বসুন্ধরা কিংসের জার্সিতে অভিষেক হয়ে গেছে এলিটা কিংসলের। অভিষেকেই গোল করেছেন সদ্য বাংলাদেশি হওয়া নাইজেরিয়ান ফুটবলার। তার এমন পারফর্মেন্সের পর জাতীয় দলের জার্সিতে কেমন খেলতে পারেন এলিটা সেটা নিয়ে চলছে জল্পনা কল্পনা।
দীর্ঘদিন যাবত প্রতিপক্ষের বক্সে শক্ত সামর্থ্য ও আতঙ্ক ছড়ানো স্ট্রাইকারের অভাবে ভুগছে বাংলাদেশ জাতীয় দল। ভক্তদের ধারণা কিংসলে দলে আসলে সেই অভাব পূরণ হবে। বিশেষ করে উপমহাদেশের বাইরের দলগুলোর সঙ্গে নাইজেরিয়ান কিংসলের অন্তর্ভুক্তি বাংলাদেশকে বাড়তি সুবিধা দিতে পারে এমনটা দাবি বিশেষজ্ঞদের।
আর আধুনিক ফুটবলে জন্মভূমি ছেড়ে কর্মভূমির জার্সি গায়ে আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট খেলাটা নতুন কিছু নয়। গত বিশ্বকাপ জয়ী ফ্রান্স দলের ফাইনালের একাদশে ছয় জন ছিলেন বিদেশি বংশোদ্ভূত ফুটবলার।
তবে, বাংলাদেশ জাতীয় দলের টিকিট পেতে হলে এলিটাকে লিগে পারফর্ম করতে হবে এমন শর্ত জুড়ে দেন প্রধান কোচ জেমি ডে।
ইংলিশ ট্যাকটিশিয়ানের প্রাথমিক শর্তকে সম্মান দেখিয়ে প্রথম ম্যাচেই গোল পেয়ে গেছেন এলিটা। এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের চূড়ান্ত পর্ব যখন সামনে এই অবস্থায় কিংসলের জাতীয় দলে প্রবেশের সম্ভাবনা দেখছেন অনেকে।
জেমির ডান হাত সহকারী কোচ স্টুয়ার্ট ওয়াটকিস অবশ্য এলিটার পারফরম্যান্সে সন্তুষ্টির কথা জানিয়েছেন।
টিম বিজেএমসি জার্সি গায়ে এলিটা কিংসলে। ফাইল ছবি
তিনি বলেন, ‘স্থানীয় ফুটবলার হিসেবে এলিটা শুধু বসুন্ধরা কিংসের নয়, বাংলাদেশের জন্যেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। সামনে আমাদের এশিয়ান কাপের বাছাইপর্ব ছাড়াও তিনটা ফিফা উইন্ডো আছে। ব্যক্তিগতভাবে কিংসলেকে নিয়ে আমি খুব আশাবাদী।’
গোল পেলেও এলিটার খেলায় অসন্তুষ্ট বসুন্ধরা কিংসের টেকনিক্যাল ডিরেক্টর বায়েজিদ জুবায়ের নিপু, ‘আমরা ওকে খেলিয়েছি। ও গোল পেয়েছে। কিন্তু আমরা তার খেলায় সন্তুষ্ট নই।’
জাতীয় দলের জন্য কেমন হতে পারে এলিটা তার ব্যাখ্যা দেয়ার চেষ্টা করেন কিংসের টেকনিক্যাল ডিরেক্টর।
নিপু বলেন, ‘কিংসলে ১০ বছর ধরে দেশে খেলছে। তাকে যদি ২১-২২ বছরে পেতাম তাহলে তার সবচেয়ে উপযোগিতা বেশি পেতাম।’
বয়সের সঙ্গে শারীরিকভাবেও স্থুলতার বিষয়টি উল্লেখ করে নিপুল বলেন, ‘এখন ওর বয়স ৩১। ও কতটুকু দিতে পারবে বলা যাচ্ছে না। কিংসলের শরীরও একটু স্থুল। ওকে আরও পরিশ্রম করতে হবে।’১৬ জুন বাংলাদেশের পাসপোর্ট হাতে পান এলিটা কিংসলে। বৈবাহিক সূত্রে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পেয়েছেন এই নাইজিরিয়ান। ঢাকায় আসার দুই বছর পর ২০১৩ সালে তিনি বিয়ে করেন লিজা বেগমকে। তবে সে জন্য তার জন্মভূমি নাইজেরিয়ার নাগরিকত্ব ছাড়তে হয়েছে তাকে।বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পাবার কাজে ব্যস্ত থাকায় এবারের লিগের প্রথম লেগে খেলা হয়নি তার। দ্বিতীয় লেগে কিংসের হয়ে আনুষ্ঠানিক চুক্তি সারেন তিনি।
১৬ জুন বাংলাদেশি পাসপোর্ট পান কিংসলে। ফাইল ছবি
২০১১ সাল থেকে বাংলাদেশে ঘরোয়া ফুটবলে খেলছেন কিংসলে। আরামবাগের হয়ে ক্যারিয়ার শুরু করেন তিনি। খানিক ইনজুরিতে ভুগলেও গত ৩ মৌসুমে টিম বিজেএমসি ও আরামবাগের মতো ক্লাবের হয়ে লিগের ৩৪ ম্যাচে ১৭ গোল করেছেন।ফুল ফিট হয়ে করোনাভাইরাস মহামারতে বাতিল হওয়া লিগে আরামবাগের হয়ে ৫ ম্যাচে ৬ গোল করে ভালোভাবেই এগোচ্ছিলেন। পরে কিংসে চুক্তি করেছেন।
কিংসলের বাংলাদেশি পাসপোর্ট পাওয়াতে দেশের ঘরোয়া লিগে খেলা অনেক বিদেশি ফুটবলারেরই এই পথম সুগম হলো ধারণা বিশেষজ্ঞদের। এর আগে আবাহনীর তারকা স্ট্রাইকার ও আরেক নাইজিরিয়ান সানডে চিজোবা বাংলাদেশের নাগরিকত্বের আবেদন করে ব্যর্থ হন।