কাগজে-কলমে বিশ্বের এক নম্বর দল ও টুর্নামেন্টের সেরা দলের লড়াই ছিল দ্বিতীয় কোয়ার্টার ফাইনালে। দারুণ ফুটবল উপহার দিয়ে ম্যাচে ভক্তদের প্রত্যাশা মিটিয়েছে ইতালি ও বেলজিয়াম।
শেষ পর্যন্ত স্নায়ু শক্ত রেখে বেলজিয়ামকে ৩-২ গোলে হারিয়ে শেষ চারের টিকিট নিশ্চিত করেছে ইতালি।
মিউনিখের আলিয়াঞ্জ আরেনায় দুর্দান্ত গতিতে শুরু করে দুই দল। হাই প্রেসিং খেলা ইতালিকে কাউন্টারে চেপে ধরছিল বেলজিয়াম। দুই দলই একাধিক সুযোগ তৈরি করে প্রথমার্ধে।
ইতালি প্রথম সুযোগ পায় বল জালে জড়ানোর। তবে ১৩ মিনিটে করা লিওনার্দো বনুচ্চির করা গোল ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্টের সাহায্যে অফসাইডের কারণে বাতিল করে দেন রেফারি।
মিনিট আটেক পর কেভিন ডি ব্রুইনার জোরালো শট দুর্দান্তভাবে সেভ করেন ইতালির গোলকিপার জানলুইজি ডোনারুমা। গোলশূন্য থাকে স্কোর।
পর্তুগালের বিপক্ষে পাওয়া চোট সেরে না ওঠার পরও ম্যাচে খেলেন ডি ব্রুইনা। বেলজিয়াম কোচ রবার্তো মার্তিনেস নকআউট ম্যাচে দলের সেরা মিডফিল্ডারকে নিয়ে ঝুঁকি নেন।
ম্যাচের ডেডলক ভাঙে আধা ঘণ্টার কিছু পর। বেলজিয়ামের পেনাল্টি বক্সের বাইরে ইতালিয়ান মিডফিল্ডার মার্কো ভেরাত্তির কাছে বল হারান ডিফেন্ডার ইয়ান ভার্টনগেন।
ভেরাত্তি বল পেয়ে বক্সে হাজির নিকোলো বারেল্লার উদ্দেশে পাস বাড়ান। দুইজন ডিফেন্ডারকে বডি ডজে বোকা বানিয়ে বল জালে জড়াতে ভুল করেননি বারেল্লা।
গোল হজম করেও রক্ষণাত্মক খেলেনি বেলজিয়াম। ঘর গুছিয়ে শত্রুপক্ষের ওপর হামলা চালানোর নীতি অব্যাহত রাখে তারা।
বিরতির ঠিক আগে বেলজিয়ামের হাই লাইন ডিফেন্সের সুযোগ নেয় ইতালি। লরেঞ্জো ইনসিনিয়ে মাঝমাঠের কিছুটা সামনে বল পেয়ে বাম প্রান্ত থেকে কাট করে ঢুকে পড়েন ইতালির বিপৎসীমায়।
বক্সের বাইরে থেকে চমৎকার বাঁকানো শটে বেলজিয়ামের গোলকিপার থিবো কোঁতোয়াকে পরাস্ত করেন নাপোলির এ ফরোয়ার্ড। বেলজিয়ামের ডিফেন্সের চেয়ে দেখা ছাড়া কিছুই করার ছিল না।
তবে তাদের আক্রমণভাগ বসে থাকেনি। গোল খাওয়ার পরের মুহূর্তেই পেনাল্টি আদায় করে নেয় রেড ডেভিলসরা। বল দখলের লড়াই করতে গিয়ে জেরেমি ডকুকে নিজেদের বক্সে ফেলে দেন ইতালির রাইট ব্যাক জোভানি ডি লরেঞ্জো।
ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্টের সাহায্য নিয়ে রেফারি পেনাল্টির বাঁশি বাজালে স্পট থেকে এক গোল শোধ করেন রোমেলু লুকাকু। এবারের টুর্নামেন্টে ইন্টার মিলান স্ট্রাইকারের এটি ছিল চার নম্বর গোল।
২-১ গোলে এগিয়ে থেকে দ্বিতীয়ার্ধ শুরু করে ইতালি। বিরতির পর নিজেদের লিড ধরে রাখার দিকে মনোযোগী ছিল আৎসুরিরা। বেলজিয়াম তাদের বিখ্যাত ডিফেন্স লাইনে ফাটল ধরাতে পারেনি।
এই অর্ধে সবচেয়ে সহজ সুযোগ হাতছাড়া করেন লুকাকু। ৬১ মিনিটে ডকুর বাড়ানো বলে ফাঁকা পোস্টে লক্ষ্যভেদ করতে ব্যর্থ হন তিনি।
ম্যাচের শেষ দিকে চোটের কারণে লরেঞ্জো ইনসিনিয়ে ও ডিফেন্ডার লিওনার্দো স্পিনাৎসোলাকে বদল করতে হয় ইতালির।
তারপরও শেষ ১০ মিনিট ও ইনজুরি টাইমের আট মিনিট সামলে খেলে ইতালি; বেলজিয়ামকে কোনো পরিষ্কার সুযোগ দেয়নি ম্যাচে ফেরার।
২-১ ব্যবধানে ম্যাচ জিতে স্পেনের সঙ্গে সেমিফাইনাল লড়াই নিশ্চিত করে রবার্তো মানচিনির দল। আর বেলজিয়ামের সোনালি প্রজন্ম আরও একটি টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নেয় খালি হাতে।
ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে বুধবার ইউরোর প্রথম সেমিফাইনালে মুখোমুখি হবে টানা ৩২ ম্যাচ না হারা ইতালি ও সুইজারল্যান্ডকে টাইব্রেকারে হারিয়ে আসা স্পেন।