ঘোষণা আসার পর থেকেই তোপের মুখে পড়েছে ইউরোপিয়ান সুপার লিগ। রোববার এই লিগের ঘোষণা দেয় ইংল্যান্ডের ছয় শীর্ষ ক্লাব। এরপর এতে যোগ হয় স্পেন ও ইতালির তিন ক্লাব।দীর্ঘদিন ধরেই ইউরোপের সেরা ক্লাবগুলো মহাদেশের সেরা প্রতিযোগিতা চ্যাম্পিয়নস লিগকে ঢেলে সাজানোর আহ্বান জানাচ্ছিল ইউরোপিয়ান ফুটবলের অভিভাবক সংস্থা ইউয়েফাকে।
তাদের দাবি ছিল বড় ক্লাবগুলো যেন লভ্যাংশ বেশি পায়। কারণ তারাই টিভি রেটিং ও মাঠের দর্শককে বেশি আকর্ষণ করে। কিন্তু ইউয়েফা তাদের দাবিতে কান না দেয়ায় ইউরোপিয়ান ক্লাব অ্যাসোসিয়েশনের বেশ কয়েকটি ক্লাব মিলে পরিকল্পনা করে সুপার লিগের।সাবেক ও বর্তমান ফুটবলার, ভক্ত-সমর্থক ও ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর পর তাদের এই পরিকল্পনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ইউয়েফা। তাদের চেয়ারম্যান আলেক্সান্ডার সেফেরিনের কাছে এই পদক্ষেপ ভক্তদের মুখে থুতু দেয়ার শামিল।‘আমার মতে এই পরিকল্পনা সমর্থক ও পুরো সমাজের মুখে থুতু দেয়ার মতো। আমরা কোনোভাবেই খেলাটিকে আমাদের কাছ থেকে নিয়ে যেতে দেবো না।’সেফেরিনের মতে, দলগুলো শুধু অর্থলোভী হয়ে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।তিনি বলেন, ‘গত ২৪ ঘণ্টায় নির্দিষ্ট কিছু ক্লাব লোভের বশবর্তী হয়ে স্বার্থপরের মতো যে অপমানজনক সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেটির বিরুদ্ধে ইউয়েফা ও পুরো ফুটবল বিশ্বকে এক হয়ে দাঁড়াতে হবে।’ইউয়েফা সভাপতি আরও জানান, এরই মধ্যে ইউরোপের শীর্ষ লিগগুলো ও ফিফা তাদের সমর্থন দিয়েছে।‘শুধু ফুটবল, কমিউনিটি ও সরকারগুলোই এর বিরোধিতা করছে তা নয়, আমরা সবাই এর বিরুদ্ধে। ইংলিশ এফএ, স্প্যানিশ ও ইতালিয়ান ফেডারেশন ও ৫৫টি সদস্য ফেডারেশন সম্পূর্ণভাবে এর বিরোধিতা করছে।’সোমবার ইউয়েফার এক বিশেষ সভা শেষে সেফেরিন জানান, সুপার লিগে অংশগ্রহণকারী খেলোয়াড়দের বিপক্ষেও কড়া পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত সংস্থাটি।‘খেলাধুলার ক্ষেত্রে ও আইনিভাবে এই লিগকে রুখতে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করব। ফিফা ও এর ছয়টি কনফেডারেশনের পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী এতে অংশগ্রহণকারী দলগুলো ঘরোয়া, ইউরোপিয়ান ও বৈশ্বিক যেকোনো প্রতিযোগিতা থেকে বহিষ্কার করা হবে। একই সঙ্গে তাদের খেলোয়াড়দের জাতীয় দলে খেলা থেকে বিরত রাখা হবে।’তেমনটা হলে ইউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ, ইউরোপা লিগ বিশ্ব ক্লাব কাপসহ সব ধরনের শীর্ষ প্রতিযোগিতায় খেলার যোগ্যতা হারাবে দলগুলো।একই সঙ্গে লিওনেল মেসি, ক্রিস্টিয়ানো রোনালডো, পল পগবাদের মতো তারকারা সুযোগ হারাতে পারেন জাতীয় দলের জার্সি গায়ে দেয়ার। তবে সিদ্ধান্তগুলো এখনও চূড়ান্ত নয়।
ফিফা ও ইউয়েফাকে দেয়া এক চিঠিতে সুপার লিগ কর্তৃপক্ষ (যার প্রধান রিয়াল মাদ্রিদের সভাপতি ফ্লোরেন্তিনো পেরেস) জানায়, তারা ফিফা ও ইউয়েফার সঙ্গে আলোচনায় বসবে শিগগিরই।‘আমরা শঙ্কিত যে এই চিঠির উত্তরে ফিফা ও ইউয়েফা অংশগ্রহণকারী ক্লাব ও খেলোয়াড়দের সংস্থা দুটি আয়োজিত ও অনুমোদিত সব আসর থেকে বর্জন করার শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নিতে পারে। আশা করি তাদের জবাব এমনটা হবে না। আমাদের মতো আপনারাও সুপার লিগ কোম্পানি গঠনের তাৎক্ষণিক সুফল অনুধাবন করতে পারবেন।’সুপার লিগ আরও জানায়, তারা এরই মধ্যে আদালতে প্রয়োজনীয় আবেদন করেছে যাতে করে তাদের আসরকে থামানোর উদ্যোগ সফল না হয়।