আট মাস পর কোনো প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ খেলেছে দেশের ফুটবলাররা। নেপালের বিপক্ষে আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে ফিটনেসই যখন বড় ইস্যু তখন বাংলাদেশের দ্বিতীয় গোল ছিল চমকে দেয়ার মতোই। একাই প্রায় মাঝ মাঠ থেকে দৌড়ে গোল করেন মাহবুবুর রহমান সুফিল।গোল করা পর্যন্ত ৫১ মিটার দৌড়েছেন সুফিল। এই দূরত্ব অতিক্রম করতে সময় নিয়েছেন মাত্র ৬.০৪ সেকেন্ড! প্রতি সেকেন্ডে সুফিল পাড়ি দিয়েছেন ৮.৪৩ মিটার! গতি ছিল ঘণ্টায় ৩০.৩৫ কিলোমিটার।
৮০ মিনিট চলছে তখন। বাংলাদেশ ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে। নেপালের বিপক্ষে কাউন্টার অ্যাটাকে দ্বিতীয়ার্ধে বদলি হিসেবে নামা সুফিলের পায়ে বল।
একটু থেমে জায়গা তৈরি করে বলটা এগিয়ে দিলেন মাঝমাঠের সোহেল রানার কাছে। সুফিল আঁচ করতে পেরেছিলেন বলটা তিন ডিফেন্ডারকে বোকা বানিয়ে একেবারে ফাঁকা জায়গায় চিপ করবেন সোহেল।
বলটা সোহেল যখন পায়ে নেন তখনও মাঠের মধ্যরেখা থেকে মাত্র চার গজ দূরে ছিলেন সুফিল। সেখান থেকেই দৌড় শুরু করলেন। ঘণ্টায় ৩০ কি মি গতিতে পাড়ি দিলেন ৫৬ গজ। জালে জড়ানো পর্যন্ত এই ৬ সেকেন্ড বল স্পর্শ করেছেন ৪ বার।
ডি বক্সে ঢুকে ঠান্ডা মাথায় বল বাঁকিয়ে গোলকিপারকে ফাঁকি দিয়েছেন সুফিল। বল জালের ঢোকার পর জার্সি খুলে আকাশে উড়িয়ে জানান দিলেন নিজের উচ্ছ্বাসের।
এমন গোল গুরু জেমি ডে’র চোখেও যেন বিস্ময় তৈরি করেছে। ইংলিশ কোচ সুফিলের গোল নিউজবাংলার কাছে ব্যাখ্যা করেছেন। বলেন, ‘দারুণ দলীয় সমন্বয় হয়েছে। একটা ভালো ও সরাসরি দৌড় দিয়েছে সুফিল। খুবই ঠান্ডা মাথায় ফিনিশিং করেছে। যা দেখার মতো ছিল।’
সুফিলের এমন গতি নতুন নয় অবশ্য। গত বছর কম্বোডিয়ার বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে আরেকটি ঝড়ো দৌড়ে সতীর্থ রবিউলকে অ্যাসিস্ট করেছিলেন এই ফরোয়ার্ড।
তার গতির সঙ্গে আরেকটা গোলের তুলনা হতে পারে। ২০১৮ সালে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সেটি স্কোর করেন মতিন মিয়া। সেবার মতিন ৫৫ মিটার দূরত্ব পাড়ি দিতে সময় নিয়েছিলেন ৭ সেকেন্ড। তার গতি ছিল সুফিলের থেকে একটু কম ২৮.২৯।
ইউরোপের ফুটবলারদের সর্বোচ্চ গতি থেকে বেশ পিছিয়ে আছেন বসুন্ধরা কিংসের সুফিল। বায়ার্ন মিউনিখের আলফানসো ডেভিস ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৩৬.৫১ কি.মি গতিতে দৌড়ান।