যারা সবচেয়ে বেশি সন্তান জন্ম দেবেন সেই পিতা-মাতাকে উৎসাহিত করতে এক লাখ টাকা করে প্রণোদনা দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন মিজোরামের এক মন্ত্রী।
ভৌগোলিকভাবে ক্ষুদ্র মিজো সম্প্রদায়ের জনসংখ্যা বৃদ্ধিতে উৎসাহ দিতেই এমন ঘোষণা দেন তিনি।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, মিজোরামের ক্রীড়ামন্ত্রী রবার্ট রোমাভিয়া রয়তে অবশ্য তার ঘোষণায় সন্তান জন্মের সর্বনিম্ন সংখ্যা উল্লেখ করেননি।
ঘোষণাটি এমন একসময় এলো যখন ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে জোর দিচ্ছে রাজ্যসরকারগুলো। এমনকি স্থানীয় সরকারগুলো বিষয়টি নিয়ে নীতিমালাও প্রকাশ করছে।
বিশ্ব বাবা দিবসে রোববার রয়তে ঘোষণা দেন, তার আইজোয়াল পশ্চিম-১ সংসদীয় এলাকায় যেসব নারী-পুরুষ বাস করেন তাদের এই এক লাখ টাকার প্রণোদনা দেবেন।
পরের দিন সোমবার এক বিবৃতিতে জানান, বেশি সন্তান জন্ম দেয়া দম্পতিকে প্রণোদনার পাশাপাশি সনদ ও ট্রফিও দেয়া হবে।
এই প্রণোদনার ব্যয় বহন করবে রয়েতের ছেলের একটি নির্মাণ পরামর্শক প্রতিষ্ঠান।
মন্ত্রী রয়তে বলেন, ‘মিজো সম্প্রদায়ের মধ্যে বন্ধ্যত্বের হার বেড়ে যাচ্ছে, সেই সঙ্গে কমে যাচ্ছে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার; এটা খুব উদ্বেগের।
‘মিজোরামে জন্মহার অব্যাহতভাবে নিম্নমুখী। তাই বিভিন্ন খাতের উন্নয়নে যে পরিমাণ লোকবল দরকার, তা থেকে অনেক পিছিয়ে মিজোরাম। কম জনসংখ্যা খুব গুরুতর একটি সমস্যা। বিশেষ করে মিজোদের মতো নৃগোষ্ঠী ও অন্য ক্ষুদ্র সম্প্রদায়গুলোর উন্নয়ন, এমনকি অস্তিত্বরক্ষার পথেও বড় বাধা এটি।’
মিজোরামে বিভিন্ন মিজো উপজাতীর বসবাস।
মন্ত্রী জানান, ইয়াং মিজো অ্যাসোসিয়েশন, কিছু গির্জা, সুশীল সমাজসহ বিভিন্ন সংস্থাও সেখানে জনসংখ্যা বাড়ানোর জন্য অন্তত একটি করে সন্তান জন্মদানে উৎসাহিত করতে প্রচার চালাচ্ছে।
২০১১ সালের আদমশুমারির হিসাবে মিজোরামের জনসংখ্যা ১০ লাখ ৯১ হাজার ১৪ জন। রাজ্যটির আয়তন ২১ হাজার ৮৭ বর্গকিলোমিটার।
সেখানে গড়ে ৫২ জন লোক প্রতি বর্গকিলোমিটারে বাস করেন। অরুণাচল প্রদেশের পর মিজোরাম দেশটির দ্বিতীয় কম জনঘনত্বের রাজ্য। অরুণাচলে প্রতি বর্গকিলোমিটারে বাস করেন মাত্র ১৭ জন। আর পুরো ভারতে গড়ে প্রতি বর্গকিলোমিটারে বাস করেন ৩৮২ জন করে।
মিজোরামের পাশের রাজ্য অসমেই আবার ঠিক উল্টো চিত্র। অসমের মুখ্যমন্ত্রী সম্প্রতি রাজ্যটিতে জনসংখ্যা কমাতে দুইয়ের অধিক সন্তান জন্মদানে নিরুৎসাহিত করার কথাও জানান। এমনকি দুই সন্তানের বেশি হলে তাদের সরকারি সুবিধা বন্ধ করে দেয়ার কথাও জানানো হয়।
২০১৯ সালে অসম রাজ্য প্রশাসন সিদ্ধান্ত নেয়, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে রাজ্যটিতে কোনো পরিবার থেকে দুইয়ের অধিক সন্তান সরকারি চাকরির সুযোগ পাবে না।