সোমবার কেঁপে উঠেছিল পুরো ফুটবল বিশ্ব। ইউরোপের শীর্ষ ১২ ক্লাব মিলে ঘোষণা করে, ইউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের বদলে নতুন একটি ইউরোপিয়ান সুপার লিগের আয়োজন করবে তারা।
সেই ঘোষণার পর থেকেই ভক্ত-সমর্থকদের চাপের মুখে পড়েছিল সবকটি ক্লাব। কেবল সমর্থক নয়, চাপ আসছিল সাবেক এবং বর্তমান ফুটবলারদের থেকেও।
এত কিছুর পর তাই সুপার লিগে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে প্রিমিয়ার লিগে ছয় দল- ম্যানচেস্টার সিটি, চেলসি, আর্সেনাল, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, লিভারপুল ও টটেনহ্যাম।
আর এই সিদ্ধান্তের পর নিজেদের এক বিবৃতিতে সুপার লিগকে আপাতত স্থগিত করেছে সুপার লিগ কর্তৃপক্ষ।
ইংলিশ ক্লাবগুলোর মধ্যে সবার আগে ম্যান সিটি আনুষ্ঠানিকভাবে সরে দাঁড়ালেও, সবার আগে সুপার লিগ ত্যাগের আলোচনায় বসে চেলসিই।
মঙ্গলবার বিক্ষোভরত চেলসি সমর্থকদের থামাতে চেলসির কিংবদন্তি গোলকিপার ও বর্তমান উপদেষ্টা পিটার চেক এগিয়ে আসেন এবং বলেন, ‘আমরা আপনাদের ক্ষোভের কারণ বুঝি। আমাদের একটু সময় দিন।’
কাজ আগে চেলসি শুরু করলেও সবার আগে ঘোষণা দেয় ম্যানচেস্টার সিটি। এক বিবৃতিতে তারা জানায়, ‘সুপার লিগের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন না তারা।’
একে একে নিজেদের যুক্ত না হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, আর্সেনাল, লিভারপুল ও টটেনহ্যাম। সবার শেষে ঘোষণা দেয় চেলসি। তবে সেটির কারণে হিসেবে অনেকেই ধারণা করেছেন ব্রাইটনের বিপক্ষে তাদের ম্যাচকে। ম্যাচ গোলশূন্য ড্র হলেও সমর্থকদের মন জিতে নিয়েছেন রোমান আব্রামোভিচ।
এই ছয় ক্লাবের মধ্যে কেবল আর্সেনালই এরকম একটি প্রকল্পে যুক্ত হওয়ার জন্য ক্ষমা চেয়েছে তাদের সমর্থকদের কাছে।
ছয় ইংলিশ ক্লাব ছেড়ে যাবার পর প্রস্তাবিত টুর্নামেন্ট নিয়ে ভাবতে বাধ্য হচ্ছে সুপার লিগ। বুধবার সকালে এক বিবৃতিতে নিশ্চিত করে, বহিরাগত চাপে সুপার লিগ ছাড়তে বাধ্য হয়েছে এই ছয় দল। আপাতত স্থগিত করলেও তারা এই টুর্নামেন্টকে ঢেলে সাজাবেন। ও নতুন আঙিকে ফুটবল ভক্তদের সামনে নিয়ে আসবেন।
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ছয় ক্লাব সুপার লিগ ছাড়ার পর অন্য দুই দেশের ছয় ক্লাবও থাকছে কি না, সেটি নিয়েও রয়েছে প্রশ্ন। গুঞ্জন আছে সুপার লিগ ছাড়তে যাচ্ছে দুই ইতালিয়ান দল এসি ও ইন্টার মিলান।
এই সিদ্ধান্ত নেবার কথা ভাবছে স্পেনের আতলেতিকো মাদ্রিদও। বার্সেলোনা সভাপতি হোয়ান লাপোর্তা সুপার লিগকে জানিয়ে দিয়েছেন, ক্লাবের সদস্যরা না চাইলে কোনোভাবেই এই প্রকল্পে যুক্ত হতে পারবে না বার্সা।
শুরুর মাত্র দুই দিনের মাথায়ই তাই এমন ধাক্কা খেলো সুপার লিগ। এমনকি এমন গুঞ্জনও আছে, সুপার লিগের চেয়ারম্যান ফ্লোরেন্তিনো পেরেস রিয়াল মাদ্রিদের সভাপতি হিসেবে বহাল থাকলে ইউয়েফার কোনো প্রতিযোগিতায় খেলতে দেওয়া হবে না তাদের।ফুটবলে পরিবর্তন আনতে গিয়ে ভালোই বিপাকে পড়েছেন পেরেস।