লিগে ঘরের মাঠ কুমিল্লায় দ্বিতীয় জয় পেয়েছে কিংস। মোহামেডানের বিপক্ষে স্কোর শিটে কিংস গোলদাতাদের সবাই লাতিন আমেরিকার। বিশেষ করে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার ভয়ংকর ত্রয়ীতে হেভিওয়েট মোহামেডানকে বিধ্বস্ত করেছে কিংস।
বলতে গেলে এবারের লিগে লাতিন ছন্দেই সিংহভাগ ম্যাচ জিতেছে অস্কার ব্রুজনের বাহিনী। সোমবারের ম্যাচেও ছিল লাতিন ম্যাজিকের হাইলাইট।
কুমিল্লার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে মোহামেডানকে কিংস হারিয়েছে ৪-১ গোলে। জোড়া গোল করেছেন আর্জেন্টাইন রাউল বেসেরা। একবার করে বল জালে জড়ান দুই ব্রাজিলিয়ান ফুটবলার জোনাথন ফার্নান্দেজ ও রবসন রবিনিয়ো।
এ জয়ে টানা পাঁচ ম্যাচে পূর্ণ পয়েন্টের স্বস্তি নিয়ে মাঠ ছাড়ে কিংস। আর গত ম্যাচে আবাহনীকে রুখে দেয়া মোহামেডান চার ম্যাচে হারল দুটিতে।ম্যাচের শুরু থেকে সমান তালে খেলতে থাকে দুই দল। প্রথম সুযোগ কাজে লাগাতে সফল হয় স্বাগতিক কিংস।
নয় মিনিটে রাউল বেসেরার গোলে লিড নেয় তারা। ডি-বক্সের সামনে থেকে বল পেয়ে সতীর্থ জোনাথন ফার্নান্দেজকে এগিয়ে দেন বেসেরা। ডান প্রান্ত থেকে বলটা সিক্স ইয়ার্ডের সামনে থাকা ফাঁকায় ভাসিয়ে দিলে হেডে বল জালে জড়ান এই আর্জেন্টাইন।
২২ মিনিটেই কিংসের জালে বল পাঠিয়ে গোল পরিশোধ করে সমর্থকদের উল্লাসে মাতায় মোহামেডান।
আতিকুজ্জামানের লম্বা থ্রো ঠিকমতো গ্রিপ করতে ব্যর্থ হন কিংসের গোলকিপার আনিসুর রহমান জিকো। হাত ফসকে বল মাটিতে পড়লে জটলার মধ্য থেকে ভলিতে লক্ষ্যদেভ করেন আবিওলা নুরাদ।
সমতার স্বস্তিটা সুখে পরিণত করতে পারেনি মোহামেডান। ৪৫ মিনিটে ডি-বক্সের ডান প্রান্তে ফ্রি-কিক পায় তারা। স্পট কিক থেকে সুলেমান দায়াবাতের শটটা বারে না লাগলে লিড নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারত সাদা-কালোরা।
মোহামেডানের এই আক্রমণ যখন হতাশায় পরিণত হয় সেখান থেকে প্রতি আক্রমণে ফের লিডের আশায় ছিলেন রবিনিয়ো।
মতিন মিয়ার সঙ্গে ওয়ান টু ওয়ানে বল পেয়ে দুই ডিফেন্ডারকে ড্রিবলিং করে বল নিয়ে এগিয়ে যান এই ব্রাজিলিয়ান। গোলকিপারকে চিপ শটের মাধ্যমে পরাস্ত করেন তিনি। মুহূর্তের মধ্যেই জাল খুঁজে পায় বল। একেবারে ব্রাজিলীয় ঢংয়ে কিংসকে লিডের উল্লাসে ভাসান তিনি।
২-১ গোলের লিডের স্বস্তি নিয়ে বিরতিতে যায় কিংস। দ্বিতীয়ার্ধে নেমে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেয় স্বাগতিক দল।
ম্যাচের ৫০ মিনিটে কাউন্টার অ্যাটাক থেকে ব্যবধান বাড়ায় কিংস। আবারও ব্রাজিলিয়ান রনিনিয়োর ঝলক। মাঝমাঠ থেকে বল এগিয়ে দেন বিশ্বনাথ ঘোষের সামনে। বল সামনে নিয়ে ডান প্রান্ত থেকে ডি-বক্সের সামনে আন-মার্ক থাকা রবসনের কাছে পাঠান এই উইঙ্গার। বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে মাটি কাঁপানো শটে বল জালে জড়ান রবসন।
৩-১ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ে মোহামেডান। ম্যাচে ফিরতে মরিয়া শন লেনের বাহিনীকে আরেকটি দুঃখে ভাসায় কিংস।
৮১ মিনিটে জোনাথনকে ডি-বক্সের ভেতরে ফাউল করেন জাফর ইকবাল। পেনাল্টি থেকে বেসেরার গোলে ৪-১ ব্যবধান করে ফেলে তারা। জয়ের শেষ পেরেকটাও ঠুকে দেয় কিংস।
পাঁচ ম্যাচে ১৫ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষেই থাকল বসুন্ধরা কিংস। আর সমান ম্যাচ খেলে মাত্র একটি জয় ও দুই ড্রয়ে ৫ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের আটে মোহমেডান।