ডিয়েগো ম্যারাডোনার মৃত্যুতে শোকের মাতম চলছে পুরো বিশ্বে। সব দেশেই ভক্তরা তাদের নিজেদের ভাষায় শেষ বিদায় জানাচ্ছেন ফুটবল কিংবদন্তিকে।
আধ্যাত্মিক গুরু থেকে সাংবাদিক, খেলোয়াড় থেকে নায়ক, আইনজীবী থেকে শুরু করে ডাক্তার, রাজনীতিবিদ থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ ম্যারাডোনার ভক্ত সবাই।
তার তিন সাবেক ক্লাব বোকা জুনিয়র্স, বার্সেলোনা ও নাপোলি সহ বিশ্বের অধিকাংশ ফুটবল ক্লাব শ্রদ্ধা জানিয়েছে আর্জেন্টাইন ফুটবল জাদুকরকে।
নাপোলি ক্লাব স্টেডিয়ামের নাম সান পাওলো থেকে বদলে ম্যারাডোনার নামে রাখার প্রস্তাব করেছেন নেপলসের মেয়র লুইজি দি মাজিস্ত্রিস।
ইতালিয়ান আইনজীবী আনজেলো পিসানি জানান এটি তার জীবনের সবচেয়ে কষ্টের দিন। অশ্রুসিক্ত চোখে পিসানি বলেন,'শুধু আমার জন্যেই না, পুরো নাপোলি এবং ফুটবলকে ভালোবাসে এমন প্রতিটি মানুষের জন্য এটা কষ্টের সময়। তিনি ছিলেন এই শহরের আলো এবং ফুটবলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রতীক।'
ব্রিটিশ টক শো উপস্থাপক পিয়ার্স মরগ্যান ম্যারাডোনাকে দুর্বোধ্য এক ফুটবল জিনিয়াস আখ্যা দেন। টুইটে লেখেনে, 'একজন উদ্দাম, আবেগপ্রবণ, দুর্বোধ্য ফুটবল জিনিয়াস, এতো বেশি প্রতিভাবান যে সেরা প্রতিপক্ষদেরও তিনি কম্পমান আবর্জনা বানিয়ে ফেলতেন।'
ভারতের আধ্যাত্মিক সাধগুরু ম্যারাডোনার জাদু শেষ উল্লেখ করে তিনি টুইট করেন। তিনি লিখেন, 'ম্যারাডোনার জাদুর সমাপ্তি। বিখ্যাত ও কুখ্যাত, জাদুকরী পা ও দুষ্ট হাতের ম্যারাডোনা। সবকিছুর পরও তিনি মহান একজন কিংবদন্তি যিনি ফুটবল ফ্যানদের আনন্দ দিয়েছেন।'
বুয়েনোস আইরেস ও নাপোলিতে তার মূর্তি ও গ্রাফিতির সামনে ভক্তরা জড়ো হয়ে প্রার্থনা করেছেন ও মোমবাতি জ্বালিয়ে।
সোশ্যাল মিডিয়াগুলোতে ছিল প্রোফাইল ছবি পালটানোর হিড়িক। নিজের ছবি বদলে ম্যারাডোনার ছবির সঙ্গে রেস্ট ইন পিস জুড়ে দিয়েছেন লাখো ভক্ত।
এদেরই একজন গায়ক জোহাদ ফেইসবুকে লিখেছেন, 'সর্বকালের সেরা। সবকিছুর জন্য ধন্যবাদ।'
ম্যারাডোনার আর্জেন্টিনার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বি ব্রাজিলের সমর্থকেরাও জয়গান গাইছেন এই ফুটবল শিল্পীর। চলচ্চিত্র নির্মাতা মোস্তফা সারওয়ার ফারুকী লিখেছেন আজন্ম ব্রাজিল সমর্থক হয়ে গোপনে ভালোবাসতেন ম্যারাডোনাকে। ফেইসবুকে ম্যারাডোনার ছবি পোস্ট করে তিনি লিখেন, 'আমার ছেলেবেলার বড় একটা অংশ চলে গেল। আমি আর্জেন্টিনার সমর্থক কখনই ছিলাম না। প্রতিপক্ষ দলের সমর্থক হওয়ায় আমাদের কাজ ছিল আর্জেন্টাইন খেলোয়াড়দের বিরোধীতা করা। কিন্তু গোপনে তার প্রতি আমাদের এক ধরণের সীমাহীণ ভালোবাসা ছিল।'