বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

শিরোপা ছুঁয়ে দেখা হলো না বাংলাদেশের

  •    
  • ২৯ মার্চ, ২০২১ ২০:১২

দশরথ রঙ্গশালা স্টেডিয়ামে সোমবার বিকেল পৌনে ছয়টা শুরু হওয়া ম্যাচে যে বাংলাদেশ হেরেছে ২-১ গোল ব্যবধানে। দশরথ জেতা হলো না। ট্রফি না ছোঁয়ার হতাশা নিয়ে দেশে ফিরতে হচ্ছে লাল-সবুজদের।

রেফারি ম্যাচ সমাপ্তির বাঁশি বাজিয়ে দিলেন। মাঠে মাথা নিচু করে শুয়ে আছেন জামাল ভূঁইয়া-জনিরা। ক্রন্দনরত জাতীয় ফুটবলারদের এ দৃশ্য ট্রফি না পাওয়ার। ১৭ বছর ধরে কোনো টুর্নামেন্টের শিরোপা না পাওয়া আক্ষেপের দৃশ্য। এই ছবি তীরে এসে তরী ডোবানোর ছবি।

দশরথ রঙ্গশালা স্টেডিয়ামে সোমবার বিকেল পৌনে ছয়টা শুরু হওয়া ম্যাচে যে বাংলাদেশ হেরেছে ২-১ গোল ব্যবধানে। দশরথ জেতা হলো না। ট্রফি না ছোঁয়ার হতাশা নিয়ে দেশে ফিরতে হচ্ছে লাল-সবুজদের।

প্রথমার্ধে দুই গোলে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয়ার্ধে দারুণভাবে ব্যাক করে সমতায় ফিরতে ফিরতে ফেরা হলো না বাংলাদেশের। দশরথের ময়দানে হার বরণ করে মাঠ ছাড়তে হয়েছে জাতীয় ফুটবল দলকে।

কত প্রস্তুতি কত হিসেব, কত আক্ষেপ মেটানোর গল্প। কত ইতিহাস। সবই মিলিয়ে গেল নেপালের কাছে হেরে।

এটাই কি হওয়ার কথা ছিল?ফাইনালের মতো ম্যাচে মূল একাদশেই চমক দেখে শুরু। স্কোয়াডে টুর্নামেন্টে অভিষেক করা দুই নবাগত ডিফেন্ডার রিমন হোসেন ও মেহেদী হাসানকে মূল একাদশে সুযোগ করে দেন জাতীয় দলের প্রধান কোচ জেমি ডে। ফরোয়ার্ড লাইন আপ শক্তিশালী করতে মাঠে নামানো হয় পাঁচ আক্রমণভাগের ফুটবলার। ফরোয়ার্ড সাদ উদ্দীন খেলেন ডিফেন্ডার হিসেবে।

গোলের দেখা পেতে মরিয়া জেমি আক্রমণ সাঁজায় হাফ ডজন ফরোয়ার্ড নিয়ে। দৃশ্যত তার মাসুল দিতে হলো প্রথমার্ধে। এই ৪৫ মিনিটেই যা করার করে ফেলেছে নেপাল। মাঝমাঠ দখল করে ম্যাচটাকে বগলবন্দী করে ফেলেছে।

ম্যাচের শুরু থেকেই আধিপত্য নিয়ে খেলতে থাকে নেপাল। মাঝমাঠ যেন নিজেদের সম্পত্তি বানিয়ে ‍কড়ায়গণ্ডায় উসুলও করে ফেলে নেপাল।

ম্যাচের ১৭ মিনিটে নেপালের দারুণ একটা সুযোগ কর্নারের বিনিময়ে ফিরিয়ে দেন আনিসুর রহমান জিকো।

তাতে অবশ্য লাভ হয় না। কর্নার থেকে পরের মিনিটেই লিড নিয়ে ফেলে নেপাল। কর্নার থেকে আসা বলটা প্রাথমিকভাবে রাকিব ক্লিয়ার করলে ফিরতি শটে বল ডান প্রান্ত দিয়ে জালে জড়ান আনমার্ক থাকা সঞ্জক রাই।

