ঘটনাটা ম্যাচের ৯২ মিনিটের। ইকুয়েডরের বক্সের কিনারায় আনহেল দি মারিয়াকে ফাউল করেন ডিফেন্ডার পিয়েরো ইনকাপিয়ে। সঙ্গে সঙ্গে পেনাল্টির দাবি জানান আর্জেন্টিনার খেলোয়াড়রা।ইনকাপিয়েকে লাল কার্ড দেখান রেফারি। কিন্তু আর্জেন্টিনার খেলোয়াড়দের দাবি কানে তোলেননি। পেনাল্টির বদলে দিলেন ফ্রি-কিকের নির্দেশ।রেফারির এই নির্দেশে কিছুটা কী খুশি হয়েছিলেন লিওনেল মেসি? কারণ পেনাল্টির চেয়ে ফ্রি-কিকেই তিনি বেশি স্বচ্ছন্দ্য।সেটা জানার উপায় না থাকলেও, কী হতে যাচ্ছে সেটা মোটামুটি সবাই জানতেন।নিঁখুত এক ফ্রি-কিকে আর্জেন্টিনাকে বড় জয় পাইয়ে দেন মেসি।গত এক দশকে বিশ্বের সেরা ফি-কিক এক্সপার্ট হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন মেসি। বর্তমানে জাতীয় দল ও ক্লাব মিলিয়ে ফ্রি-কিক থেকে করা তার গোলসংখ্যা ৫৮। নিকটতম প্রতিন্দ্বন্দ্বি ক্রিস্টিয়ানো রোনালডোর চেয়ে একটি বেশি গোল তার।পরিসংখ্যান বলছে এক দশকে নিজের এই দক্ষতা বৃদ্ধি করেছেন আর্জেন্টাইন সুপারস্টার। ২০১১ সালে মেসির ফ্রি-কিকে গোল সংখ্যা ছিল মাত্র চারটি। আর রোনালডোর ছিল ৩০টি।২০২১ সালে এসে সেটি হয়ে দাঁড়িয়েছে মেসির ৫৮ ও রোনালডোর ৫৭। অর্থাৎ গত এক দশকে রোনালডো ফ্রি কিক থেকে গোল করেছেন ২৭টি। আর মেসি করেছেন তার দ্বিগুণ, ৫৪টি।এবারের কোপা আমেরিকা ও ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপ মিলিয়ে মোট ৫৬টি ফ্রি-কিক নেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে মাত্র দুটিতে এসেছে গোল। দুটিই মেসির পা থেকে।চিলির বিপক্ষে কোপা আমেরিকার গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচে ফ্রি-কিক থেকে গোল করেন মেসি। আর দ্বিতীয়টি রোববার সকালে করলেন ইকুয়েডরের বিপক্ষে।শুধু ফ্রি-কিকেই নয় গোল ও অ্যাসিস্টেও লিওনেল মেসি কোপা আমেরিকার সেরা খেলোয়াড়। আর্জেন্টিনা টুর্নামেন্টে ১০ গোল করেছে। যার ৮টিতেই অবদান ছিল মেসির।
এবারের টুর্নামেন্টে তার পরিসংখ্যান:
ম্যাচ ৫
গোল ৪টি
অ্যাসিস্ট ৪টি
সুযোগ তৈরি ১৯টি
ড্রিবল ২৪টি
গুরুত্বপূর্ণ পাস ১৫টি
ডুয়েল জিতেছেন ৪৮টি
লং বল ১৩টি
রিকভারি ১৭টি
সবমিলিয়ে পাঁচটি কোপা আমেরিকার আসরে ১৩টি গোল এসেছে মেসির পা থেকে। অ্যাসিস্ট এসেছে ১৬টি। ইকুয়েডরের সঙ্গে গোল করে আর্জেন্টিনার হয়ে তার মোট গোলসংখ্যা ৭৬টি। আর জাতীয় দলের জার্সিতে অ্যাসিস্ট ৪৬টি।
দক্ষিণ আমেরিকার দলগুলোর মধ্যে আন্তর্জাতিক গোলদাতাদের তালিকায় পেলের ৭৭ গোলের পরই মেসির অবস্থান। ব্রাজিলের ফুটবল সম্রাটকে ছাড়িয়ে যেতে অন্তত আরেক ম্যাচ পাচ্ছেন আধুনিক এই ফুটবল কিংবদন্তি।তবে সেমিফাইনালেই থেমে যেতে চাইবেন না মেসি নিশ্চিতভাবেই। তার নজর এবারে শিরোপায়।