দলের প্রাণভোমরা লিওনেল মেসি চোটের কবলে পড়ে ছিটকে গিয়েছিলেন ঠিক ম্যাচের আগে। তাতেই যেন ছন্দপতন বার্সেলোনার। ম্যাচজুড়ে নিজেদের খুঁজে না পাওয়া কাতালানরা অবশ্য শেষ পর্যন্ত টাইব্রেকারে জয় ছিনিয়ে নেয় গোলকিপার মার্ক-আন্ড্রে টার স্টেগানের বীরত্বে।
ম্যাচে দুটি নিশ্চিত গোল বাঁচিয়েছেন তো বটেই, জার্মান এই গোলকিপার পরে টাইব্রেকারে ঠেকিয়েছেন দুটি পেনাল্টিও। আর তাতে কষ্টার্জিত হলেও, টাইব্রেকারে ৩-২ ব্যবধানে জিতে বার্সেলোনা পৌঁছে গেছে স্প্যানিশ সুপার কাপের ফাইনালে।
ম্যাচের ১১ মিনিটেই এগিয়ে যেতে পারতো সোসিয়েদাদ। কিন্তু মিকেল ওয়ারজাবালের পাস থেকে পোর্তু বাইরে মারলে তা আর হয়নি।
২৫ মিনিটের মাথায় নিজেদের প্রথম সুযোগ পায় বার্সেলোনা। বাম প্রান্তে দিয়ে সোসিয়েদাদ বক্সে ঢুকে পড়া এই স্ট্রাইকারের শট আটকে দেন গোলকিপার অ্যালেক্স রেমিরো।
বার্সেলোনা গোলের দেখা পায় ৩৮ মিনিটে। আঁতোয়ান গ্রিজমানের ক্রস থেকে দলকে লিড এনে দেন ফ্রাংকি ডি ইয়ং। প্রথমার্ধ বার্সেলোনা শেষ করে এগিয়ে থেকেই।
কিন্তু বিরতির পর মাত্র পাঁচ মিনিটের মাথায় পেনাল্টি পায় সোসিয়েদাদ। নিজেদের বক্সে ডি ইয়ংয়ের হাতে বল লাগলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। গোলের ১২ গজ দূর থেকে দলকে সমতায় ফেরাতে কোনো ভুল করেননি ওয়ারজাবাল।
ম্যাচের বাকি সময়ে দুই দলের কেউই আর জাল না খুঁজে পাওয়ায় অতিরিক্ত সময়ে গড়ায় খেলা।
অতিরিক্ত সময়ের মাত্র তিন মিনিটের মাথায় সোসিয়েদাদ জোসেবা জালদুয়ার দূরপাল্লার ভলি দারুণ সেভে বাইরে রেখে দলকে ম্যাচে রাখেন স্টেগান। অতিরিক্ত সময়ের শেষ পাঁচ মিনিটে আবারও দারুণ দুটি সুযোগ পান সোসিয়েদাদের আদনান ইয়ানুজাই। দুবারই বার্সেলোনাকে বাঁচিয়ে দেন তাদের জার্মান গোলকিপার।
১-১ ব্যবধানে অতিরিক্ত সময় শেষ হলে খেলা গড়ায় ট্রাইব্রেকারে। সেখানে নিজেদের প্রথম তিন শটের তিনটিতেই গোল করতে ব্যর্থ হয় সোসিয়েদাদ। প্রথম দুটি বাঁচিয়ে দেন স্টেগান, পরেরটি ফিরে আসে বারে লেগে।
টাইব্রেকারে দুটি পেনাল্টি ঠেকিয়ে দেন স্টেগান। ছবি: এফসি বার্সেলোনা
অন্যদিকে বার্সার প্রথম পেনাল্টি নেওয়া ডি ইয়ংয়ের শট বারে লেগে ফিরে এলেও কোনো ভুল করেননি উসমান ডেম্বেলে ও মিরালেম পিয়ানিচ। দুই দলের তিন শট শেষে বার্সেলোনা তখন এগিয়ে ২-০ ব্যবধানে।
সোসিয়েদাদের চতুর্থ শটে গোল করেন মিকেল মেরিনো। কিন্তু গ্রিজমান তার শট বাইরে মারলে আবারও ম্যাচে ফিরে আসে উত্তেজনা।
সোসিয়েদাদের ইয়ানুজাই দলের পঞ্চম শটে গোল করে দলকে সমতায় ফেরালেও সেই উত্তেজনায় পানি ঢেলে দেন বার্সেলোনার রিকি পুজ। ঠান্ডা মাথায় বল জালে জড়িয়ে বার্সেলোনাকে ফাইনালে নিয়ে যান তিনি।
ফাইনালে বার্সেলোনার প্রতিপক্ষ নির্ধারিত হবে বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় সেমিফাইনালে। সেখানে লড়বে অ্যাতলেটিক বিলবাও এবং রিয়াল মাদ্রিদ।