করোনা ভাইরাসের কারণে এফএ কাপে পূর্ণাঙ্গ শক্তির দল নামাতে পারবে না অ্যাস্টন ভিলা এমনটা আগেই ঘোষণা দেয় তারা। এফএ কাপ এর তৃতীয় রাউন্ডে শক্তিশালী লিভারপুলের বিপক্ষে নিজ মাঠে ১১ জন নতুন খেলোয়াড় নামাতে বাধ্য হয় স্বাগতিক দল।ম্যাচে অনভিজ্ঞ ভিলা দলকে স্বাভাবিকভাবেই মেনে নিতে হয়েছে বড় হার। ৪-১ গোলে ম্যাচ জিতে লিভারপুল পৌঁছে গেছে চতুর্থ রাউন্ডে।ট্রেনিং গ্রাউন্ডে অনুশীলনে পর কয়েকজন সদস্যের করোনা ধরা পড়ায় পুরো স্কোয়াডকে আইসোলেশনে পাঠিয়ে দেয় ভিলা। তার বদলে এফএ কাপের জন্য নিজেদের বয়সভিত্তিক দল থেকে একাদশ নির্বাচন করে বার্মিংহ্যামের ক্লাবটি।ক্লাবের স্টাফ ও কোচদের বয়সভিত্তিক দলগুলো থেকে বাছাই করে ম্যাচ ডের জন্য দল তৈরি রাখতে হয়েছে জানান ভিলার প্রধান নির্বাহী ক্রিশ্চিয়ান পার্সলো। বাছাইকৃতদের করোনা পরীক্ষার পর ম্যাচে খেলা অনুমতি দেয়া হয়। ইংলিশ চ্যাম্পিয়ন লিভারপুলের বিপক্ষে ভিলা একাদশে সাতজন খেলোয়াড় ছিলেন অনূর্ধ্ব ২৩ দলের আর চারজন ছিলেন অনূর্ধ্ব ১৮ দলের।‘অনেকেই এতটা কমবয়সী যে তাদেরকে বাবা-মার ড্রাইভ করে স্টেডিয়ামে নিয়ে আসতে হয়েছে,’ জানান পার্সলো।পূর্ণশক্তির লিভারপুলের বিপক্ষে ম্যাচের শুরুতেই পিছিয়ে যায় ভিলা। সাদিও মানের গোলে চার মিনিটেই লিড নেয় লিভারপুল।ডান প্রান্ত থেকে কার্টিস জোনসের করা ক্রস সিক্স ইয়ার্ড বক্সে খুঁজে নেয় মানেকে। হেড করে দলকে এগিয়ে দেন এই সেনেগালিজ ফরোয়ার্ড।গোল হজম করে দমে যায়নি ভিলার তরুণ দল। ডিফেন্স সংগঠিত রেখে আক্রমণের চেষ্টাও করে স্বাগতিকেরা।৪১ মিনিটে জায়ান্টদের চমকে দিয়ে ম্যাচে সমতা ফেরায় ভিলা। ক্যালাম মাইলস রোয়ের থ্রু বল পেয়ে লিভারপুল ডিফেন্সকে ফাঁকি দিয়ে বক্সে ঢুকে পড়েন লুই ব্যারি।
লিভারপুল কিপার কুইভান কেলাহারকে বোকা বানাতে বেগ পেতে হয়নি ১৭ বছর বয়সী এই অ্যাকাডেমি ছাত্রের। ১-১ সমতায় শেষ হয় প্রথমার্ধ।বিরতির পর অবশ্য ছন্দে ফেরে লিভারপুল। ক্লান্ত, অনভিজ্ঞ ও তরুণ প্রতিপক্ষের বিপক্ষে পাঁচ মিনিটে তিন গোল করে ম্যাচ ভাগ্য নিশ্চিত করে দেয় ইয়ুর্গেন ক্লপের দল।মিনি ঝড়ের শুরুটা হয় ৬০ মিনিটে। তাকুমি মিনামিনোর অ্যাসিস্টে দলকে আবারও এগিয়ে দেন জর্জিনিয়ো উইনালডাম। এর তিন মিনিট পর স্কোরলাইন ৩-১ বানিয়েনিজের দ্বিতীয় গোল করেন মানে। ৬৫ মিনিটে জেরদান শাচিরির পাস থেকে ম্যাচ অ্যাস্টন ভিলার ধরা ছোঁয়ার বাইরে নিয়ে যান মোহামেদ সালাহ।বাকি সময়েও প্রাধান্য ধরে রাখে লিভারপুল। তবে গোল পায়নি। শেষ আধঘন্টা নিজেদের ডিফেন্স আগলে রাখে ভিলার তরুণ তুর্কিরা। ৪-১ গোলের হার বরণ করলেও, ম্যাচ শেষ প্রতিপক্ষের কাছ থেকে শ্রদ্ধা পেয়েছেন ভিলার অ্যাকাডেমি ফুটবলাররা।ম্যাচের জয় পরাজয় ভুলে দুঃসময়ে অ্যাস্টন ভিলা ক্লাবকে সমর্থন জানিয়েছে লিভারপুল। ক্লাবের অফিশিয়াল টুইটার হ্যান্ডল থেকে এক বার্তায় বলা হয়, ‘অ্যাস্টন ভিলার সবাইকে গর্বিত করার মতো এক পারফর্ম্যান্স। কঠিন পরিস্থিতিতে দারুণ প্রচেষ্টা।’লিভারপুল অধিনায়ক জর্ডান হেন্ডারসনও ম্যাচ শেষে প্রশংসা করেন অনভিজ্ঞ প্রতিপক্ষকে। খর্বশক্তির প্রতিপক্ষের বিপক্ষে হলেও লিগে টানা তিন ম্যাচ জয়হীন থাকা দলকে এই ম্যাচ আত্মবিশ্বাস দেবে উল্লেখ করে টুইট করেন, ‘ভিলার তরুণ তারকাদের শুভেচ্ছা দারুণ খেলার জন্য। ক্লাব ও তাদের কৃতিত্ব এটি। আশা করি এই জয়ের মাধ্যমে আমাদের ভালো সময় শুরু হলো।’হারের পরও আনকোরা ১১ খেলোয়াড় নিয়ে লিভারপুলের মতো জায়ান্টের বিপক্ষে লড়াইয়ে দারুণ খুশি অ্যাস্টন ভিলার ম্যানেজার মার্ক ডেলেনি। ম্যাচ শেষে বিবিসিকে ভিলা বস বলেন, ‘ক্লাব, কোচ এবং খেলোয়াড় হিসেবে আমরা দারুণ গর্বিত। খেলোয়াড়েরা যে পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে গেছে সেই তুলনায় এটি ছিল এক মনে রাখার মতো প্রচেষ্টা।’