বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

২০ দলের সুপার লিগ, ইউরোপিয়ান ফুটবলে ভাঙন

  •    
  • ১৯ এপ্রিল, ২০২১ ১৩:১৭

রোববার সন্ধ্যায় একজোট হয়ে যোগদানের সম্মতি জানায় ইংল্যান্ডের পাঁচ ক্লাব লিভারপুল, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, চেলসি, টটেনহ্যাম হটস্পার ও আর্সেনাল। কয়েক ঘণ্টা পরই তাদের সঙ্গে যোগ দেয় ম্যানচেস্টার সিটি। স্পেন থেকে যোগ দেয় বার্সেলোনা, রিয়াল মাদ্রিদ ও আতলেতিকো মাদ্রিদ। ইতালি থেকে যুক্ত হয় ইন্টারনাৎসিওনাল, মিলান ও ইউভেন্তাস।

অবশেষে আশঙ্কা সত্যি হলো। ইউরোপিয়ান ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা ইউয়েফার সরাসরি বিরোধিতা করে ইউরোপিয়ান সুপার লিগ (ইএসএল) আয়োজনের জন্য সম্মতি দিয়েছে মহাদেশের শীর্ষ ১২টি ফুটবল ক্লাব। রোববার রাতে তারা যৌথ বিবৃতিতে ইএসএলে যোগদানের বিষয়টি নিশ্চিত করে।রোববার সন্ধ্যায় একজোট হয়ে যোগদানের সম্মতি জানায় ইংল্যান্ডের পাঁচ ক্লাব লিভারপুল, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, চেলসি, টটেনহ্যাম হটস্পার ও আর্সেনাল। কয়েক ঘণ্টা পরই তাদের সঙ্গে যোগ দেয় ম্যানচেস্টার সিটি। স্পেন থেকে যোগ দেয় বার্সেলোনা, রিয়াল মাদ্রিদ ও আতলেতিকো মাদ্রিদ। ইতালি থেকে যুক্ত হয় ইন্টারনাৎসিওনাল, মিলান ও ইউভেন্তাস।দলগুলোর পক্ষ থেকে যৌথ বিবৃতিতে জানানো হয় দলগুলো ২০টি ক্লাবের একটি প্রতিযোগিতা আয়োজন করবে যেখানে ‘মাঝ সপ্তাহে খেলা হবে। পাশাপাশি দলগুলো নিজেদের দেশের লিগেও অংশগ্রহণ চালিয়ে যাবে।’ মাঝ সপ্তাহে সাধারণত ইউয়েফার শোকেস টুর্নামেন্ট চ্যাম্পিয়নস লিগের খেলা অনুষ্ঠিত হয়। স্বাভাবিকভাবেই প্রস্তাবিত সুপার লিগ চ্যাম্পিয়নস লিগের সরাসরি বিরোধিতা করছে। প্রস্তাবিত সুপার লিগ ‘যতটা দ্রুত সম্ভব’ শুরু করতে চায় ক্লাবগুলো।

ইএসলের সভাপতি করা হয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ প্রেসিডেন্ট ফ্লোরেন্তিনো পেরেসকে আর সহ-সভাপতি থাকছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের মালিক জোল গ্লেজার।

যাত্রা শুরুর আগেই তোপের মুখে পড়েছে ইএসএল। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ইংলিশ ছয়টি ক্লাবের সমালোচনা করে বলেছেন, ‘পরবর্তী কোনো পদক্ষেপ নেয়ার আগে ক্লাবগুলোকে তাদের সমর্থক ও ফুটবল কমিউনিটিকে জবাব দিতে হবে।’ এছাড়াও জনসন জানান যে এর বিরুদ্ধে যেকোনো পদক্ষেপের জন্য যথাযথ ফুটবল কর্তৃপক্ষের প্রতি তার সমর্থন থাকবে।কেমন হবে ফরম্যাট?২০ দলের টুর্নামেন্টে স্থায়ী থাকবে ১৫টি ক্লাব। যার মধ্যে ১২টির নাম ঘোষণা করা হয়েছে। বাকি ৩টির নামও দ্রুত জানানো হবে। আগস্টে শুরু হবে টুর্নামেন্ট। ২০ দলকে রাখা হবে দুটি গ্রুপে। প্রত্যেকে হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে ভিত্তিতে খেলবে মাঝ সপ্তাহে।প্রতি গ্রুপের সেরা তিন দল সরাসরি খেলবে কোয়ার্টার ফাইনালে। চতুর্থ ও পঞ্চম দলের মধ্যে হবে দুই লেগের প্লে-অফ। তারপর চ্যাম্পিয়নস লিগের মতোই সেমিফাইনাল ও নিরপেক্ষ ভেন্যুতে ফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে মে মাসে।

কেন এই সুপার লিগ?

