ধানমন্ডির ডার্বি বলে কথা! ঢাকা আবাহনী বনাম শেখ জামাল। লিগের টাইটেল প্রত্যাশী দুই হেভিওয়েট দলের লড়াই। উত্তেজনা ছড়াবে মাঠে, গ্যালারি বিভক্ত হবে সমর্থকদের উল্লাসে। আক্রমণ-প্রতি আক্রমণে ম্যাচ হয়ে উঠবে উপভোগ্য। হয়েছেও তাই।
একবার আবাহনী লিড নিয়েছে, তো পরেই পরিশোধ করছে শেখ জামাল। আবার গোল, সেই গোলের জবাবে আবারও গোল। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার চার গোলের রোমাঞ্চ দেখেছে ধানমন্ডি ডার্বি।
২-২ ব্যবধানে ড্র হয়েছে ম্যাচ।
তবে গোলের উত্তেজনা ছাড়িয়ে ম্যাচের ‘নায়ক’ বলা যেতে পারে দুই লাল কার্ডকে।
সবকিছু যেন সাজানো স্ক্রিপ্টের মতোই এগোচ্ছিল। ম্যাচের ১৩ মিনিটে লিড নেয় আবাহনী। মিডফিল্ডার সোহেল রানার পাস থেকে বল জালে জড়ান কারভান্স বেলফোর্ট।
তার ঠিক ছয় মিনিট পরেই শেখ জামালের জবাব। ওটাবেক ভালিদজানোভের পাস থেকে সুলাইমান সিল্লাহর গোলে এবার সমতায় ফেরে হলুদরা। ম্যাচ চলছে আপন গতিতে।
তখনই যেন ‘নায়ক’ লাল কার্ডের অনুপ্রবেশ। ৪০ মিনিটের মাথায় দুই দলের দুই খেলোয়াড়ের মধ্যে রেষারেষি। এ ঘটনার জেরে রেফারির পকেট থেকে বেরিয়ে এলো দুই লাল কার্ড। আবাহনীর জুয়েল ও শেখ জামালের সলোমন কানফর্ম মুহূর্তেই মাঠের বাইরে।
বাকী ৫০ মিনিট দশ জনের সমতায় খেলল দুই দল।
প্রথমার্ধে ১-১ ব্যবধানের পর দ্বিতীয়ার্ধের প্রথম মিনিটেই আবারও লিড নেয় আবাহনী। এবার রায়হান হাসানের ক্রস থেকে বল জালে জড়ান ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড ফ্রান্সিসকো তোরেস।
এবার লিগে দুর্দান্ত পারফর্ম করা শেখ জামাল জবাব দিতেও সময় নেয়নি বেশি। ৭২ মিনিটে সুলাইমান সিল্লাহর দারুণ ক্রস থেকে গোলকিপার সোহেলকে চিপ করে বোকা বানান তারই স্বদেশি পা ওমর জবে।
ম্যাচে সমতায় আসার পর আবাহনীকে যেন আরও নার্ভাস দেখাচ্ছিল। আক্রমণ বাড়িয়ে দিয়ে দুটি দারুণ সুযোগ তৈরি করে তা হাতছাড়াও করে শেখ জামাল। দুবারই যেন নিজেকে গোলবঞ্চিত করেন ওমর জবে।
পরের মিনিটেই লিড নিতে পারত শেখ জামাল। সুলাইমান সিল্লাহর বাড়িয়ে দেয়া থ্রু থেকে অফসাইড ফাঁদ এড়িয়ে বল পেয়ে যান পা ওমর জবে। একটু তড়িঘড়ি করেই শট নিলেন ডি-বক্সের ভেতর থেকে। বুলেট শটটা ফিস্ট করে সুযোগটা নষ্ট করে দলকে বাঁচিয়ে দেন শহিদুল আলম সোহেল।
ডি-বক্সের বাইরে এমন আরও একটি সুযোগ নষ্ট করে জবে। আবাহনীর ডিফেন্ডার টুটুল বাদশা বল ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হলে চিপ শট নেন এই গাম্বিয়ান। কিন্তু বারের উপর দিয়ে চলে গেলে হতাশ হতে হয় সমর্থকদের।
ম্যাচের অতিরিক্ত সময়ে আবাহনীও জয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারত, যদি না ডিফেন্ডার নাসির হোসেনের গোলটি অফসাইডে বাতিল হয়ে না যায়।
শেষ পর্যন্ত পয়েন্ট ভাগাভাগি করেই মাঠ ছাড়ল দুই দল।
এ ড্রয়ে লিগে প্রথম কোনো পয়েন্ট খোয়াল শফিকুল ইসলাম মানিকের শেখ জামাল। ছয় ম্যাচে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে আছে তারা। আর এক ম্যাচ বেশি খেলে ১৫ পয়েন্ট নিয়ে তিনে মারিও লেমসের আবাহনী।