ম্যাচের নির্ধারিত সময় পর্যন্ত ৩-২ ব্যবধানে এগিয়ে চট্টগ্রাম আবাহনী। অপেক্ষা শুধু রেফারির শেষ বাঁশির। অতিরিক্ত এই সময়ে হয় পেনাল্টির নাটক। ছয় গোলের রোমাঞ্চ ছড়িয়ে লেখা হয় প্রত্যাবর্তনের দারুণ গল্প। তিন গোলে পিছিয়ে থাকা বাংলাদেশ পুলিশ এফসি হার এড়ায়।
বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে রোববার প্রিমিয়ার লিগের অষ্টম রাউন্ডের ম্যাচে এমনটাই হয়েছে। চট্টগ্রাম আবাহনীর সঙ্গে ৩-৩ এ ড্র করেছে বাংলাদেশ পুলিশ।
ফেভারিট হিসেবে মাঠে নেমে আধিপত্য নিয়ে খেলতে থাকে চট্টগ্রাম আবাহনী। ম্যাচের ১৮ মিনিটে লিড নেয় বন্দরনগরীর দলটি।
মাঝমাঠ থেকে লম্বা ক্রসে ডি-বক্সের ভেতরে বল পান মান্নাফ রাব্বি। নিজেই শট নিতে পারতেন বারে। গোলকিপারকে চমকে দিয়ে বাড়িয়ে দিলেন সতীর্থ ফরোয়ার্ড নিক্সন গুয়েলহার্মের কাছে। ব্যস, ফাঁকা পোস্টে বল জড়াতে এতোটুকু কষ্ট হয়নি এই ব্রাজিলিয়ানের।
গোল উদযাপনের রেশ কাটতে না কাটতেই দুই মিনিট পর ব্যবধান বাড়ায় চট্টগ্রাম আবাহনী। এবার কাউন্টার অ্যাটাকে চিনেদু ম্যাথিউয়ের বাড়ানো পাস থেকে বল পেয়ে ডি-বক্সের বাইরে থেকে ডান কোণ বরাবর পাঠিয়ে দেন রাকিব হোসেন।
দুই গোলের লিড নিয়ে বিরতিতে যায় আবাহনী।
দ্বিতীয়ার্ধে নেমে চার মিনিটের মধ্যে আরও পিছিয়ে যায় পুলিশ। এবার নিজেদের ভুলেই পিছিয়ে পড়ে তারা। গোলকিপার নেহাল বাইরে থেকে বল এগিয়ে দেন সতীর্থ ডিফেন্ডারকে। বুঝে ওঠার আগেই সেই ভুলটাকে দূরপাল্লার তড়িৎ শটে জালে পাঠাতে ভুল করেননি রাকিব। দলের তৃতীয় ও নিজের দ্বিতীয় গোলটি আদায় করে নেন তিনি।
জোড়া গোল করেন চট্টগ্রাম আবাহনীর ফরোয়ার্ড রাকিব হোসেন
এমন বিপর্যয় থেকেই প্রত্যাবর্তন শুরু পুলিশের।
ম্যাচের ৫৮ মিনিটে নিজেদের প্রথম গোলের দেখা পায় পুলিশ। মুরোলিমঝোন আখমেদভের কর্নার থেকে হেডে বল জালে জড়ান ফেডেরিক পুডা। আইভরিকোস্টের এই ফুটবলারের গোলে ব্যবধান কমায় পুলিশ।
এই গোল যেন ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। লাগাতার আক্রমণ থেকে পুলিশ ব্যবধান কমায় ৭৫ মিনিটে। এবারও আখমেদভের কর্নার কিক থেকে হেডে বল জালে জড়ান ল্যান্সিং তোরে (৩-২)।
ম্যাচটা এভাবেই হয়তো জিতে যেতে পারত চট্টগ্রাম আবাহনী। নির্ধারিত ৯০ মিনিট পর্যন্ত এমন ফল থাকতেই খেলার শেষ বাঁশি বাজতে পারত।অতিরিক্ত সময়ে ডি-বক্সের ভেতরে হাত দিয়ে বল আটকে দেন আবাহনীর ডিফেন্ডার মঞ্জুরুর রহমান মানিক। এ জন্য লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে হয় তাকে।
আর এই পেনাল্টি থেকে হার এড়ানোর সুযোগ আসে পুলিশের এবং সে সুযোগ হাতছাড়া করেনি তারা। বাল্লো ফামৌসার গোল থেকে ব্যবধান ৩-৩ করে ফেলে তারা।এই ব্যবধানেই ম্যাচ শেষ হলে পয়েন্ট ভাগাভাগি করে মাঠ ছাড়ে দুই দল।
এ ড্রয়ে সাত ম্যাচে নয় পয়েন্ট নিয়ে ছয়ে অবস্থান করছে মারুফুল হকের দল চট্টগ্রাম আবাহনী। আর এক ম্যাচ বেশি খেলে আট পয়েন্ট নিয়ে সাতে উঠেছে পাকের আলীর বাংলাদেশ পুলিশ।