দীর্ঘদিন ধরেই এই পাঁচ ক্লাবসহ ইউরোপের সেরা ক্লাবগুলো মহাদেশের সেরা প্রতিযোগিতা চ্যাম্পিয়নস লিগকে ঢেলে সাজানোর আহ্বান জানাচ্ছিল ইউয়েফাকে। মূলত তাদের দাবি ছিল বড় ক্লাবগুলো যেন লভ্যাংশ বেশি পায় যেহেতু তারাই টিভি রেটিং ও মাঠের দর্শককে বেশি আকর্ষণ করে। কিন্তু ইউয়েফা তাদের দাবিতে কান না দেয়ায় ইউরোপিয়ান ক্লাব অ্যাসোসিয়েশনের বেশ কয়েকটি ক্লাব মিলে পরিকল্পনা করে সুপার লিগের।তাদের দাবী অনুযায়ী করোনা মহামারি এই সুপার লিগের আয়োজনকে এগিয়ে এনেছে। তাদের মতে, ‘ইউরোপিয়ান ফুটবলের অর্থনৈতিক মডেলের ভঙ্গুর অবস্থাকে তরান্বিত করেছে এই করোনা মহামারি। কয়েকদিন যাবৎ ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতাগুলোর ভবিষ্যৎ নিয়ে ফুটবলের নীতি নির্ধারকদের সঙ্গে প্রচুর আলোচনা হয়েছে। সুপার লিগের প্রতিষ্ঠাতা ক্লাবগুলো বিশ্বাস করে, সমস্যা সমাধানে যে প্রস্তাবগুলো দেয়া হয়েছে তাতে করে ফুটবল অবকাঠামোতে বাড়তি অর্থ যোগসহ উন্নতমানের ম্যাচের সংখ্যা বৃদ্ধির মতো মৌলিক সমস্যাগুলো দূর হবে না।’সুপার লিগের পরিকল্পনা পুরনো হলেও এই মৌসুমে বেশ জোরেশোরে শোনা যাচ্ছে এর বাস্তবায়নের কথা কারণ ইউয়েফার নতুন চ্যাম্পিয়নস লিগ পরিকল্পনা। ২০২৪ সাল থেকে টুর্নামেন্টের দলসংখ্যা ২৪ থেকে ৩৬ করতে চাচ্ছে সংস্থাটি। যার অর্থ অতিরিক্ত ১২টি দলে লভ্যাংশ বন্টন হওয়া। ১৯ এপ্রিল ইউয়েফার বাৎসরিক সভায় এ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসতে পারে।ইউয়েফার প্রতিক্রিয়াইউরোপিয়ান ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা স্বাভাবিকভাবেই এই বিদ্রোহী ক্লাবগুলোর পদক্ষেপকে সহজভাবে নেয়নি।কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে তারা এক বিবৃতিতে জানিয়েছে সর্বাত্মকভাবে তারা এই লিগ বাতিলের চেষ্টা করবে।‘খেলাধুলার ক্ষেত্রে ও আইনিভাবে এই লিগকে রুখতে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করব। ফিফা ও এর ছয়টি কনফেডারেশনের পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী এতে অংশগ্রহণকারী দলগুলো ঘরোয়া, ইউরোপিয়ান ও বৈশ্বিক যেকোনো প্রতিযোগিতা থেকে বহিষ্কার করা হবে। একই সঙ্গে তাদের খেলোয়াড়দের জাতীয় দলে খেলা থেকে বিরত রাখা হবে।’তেমনটা হলে ইউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ, ইউরোপা লিগ বিশ্ব ক্লাব কাপ্সহ সবধরণের শীর্ষ প্রতিযোগিতায় খেলার যোগ্যতা হারাবে দলগুলো। একই সঙ্গে লিওনেল মেসি, ক্রিস্টিয়ানো রোনালডো, পল পগবাদের মতো তারকারা সুযোগ হারাতে পারেন জাতীয় দলের জার্সি গায়ে দেয়ার।তবে, এগুলো এখনও চূড়ান্ত নয়। সুপার লিগের ক্লাবগুলো ফিফা ও ইউয়েফার সঙ্গে আলোচনায় বসবে শিগগিরই।

‘ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে সুপার লিগের প্রতিষ্ঠাতা ক্লাবগুলো দ্রুত ফিফা ও ইউয়েফার সঙ্গে আলোচনায় বসতে চায়। সার্বিক ভাবে নতুন লিগ ও ফুটবলের কল্যাণের জন্য সংস্থাদুটির সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করতে চায় ইএসএল।’

ইউরোপিয়ান ক্লাব অ্যাসোসিয়েশনও (ইসিএ) শক্ত বিরোধীতা করেছে ইএসএলের। রোববার রাতে জরুরী বৈঠকের আহ্বাব জানায় তারা। তবে সেটিতে আয়াক্স, বায়ার্ন মিউনিখ ও প্যারিস সেইন্ট জার্মেই ছাড়া অন্য দলগুলো যোগ দেয়নি।

এ বিভাগের আরো খবর