এখনও কলেজের গণ্ডি পার করেননি। তার আগেই সবচেয়ে কম বয়সে নারী রেফারি হিসেবে দেশের ‘সর্বোচ্চ লিগে’ প্রধান রেফারির দায়িত্ব পালন করে অনন্য মাইলফলক গড়েছেন তাহমিনা আক্তার।নারী বিশ্বকাপে রেফারি হয়ে বাঁশি বাজানোর স্বপ্ন দেখেন ১৭ বছর বয়সী এই ক্রীড়াবিদ।
অবাক করার মতো বিষয় হলো, মাত্র ১৪ বছর বয়স থেকেই রেফারির দায়িত্ব পালন করেছেন তাহমিনা।
স্কুল টুর্নামেন্ট বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেসা থেকে ফুটবলার হিসেবে উত্থান তাহমিনার। জাতীয় দলের বয়সভিত্তিক দলে খেলে পরে ইনজুরিতে খেলোয়াড় জীবনের ইতি ঘটলেও ‘ফুটবল’ ছাড়েননি তিনি। বেছে নিয়েছেন রেফারির ক্যারিয়ার।
দেশের তারকা ফিফা রেফারি জয়া চাকমাকে দেখেই রেফারি ক্যারিয়ারে ঝুঁকেছেন তাহমিনা। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেসা থেকে বাফুফে আমাকে বাছাই করে। পরে ইনজুরিতে এক বছর বসে ছিলাম। এক টুর্নামেন্টে জয়া দিদিকে দেখেছিলাম তিন পুরুষ রেয়াফির মাঝে দাঁড়িয়ে রেফারিং করতে। সেখান থেকে স্বপ্ন শুরু।’
যে টুর্নামেন্ট থেকে খেলোয়াড় তাহমিনার জন্ম সেই টুর্নামেন্টেই ২০১৭ সালে ফোর্থ অফিসিয়াল রেফারি হিসেবে অভিষেক করেন।এরপর বাফুফের তালিকাভুক্ত রেফারি শহীদুল ইসলাম লিমনের দিক নির্দেশনায় রেফারির কোর্স করা। মাঝে জেএফএ কাপ ও পাইওনিয়ার লিগেও প্রধান রেফারির দায়িত্ব পালন করেন তাহমিনা।
এবার দেশের সর্বোচ্চ নারী লিগে মাত্র ১৭ বছর বয়সে অভিষেক হল তাহমিনার। চলতি টুর্নামেন্টে দুই লেগ মিলিয়ে ১৫টি ম্যাচে প্রধান রেফারি হিসেবে বাঁশি বাজিয়েছেন তিনি।
পিতৃহীন জীবনে মাকে নিয়েই তাহমিনার সংসার জীবন। ঢাকাতেই থাকেন। রেফারির পাশাপাশি পড়াশুনা চালিয়ে যাচ্ছেন।রাজধানীর এস এম তোফাজ্জল হোসেন পলিটেকনিক্যাল কলেজে পড়ছেন। ২০২১ সালে ইন্টার পরীক্ষায় অংশ নিবেন।
রেফারি ক্যারিয়ারকেই পেশা নিতে চান তাহমিনা। স্বপ্ন দেখেন বিশ্বকাপের ম্যাচে বাঁশি বাজানোর, ‘এই বয়সে মাকে উপার্জনের টাকা দিতে পেরে ভালো লাগছে। স্বপ্ন দেখি নারী বিশ্বকাপের ফাইনালে বাঁশি বাজানোর।’
এ ছাড়াও দেশের পুরুষ ফুটবলের সর্বোচ্চ লিগেও রেফারির দায়িত্ব পালন করার ইচ্ছা আছে তার। যা এখনও পর্যন্ত কেউ করতে পারেননি।রেফারি না হলেও বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নশিপ লিগে প্রথম কোন নারী হিসেবে কোচিং করানোর ইতিহাস গড়েছিলেন সাবেক নারী ফুটবলার মিরোনা খাতুন। ঢাকা সিটি এফসির কোচ ছিলেন তিনি।
তাহমিনাকে নিয়ে বড় স্বপ্ন দেখেন সাবেক ফিফা রেফারি আজাদ রহমান। তিনি বলেন, ‘তাহমিনা খুব চঞ্চল। তবে বয়স খুবই কম হলেও ওর মধ্যে তাড়না দেখেছি। তাকে ফিফার এলিট রেফারি প্যানেলে দেখতে চাই। তাকে সেভাবে গড়ে তোলা সম্ভব।’