বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) নির্বাচন শনিবার। চার বছর পর গত মার্চে এ নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও করোনাসহ নানা কারণে হয়নি।
আলোচিত এই নির্বাচনের মাধ্যমে আগামী চার বছরে কারা দেশের ফুটবল নিয়ন্ত্রক সংস্থার নেতৃত্বে থাকবেন তা নির্ধারিত হতে যাচ্ছে।
এতে সভাপতি পদে লড়াইয়ের ঘোষণা দেয়া হেভিওয়েট প্রার্থী তরফদার রুহুল আমিন সরে গেছেন নির্বাচনের আগেই। মনোনয়ন নিয়েও সরে দাঁড়িয়েছেন সভাপতি পদে আরেক হেভিওয়েট প্রার্থী বাদল রায়। তারপরও বিশেষ একটি ইস্যুতে অস্বস্তিতে আছে কাজী সালাউদ্দিন-সালাম মুর্শেদী প্যানেল।
এই ইস্যুর নাম ‘ভোটারদের নীরব বিপ্লব’। দীর্ঘ ১২ বছরের ব্যর্থতা এই বিপ্লব ঘটাতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
নির্বাচনে ২১ পদের বিপরীতে মোট ৪৭ জন প্রার্থী লড়াই করছেন; ভোটার ১৩৯ জন। দুটো প্যানেল প্রকাশ্যে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছে। একটি কাজী সালাউদ্দিন-মুর্শেদী সম্মিলিত ফুটবল পরিষদ, অন্যটি শেখ আসলাম-মহি সমন্বিত প্যানেল পরিষদ।
প্রার্থী নির্বাচনে সবচেয়ে বড় অস্ত্র রয়েছে জেলা ও বিভাগ ফুটবল সংস্থাগুলোর পকেটেই।
কারণ ১৩৯ ভোটের ৭২ ভোটই তাদের। এর বাইরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভোট ছয়টি। শিক্ষা বোর্ডের ভোট পাঁচটি। একটি করে ভোট ফুটবল কোচেস অ্যাসোসিয়েশন, রেফারিজ অ্যাসোসিয়েশন এবং মহিলা ক্রীড়া সংস্থার। এ ছাড়া রয়েছে ঢাকার ক্লাবগুলোর ভোট।
তাই বাফুফের চেয়ারে কে বসছেন তা নির্ধারণের সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখবে জেলা ও বিভাগের ফুটবল সংস্থাগুলো।
গেল ১২ বছরে জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে অনিয়মিত লিগ, চার বছরে একবার জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপ, লিগের পেশাদারিত্বের অভাব, ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে জাতীয় দলের ভরাডুবির সঙ্গে পাইপলাইন ফুটবলারের সংকট ভোটারদের নীরব বিপ্লবে অনুঘটক হিসেবে কাজ করবে বলে মত সংশ্লিষ্টদের।
এক যুগের ব্যর্থতা মাথায় রেখে ভোটারদের সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত বলে মনে করেন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ও তারকা ফুটবলার কায়সার হামিদ।
নিউজবাংলাকে শুক্রবার রাতে তিনি বলেন, ‘যদি বাংলাদেশের ২০ জন অধিনায়ককে বলেন, ১৯ জনই সালাউদ্দিনের বিপক্ষে অবস্থান নিবেন। যদি ভোটাররা বোঝেন তাহলে ভোটে এই বিপ্লব ঘটতে পারে।
‘তবে এগুলো সবকিছুই পাতানো থাকে। আগেই সব ম্যানেজ করা থাকে। তারপরেও ১২ বছরের কথা মাথায় রেখে ভোটারদের সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত দেশের ফুটবলের স্বার্থে।’
এই নিরব বিপ্লবের মাধ্যমে সভাপতি পদে নির্বাচিত হওয়ার আশা দেখছেন শফিকুল ইসলাম মানিক।
তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি আগামীতে যদি সঠিক নির্বাচন হয়, কাউন্সিলররা যদি ঠিকমতো ব্যালটে ভোট দিতে পারেন। ১০০ জনের ২০ জনও ওদের পক্ষে নেই আমি নিশ্চিত।’
তবে একই সঙ্গে নির্বাচনে এক পক্ষের প্রভাবের শঙ্কা দেখছেন মানিক। তিনি বলেন, 'নির্বাচনে প্রভাব খাটানোর ঘটনা ঘটতে পারে, কারচুপি হতে পারে, অনেক কিছুই হতে পারে। আমি জানি, আমি আশঙ্কা করছি। তবে আমি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। সরকারও গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে। আমি সেদিকেই তাকিয়ে আছি।’
নিরব বিপ্লব ঘটার সম্ভাবনা দেখেন না ১২ বছর টানা সভাপতির গদিদে বসে থাকা কাজী সালাউদ্দিন। তিনি বলেন, ‘আমার বিশ্বাস কাউন্সিলররা আবার ভোট দিয়ে আমায় জয়যুক্ত করে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখবে।’
নিউজবাংলা/জাহা