্বেষণ টিম আসে শেরপুরে খেলোয়াড় বাছাই করার জন্য। প্রথম বার বিকেএসপিতে জায়গা না করতে পারলেও পরেরবার ২০১২ সালে অ্যাথলেটিকসে বিকেএসপিতে সুযোগ করে নেন জহির।
প্রথমে একমাস প্রশিক্ষণ করে বাছাইয়ে টিকে যান। পরে পাঁচ দিনের প্রশিক্ষণ নিয়ে বিকেএসপিতে সপ্তম শ্রেণিতে ভর্তির সুযোগ পান জহির। এর পর থেকেই তার সামনে চলা।
জহির রায়হান দেশের বড়বড় আসরে অনেক পুরস্কার জিতেছেন। ৪০০ মিটারে ৪৬.৮৬ সেকেন্ড সময় নিয়ে দেশীয় আসরে ৩২ বছরের রেকর্ড ভেঙে নতুন রেকর্ড গড়েছেন তিনি।
ওয়ার্ল্ড ২০১৭ সালের কেনিয়ার ইয়ুথ অ্যাথলেটিকস ও থাইল্যান্ডের এশিয়ান ইয়ুথ অ্যাথলেটিকস চ্যাম্পিয়নশিপে ৪০০মিটার ইভেন্টে অংশগ্রহণ করে হিটে উত্তীর্ণ হয়ে সেমিফাইনাল খেলার যোগ্যতা অর্জন করেন।
২০১৮ সালে শ্রীলঙ্কায় সাউথ এশিয়ান জুনিয়র চ্যাম্পিয়নশিপ, ২০১৯ সালে কাতারে ওয়ার্ল্ড অ্যাথলেটিকস, ২৩তম এশিয়ান অ্যাথলেটিকস চ্যাম্পিয়নশিপ এবং নেপালে ১৩তম সাউথ এশিয়ান গেমসে অংশগ্রহণ করেছেন জহির। তার এ সাফল্য দেখে বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে তাকে পেটি অফিসার হিসেবে চাকরি দেয়া হয়।
গত সপ্তাহে স্বপ্নপূরণ হয় এই স্প্রিন্টারের। ওয়াইল্ড কার্ডে অলিম্পিকে খেলার সুযোগ পান।