বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

১৩ বছরেও পেশাদার হতে পারেনি বিপিএল

  •    
  • ১৬ অক্টোবর, ২০২০ ১৯:২৯

দেশের সর্বোচ্চ লিগের ১৩ ক্লাবের একটির ছাড়া জিম নেই কারও। খেলার ন্যূনতম শর্ত স্টেডিয়ামও নেই। অনুশীলনেরও মাঠ নেই অধিকাংশ ক্লাবের।

পেশাদার হওয়ার জন্য এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনের (এএফসি) শর্ত মেনে ২০০৭ সালে শুরু হয় বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ। তবে বাস্তবতা বলছে, এই ১৩ বছরেও পেশাদার হতে পারেনি দেশের সর্বোচ্চ ফুটবল লিগ।

দেশের সর্বোচ্চ লিগের ১৩ ক্লাবের একটির ছাড়া জিম নেই কারও। খেলার ন্যূনতম শর্ত স্টেডিয়ামও নেই। অনুশীলনেরও মাঠ নেই অধিকাংশ ক্লাবের।

মোহামেডানের মতো ঐতিহ্যবাহী ক্লাবকেও যাযাবরের মতো বিভিন্ন মাঠ ঘুরে অনুশীলন করতে হয়। এমন দুর্দশার পেছনে আগের কমিটির উপর দায় চাপিয়েছেন মোহামেডানের ম্যানেজার ইমতিয়াজ নকিব।

বলেন, ‘গত ২০০৫ সালে যারা ক্লাব চালিয়েছে তারা কাজ করতে পারেনি। বড় একটা জায়গা থাকা সত্ত্বেও মাঠ করতে পারেনি। এখন দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে।

‘নতুন যে কমিটি আসবে তারা মাঠের বিষয়ে সিরিয়াস হবে বলে আশা করি। এই মাঠ অন্তত ২৫ বছর আগে হওয়া উচিত ছিল। এখানে সবচেয়ে বড় সমস্যা অর্থ ও মানসিকতার অভাব। এই দুটো ইতিবাচক থাকলে অবকাঠামো বা এএফসির শর্ত পূরণ করতে বেশিদিন লাগে না।’

পেশাদারি কাঠামো নেই কোন ক্লাবের। সুযোগ-সুবিধার অভাব তো রয়েছেই, খেলোয়াড়দের এক বেলার খাবার ব্যবস্থা করতেও হিমশিম খেতে হয় অনেক ক্লাবের।

পেশাদার লিগ কমিটির চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম মুর্শেদী বাস্তবতাকে স্মরণ করিয়ে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের ক্লাবগুলোর কিছু সীমাবদ্ধতা আছে। এখনও পেশাদার লিগে অংশগ্রহণকারী অনেক দল অনুদান দিয়ে চলে।’

এরপরও বাফুফের বর্তমান কমিটি মানছে তারা পেশাদার লিগের ক্ষেত্রে সফল। সালাম মুর্শেদী বলেন, ‘আমি যেটা সফলতার সঙ্গে করতে পেরেছি, পেশাদার লিগটা নিয়মিত ১২ বছরে ১১ টা করতে পেরেছি। অন্যান্য কম্পিটিশনগুলো হয়েছে। এগিয়ে যাওয়ার বিষয়টায় মনে হয়ে আমরা পেশাদারিত্বের পাশাপাশি হাটছি।’

ক্লাবগুলোকে পেশাদারের ছাঁচে ফেলতে ক্লাব লাইসেন্সিং এর শর্ত চূড়ান্ত করে দিয়েছে এএফসি। এএফসির কোন টুর্নামেন্টে অংশ নিতে ক্লাব লাইসেন্সিং থাকাটা খুবই জরুরি। এই শর্ত পূরণ করতেও ব্যর্থ অধিকাংশ ক্লাব।

শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছে তিন বয়সের বয়সভিত্তিক দল থাকা, যা কারও নেই। অন্ততপক্ষে একটা অবকাঠামো থাকতে হবে। যেখানে একটা স্টেডিয়াম থাকবে। ক্লাবের নিজস্ব মেডিকেল সুবিধা থাকবে। যেগুলো অধিকাংশ ক্লাবের ক্ষেত্রেই সাময়িক।

