বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ফুটবল ঈশ্বরকে হারানোর বছর

  •    
  • ২৬ ডিসেম্বর, ২০২০ ১৭:১৪

দিনটা ২৫ নভেম্বর। পুরো বিশ্বকে থমকে দিল এক লাইনের একটা খবর। ডিয়েগো ম্যারাডোনা আর নেই। এই সামান্য কয়েকটা শব্দে যেন শেষ হয়ে গেল ক্রীড়া বিশ্বের অন্যতম বড় এক ইতিহাস।

ক্রীড়া বিশ্বে আলোচনার খোরাকের অভাব ছিল না ২০২০ সালে। কোভিডের কারণে একের পর এক টুর্নামেন্ট বাতিল হয়। পেছানো হয় উইম্বলডন, ইউরো ও অলিম্পিক।৩০ বছর পর লিভারপুল জেতে লিগ শিরোপা। বায়ার্ন মিউনিখের কাছে বার্সেলোনা ৮-২ গোলে বিধ্বস্ত হয়। মৌসুম শেষে লিওনেল মেসির দল ত্যাগ নিয়ে হয় বিস্তর নাটক। সবমিলিয়ে ঘটনা-দুর্ঘটনায় ভরপুর ছিল নতুন সহস্রাব্দের দ্বিতীয় দশকের শেষ বছর।তারপরও বছরের শেষ প্রান্তে এসে ছোট-খাটো গড়নের এক মানুষের বিদায়ই ছাপিয়ে গেছে সব কিছুকে। ২০২০ সালে যে বিদায় নিয়েছেন ‘ফুটবল ঈশ্বর’।দিনটা ২৫ নভেম্বর। পুরো বিশ্বকে থমকে দেয় এক লাইনের একটা খবর। ডিয়েগো ম্যারাডোনা আর নেই। এই সামান্য কয়েকটা শব্দে শেষ হয়ে যায় ক্রীড়া বিশ্বের অন্যতম সেরা এক ইতিহাস।নিজ দেশ আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েনোস আইরেসে ৬০ বছর বয়সে হার্ট অ্যাটাকে মারা যান ম্যারাডোনা।

১৯৬০ সালের ৩০ অক্টোবর বুয়েনোস আইরেসের সুবিধাবঞ্চিত এলাকা ভিয়া ফায়োরিতায় জন্ম ডিয়েগো আরমান্ডো ম্যারাডোনার। কিশোর বয়স থেকে নজর কাড়েন নিজের ফুটবল প্রতিভা দিয়ে। ১৬ বছর বয়সে জাতীয় দলে অভিষেক হয়। ১৯ বছর বয়সে দেশের হয়ে জেতেন যুব বিশ্বকাপ।তরুণ বয়সের কারণে ১৯৭৮ বিশ্বকাপ খেলতে না পারলেও ১৯৮২ বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার জার্সি গায়ে চাপান ম্যারাডোনা। ব্রাজিলের বিপক্ষে লাল কার্ড পেয়ে শেষ হয় তার আসর।পরের বার মেক্সিকোতে বিশ্বকে দেখান তার সামর্থ্য। তার নৈপুণ্য ও নেতৃত্বে দ্বিতীয়বারের মতো আর্জেন্টিনা জিতে নেয় বিশ্বকাপ। আশির দশকের শেষে ইতালিয়ান সেরি আতে নাপোলিকে জেতান লিগ ও ইউরোপিয়ান কাপ শিরোপা।৯০ দশকে নন্দিত এই তারকার পতনও দেখতে পায় ফুটবল বিশ্ব। ১৯৯১ সালে ড্রাগসহ ধরা পড়েন নেপলসে। ১৯৯৪ সালের বিশ্বকাপ থেকে বহিষ্কৃত হন ডোপ টেস্টে পজিটিভ হয়ে। ১৯৯৭ সালে বিদায় নেন পেশাদার ফুটবল থেকে।২০০০ সালে ফিফার জরিপে ফ্যানদের ভোটে পেলেকে পেছনে ফেলে পান ‘শতাব্দী সেরা ফুটবলারের’ সম্মান। ১৯৮৬ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তার করা দ্বিতীয় গোলটি পায় শতাব্দী সেরা গোলের স্বীকৃতি।২০১০ সালে জাতীয় দলের কোচ হিসেবে দলকে নিয়ে যান বিশ্বকাপে।আশির দশকে আর্জেন্টিনা ও নাপোলিকে সাফল্যের শিখরে তুলে বিখ্যাত ফুটবলার থেকে ফুটবল ঈশ্বরে পরিণত হওয়া ম্যারাডোনার মৃত্যু ভক্তদের কাছে ছিল শৈশব হারিয়ে ফেলার মতোই কষ্টের।ম্যারাডোনার মৃত্যুর পর অতিবাহিত হয়েছে এক মাসেরও বেশি সময়। তারপরও থামেনি ফুটবল বিশ্বের মাতম, ভক্তদের হাহাকার।তার মৃত্যুর পর বিশ্বের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে থাকা ভক্তরা তাকে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। শ্রদ্ধা জানিয়েছে বিশ্বের সবগুলো ফুটবল, ক্রিকেট ও ক্রীড়া দল।তার স্মৃতিতে গোল উৎসর্গ করেছেন আধুনিক গ্রেট লিওনেল মেসি ও কার্লোস তেভেসের মতো তারকারা।

তাকে শেষবার দেখতে ফ্যানদের দীর্ঘ সারি, পুলিশের লাঠিচার্জ এবং সমাধি থেকে মরদেহ তুলে মিউজিয়ামে রাখার দাবি সব মিলিয়ে ম্যারাডোনার মৃত্যু পরবর্তী জীবনও হয়ে গেছে তার যাপিত জীবনের মতোই বর্নাঢ্য।মৃত্যুর কয়েকদিন আগে ম্যারাডোনা আর্জেন্টাইন পত্রিকা ক্লারিনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন ‘মানুষের সঙ্গে আমার ভালোবাসার সম্পর্ক কোনোদিন শেষ হবে না।’ এই ভালোবাসাই অন্যসব ঘটনা-দুর্ঘটনাকে ছাপিয়ে পুরো বিশ্বে ম্যারাডোনার বিদায়কে করেছে বছরের সবচেয়ে বড় ইভেন্ট।

এ বিভাগের আরো খবর