বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

চিলির মাঠে একখণ্ড ফিলিস্তিন

  •    
  • ১২ মে, ২০২১ ১৯:৫৮

পালেস্তিনো ক্লাবের খেলোয়াড়দের প্রত্যেকের গলায় ছিল ফিলিস্তিনিদের ঐতিহ্যবাদী কেফিয়ে। ফিলিস্তিনি সংস্কৃতির অংশ এই কাপড় গলায় ও মাথায় চাপিয়ে পালেস্তিনো ক্লাবের ফুটবলাররা প্রতিবাদ জানান ইসরায়েলি আগ্রাসনের।

পূর্ব জেরুজালেমের শেখ জারাহ এলাকা থেকে ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদে ইসরায়েলের সাম্প্রতিক তৎপরতায় পবিত্র রমজানের শুরু থেকে ওই অঞ্চলে উত্তেজনা বিরাজ করছে। ৭ মে আল আকসা মসজিদ চত্বরে ইসরায়েলি পুলিশ হানা দিলে শুরু হয় সহিংসতা।সংঘর্ষে শতাধিক মানুষ আহত হয়। ইসরায়েলি পুলিশ আটক করে শতাধিক ফিলিস্তিনিকে। এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি বাহিনীর আক্রমণে ফিলিস্তিনের গাজায় নিহতের সংখ্যা ৩৫।পুরো বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ নিন্দা জানাচ্ছেন ইসরায়েলের এই সন্ত্রাসী হামলার। যোগ দিয়েছে ফুটবল বিশ্বও। মোহামেদ সালাহ, রিয়াদ মাহরেজদের মতো বিশ্ব তারকারাও নিন্দা জানান এই হামলার।তবে, ফুটবল বিশ্বকে চমকে দেয়ার মতো ছবিটি আসে দক্ষিণ আমেরিকার দেশ চিলি থেকে। মসজিদে হামলার পরদিন সান্তিয়াগোতে মুখোমুখি হয় চিলির সবচেয়ে বিখ্যাত ক্লাব কোলো-কোলো ও রাজধানীর আরেক ক্লাব পালেস্তিনো।ম্যাচ শুরুর আগে, পালেস্তিনো ক্লাবের খেলোয়াড়দের প্রত্যেকের গলায় ছিল ফিলিস্তিনিদের ঐতিহ্যবাদী কেফিয়ে। ফিলিস্তিনি সংস্কৃতির অংশ এই বিশেষ কাপড় গলায় ও মাথায় চাপিয়ে পালেস্তিনো ক্লাবের ফুটবলাররা প্রতিবাদ জানান ইসরায়েলি আগ্রাসনের।

গলায় কেফিয়ে জড়ানো পালেস্তিনো দলের মিডফিল্ডার সেসার করতেস। ছবি: টুইটার

ফিলিস্তিন থেকে হাজারো মাইল দূরে সান্তিয়াগো শহরের এক ফুটবল ক্লাবের এমন প্রতিবাদ মোটেও বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা নয়। নাম শুনে যেমনটা বোঝা যায়, পালেস্তিনো ক্লাবের ইতিহাস জড়িত ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের সঙ্গে।উনিশ শতকের মাঝামাঝি ফিলিস্তিন থেকে অভিবাসীদের আগমন শুরু হয় চিলিতে। দক্ষিণ আমেরিকার আর্জেন্টিনায় পৌঁছানোর পর তারা আন্দিস পর্বতমালা পেরিয়ে অবস্থান নেন সান্তিয়াগোতে। এই অভিবাসন চলতে থাকে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর পর্যন্ত।ফিলিস্তিনের বাইত জালা, বাইত সাহুর ও বেথলেহেম শহর থেকে আসা এই সব অভিবাসীদের অধিকাংশই ছিলেন ফিলিস্তিনি খ্রিষ্টান। ইউরোপিয়ান ও অন্যান্য অভিবাসীদের চিলি সাদরে গ্রহণ করলেও ফিলিস্তিনিদের মুখোমুখি হতে হয় জাতিগত বিদ্বেষ, বর্ণবাদ ও শ্রেণিবিদ্বেষের। চিলির বুদ্ধিজীবি, নাগরিক ও ব্যবসায়ী শ্রেণির কাছে গ্রহণযোগ্যতা ছিল না ফিলিস্তিনিদের। চিলিয়ানরা তাদেরকে ডাকা শুরু করে ‘তুরকোস’ (তুর্কি) বলে। স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমগুলোতেও তাদের একপ্রকার অচ্ছুত হিসেবে তুলে ধরা হয়।প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে লড়াই করে সান্তিয়াগোর মাটিতে নিজেদের কমিউনিটি ও ঐতিহ্য ধরে রাখে ফিলিস্তিনিরা। এরই ধারাবাহিকতায় গঠিত হয় ফুটবল ক্লাব দেপোর্তিভো পালেস্তিনো। ১৯২০ সালে গঠনের প্রায় তিন দশক পর ১৯৫২ সালে তাদের স্বীকৃতি দেয় চিলিয়ান ফুটবল ফেডারেশন।ওই বছর তারা সুযোগ পায় চিলির দ্বিতীয় বিভাগ ফুটবল লিগে। তিন বছরের মাথায় তারা জিতে নেয় জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপ। তারপর থেকে চিলির ফুটবলে পালেস্তিনো এক সমীহ জাগানো নাম।চিলির লিগে খেললেও, পালেস্তিনো সবসময়ই সোচ্চার ফিলিস্তিনিদের পক্ষে। ২০১৪ সালে নিজেদের জার্সিতে ফিলিস্তিনের মানচিত্র এঁকে প্রায় দেড় লাখ টাকা জরিমানা দেয় দলটি।সেই ঘটনার সাত বছর পর আবারও তারা ফুটবল বিশ্বের আলোচনায় আল আকসা মসজিদে সংঘর্ষের প্রতিবাদ জানিয়ে।

এ বিভাগের আরো খবর