ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে ইংল্যান্ডের সঙ্গী ছিল প্রত্যাশার চাপ আর ডেনমার্কের চোখে ছিল বড় কিছু করার স্বপ্ন। ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের সেমিফাইনাল মঞ্চে ভুল করতে চাইছিল না কোনো দলই।
প্রথম ২০ মিনিট স্নায়ুচাপ সামলাতেই যায় দুই দলের। দুই প্রান্তেই ছিল নার্ভাস কিছু আক্রমণ, যা থেকে স্বাভাবিকভাবেই কোনো ফল আসেনি।
২৫ মিনিটে গোলের কাছাকাছি যায় ডেনরা। মিকেল ডামসগার্ডের ২০ গজ থেকে নেয়া জোরালো শট ঠেকিয়ে দেন ইংল্যান্ডের গোলকিপার জর্ডান পিকফোর্ড। এতে উন্মোচন হয়ে পড়ে নিজ বক্সে ইংল্যান্ডের ব্যাকলাইনের ভঙ্গুর অবস্থা।
মিনিট পাঁচেক পর ইংল্যান্ডের বক্সের বাইরে লুক শ ফাউল করেন ডেনমার্কের ডিফেন্ডার আন্ড্রেয়াস ক্রিস্টেনসেনকে। রেফারি ফ্রি-কিকের নির্দেশ দিলে স্পটলাইটে আসেন ডামসগার্ড।
২১ বছরের এই ফরোয়ার্ড দেখান তার শটের আসল জোর। রকেট গতির এক শটে পরাস্ত করেন পিকফোর্ডকে। স্তব্ধ করে দেন মাঠে উপস্থিত প্রায় ৫০ হাজার স্বাগতিক দর্শককে।
পিছিয়ে পড়ে যেন সম্বিত ফিরে পায় ইংল্যান্ড। শুরু হয় তাদের কাউন্টার অ্যাটাক। পরিষ্কার সুযোগ আসে ৩৮ মিনিটে। হ্যারি কেইনের বাড়ানো বলে সিক্স ইয়ার্ডের ভেতর থেকে শট নেন রাহিম স্টার্লিং।
কিন্তু ম্যানচেস্টার সিটি তারকার শট অসাধারণ দক্ষতায় ফিরিয়ে দেন ডেনমার্কের গোলকিপার ক্যাসপার স্মাইকেল।
অদম্য ইংল্যান্ড পরের মিনিটেই সমতা ফেরায় ম্যাচে। ডান প্রান্ত দিয়ে আগুয়ান বুকায়ো সাকা বক্সে বল ছাড়েন স্টার্লিংয়ের উদ্দেশে। সেই বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে নিজেদের জালে জড়ান সিমোন কায়ের।
জমজমাট প্রথমার্ধ শেষ হয় ১-১ সমতায়। বিরতির পর সাবধানী ফুটবল খেলে দুই দল।
হাতেগোনা কয়েকটি সুযোগ তৈরি করতে পারে ইংল্যান্ড ও ডেনমার্ক, যেগুলো থেকে গোল আসেনি।
এর মধ্যে ৫১ মিনিটে দূরপাল্লার শটে ডেনমার্কের ডলবার্গের প্রচেষ্টা ও মিনিট পাঁচেক পর ইংল্যান্ডের হ্যারি ম্যাগুয়ারের হেডার ছিল উল্লেখযোগ্য।
দ্বিতীয়ার্ধে আর কোনো গোল না হলে খেলা গড়ায় অতিরিক্ত ৩০ মিনিটে। এর প্রথমার্ধের শেষ মিনিটে হয় নাটক।
স্টার্লিংকে নিজ বক্সে ডেনিশ ডিফেন্ডার ওয়াকিম মাহেলে ফাউল করলে ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্টের সাহায্য নিয়ে পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দেন রেফারি।
স্পট থেকে নেয়া হ্যারি কেইনের শট প্রথমবার ঠেকিয়ে দেন স্মাইকেল। তবে রিবাউন্ড থেকে ঠিকই দলকে লিড এনে দেন ইংলিশ অধিনায়ক।
পরের ১৫ মিনিট একেবারে সতর্ক ছিল ইংলিশরা। ডেনদের আক্রমণের কোনো সুযোগই দেয়নি।
ফলে ১২০ মিনিটের লড়াইয়ে ২-১ গোলে ডেনমার্ককে হারিয়ে ওয়েম্বলির ফাইনালে জায়গা করে নেয় ইংল্যান্ড।এতে করে ১৯৬৬ সালের পর এই প্রথম কোনো বড় টুর্নামেন্টের ফাইনালে কোয়ালিফাই করল থ্রি লায়নস।
ইউরোর শিরোপার লড়াইয়ে রোববার তারা মোকাবিলা করবে ইতালিকে।