নেপালে ত্রিদেশীয় সিরিজে বাংলাদেশের শুরুটা হলো জয় দিয়ে। প্রথম ম্যাচে কিরগিজস্তানের অলিম্পিক দলকে হারিয়ে সিরিজের ফাইনালে যাওয়ার পথে এক ধাপ এগিয়ে গেল জাতীয় দল।
নেপালের দশরথ রঙ্গশালা স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার স্থানীয় সময় পৌনে ছয়টায় শুরু হওয়া ম্যাচে কেন্দ্রীয় এশিয়ার দলকে ১-০ গোলে হারায় বাংলাদেশ। প্রথমার্ধেই গোলটি পায় লাল-সবুজ দল।
কিরগিজস্তানের এই দলটা একেবারেই অপরিচিত ছিল বাংলাদেশের জন্য। এমন দলের বিপক্ষে নতুন তিন ফুটবলারকে অভিষেক করান জাতীয় দলের প্রধান কোচ জেমি ডে। নতুন দলের বিপক্ষে নবাগতদের সুযোগ দেন এই ইংলিশ টেকটিশিয়ান।
মূল একাদশে ১৯ মাস পর ফিরলেন মাসুক মিয়া জনি, ইনজুরি বিরতির পর ফিরেছেন মতিন মিয়াও।
প্রথমার্ধের শুরুতে কিছুটা অগোছালো খেললেও সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে নিজেদের গোছাতে থাকে বাংলাদেশ। আধিপত্য বিরাজ করে কিছু সুযোগ তৈরি হলেও বড় সুযোগ এসেছে কমই। প্রথম ম্যাচের শুরুতে গোলে এগিয়ে যেতে পারলে মানসিকভাবেও এগিয়ে যাওয়া সম্ভব।
সেই অপেক্ষার প্রহর শেষ হয়েছে ৩০ মিনিটের মাথায়।
মাঝমাঠে কিরগিজস্তানের এক ফুটবলারের পা থেকে বল দখল মতিন মিয়া এগিয়ে দেন মেহেদী হাসান রয়েলের কাছে। রয়েল ওয়ান টাসেই ডান লাইন ধরে এগিয়ে যেতে থাকা সাদ উদ্দীনকে এগিয়ে দেন। স্পেসটাকে দারুণভাবে কাজে লাগিয়ে সাদ বল নিয়ে ঢুকে পড়েন ডি-বক্সের ভেতরে।
বক্সের ভেতর থেকে বলটা এগিয়ে দেন বাম পাশ দিয়ে দৌড়ে আসতে থাকা বিপলু ও রয়েলের দিকে। নিশ্চিত গোলের এই আক্রমণ ক্লিয়ার করতে গিয়ে নিজেদের সর্বনাশ ডেকে আনেন কিরগিজস্তানের ডিফেন্ডার কুমারবাজ উলু বাইয়ামান। তার পা লেগে বলে গোলকিপার ও অধিনায়ক তোকোতায়েভ এরঝানকে গ্লাভস ফাঁকি দিয়ে চলে যায় জালে।
এক গোলের স্বস্তি নিয়ে বিরতিতে যায় বাংলাদেশ।
বিরতির পর অনেকগুলো চেঞ্জিং করান জেমি। ফরোয়ার্ড রাকিব, মিডফিল্ডার মানিক হোসেন মোল্লা, ডিফেন্ডার রিয়াদুল হাসান রাফি ও অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়াও বদলি হিসেবে নামান।
গোলের লিডের পর দ্বিতীয়ার্ধে যেন রক্ষণাত্মক কৌশলে খেলতে থাকে বাংলাদেশ। তবে কাউন্টার অ্যাটাকে মাঝেমধ্যেই ভালো কিছু মুহূর্ত তৈরি করে মতিন-জামালরা। ম্যাচের ৫৭ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করার দারুণ একটি সুযোগ তৈরি বাংলাদেশ। ডান প্রান্ত থেকে বল দখলে নিয়ে মতিন এগিয়ে দেন সোহেলের কাছে। প্রথম সুযোগেই শট না নিয়ে বল নিয়ে এগিয়ে গেলে রক্ষণে আটকে যায় সুযোগ। হতাশ হয়ে ফিরতে হয় লাল-সবুজদের।
ম্যাচে ফিরতি মরিয়া কিরগিজস্তানও নির্ধারিত ৯০ মিনিটেও তেমন ক্লিয়ার সুযোগ আদায় করতে ব্যর্থ হয়। কাউন্টার অ্যাটাকে ব্যবধান বাড়ানোর একাধিক সুযোগ তৈরি করে বাংলাদেশ।
যেমন ম্যাচের ৮২ মিনিটে মতিন মিয়ার ক্রসটা ঠিকমতো মাথায় জমাতে পারেননি মানিক মোল্লা।
পিছিয়ে থাকা কিরগিজস্তানও চেষ্টার কমতি রাখেনি। মাঝমাঠের দখল রেখে সমতায় ফিরতে উঠে-পড়ে লাগে তারা। ৮৬ মিনিটে দূরপাল্লার শট নেন বদলি হিসেবে নামা কিরগিজস্তানের ফরোয়ার্ড আরতিকবায়েভ। বলটি বারের উপর দিয়ে চলে গেলে হতাশ হতে হয় দলটিকে।
ম্যাচের একেবারে অন্তিম মুহূর্তে সমতায় ফেরার সবচেয়ে বড় সুযোগটি মিস করে বসে কিরগিজস্তান। নির্ধারিত সময় শেষে যোগ করা অতিরিক্ত সময়ের শেষ মিনিটে কর্নার থেকে সিক্স ইয়ার্ডের ভেতর থেকে হেড করে বল বারের বাইরে পাঠিয়ে দেন তাসিয়েভ।
জানে পানি পায় জেমির শিষ্যরা। প্রথম ম্যাচে জয়ের স্বাদ নিয়ে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ। এতে সিরিজের ফাইনাল খেলার সুযোগটা আরও বেড়ে গেল লাল-সবুজদের। ২৫ মার্চ দ্বিতীয় ও গ্রুপের শেষ ম্যাচটি বাংলাদেশ খেলবে আয়োজক নেপালের বিপক্ষে। ফাইনাল ২৭ মার্চ।