বাফুফে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে এক প্রার্থীকে 'যত লাগে তত টাকা দেয়ার' প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। আর এই লেনদেনে মধ্যস্ততা করার অনুরোধ করা হয়েছিল বাংলাদেশের কিংবদন্তি ফুটবলার কায়সার হামিদকে।
কায়সার হামিদকে বলা হয়েছিল তার বন্ধু ও দীর্ঘদিনের জাতীয় দলের সতীর্থ শেখ আসলামকে ভোট থেকে সরিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করতে। আসলাম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সিনিয়র সহসভাপতি পদে। তার প্রতিদ্বন্দ্বী আব্দুস সালাম মুর্শেদী।
কায়সার হামিদ ‘ফুটবলের সঙ্গে বেঈমানি করতে চাননি’ বলে দুই পক্ষের বৈঠক করিয়ে দেননি। যদিও আসলামকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
কায়সার হামিদ নিউজবাংলাকে পুরো বিষয়টি জানালেও কে প্রস্তাব দিয়েছেন সেটা জানাননি। জানিয়েছেন, ওই ব্যক্তি একজন ভোটার।
অবশ্য শেখ আসলাম এই কথা স্বীকার করেননি।
আসলাম সরে দাঁড়ালে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সিনিয়র সহসভাপতি নির্বাচিত হতেন আব্দুস সালাম মুর্শেদী।
শেখ আসলামের প্রতিদ্বন্দ্বি আব্দুস সালাম মুর্শেদীকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।
কী বলেছিলেন ওই ব্যক্তি?
নিউজবাংলাকে কায়সার হামিদ বলেন, ‘শেখ আসলামকে সরে যাওয়ার জন্য তার ঘনিষ্ট হিসেবে আমাকে বলেছিল এক ক্লাবের কাউন্সিলর। আমাকে বলছে যে আমাকে ম্যানেজ করা যাবে কি না।’
‘কিছু পয়সা পাইল আরকি। তার কথা ছিল ৮০ শতাংশ কাউন্সিলর সব সালাউদ্দিন-সালাম মুর্শেদীর প্যানেলের। এমনেও ওমনেও হারবে। কিন্তু বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় গেলে শিওর হয়ে গেল। এটাই আমাকে বলেছিল’-বলেন কায়সার হামিদ।
আপনি কী বলেছেন?
এমন প্রশ্নে কায়সার বলেন, ‘আমি বলেছি, আসলাম ভাইয়ের সঙ্গে সরাসরি কথা বলতে এবং এটা আসলাম ভাইকে আমি বলেছি, যে হোটেল শেরাটনে আসতে বলেন।’
শেখ আসলামকে কি এই প্রস্তাব দিয়েছিলেন?- জানতে চাইলে কায়সার হামিদ বলেন, ‘তখন আসলাম ভাইকে আমি বলেছি।’
পরে কী হয়েছিল?
কায়সার বলেন, ‘আমাকে বলা হয় সরাসরি আসলাম ভাইকে বলতে। আমি বলেছি বহুদিন খেলেছি, ফুটবলের বেঈমানি করতে পারি না।’
তবে যিনি প্রস্তাব দিয়েছিলেন তার সঙ্গে শেখ আসলামের কথা হয়েছে বলেও জানান কায়সার হামিদ। বলেন, ‘আমি যখন তাকে (ওই কাউন্সিলর) জিজ্ঞেস করলাম কথা হয়েছে আসলাম ভাইয়ের সঙ্গে? উনি বললেন, হুম কথা হয়েছে।’
তবে দুই পক্ষের বৈঠক আর হয়নি। কায়সার হামিদ বলেন, ‘আমাকে ছাড়া উনারা বসবেন না। আমি তাদের বলেছি আমি বলতে পারব না। একটা ভাল কাজের কথা হলে হইত। আমি শুনতাম।’
কে সেই ব্যক্তি, সেটা জানাতে চাননি কায়সার। বলেন, ‘যে এই প্রস্তাব দিয়েছে সে আমার ঘনিষ্ঠ। তিনিও একজন ক্লাবের কাউন্সিলর।’
তবে এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে জানিয়েছেন শেখ আসলাম। নিউজবাংলার পক্ষ থেকে তার সাথে যোগাযোগ করা হলে হাসতে হাসতে বলেন, ‘বিষয়টি সত্য না।’
এবারের বাফুফে নির্বাচনে নির্বাচনে দুটি প্যানেল অংশ নিচ্ছে।
একদিকে কাজী সালাউদ্দিন-মুর্শেদীর নেতৃত্বে সম্মিলিত ফুটবল পরিষদ, অন্যদিকে সভাপতি পদ ছেড়ে প্যানেল ঘোষণা করেছে আসলাম-মহি সমন্বয় পরিষদ।
স্বতন্ত্রভাবে বিভিন্ন পদে লড়ছেন পাঁচজন। স্বতন্ত্রভাবে সভাপতি পদে দাঁড়িয়েছেন শফিকুল ইসলাম মানিক।