লিওনেল মেসি ও লুইস সুয়ারেসের সখ্য পুরনো। ২০১৪ সালে বার্সেলোনায় যোগ দেয়ার পর থেকে মেসির সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে সুয়ারেসের। তখন থেকে একেবারে মানিকজোড় হিসেবে তারা বার্সেলোনায় খেলেছেন পাঁচ মৌসুম।মাঠের বাইরেও একসঙ্গে দেখা যেত মেসি ও সুয়ারেসকে। দুই পরিবার একসঙ্গে ছুটি কাটাতে যেতেন। একসঙ্গে শপিংয়ে যেতেন তাদের স্ত্রীরা।ক্লাবে মেসির প্রাধান্য ভাঙতেই সুয়ারেসকে ২০২০-২১ মৌসুম শুরুর আগে আতলেতিকো মাদ্রিদের কাছে বিক্রি করে দেন বার্সেলোনার সাবেক সভাপতি হোসেপ মারিয়া বার্তোমেউ। তবে ফাটল ধরেনি দুইজনের বন্ধুত্বে।আতলেতিকোর হয়ে বার্সেলোনার বিপক্ষে লিগে দুই ম্যাচে স্বভাবসুলভ আগ্রাসীভাবে খেললেও বন্ধু মেসিকে কোনো কড়া ট্যাকল বা ফাউল করেননি সুয়ারেস।এল ক্লাসিকোর আগে প্রিয় বন্ধুকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন উরুগুয়ের তারকা। আর আতলেতিকো লিগ শিরোপা জেতার পর সুয়ারেসকে অভিনন্দন জানাতে ভোলেননি মেসি। মৌসুম শেষে ছুটি কাটাতেও একসঙ্গে ছিলেন দুই বন্ধু ও তাদের পরিবার।তবে কোপা আমেরিকায় এলে বন্ধুত্ব কিছুটা দূরে সরিয়ে রাখতে হয় বৈকি! বিশ্বের সবচেয়ে পুরনো আন্তর্জাতিক ফুটবল টুর্নামেন্টের সবচেয়ে পুরনো দ্বৈরথ মেসির আর্জেন্টিনা ও সুয়ারেসের উরুগুয়ের।
মাঠের বাইরেও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে একসঙ্গে উপস্থিত থাকেন মেসি ও সুয়ারেস। ছবি: এএফপি
দুই দলই সবচেয়ে বেশিবার করে জিতেছে দক্ষিণ আমেরিকার এই ফুটবল টুর্নামেন্ট। সবচেয়ে বেশি জিতেছে উরুগুয়ে- ১৫ বার। আর্জেন্টিনা জিতেছে ১৪ বার।১৯১৬ ও ১৯১৭ সালে কোপার প্রথম দুই আসরের ফাইনালে আর্জেন্টিনাকে হারিয়ে শিরোপা জেতে উরুগুয়ে। আর্জেন্টিনা চার বছর পর শিরোপা জিতে প্রতিশোধ নিলেও, উরুগুয়ে তাদের বড় ধাক্কা দেয় ১৯৩০ বিশ্বকাপে। ফাইনালে আর্জেন্টিনাকে হারিয়েই শিরোপা জিতে নেয় সেলেস্তেরা।তখন থেকেই ফুটবল মাঠে আর্জেন্টিনার চরম শত্রু উরুগুয়ে। সবশেষ ২০১১ সালে আর্জেন্টিনার মাটি থেকে কোপা আমেরিকা জিতে নেয় উরুগুয়ে। সেই ক্ষত এখনও ভোলেননি আর্জেন্টাইনরা।কোপা আমেরিকায় আবারও মুখোমুখি হতে যাচ্ছে উরুগুয়ে ও আর্জেন্টিনা। ব্রাসিলিয়ায় দুই দল শনিবার সকাল ৬টায় নামছে মাঠে।বন্ধুত্ব ভুলে মেসি-সুয়ারেসকে লড়তে হবে একে অপরের বিপক্ষে। আর্জেন্টিনা এক ম্যাচ খেললেও উরুগুয়ে শনিবারের ম্যাচ দিয়েই টুর্নামেন্ট শুরু করতে যাচ্ছে।প্রথম ম্যাচে চিলির বিপক্ষে মেসির দারুণ ফ্রি-কিক গোলের পরও ম্যাচ ড্র করে আর্জেন্টিনা। উরুগুয়ের বিপক্ষে ইনজুরি কাটিয়ে দলে ফিরছেন ডিফেন্ডার ক্রিস্টিয়ান রোমেরো। তাকে জায়গা দিতে সরে যেতে হবে মার্তিনেস কারতাকে। আর আক্রমণভাগে নিকোলাস গনসালেস চোটে পড়ায় একাদশে সুযোগ পাচ্ছেন অভিজ্ঞ আনহেল দি মারিয়া।অন্যদিকে উরুগুয়ের দুই অভিজ্ঞ স্ট্রাইকার সুয়ারেস ও কাভানি শুরু করছেন ম্যাচ তা নিশ্চিত। কোচ অস্কার তাবারেস নিজের মাঝমাঠ নিয়ে এখনও নিশ্চিত নন। তাবারেস চান মেসিকে নিষ্ক্রিয় রাখতে পেনিয়ারোলের ডিফেন্ডার জোভানি গনসালেসকে মাঝমাঠে খেলাতে। সঙ্গে রাখতে চান লুকাস তোরেইরা, রদ্রিগো বেন্তাকুর ও ফেদেরিকো ভালভের্দেকে।দুই দল নিজেদের ইতিহাসে ১৯৪ বার একে অপরের মুখোমুখি হয়েছে। যা আন্তর্জাতিক ফুটবলে রেকর্ড। আর্জেন্টিনা জিতেছে ৮৯ ম্যাচ, উরুগুয়ে জিতেছে ৫৯টি। ড্র হয়েছে ৪৬ ম্যাচ।