বঙ্গবন্ধু ৯ম বাংলাদেশ গেমস আয়োজনের জন্য বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনকে (বিওএ) ১৫ কোটি টাকা আর্থিক বরাদ্দ দেয়ার আশ্বাস দিয়েছে সরকার। প্রস্তাবিত ২০ কোটির পরিপ্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে সাড়ে সাত কোটি অর্থ বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। দেশের সর্ববৃহৎ আসরে করোনা স্বাস্থ্যবিধিকে প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে বলে জানায় দেশের অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন। প্রথমে সরকারের নিকট ৩৮ কোটি ৫০ লক্ষ টাকার বাজেট দেয়া হয়েছিল। পরবর্তীতে কোভিড ১৯ মহামারীর কারণে গেমসটি স্থগিত হওয়ায় খেলোয়াড় সংখ্যা প্রায় ৪০ শতাংশ কমিয়ে ২০ কোটি টাকার বাজেট দেয়া হয়।
সরকার থেকে বরাদ্দকৃত অর্থে ইতোমধ্যে অংশগ্রহণকারী ফেডারেশন সমূহের গেমসের ব্যয় বাবদ ৮০ ভাগ অর্থ অগ্রিম প্রদান এবং গেমসের ট্র্যাকস্যূট, টি-শার্ট ও মেডেলসহ অন্যান্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে বলে জানায় বিওএ।
সংবাদ সম্মেলনে বিওএর মহাসচিব সৈয়দ শাহেদ রেজা ভেন্যুগুলোতে অ্যাথলেট ও কর্মকর্তাদের জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখার কথা জানান।
তিনি বলেন ‘গেমস শুরুর আগেই এটা মাথায় নিয়েছি। কোভিড-১৯ কিভাবে প্রতিরোধ করব। কমিটিতে যারা সদস্য আছে, সশস্ত্র বাহিনী, বিভিন্ন হাসপাতাল, কুর্মিটোলা গলফ ও বিভাগীয় শহরের সিভিল সার্জনদের নিয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা ভেন্যুতে থাকবেন। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন।’
গেমসের স্টিয়ারিং কমিটির চেয়ারম্যান শেখ বশির আহমেদ জানালেন, ভেন্যুগুলোতে তিন ধাপের সুরক্ষা ব্যবস্থা রাখা হবে অ্যাথলেট ও গেমস সংশ্লিষ্টদের জন্য।
বলেন, ‘ধরুন, একটা ভেন্যুতে ৫০ জন অ্যাথলেট আসছে। এদের কারো উপসর্গ দেখা গেলো তাকে আইসোলেট করা হচ্ছে। তিনটা স্টেজে ব্যবস্থা নিব। কোভিড পজিটিভ হলে সরাসরি আইসোলেট করব, হাসপাতালে নিয়ে যাব। আক্রান্ত নয়, কিন্তু উপস্বর্গ আছে, সেক্ষেত্রে তাকে অন্য কোথাও আবাসনের ব্যবস্থা করব। থার্মাল চেকিং ও টেম্পারেচার টেস্ট করব, তাৎক্ষণিকভাবে সবাইকে তো টেস্ট করা সম্ভব হবে না।’
খেলোয়াড়দের নিরাপত্তার প্রয়োজনে গেমস চলাকালীন বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম ও এর আশপাশের ভেন্যুগুলোতে জনসমাগম এবং রাস্তায় থাকা অস্থায়ী দোকানপাট বন্ধ রাখার উদ্যোগও নেয়া হয়েছে বলে জানান বিওএ মহাসচিব।
বলেন, ‘ইতোমধ্যে এনএসসিকে চিঠি দিয়েছি। যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গেও কথা হয়েছে। তিনি আমাদের আশ্বস্ত করেছেন খেলা চলাকালীন দোকানপাট সব বন্ধ রাখার ব্যাপারে। দর্শকদের তো আর কোভিড টেস্ট করা সম্ভব হবে না। তাদের টেম্পারেচার টেস্ট, দুরত্ব মেনে বসার ব্যবস্থা করা হবে।’
প্রতিকূল পরিস্থিতিতে গেমস আয়োজনের লক্ষ্য নিয়ে বশির আহমেদ জানালেন চ্যাম্পিয়ন খেলোয়াড় তৈরি করার কথা। বলেন, ‘এখানে চ্যাম্পিয়ন খেলোয়াড়রাই দেশের হয়ে দেশের বাইরে খেলতে যাবে। এই মাপকাঠি এখন তৈরি হবে। এখন সব ফেডারেশন খেলার মধ্যে চলে আসছে। আমাদের লক্ষ্য একটাই, চ্যাম্পিয়ন প্লেয়ার তৈরি করা।’
অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে রবিবার এসব কথা বলেন এই দুই সংগঠক। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন স্টিয়ারিং কমিটির কো-চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান কোহিনুর, সদস্য সচিব আশিকুর রহমান মিকু এবং মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিসিটি কমিটির সদস্য সচিব জনাব কাজী রাজীব উদ্দিন আহমেদ চপল।
এবার বাংলাদেশ গেমসে ৩১টি ক্যাটাগরিতে ৫৩০০ জন ক্রীড়াবিদ ৩৭৮টি ইভেন্টে ১২৭১টি পদকের জন্য গতি, শক্তি, দৈর্ঘ্য অতিক্রমের প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অংশ নেবেন। গেমস অনুষ্ঠিত হবে ১-১০ এপ্রিল পর্যন্ত। গেমসটিকে সারা দেশে ছড়িয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে সাত বিভাগের অন্তর্গত সাত জেলাসহ মোট ২৯টি ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত হবে গেমসের খেলা সমূহ।