দক্ষিণ আমেরিকার ঐতিহ্যবাহী কোপা লিবার্তাদোরেস টুর্নামেন্টে আর্জেন্টিনার রিভার প্লেট ও কলম্বিয়ার সান্তা ফের ম্যাচ। ম্যাচের আগে রিভারের ম্যানেজার মার্সেলো গায়ার্দোর কপালে চিন্তার ভাঁজ। দক্ষিণ আমেরিকার চ্যাম্পিয়নস লিগ খ্যাত টুর্নামেন্টে খেলার চাপ তো আছেই। পাশাপাশই গায়ার্দোর লড়তে হচ্ছে অদৃশ্য এক শত্রুর সঙ্গে।তার দলের মূল ও রিজার্ভ স্কোয়াড মিলিয়ে ২০ সদস্য করোনাভাইরাসে আক্রান্ত। সবশেষ লিগ ম্যাচে রিজার্ভের খেলোয়াড় নামিয়ে কোনোমতে চালিয়েছেন। কোপা লিবার্তাদোরেসে সেই সুযোগও নেই। টুর্নামেন্টের আগে রেজিস্টার্ড খেলোয়াড়দের নিয়েই মাঠে নামার নিয়ম দক্ষিণ আমেরিকার সবচেয়ে বড় এই টুর্নামেন্টে।আর্জেন্টিনার অন্যতম বড় ক্লাব রিভার প্লেটে খেলেছেন বহু রথী-মহারথী। নতুন প্রতিভা খুঁজে বের করার ও বিশ্বকে উপহার দেয়ার যেন ভাণ্ডার আছে তাদের। আর তারাই কিনা পড়েছে খেলোয়াড় সংকটে।ম্যাচের জন্য কোনোমতে ১১ জন খেলোয়াড় বাছেন গায়ার্দো। বিপত্তি বাঁধে গোলকিপারকে নিয়ে। মূল দল ও রিজার্ভ মিলিয়ে ছয় গোলকিপারের চারজনের করোনা। পঞ্চম ও ষষ্ঠ জনকে খেলার অনুমতি দেয়নি দক্ষিণ আমেরিকার ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (কনমেবোল)।উপায়ান্তর না দেখে গায়ার্দো পরামর্শ করলেন দলের অধিনায়ক ও অভিজ্ঞ মিডফিল্ডার এনসো পেরেসের সঙ্গে। পেরেস অদ্ভুত এক বুদ্ধি বের করলেন। নিজেই দাঁড়াবেন গোলবারের নীচে।গায়ার্দো কি করবেন ভেবে না পেয়ে রাজি হয়ে গেলেন তার প্রস্তাবে। গোলকিপারের জার্সিতে ম্যাচে নামলেন পেরেস।
লিওনেল মেসির সাবেক সতীর্থ পেরেস ২০১৪ বিশ্বকাপ ফাইনাল খেলেছেন জার্মানির। তাই চাপ নেয়ার অভিজ্ঞতা তার আছে। কিন্তু গোলকিপিংয়ের অভিজ্ঞতা এই প্রথম।
কলম্বিয়ার দল সান্তা ফেকে শুরুতেই নাস্তানাবুদ করে দেয় রিভার প্লেট। প্রথম পাঁচ মিনিটেই দুই গোল করে আর্জেন্টিনার ক্লাবটি। ফাব্রিসিও আনহিলেরি দলের খাতা খোলেন তিন মিনিটে। এর দুই মিনিট পর লিড দ্বিগুণ করেন হুলিয়ান আলভারেস।ওই দুই গোলই যথেষ্ট ছিল রিভারের জয়ের জন্য। বাকি সময়টাতে তেমন একটা ভালো খেলতে পারেনি সানতা ফে। পেরেসকে খুব বেশি সেইভও করতে হয়নি।ম্যাচের ৭৩ মিনিটে কেলভিন অসোরিও পরাস্ত করেন পেরেসকে। বাকি সময়ে আর ভুল করেননি অধিনায়ক। রিভার ২-১ গোলের জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে।পুরো ম্যাচে রিভার খেলেছে সাবধানে। বল দখলের লড়াইয়ে হার্ড ট্যাকলে যায়নি। কারণ তাদের বেঞ্চে কোনো খেলোয়াড় ছিল না। মাঠের ১১ জনই সম্বল ছিল গায়ার্দোর। রেফারি কাউকে লাল কার্ড দেখালে বা কেউ চোট পেলে কোনো বদলি ছিল না বেঞ্চে। কম খেলোয়াড় নিয়েই শেষ করতে হতো ম্যাচ।তবে, তেমনটা হয়নি। নিজ স্টেডিয়ামে ভালোভাবেই ম্যাচ জিতে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে রিভার প্লেট। তাদের পরের ম্যাচ আক সপ্তাহ পর। ততদিনে হয়তো সুস্থ আর এক-দুইজন খেলোয়াড় পেয়ে যাবেন গায়ার্দো।