করোনাভাইরাসে সাময়িক বিরতি পড়লেও লক্ষ্য থেকে সরে যাননি রোমান সানা। তীর-ধনুক নিয়ে মাঠে নেমে পড়েছেন টোকিও অলিম্পিকের টিকিট পাওয়া দেশের প্রথম ক্রীড়াবিদ। অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন মাঠে।
ফিটনেস ফিরে পেতে প্রতিদিন অনুশীলনে ঘণ্টা ছয়েক সময় দিচ্ছেন দেশসেরা তীরন্দাজ। গুরু মার্টিন ফ্রিডরিখের কড়া নজরে নিজের খাদ্যাভ্যাসেও পরিবর্তন আনতে হয়েছে তাকে। বাঙালির ‘অপরিহার্য’ ভাত খাওয়াও ছেড়েছেন সানা।
সামনের বছরের জুলাইয়ে টোকিও অলিম্পিক। একে ঘিরে করোনা বিরতির পর দুই মাস হলো মাঠে ফিরেছেন খুলনার এই ক্রীড়াবিদ।
সেরা ফর্মে ফেরাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ রোমানের সামনে, ‘বহুদিন পর মাঠে ফিরেছি। প্রায় চার মাস অনুশীলনের বাইরে থাকায় এখন কষ্ট করতে হচ্ছে বেশি। সমস্যা হচ্ছে অনেক।’
অপ্রত্যাশিত করোনা বিরতি কিছুটা হলেও সানার ফর্মে মরচে ধরিয়েছে। মাঠে ফেরার পর পুরনো ফর্ম ফিরে পেতে অন্তত তিন মাস সময় লাগবে বলে জানালেন বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে ব্রোঞ্জ জেতা এই তীরন্দাজ।
ফর্মে ফিরতে অন্তত তিন মাস সময় লাগবে বলে নিউজবাংলাকে জানান রোমান সানা। তিনি বলেন, ‘লকডাউনের পর এসেই তো ভালো কিছু করা যায় না। এখন কোনো কম্পিটিশনও নাই। এ জন্য পুরো অনুশীলনে জোর দিচ্ছি।’
ফিটনেস ফিরে পেতে সকাল-বিকেল অনুশীলনে ঘাম ঝরাচ্ছেন রোমান, ‘প্রতিদিন প্রায় ছয় ঘণ্টা অনুশীলনে সময় দিচ্ছি। একদিন রানিং, একদিন ফিজিক্যাল।’
২০১৮ সালে আর্চারির দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই জার্মান কোচ মার্টিন ফ্রেডরিখ তীরন্দাজদের ডায়েটও পরিবর্তন করেছেন।মেন্যু কী হবে তা নির্ধারণ করে দিয়েছেন। কোচের নির্দেশনা মেনে ফিটনেস ঠিক রাখতে তাই ভাতও বিসর্জন দিতে হয়েছে সানার।
বাংলাদেশ আনসারের এই ল্যান্স নায়েক বলেন, ‘১০০তে ১০০ ভাগ ফিট থাকতে হয় আমাদের। খেলাটা দেখতে খুব সহজ মনে হয়। কিন্তু যে ধনুকটা টানবে, সে বুঝতে পারবে কত পরিশ্রম করা লাগবে। এর জন্য একজন অ্যাথলেটকে অনেক বিসর্জন দিতে হয়। খাওয়া দাওয়া কন্ট্রোলে আনতে হয়।’
‘দেশীয় খাবার খাওয়া যায় না। যেমন: ভাত কম খাই। মাঝেমধ্যে খাওয়া পড়ে। কোচ আসার পর থেকে কন্ট্রোলে রাখতে হয় আমাদের। এখন রুটিনমাফিক নির্দিষ্ট মেন্যু খেতে হয় ফিট থাকতে।’
অলিম্পিকের জন্য প্রস্তুতির অংশ হিসেবে আত্মবিশ্বাস ফিরে পেতে চান সবশেষ এসএ গেমসে তিনটি স্বর্ণজয়ী রোমান সানা। স্থানীয় টুর্নামেন্টের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টেও অংশ নিতে চান তিনি।
রোমান বলেন, ‘কোচ চাচ্ছেন অক্টোবরে একটা লিগ চ্যাম্পিয়নশিপ করার। আর ডিসেম্বরে একটা জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপ করার। আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টগুলো আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে শুরু হবে। অক্টোবরেই তুরস্কে বিশ্বকাপ আছে আর্চারির। সেখানে আমাদের হয়তো পাঠাবে না ফেডারেশন।’