গত তিন মেয়াদে এমন সিরিয়াস হতে দেখা যায়নি বাফুফের সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনকে। গত ১২ বছরের সমালোচনাকে সঙ্গী করে চতুর্থ মেয়াদে এখন নিয়মিত সংবাদমাধ্যমের কাছে জবাবদিহি করেন। পরিকল্পনা তুলে ধরেন। কিছু ক্ষেত্রে আশ্বাসের দেয়া দায়িত্ব পালন করেছেন।
এবার দেশের ফুটবল উন্নয়নে একটা ভিশন প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছেন টানা চতুর্থবারের সভাপতি। তবে তা কার্যকরে একটা বাজেট খুঁজছেন তিনি।
বাফুফে ভবনে সাংবাদিকদের ভিশন ও বাজেট নিয়ে নিজের মত ব্যক্ত করতে গিয়ে কাজী সালাউদ্দিন বলেন, ‘আপনার যদি ফুটবল ডেভেলপ করতে হয় আপনার দুটো প্রধান জিনিস দরকার। প্রথমত ভিশন। একটা পূর্ণাঙ্গ ভিশন। আপনারা কী চান ও কীভাবে করবেন?
‘এই ভিশনটাকে বাস্তবায়ন করতে গেলে বাজেট দরকার। বাজেট ছাড়া ভিশন অর্থহীন। টাকাটাও অর্থহীন ভিশন ছাড়া। এটা ভিশন ও অর্থের একটি সমন্বয়।’
বাজেট পেলে ভিশন পূরণে মাঠে পুরোদুস্তর লেগে পড়বেন বলে জানান তিনি। বলেন, ‘এখন আমরা টাকা খুঁজছি। যখন টাকা থাকবে তখন আমরা জানব দেশে কিছু একটা হবে। নাহলে এভাবেই ফুটবল চলবে। এভাবেই ফুটবল শেষ হয়ে যাবে।’
দেশের করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে প্রধানমন্ত্রীর কাছে এই পরিকল্পনা নিয়ে বসার আগ্রহের কথা জানিয়েছেন সালাউদ্দিন।
তিন ক্লাবের সঙ্গে বৈঠক করছেন বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন
বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতি ঠিক হলে আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রস্তাবনা দিব আমাদের ভিশন নিয়ে। ক্রীড়া মন্ত্রনালয়ের সঙ্গে বসব। যদি সেগুলো অনুমোদন পায় তাহলে আশা করি ফুটবলের ভবিষ্যত ভালো হবে। যদি না হয় তাহলে জানি না কী হবে।’
প্রিমিয়ার লিগের বিরতি চলছে। এর মাঝে দেশের ফুটবল উন্নয়নে ক্লাবগুলোর কর্মকর্তা ও কোচদের পরামর্শ শুনতে তিন ক্লাবকে ফেডারেশনে ডাকেন বাফুফে প্রধান। তিন ক্লাব হলো ঢাকা আবাহনী, বসুন্ধরা কিংস ও শেখ রাসেল। ধারাবাহিকভাবে আরও তিন ক্লাবের সঙ্গে বসার পরিকল্পনা আছে তার।
কী আলোচনা হয়েছে ক্লাবের কোচ-কর্মকর্তাদের সঙ্গে জানতে চাইলে ব্যাখ্যা করেন সালাউদ্দিন।
বলেন, ‘দুই শ থেকে আড়াই শ ফুটবলার খেলে প্রিমিয়ার লিগে। কোচরা কার্যক্রম দেখে তাদের। খেলা দেখে। যেটা হচ্ছে সেটা কি ঠিক হচ্ছে নাকি কোনো বদল দরকার।নিজে বিষয়টা বোঝার জন্য ডেকেছি।’
তাদের কাছে কী জানতে চেয়েছেন প্রশ্ন করলে তিনি জানান, ‘জানতে চেয়েছিলাম, খেলোয়ড়দের কন্ডিশন কী রকম? এই জাতীয় দল নির্বাচনটা তারা কী মনে করে? আপনাদের যদি দেয়া হতো তাহলে তারা কী সিলেক্ট করতেন। যারা কোচ প্যানেল আছে তারা ভুল করেছে কি রাইট করেছে সেটা জানা আমার বিষয় নয়। আমি বুঝতে চাই যেটা হচ্ছে ঠিক হচ্ছে কি না।’
নিজেদের মত ব্যক্ত করছেন ক্লাবের কর্মকর্তা-কোচরা
ক্লাবদের চোখে লিগের অবস্থান সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা নিতেই এমন উদ্যোগ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আর তিন-চারটি ক্লাবের সঙ্গে বসব। টপ সিক্স ক্লাবকে ডাকব। যেখান থেকে জাতীয় দলের প্লেয়ারগুলো চান্স পায়। তারপরে আমি সিদ্ধান্তে আসব যে কী পরিস্থিতি।’
গত ১২ বছরের সমালোচনা ঘারে নিয়ে সম্প্রতি দেশের ফুটবল উন্নয়নে বেশ তৎপর দেখা যাচ্ছে বর্তমান নির্বাহী কমিটিকে। বিষয়টি যেন নিজের মুখেই একটি ইংরেজি প্রবাদের মধ্য দিয়ে জানালেন সালাউদ্দিন, ‘ইংরেজিতে একটা কথা আছে না? ডেসপারেট টাইম নিডস ডেসপারেট মেজার্স।’