চলতি ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের শেষ ষোলতে ক্রোয়েশিয়াকে গুড়িয়ে দিয়ে কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করেছে স্পেন। নির্ধারিত ৯০ মিনিটে ৬ গোলের রোমাঞ্চ শেষে ইনজুরি সময়ে দুই গোলে জয় নিশ্চিত করে তিনবারের ইউরো চ্যাম্পিয়নরা।
ডেনমার্কের কোপেনহেগেনে ক্রোয়েশিয়াকে ৫-৩ গোলে হারিয়েছে লুইস এনরিকের শিষ্যরা।
শুরু থেকে ছোট ছোট পাসে আধিপত্য বজায় রেখে খেলেছে স্পেন। ক্রোয়েশিয়ার রক্ষণে একের পর এক আক্রমণ সাজিয়ে গেছে মোরাতা-কোকেরা।
ম্যাচের ১৬ মিনিটেই সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করে স্পেন। পেদ্রির ডিফেন্সচেরা পাসে কেবল ক্রোয়াট গোলরক্ষককে পরাস্ত করতে হতো কোকেকে। কিন্তু ফাঁকায় থেকেও দমিনিক লিভাকোভিচ বরাবর শট মেরে সমর্থকদের হতাশ করেন তিনি।
পরের মিনিটেই আরেকটি দারুণ সুযোগ এবার হাতছাড়া করে স্পেন। ডান প্রান্ত থেকে ফেরান তোরেসের ক্রসে বিপজ্জনক জায়গা থেকে মোরাতা করেন দুর্বল হেড।
স্পেনের গোল পাওয়া যখন মনে হচ্ছিল সময়ের ব্যাপার, ঠিক তখনই অদ্ভুতুড়ে এক ঘটনায় পিছিয়ে পড়ে তারা।
২০তম মিনিটে মাঝমাঠ থেকে ব্যাক-পাস দেন পেদ্রি। গোলরক্ষক সিমোন বিন্দুমাত্র চাপে ছিলেন না। কিন্তু মনঃসংযোগে ব্যাঘাত ঘটায় দলের বিপদ ডেকে আনেন তিনি। বল তার বুটে লেগে গোললাইন অতিক্রম করে যায়!
গোল পেয়ে উজ্জীবিত হয়ে ওঠে ক্রোয়েশিয়া। ২৪তম মিনিটে লুকা মডরিচের পাসে নিকোলা ভ্লাসিচের শট অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। দুই মিনিট পর মাতেও কোভাচিচের দূরপাল্লার শট চলে যায় গোলপোস্টের ওপর দিয়ে।
কয়েক মিনিটের চাপ সামলে আবারও ম্যাচের লাগাম নিজেদের হাতে নেয় স্প্যানিশরা। প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার আগে সমতায়ও ফেরে তারা। ৩৮তম মিনিটে হোসে গায়ার শট লিভাকোভিচ আটকে দেওয়ার পর ফিরতি শটে জাল খুঁজে নেন পাবলো সারাবিয়া।
দ্বিতীয়ার্ধের জন্য যেন সকল উত্তেজনা অপেক্ষা করছিল।
দ্বিতীয়ার্ধে নেমে শুরুতে ক্রোয়েশিয়া কিছুটা চাপে রাখলেও ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে প্রথমবারের মতো লিড নেয় স্পেন।
ফেরেন তোরেসের ক্রস থেকে হেডে বল জালে জড়িয়ে লিড এনে নেন ডিফেন্ডার সেসার আসপিলিকুয়েতা। ম্যাচের ৭৭ মিনিটে এবার ব্যবধান বাড়িয়ে ফেলে স্পেন। পাও তোরেসের লম্বা ক্রস থেকে বল পেয়ে জালে বল পৌঁছে ব্যবধান ৩-১ করে ফেলে এনরিকের দল।
স্পেন যখন ম্যাচ কোয়ার্টারে যাওয়ার স্বপ্নে বিভোর তখন ম্যাচে কামব্যাক করে ক্রোয়েশিয়া। ম্যাচে ৮৫ মিনিটে মিসলাভ ওরসিচের গোলে ব্যবধান ৩-২ করে ফেলে তারা। ম্যাচের অতিরিক্ত সময়ে স্পেনকে হতাশ করে মারিও পাসালিচের স্ট্রাইকে সমতায় চলে আসে ক্রোয়েশিয়া।
স্পেনকে ইনজুরি সময়ে নিয়ে যায় দলটি।
নির্ধারিত সময় শেষে অতিরিক্ত ৩০ মিনিটে দুটি গোল করে জয় নিশ্চিত করে স্পেন। এবার ম্যাচের একশ’ মিনিটে স্পেনকে লিডের উল্লাসে ভাসান আলভারো মোরাতা। দানি ওলমোর ক্রস থেকে বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে দুর্দান্ত গোলে ব্যবধান ৪-৩ করে ফেলেন মোরাতা।
তার তিন মিনিট পরে আরেকটি গোলে ম্যাচটা প্রায় বগলদাবা করে ফেলে স্পেন। ওলমোর আরেকটি ক্রস থেকে এবার মিকেল ওয়ারসাবালের গোলে ৫-৩ ব্যবধান করে ফেলে তারা।
এরপরে স্পেনের বিপক্ষে আর জবাব দিতে ব্যর্থ হয় ক্রোয়েশিয়া। জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে স্পেন। টানা দুই ম্যাচে পাঁচটি করে গোল করেছে স্পেন। কোয়ার্টার ফাইনালে সুইজারল্যান্ড ও ফ্রান্সের মধ্যকার একটি দলকে পাবে স্পেন।