সর্বকালের সেরা ফুটবলারদের অন্যতম ডিয়েগো ম্যারাডোনা আর নেই। হার্ট অ্যাটাকে মারা গেছেন ৬০ বছর বয়সী বিশ্বনন্দিত এই ফুটবল মহাতারকা। বুধবার আর্জেন্টাইন ফুটবল ফেডারেশন এক টুইটে তার মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছে।
তার মৃত্যুতে আর্জেন্টিনায় তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে। গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গত ৩ নভেম্বর মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বাঁধার কারণে অস্ত্রোপচার করাতে হয়েছিল ১৯৮৬ বিশ্বকাপ জয়ী আর্জেন্টাইন অধিনায়ককে। সুস্থ হওয়ার পর বাড়ি ফেরেন তিনি।
ফেরার তিন সপ্তাহের মধ্যেই এলো এই দুঃসংবাদ। তার মৃত্যুতে সমাপ্ত হলো বিশ্ব ফুটবলের সবচেয়ে বর্ণিল অধ্যায়।
১৯৬০ সালের ৩০ অক্টোবর বুয়েনোস আইরেসের সুবিধাবঞ্চিত এলাকা ভিয়া ফায়োরিতায় জন্ম ডিয়েগো ম্যারাডোনার। কিশোর বয়স থেকে নজর কাড়েন নিজের ফুটবল প্রতিভা দিয়ে। ১৬ বছর বয়সে জাতীয় দলে অভিষেক হয়। ১৯ বছর বয়সে দেশের হয়ে জেতেন যুব বিশ্বকাপ।
তরুণ বয়সের কারণে ১৯৭৮ বিশ্বকাপ খেলতে না পারলেও ১৯৮২ বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার জার্সি গায়ে চাপান ম্যারাডোনা। ব্রাজিলের বিপক্ষে লাল কার্ড পেয়ে শেষ হয় তার আসর।
১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপ জয়ের পর ট্রফি হাতে ম্যারাডোনা। ছবি: এপি
পরের বার মেক্সিকোতে বিশ্বকে দেখান তার সামর্থ্য। তার নৈপুণ্য ও নেতৃত্বে দ্বিতীয়বারের মতো আর্জেন্টিনা জিতে নেয় বিশ্বকাপ। আশির দশকের শেষে ইতালিয়ান সেরি আতে নাপোলিকে জেতান লিগ ও ইউরোপিয়ান কাপ শিরোপা।
৯০ দশকে নন্দিত এই তারকার পতনও দেখতে পায় ফুটবল বিশ্ব। ১৯৯১ সালে ড্রাগসহ ধরা পড়েন নেপলসে। ১৯৯৪ সালের বিশ্বকাপ থেকে বহিষ্কৃত হন ডোপ টেস্টে পজিটিভ হয়ে। ১৯৯৭ সালে বিদায় নেন পেশাদার ফুটবল থেকে।
২০০০ সালে ফিফার জরিপে ফ্যানদের ভোটে পেলেকে পেছনে ফেলে পান 'শতাব্দী সেরা ফুটবলারের' সম্মান। ১৯৮৬ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তার করা দ্বিতীয় গোলটি পায় শতাব্দী সেরা গোলের স্বীকৃতি।
২০০৭ সালে হাসপাতালে ভর্তি হন যকৃত ও পাকস্থলীর অসুখে। দ্রুত স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটে তার। প্রায় দুই মাস পর সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান।
তারপর থেকে নিজের জীবনে শৃঙ্খলা ফেরানোর চেষ্টা করেছেন ম্যারাডোনা। ২০১০ সালে জাতীয় দলের কোচ হিসেবে দলকে নিয়ে যান বিশ্বকাপে।
তারপর থেকে কোচিং ক্যারিয়ারে নিয়েই ব্যস্ত ছিলেন এই কিংবদন্তি।
আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের পর কোচিং করান সৌদি আরবের আল-ওয়াসল ক্লাবকে। সেখান থেকে আরব আমিরাতের ফুজাইরাকে দীক্ষা দেন দুই বছর
তার জীবনের শেষ দুই বছর কেটেছে লাতিন আমেরিকায়। মেক্সিকোর দোরাদোস দে সিনালোয়া ও আর্জেন্টিনার হিমনাসিয়া দে লা প্লাতার কোচিং করান তিনি।