বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘জীবিকা সম্ভব নয় ব্যাডমিন্টনে’

  •    
  • ১৩ এপ্রিল, ২০২১ ১৮:২৪

সাবেক ব্যাডমিন্টন চ্যাম্পিয়ন এনায়েত বলেন, ‘জীবিকা হিসেবে ব্যাডমিন্টন এখনও ওই পর্যায়ে যায়নি। আপনি যদি সেরা হন তাহলে আপনি নিতে পারেন। তবে সংখ্যাটা খুব কম এই দেশে।’

ব্যাডমিন্টন খেলাকে কি জীবিকা হিসেবে নেয়ার পরিবেশ আছে দেশে? এই প্রসঙ্গটাই যেন ঘুরে ফিরে আসে দেশের ব্যাডমিন্টনে। কোচ-শাটলার আর ফেডারেশনের কর্মকর্তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব নিয়ে আছে সমালোচনা। মেধাবী শাটলারদের পরিচর্যায় অবহেলা নিয়েও প্রশ্ন কম ওঠেনি।

এগুলোর মূলে কারা? কেনই বা এমন হচ্ছে? কীভাবে এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব এসব নিয়ে নিউজবাংলার সঙ্গে খোলামেলা কথা বলেছেন সাবেক জাতীয় ব্যাডমিন্টন চ্যাম্পিয়ন ও কোচ এনায়েত উল্লাহ খান।

সাক্ষাৎকারটি তুলে ধরা হলো পাঠকদের জন্য।

সহধর্মিনীকে নিয়ে ‘এনালিনা ব্যাডমিন্টন একাডেমি’ গড়েছেন। কীভাবে নিজস্ব অ্যাকাডেমি করার চিন্তা আসল?

আমাদের দেশের প্লেয়াররা সুবিধাবঞ্চিত আসলে। মজার বিষয় হলো, ১৬ কোটি মানুষের দেশে কোথায় ব্যাডমিন্টন খেলা হয় সেটা ১০ শতাংশ লোকও জানে না। এটা খুবই দুঃখজনক। কোচের অভাবে খেলোয়াড়দের ট্যালেন্ট যাতে অচিরেই শেষ না হয় সেই তাগিদ থেকে অ্যাকাডেমি করা।

কোচ নিয়োগ নিয়ে খেলোয়াড়-ফেডারেশনের মধ্যে অনেক দ্বন্দ্বের ঘটনা দেখা যাচ্ছে। এটা আসলে কেন হচ্ছে?

ফেডারেশনে যারা নীতি নির্ধারক আছেন ওনাদের ওপরে আসলে দায়িত্ব। ওনারা কাকে নিয়োগ করবেন এটা বোঝার একটা বিষয়। নিয়োগ যারা দিবেন পরিস্থিতি বুঝে উপযুক্ত লোককে নিয়োগ দিলে এতো বিতর্ক হয় না।

বাংলাদেশ ব্যাডমিন্টন ফেডারেশনের নির্বাচনে রাজনৈতিক নেতা-কর্মীরা জায়গা করে নিচ্ছেন। বিষয়টা কীভাবে দেখেন?

খেলাধুলার ভেতরে স্পোর্টিং মন-মানসিকতার মানুষ আসা উচিৎ। কর্মকর্তা বলেন সাবেক খেলোয়াড় বলেন এরা আসলে দেশের জন্য বেটার। রাজনৈতিক লোকজন আসলে তারা স্পোর্টস নিয়ে সেভাবে ভাবে না। স্পন্সর ম্যানেজ করতে পারলে ঠিক আছে তবে দিনশেষে ভালো সংগঠকের বিকল্প কিছু নেই।

আপনি নিজেও সাবেক দেশ সেরা খেলোয়াড়। কোচ হিসেবে কাজ করছেন এখন। বাংলাদেশের ব্যাডমিন্টনটা যে জায়গায় যাওয়ার কথা, সেভাবে কি এগোতে পেরেছে?

অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয় বলেছেন। ব্যাডমিন্টনে আমাদের অ্যাকশন প্ল্যান যদি দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা করে কার্যকর করা হয় আর ফেডারেশনের কর্মকর্তারা যদি দেশে পৃষ্ঠপোষকের ব্যবস্থা করতে পারেন তাহলে এসব সমস্যা থাকার কথা না। কর্মকর্তারা যদি সক্রীয়ভাবে কাজ করেন তাহলে ভালো কিছু আশা করা সম্ভব।

ব্যাডমিন্টনের কোন জায়গায় হাত দেয়া দরকার দ্রুত?

