বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘বাংলাদেশে আমার শুভেচ্ছা পৌঁছে দিও’

  •    
  • ৩০ নভেম্বর, ২০২০ ২২:৩১

২০১৮ সালের রাশিয়া বিশ্বকাপে ডিয়েগো ম্যারাডোনার সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ হয়েছিল বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদকের। সেবার আর্জেন্টিনা ম্যাচের দিন ও ফাইনালেও ম্যারাডোনার সান্নিধ্য পেয়েছেন সোহাগ।

২০১৮ সালের রাশিয়া বিশ্বকাপে ডিয়েগো ম্যারাডোনার সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ হয়েছিল বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগের। সেবার আর্জেন্টিনা ম্যাচের দিন ও ফাইনালেও ম্যারাডোনাকে সান্নিধ্য পেয়েছেন তিনি।

‘ফিজিক্যালি ম্যারাডোনা মারা গিয়েছে। কিন্তু ম্যারাডোনার যে কীর্তি, ফুটবল মাঠে তার অবদান, তিনি যেসব ফিলিংস ক্রিয়েট করেছেন সেটা স্মরণীয় হয়ে থাকবে। ফুটবলকে যে ভালোবাসে ম্যারাডোনাকে সে ভালবাসতে বাধ্য,’ কিংবদন্তি ফুটবলারকে নিয়ে স্মৃতিচারণের সময় কথাগুলো বলছিলেন তিনি।

ফুটবল জাদুকরের বিদায়ের পর, ম্যারাডোনার সঙ্গে তার সেই খনিকের স্মৃতি যেন ঘুরেফিরে মনের কোটরে উঁকি দিচ্ছে সোহাগের।

ম্যারাডোনার কথা জিজ্ঞেস করতেই গলা ধরে এলো তার। প্রথম সাক্ষাতের স্মৃতি মনে করে সোহাগ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এটা ছিল ফিফা বিশ্বকাপ ২০১৮ এর ১৬ই জুন। ছিল স্পার্টাক স্টেডিয়াম। বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার প্রথম ম্যাচ ছিল এটা আইসল্যান্ডের বিপক্ষে। আমি যেখানে বসা ছিলাম তার পাশেই ছিল ফিফা লাউঞ্জ। সেখানে আমার কিছু কলিগের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলাম।

একটু পর দেখলাম সাত-আটজনের একটা প্রাইভেট সিকিউরিটি দল ঢুকলো। তখন আমি এটা পাত্তা দেইনি, পরে দেখলাম যে লাউঞ্জের মধ্যে ফিসফাস হচ্ছে। তখন মনে হল যে কেউ একজন ঢুকেছে। খুব গুরুত্বপূর্ণ কোনো ব্যক্তি ঢুকেছে। তখনও আমি বুঝতে পারিনি সেটা ম্যারাডোনা ছিলেন। পরে ভালো করে দেখলাম যে সেটা ম্যারাডোনা।’

ম্যারাডোনার সঙ্গে দেখা করতে দীর্ঘ লাইনে ঢুকে পড়েন সোহাগ। বলেন, ‘আমি দেখেই শিহরিত হয়ে ছিলাম। পরে একটু ফলো করলাম তাকে। দেখলাম যে এক থেকে দেড়শ জনের একটা লাইন তৈরি হয়ে গেল। সবাই ম্যারাডোনাকে দেখতে, হাই-হ্যালো ও ছবি তুলতে দাঁড়িয়ে গেল। আমিও সেই লাইনে গিয়ে ঢুকলাম। পরে দেখলাম যে সিকিউরিটি কাউকে অ্যালাউ করছে না।

‘এরপর আমি লাইন ভেঙে সামনে চলে এলাম। সিকিউরিটিকে রাজি করার পরিকল্পনা করলাম, সুযোগটা নেওয়ার চেষ্টা করলাম। আমি দেখলাম কাকে আমি রাজি করাতে পারবো। একটা বিষয় বলে রাখি ম্যারাডোনা কিন্তু ইংরেজি খুব কম বুঝতেন।

‘তার সিকিউরিটিগুলোও সেরকম ছিল। সিকিউরিটিদের মধ্যে একজনের সঙ্গে চোখাচোখি হতেই কাছে গেলাম। বললাম “আমি বাংলাদেশ থেকে এসেছি, আমাদের দেশে ম্যারাডোনার প্রচুর ফ্যান ফলোয়ার রয়েছে আমি ম্যারাডোনার কাছে গিয়ে কি একটু হাই-হ্যালো করতে পারি?”’

দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর ম্যারাডোনার দৃষ্টি পড়ে সোহাগের উপর। তার কথায়, ‘বাংলাদেশ শোনার পর মনে হলো যে সে রাজি। এরপর সে ম্যারাডোনার দিকে তাকাল সেই সময় আমিও সুযোগটা নেই। ম্যারাডোনার দিকে তাকিয়ে বলি ‘হাই ডিয়েগো’ তখন ম্যারাডোনা দূর থেকে তার সিকিউরিটিকে হাত ইশারা করে আমাকে ছেড়ে দিতে বললেন।

‘আমি আমার পরিচয়টা দিয়ে বললাম যে “আমি বাংলাদেশ থেকে এসেছি তোমার অনেক ফ্যান ফলোয়ার্স বাংলাদেশে অনেক পাগলামি করে। বিশ্বকাপের সময় পতাকা উড়িয়ে খেলা দেখি, তুমি কি এগুলো জানো?” তখন সে মাথা নেড়ে আমাকে বললেন “হ্যাঁ মিস্টার, বাংলাদেশে আমার শুভেচ্ছা পৌঁছে দিও ধন্যবাদ।”’

এই খানিকের সময়টাকে ফ্রেমে তুলে রাখতে ভুললেন না সোহাগ। বলেন, ‘এবার আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম আমি কি আপনার সাথে একটা সেলফি তুলতে পারি। তখন সে আমাকে বললেন, “ইয়েস মিস্টার বাংলাদেশ” এরপর ছবি তুলে আমি চলে এসেছি।’

এরপরে বিশ্বকাপের ফাইনালেও একবার ম্যারাডোনার সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়েছিল বলে জানান সোহাগ।

ফুটবল জাদুকরের প্রয়াণে শোক জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ফুটবল সবসময় একা দলগত খেলা। কিন্তু ম্যারাডোনা দেখিয়েছেন কিভাবে একটা দলকে নেতৃত্ব দিয়ে একটা লোক, একটা অধিনায়ক, একজন খেলোয়াড় একা বিশ্বকাপ জেতায়।’

ফুটবলকে বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয় ও ব্যবসাসফল করতে ম্যারাডোনা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন বলে মনে করেন সোহাগ।

তিনি বলেন, ‘ফুটবলের বিশ্বায়নের জন্য, ফুটবলের জনপ্রিয়তার জন্য ম্যারাডোনা একটা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। বিশ্বের কাছে ফুটবলটাকে পৌঁছে দেওয়ার জন্য ফিফা আশির দশকে আস্তে আস্তে ব্র্যান্ডিং শুরু করল। তখন ফুটবলের ব্যাবসায়িক দিক, জনপ্রিয়তার দিকে একটা পেশাদারিত্ব আসা শুরু হয়। টিভি রাইটস থেকে শুরু করে সবকিছুর পেছনে নিঃসন্দেহে ম্যারাডোনার অবদান রয়েছে।’

এ বিভাগের আরো খবর