প্রায় দুই বছর আগে যখন ইউরো ২০২০-এর ড্র অনুষ্ঠিত হয় তখন থেকেই সবার নজর গ্রুপ এফ-এ। ইউরো চ্যাম্পিয়ন পর্তুগাল, বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স ও চারবারের বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন জার্মানি পড়েছে একই গ্রুপে।তিন শিরোপা প্রত্যাশী দলের সঙ্গে রয়েছে নতুন শক্তি হাঙ্গেরি। সব মিলিয়ে এফ-গ্রুপ হয়ে দাঁড়িয়েছে মৃত্যুকূপ। আর এই ডেথগ্রুপের ডেথ ম্যাচগুলো শুরু হচ্ছে পর্তুগাল-হাঙ্গেরি লড়াইয়ের মধ্যে দিয়ে।বরাবরের মতো পর্তুগালের মেগাস্টার অধিনায়কের দিকেই সবার নজর। ৩৬ বছরের ক্রিস্টিয়ানো রোনালডো মাঠে কী করতে পারেন, সেটা গত দেড় দশকে বহুবার দেখেছে ফুটবল বিশ্ব।তরুণ না হলেও নিজেকে আরও পরিপক্ব ভাবছেন রোনালডো। এখনও চনমনে আছেন ১৮ বছর আগের মতোই। হাঙ্গেরির বিপক্ষে ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে রোনালডো বলেন, ‘আমি ১৮ বছর, ১০ বছর বা পাঁচ বছর আগের মতো নেই। নিজেকে খাপ খাইয়ে নিতে হবে। এখন আমি অনেক পরিপক্ব। দীর্ঘদিন খেলতে হলে খাপ খাইয়ে নেয়া ছাড়া উপায় নেই। ১৮ বছরে আমি খাপ খাইয়ে নিতে শিখেছি। সব সময় ব্যক্তিগত ও দলীয়ভাবে জিতেই এসেছি।’রাতের ম্যাচে মাঠে নামলেই পাঁচটি ইউরোতে খেলার অনন্য রেকর্ড গড়বেন রোনালডো। আর আলি দাইয়ি সর্বোচ্চ আন্তর্জাতিক ১০৯ গোলের রেকর্ডের চেয়ে মাত্র পাঁচ গোল পিছিয়ে আছেন সিআর সেভেন।তবে আপাতত ব্যক্তিগত রেকর্ড নিয়ে ভাবছেন না পর্তুগিজ অধিনায়ক। হাঙ্গেরির বিপক্ষে জিতে ডেথ গ্রুপে এগিয়ে যেতে চায় তার দল।‘আমার মনে হয় শারীরিক ও মানসিকভাবে দল প্রস্তুত। খেলোয়াড়রা অনেকেই তরুণ। এর মানে এই না যে তারা স্বপ্ন দেখতে পারবেন না। আমি জানি, সবাই মুখিয়ে আছে মাঠে নামতে।’
বুদাপেস্টে অনুশীলনে পর্তুগাল দল। ছবি: টুইটার
একই সুর পর্তুগালের হেড কোচ ফার্নান্দো সানতোসের কণ্ঠেও। নিজেদের শিরোপার জন্য অন্যতম ফেভারিট উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা এখন শিরোপা জিততে কী করা লাগবে, সেটা নিয়ে ভাবছি। প্রতিপক্ষ খুবই শক্তিশালী। টুর্নামেন্টে সাত-আটটা দল আছে, যারা শিরোপার দাবিদার। ডার্ক হর্স কয়েকটা দল আছে যাদেরও জেতার সুযোগ আছে। তাদের সঙ্গে আমাদের পার্থক্য একটা যে, আমরা বর্তমান চ্যাম্পিয়ন।’টুর্নামেন্টের আগে পর্তুগালের জন্য দুঃসংবাদ ছিল ম্যানচেস্টার সিটির উইংব্যাক জোয়াও কানসেলোর কোভিড পজিটিভ হওয়া। দুর্দান্ত এক মৌসুম কাটানো এই ডিফেন্ডারকে দলে না পেয়ে কিছুটা হতাশ হলেও বেশি ভাবতে চান না রোনালডো।‘কোভিড নিয়ে আর কথা বলতে চাই না। বলতে বলতে আমরা ক্লান্ত। দুঃখজনক পরিস্থিতি তবে আমাদের মনোযোগ নষ্ট হয়নি। খেলায় আমাদের পুরো মনোযোগ রয়েছে,’ বলেন রোনালডো।কোভিডের কারণে ইউরোর অনেকগুলো ভেন্যুতে দর্শকসংখ্যা সীমিত রাখা হলেও, বুদাপেস্টের ফেরেঙ্ক পুসকাস স্টেডিয়ামে থাকছে পরিপূর্ণ। ৬৮ হাজার দর্শকের নামা নিয়ে বেশ এক্সাইটেড রোনালডো। বলেন, ‘এটা পার্ফেক্ট। সবগুলো ভেন্যু ভরা থাকলে ভালো লাগত। খেলোয়াড় ও দর্শকদের জন্য ব্যাপারটা দারুণ হতো। তবে এটা আমাদের হাতে নেই।’হাঙ্গেরির রাজধানী বুদাপেস্টে রাত ১০টায় স্বাগতিকদের মুখোমুখি হচ্ছে পর্তুগাল। তাদের পরই মিউনিখের আলিয়াঞ্জ আরেনায় জার্মানির মোকাবিলা করবে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স।