একটা অফিস থাকা আবশ্যক। যেখানে ক্লাবের কর্মকর্তারা বসবেন। আর্থিক থেকে শুরু করে অফিসের যাবতীয় কর্মকাণ্ড সম্পাদন করা যাবে। আইনি প্রক্রিয়ার সঙ্গে বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করাও একটা শর্ত এএফসির।

কাগজ কলমে দেশের মাত্র চারটি ক্লাব এএফসির শর্তগুলো পূরণ করে টুর্নামেন্টে অংশ নিতে পারে। এদের বাইরে কোনো ক্লাব লিগে চ্যাম্পিয়ন হলেই বিপদে পড়তে হতে হবে তাদের।

এএফসির শর্ত পূরণ করতে না পারার ব্যর্থতা কি পেশাদারিত্বের অভাব? জানতে চাইলে রহমতগঞ্জ ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইমতিয়াজ হামিদ সবুজ দায় স্বীকার করে বলেন, ‘আমরা আসলেই কিছুটা পিছিয়ে আছি। প্রিমিয়ার লিগের মতো সর্বোচ্চ লিগে খেলতে অবশ্যই এই শর্তগুলো পূরণ করা উচিত।’

পেশাদার না হওয়ার সীমাবদ্ধতাগুলো জানালেন সবুজ, ‘নিচু সারির ক্লাবগুলোকে দেখেন। তাদের থাকার টেন্টগুলো ভাড়া দিতে হয়। অনুদানে চলে ক্লাব। অর্থ মুখ্য বিষয় এখানে। বসুন্ধরা কিংস একটা কর্পোরেট ক্লাব। তাদের অর্থ আছে। বাকিদের গোছাতে সময় লাগবে। তবে সবাই চেষ্টা করছে যে যার জায়গা থেকে।’

ফুটবল মৌসুমের জন্য বাফুফের এখনও কোনো চূড়ান্ত ক্যালেন্ডার নেই। বেশ কয়েকবার প্রকাশ করার পরও ক্যালেন্ডার বদলেছে বাফুফে। এছাড়া বিভিন্ন ডিভিশনে পাতানো ম্যাচের অভিযোগও থেমে নেই।

বাংলাদেশের ক্লাবগুলোর আর্থিক ও অবকাঠামোগত সংকটের বাস্তবতা মেনে নিয়ে নিউজবাংলাকে আব্দুস সালাম মুর্শেদী বলেন, ‘বাস্তবতার বাইরে গিয়ে কিছু করতে পারবেন না। আমাদের দেশের খেলোয়াড় সংকটের কারণে জাতীয় দল করতে অনেক কষ্ট করতে হয়। কিন্তু আমরা যখন খেলেছি তখন তিনটি জাতীয় দল করা যেত। ক্লাবগুলো যত দিন ৩০টি সমমানের খেলোয়াড় ক্লিয়ারেন্স করে না রাখতে পারবে ততদিন ক্যালেন্ডারে পরিবর্তন চলতেই থাকবে।’যেসব শর্ত পূরণ করলে একটা লিগকে পেশাদার বলা যাবে সেই ব্যাখ্যাটাও দিলেন তিনি, ‘পেশাদারিত্বের জন্য মৌলিক যে বিষয়গুলো প্রয়োজন একটি ক্লাবের, তার মধ্যে স্টেডিয়াম, জিম, মেডিকেল টিম আছে। এছাড়া নিজেদের পার্মানেন্ট সচিবালয় লাগবে, ক্লাব ট্রান্সফারের জন্য কমিশন এজেন্সি লাগবে। এগুলো ডেভলপ করলেই বলতে পারব পেশাদার হয়েছে।’

অপেশাদার বিপিএল তাই দিন দিন দর্শক হারিয়েছে। এখন গ্যালারি ভরা থাকে কাকে। ১২ বছরে দেশের ফুটবলের সর্বোচ্চ পর্যায়ের পেশাদার লিগের ফুটবলে দর্শকহীনতা নিয়ে কাজী সালাউদ্দিনের আঙুল ঢাকার জীবনমানের দিকে। তিনি বলেন, ‘অতীতে ফুটবল ছাড়া কোন এন্টারটেইনমেন্ট ছিল না। সবাই ফুটবল দেখতো। এখন দেশের ডেভলপমেন্ট যেভাবে হয়েছে সঙ্গে জ্যাম এসেছে। একটা জায়গা থেকে আরেকটা জায়গায় আসতে অনেক সময় লাগে। তাই দর্শক আসতে পারে না।’

এ বিভাগের আরো খবর