প্রান্তিক পর্যায় থেকে শাটলার বাছাই করা হবে প্রথম কাজ। ধরেন বিভাগগুলো থেকে যদি চারজন করেও শাটলার বাছাই করেন তাহলে ৩২ জনকে নিয়ে দীর্ঘমেয়াদী পরিচর্যা করলেও অনেক দূর আগানো সম্ভব বলে আমার বিশ্বাস।

ব্যাডমিন্টন দেশের একটা মৌসুমভিত্তিক খেলায় পরিণত হয়েছে। এ জায়গা থেকে বের হওয়ার উপায় কী?

ভালো একটা প্রশ্ন করেছেন। ব্যাডমিন্টন কিন্তু মৌসুম ভিত্তিক গেম না। সারাবছরে খেলা যায় এমন একটি খেলা। এই জায়গা থেকে বের হওয়ার জন্য পেশাদারিত্বকে তৈরি করতে হবে। অভিভাবকরা যাতে মনে করেন ব্যাডমিন্টন খেললে ভালো কিছু করবে ছেলে-মেয়ারা এই বোধটা তৈরি করা। এখন ক্রিকেটের বিষয়ে তারা যেমনটা মনে করেন।

মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, ইন্দোনেশিয়ায় বিশ্বমানের শাটলার রয়েছেন। সাবেক চ্যাম্পিয়ন শাটলার হিসেবে ঘুরেছেন দেশগুলোতে। মোটা দাগে কী পার্থক্য দেখেছেন?

আসলে আমাদের দেশে অনেক ট্যালেন্টেন্ড প্লেয়ার আছে। ভারতের দিকে তাকান। তাদের অনেক শাটলার এখন শীর্ষ ১০০ র‌্যাঙ্কিংয়ে আছে। ভারতের এই পরিকল্পনা কিন্তু ২০ বছর আগের। ওরা এখন অলিম্পিক ডমিনেট করছে। বিশ্ব ডমিনেন্ট করছে। ভারত যদি পারে তাহলে আমরা কেন নয়? এটা আমারও প্রশ্ন। আমাদের সমন্বয়হীনতার অভাব। গাইডেন্সের অভাব। নীতি-নির্ধারকরা সমন্বয় করে যদি যথার্থ কর্মপরিকল্পনা তৈরি করেন তাহলে আমরা শর্ট টাইমের মধ্যে ভালো করব।

কী ধরনের কর্মপরিকল্পনার কথা বলছেন?

কর্মপরিকল্পনা তো বিভিন্ন ধরনের আছে। স্বল্প সময়ের, মোটামুটি সময়ের আর দীর্ঘমেয়াদী। আমাদের দেশে দীর্ঘমেয়াদী কর্মপরিকল্পনা হয় নি। আমাদের দেশে ছয় মাসকে লং টার্ম বলে। এটাকে শর্টটার্মও বলা যায় না। আজকে লি চং বললে মালয়েশিয়া চেনে। লিন ড্যান বললে চীনকে চিনে। কারণ তাদের দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা আছে। এমন উদ্যোগ সবার আগে নিতে হবে। লোক দেখানো প্ল্যান না করে দেশপ্রেম দেখান। আমাদের ট্যালেন্টদের নিয়ে যদি কাজ করা যায় তাহলে অবশ্যই এখান থেকে বিশ্ব মানের শাটলার বের হবে।

জীবিকা হিসেবে ব্যাডমিন্টন নেয়া যায় কী না?

জীবিকা হিসেবে ব্যাডমিন্টন এখনও ওই পর্যায়ে যায়নি। আপনি যদি সেরা হন তাহলে আপনি নিতে পারেন। বিভিন্ন ক্লাব থেকে মাসিক একটা বেতন পাবেন। আপনার জন্য স্পন্সরশিপ থাকবে। যদি ডায়নামিক হন তাহলে কোচ হিসেবেও ভালো করবেন। তবে সংখ্যাটা খুব কম এই দেশে।

ব্যাডমিন্টনে আশা দেখেন কী না?

কম সময়ের মধ্যে দেখতে পারব আশা করি। এখন যেভাবে ব্যাডমিন্টনের জাগরণ হয়েছে তাতে কম সময়ের মধ্যে ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড় ও কোচ জীবিকা হিসেবে বেছে নেয়ার মতো অবস্থায় দাঁড়াবে বাংলাদেশ।

ব্যাডমিন্টনের উন্নয়নে কোচদের কাজে লাগিয়ে শাটলার তৈরিতে উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে কি?

লেভেল ওয়ান সার্টিফিকেট পাওয়া কোচ আছে আমাদের দেশে ৩৪ থেকে ৩৭ জন কোচ। আর লেভেল টু তিনজনের আছে। কোচের কমতি নেই আমাদের। চাই ফেডারেশনের সঠিক কর্মপরিকল্পনা। যার মাধ্যমে ভবিষ্যতের শাটলার তৈরিতে এই কোচেরা কাজ করবেন।

এ বিভাগের আরো খবর