১৩ বছর বয়স থেকে লিওনেল মেসির বসবাস বার্সেলোনায়। ২০ বছর ধরে স্পেনের শহর ও ক্লাবটির অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছেন এই আর্জেন্টাইন। তারপরও নিজ শহর রোসারিওর কথা সব সময় মনে পড়ে মেসির। মনে পড়ে মায়ের হাতের রান্না ও বন্ধুদের সঙ্গে কাটানো সময়ের কথা।আর্জেন্টিনার দৈনিক ওলেকে দেয়া সাক্ষাৎকারে এমনটা জানিয়েছেন মেসি নিজেই।মেসির এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারটি আর্জেন্টাইন পাঠকদের জন্য শনিবার ছাপাবে ওলে। তার আগে মেসির সঙ্গে কথোপকথনের কিছু অংশ পাঠকদের জন্য প্রকাশ করেছে তারা।সাক্ষাৎকারজুড়ে ফুটবল, আর্জেন্টিনা জাতীয় দল ও বার্সেলোনায় মেসির ভবিষ্যৎ সব প্রসঙ্গই এসেছে। তবে পাঠকদের জন্য টিজার হিসেবে যে অংশটুকু আগে ছেপেছে ওলে, সেটাতে মেসির একেবারে ভিন্ন দিক উঠে এসেছে।ওলের ছাপানো অংশে মেসিকে পাওয়া গেছে আবেগী, আমুদে ও হালকা মেজাজে। মাঠে ছয়বারের ব্যলন ডর-জয়ীর দুর্বল দিক খুঁজে পেতে গলদঘর্ম হতে হয় বাঘা বাঘা কোচ ও ডিফেন্ডারদের। ওলেকে মেসি নিজেই জানালেন গোপন কথা। মায়ের রান্নার প্রতি ভীষণ দুর্বল তিনি। মায়ের হাতের মিলানেসা (ভাজা মাংস ও আলুর তৈরি দক্ষিণ আমেরিকান খাবার) বেশি প্রিয় মেসির।‘মা একটা বিশেষ সস দেয় ওটার ওপরে। আমি প্রচুর মিলানেসা খেয়েছি। কিন্তু বাড়িতে মা বিশেষ ওই সস দিয়ে যেটা রান্না করেন, ওটার তুলনা নেই। অন্যরাও মায়ের হাতেরটা খেয়েছে আর বলেছে তারটাই সেরা।’
এক প্রশ্নের উত্তরে মেসি খোলাসা করেছেন তার দাড়ি রাখার রহস্য। ২০১৬ কোপা আমেরিকা থেকে দাড়ি রাখা শুরু করেছেন, জানালেন এমনটাই।‘আমি সব সময় শেভ করতাম। জিলেটের (রেজার কোম্পানি) সঙ্গে যখন আমার চুক্তি ছিল তখন তারা আমাকে সব সময় শেভ করতে বলত। ওদের চুক্তি শেষ হওয়ার পরই আমি ঠিক করি যে শেভ করব না। ২০১৬ সালের কোপা আমেরিকা, যেটা আমেরিকায় হয়েছিল তখন থেকে দাড়ি রাখা শুরু করি। ওখানে অনেককেই দাড়ি রাখতে দেখেছি।’সর্বকালের সেরা ফুটবল খেলোয়াড় আর কোন খেলা খেলতে পছন্দ করেন? অবসর কাটান কী করে? উত্তরে মেসি জানান বাড়িতে থাকলে প্যাডেল টেনিস খেলতে ভালোবাসেন তিনি।‘প্যাডেল আমার খুব পছন্দ। আমি পেপেকে (বন্ধু) আমার দলে নিই। ও খুব ভালো খেলে। আমি শুধু দৌড়াদৌড়ি করি। খুব বেশি একটা খেলা হয় না, কারণ আমাদের তিন দিন পরপর ম্যাচ থাকে। কিন্তু এটা খেলতে আমার দারুণ লাগে।’
ছেলেবেলার কথাও স্মরণ করেন মেসি। ওলেকে বলেন প্রতিবার রোসারিও ছেড়ে বার্সেলোনা যাওয়ার সময় মন খারাপ করতেন। যেতে চাইতেন না নিজের শহর ছেড়ে।‘আমি কাঁদতাম। আমি যেতে চাইতাম না। একই সঙ্গে বার্সেলোনায় গিয়ে আমি যা করি (ফুটবল খেলা) তা করতে ইচ্ছা করত। আমার বন্ধুদের থেকে দূরে চলে এসেছিলাম। এখন ১৩ বছরের সবার কাছে মোবাইল ফোন আছে। তখন তেমনটা ছিল না। যখন আমাকে ফোনে কথা বলার সুযোগ দেয়া হতো, তখন দেখা যেত আমি ঘণ্টাখানেক কথা বলছি।’লা লিগায় বার্সেলোনার হয়ে শেষ ম্যাচ খেলছেন না মেসি। এইবারের বিপক্ষে ম্যাচটি থেকে ছুটি দিয়েছে তাকে ক্লাব। এখন মেসি প্রস্তুতি নেবেন কোপা আমেরিকার। ১৩ জুন আর্জেন্টিনায় শুরু হচ্ছে দক্ষিণ আমেরিকার সবচেয়ে বড় এই ফুটবল টুর্নামেন্ট।