গোল খেয়েও ম্যাচে ফেরার কোনো সমন্বিত প্রয়াস দেখা যায়নি হাফ ডজন ফরোয়ার্ডের।

উল্টো পাল্টা আক্রমণে ম্যাচের ৩০ মিনিটে ডিফেন্ডার রিয়াদুল রাফির ভুলে ব্যবধান দ্বিগুণ করতে পারত নেপাল। রাফি বল ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হলে বল নিয়ে ডি-বক্সের ভেতরে ঢুকে পড়েন নেপালের ফরোয়ার্ড অঞ্জন বিস্তা। এই অবস্থায় এগিয়ে আসেন গোলকিপার আনিসুর রহমান জিকো। তাকে আসতে দেখে চিপ করে জালে জড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন বিস্তা। বল চলে যায় বারের একটু উপর দিয়ে।

ম্যাচে সমতায় ফেরার চেষ্টায় কিছুটা গুছিয়ে ওঠার চেষ্টা করে বাংলাদেশ। কর্নার আদায় করে নেয় ম্যাচের ৩৪ মিনিটে। জামালের নেয়া শট সহজেই ক্লিয়ার করে নেপাল। ওই আক্রমণে আরেকটি ফাউল আদায় করে নেয় লাল-সবুজরা। জামালের দেয়া বাঁকানো ক্রসটা মেহেদীর হেডে চলে যায় বারের উপর দিয়ে। আরেকবার হতাশ হয়ে নেপালের রক্ষণ থেকে ফিরতে হয় বাংলাদেশকে।

সুযোগ কাজে লাগাতে বাংলাদেশের মতো ভুল করেনি নেপাল। ৪২ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করে ফেলে আয়োজকরা। ডিফেন্ডার রিমনের আনমার্ক করা নেপালের ফরোয়ার্ড বিশাল রাই তার সামনে থেকে বল নিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে পড়েন। ঠান্ডা মাথায় ওয়ান টু ওয়ানে গোলকিপার জিকোকে পরাস্ত করেন।

ব্যস এখানেই প্রায় যা করার করে ফেলে নেপাল। দুই গোলে পিছিয়ে বিরতি যায় বাংলাদেশ।

এই অবস্থায় দ্বিতীয়ার্ধে ছক বদলাতে বাধ্য হন জেমি। ডিফেন্সে ও মাঝমাঠ-ফরোয়ার্ড তিন পজিশনে বেশ কিছু বদল করান।

নেপালের ডাবল ধামাকার পর ব্যবধান কমাতে মরিয়া হয় বাংলাদেশ। প্রথমার্ধের একাদশের কয়েকটি বদল আসে দ্বিতীয়ার্ধে। স্ট্রাইকার সুমন রেজার বদলে ডিফেন্ডার টুটুল বাদশা আর ডিফেন্ডার রিমন হোসেনের বদলে ইয়াসিন আরাফাত, ফরোয়ার্ড রয়েলের বদলে মাহবুবুর রহমান সুফিলকে নামান জেমি।

বদলি হিসেবে নেমে খেলার মধ্যে ছন্দও খুঁজে পেতে শুরু করে বাংলাদেশ।

৬৭ মিনিটে ডি-বক্সের বাইরে থেকে নেয়া ইয়াসিন আরাফাতের বুলেট শটটা বার ঘেষে বাইরে চলে যায় মাঠের বাইরে।

ধারাবাহিক আক্রমণের ফল হিসেবে ৮২ মিনিটে ব্যবধান কমায় বাংলাদেশ। জামাল ভূঁইয়ার কর্নার কিক থেকে দারুণ হেডে বল জালে জড়ান বদলি হিসেবে মাঠে নামা মাহবুবুর রহমান সুফিল।

অতিরিক্ত সময়ের ছয় মিনিট মিলিয়ে ১৩ মিনিট সমতায় ফিরতে হন্যে হয়ে ওঠে বাংলাদেশ। সেই স্বপ্নের গোলের দেখা পাওয়া গেল না। হার নিয়েই মাঠ ছাড়তে হলো বাংলাদেশের। ট্রফি ছুঁয়ে দেখার আক্ষেপ আর সময়টাও বাড়ল লাল-সবুজদের।

এদিকে ৩৭ বছর পর কোনো টুর্নামেন্ট জিতলো নেপালের সিনিয়র দল। প্রতিপক্ষ হিসেবে বাংলাদেশকেই ১৯৮৪ সালে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে হারিয়ে এই দশরথেই ট্রফি জিতেছিল নেপাল।

এ বিভাগের আরো খবর