বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) শিরোপা প্রত্যাশী অপরাজিত শেখ জামালের বিপক্ষে মুক্তিযোদ্ধার এগিয়ে যাওয়া, প্রথমার্ধেই দুই লাল কার্ডের কাণ্ড, সঙ্গে প্রত্যাবর্তনের গল্প, সবমিলিয়ে চরম উত্তেজনাকর ম্যাচ দেখলেন দেশের ফুটবল সমর্থকরা।
বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে বুধবার নাটকীয়তায় ভরা ম্যাচে মুক্তিযোদ্ধাকে ২-১ গোলে হারিয়ে স্বস্তির জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব।
কাকতাল হলেও সত্য, প্রথম লেগে একই ব্যবধানে মুক্তিযোদ্ধার বিপক্ষে জিতেছিল শফিকুল ইসলাম মানিকের শীষ্যরা।
ম্যাচের আট মিনিটের মাথায় শেখ জামালকে চমকে দেয় রাজা ইসার মুক্তিযোদ্ধা। ডিফেন্স থেকে বাড়ানো লম্বা থ্রু শেখ জামালের রক্ষণের উপর দিয়ে পৌঁছে মেহেদী হাসান রয়েলের কাছে। বল নিয়ে তিনি সোজা ঢুকে যান ডি-বক্সে।
গোলকিপার জিয়া এগিয়ে এলে ডান দিক দিয়ে আনমার্কড সোহেল রানার কাছে এগিয়ে দেন রয়েল। ফাঁকা পোস্টে বল ঠিকানায় পাঠাতে এতোটুকু ভুল করেননি সোহেল।
এক মিনিট পরই সমতায় ফেরার সুযোগ পায় শেখ জামাল। বাম প্রান্ত থেকে রেজাউল করিমের বাড়ানো ক্রসটায় সিক্স ইয়ার্ড থেকে শট নেন সুলায়মান সিল্লাহ। দারুণভাবে এই আক্রমণ বিপদমুক্ত করেন গোলকিপার প্রিতম।
ম্যাচের ৩৫ মিনিটে ফাউল করে লাল কার্ড দেখেন মুক্তিযোদ্ধার ডিফেন্ডার উজ্জ্বল। একইসঙ্গে স্লাইডে ফাউল করার কারণে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন শেখ জামালের মিডফিল্ডার ফয়সাল আহমেদ। ১০ জনের দলে পরিণত হয় দুই ক্লাব।
ম্যাচের ৩৫ মিনিটে ফাউল করে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়ে দুই দলের দুই ফুটবলার
প্রথমার্ধের অতিরিক্ত সময়ে সমতায় ফেরার সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করে জামাল। সুলেমান কিংয়ের বাড়ানো ক্রস থেকে ডি-বক্সের ভেতর থেকে গোলকিপারকে একা পেয়েও মিস করেন সিল্লাহ।
এক গোলের স্বস্তি নিয়ে বিরতিতে যায় মুক্তিযোদ্ধা।
স্বস্তি বেশিক্ষণ টেকেনি। দ্বিতীয়ার্ধের পাঁচ মিনিটের মাথায় ডি-বক্সের বেশ বাইরে থেকে ফ্রি-কিকে দুর্দান্ত গোল করে দলকে সমতায় ফেরার উল্লাসে মাতান শেখ জামালের মিডফিল্ডার ওটাবেক ভালিদজানোভ। মাঝমাঠে খেলা এই উজবেক ফুটবলারের লিগে এটা ছয় নম্বর গোল।
সমতায় ফেরার পর আর থেমে থাকতে হয়নি জামালকে। ম্যাচের ৬৩ মিনিটে শাকিল আহমেদের কর্নার কিক থেকে দারুণ হেডে গোলপোস্টের ডান কোণ বরাবর বল জালে জড়ান প্রথমার্ধে একাধিক গোলের সুযোগ নষ্ট করা সিল্লাহ। লিগে হলুদ জার্সিতে সাত নম্বর গোলটি করেন গাম্বিয়ান।
ম্যাচের ৬৬ মিনিটে ডি-বক্সের অনেক বাইরে থেকে নেয়া মুক্তিযোদ্ধা ডিফেন্ডার শোয়েব মিয়ার বুলেট গতির শট কর্নারের বিনিময়ে বিপদমুক্ত করেন গোলকিপার জিয়া।
এরপরে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি মুক্তিযোদ্ধা। দারুণ প্রত্যাবর্তনে নবম জয় তুলে মাঠ ছাড়ে ধানমন্ডির জায়ান্টরা। আর লিগে এটা অষ্টম হার মুক্তিযোদ্ধার।
এ জয়ে টেবিলের শীর্ষে থাকা বসুন্ধরা কিংসের সঙ্গে পয়েন্টের ব্যবধান কমলো জামালের। আট পয়েন্ট কমে ৩২ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে শেখ জামাল। আর নয় পয়েন্ট নিয়ে দশে মুক্তিযোদ্ধা।