খাগড়াছড়ির সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরার মায়ের বার্ষিক শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন কয়েক হাজার মানুষ।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সারা দেশে ধর্মীয় ও সামাজিক অনুষ্ঠানে বিধিনিষেধের মধ্যেই শনিবার খাগড়াছড়ির দীঘিনালার জামতলী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এমপি কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরার মা উমাদিনী ত্রিপুরা গত বছরের ২৯ মার্চ বার্ধক্যজনিত কারণে মারা যান। তার বয়স হয়েছিল ৯৫ বছর।
মায়ের বার্ষিক শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠান উপলক্ষে কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরার গ্রামের বাড়িতে শুক্রবার রাত থেকে শুরু হয় বিভিন্ন ধর্মীয় আয়োজন। শনিবার বেলা ১১টার দিকে শুরু হয় গণভোজ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গণভোজে দীঘিনালা উপজেলার ত্রিপুরা-অধ্যুষিত জামতলী গ্রামের পাশাপাশি দূরদূরান্তের কয়েক হাজার মানুষ যোগ দেন। প্রতি ব্যাচে পাঁচ শতাধিক মানুষের খাবার মেন্যুতে ছিল মাছ, সবজি ও ডাল। অতিথির সংখ্যা বেড়ে যাওয়া বেলা ২টার পর তৈরি হয় খাবার-সংকট।
অনুষ্ঠানে কোনো ধরনের স্বাস্থ্যবিধি বা সামাজিক দূরত্ব অনুসরণ করতে দেখা যায়নি। প্রতিটি টেবিলে ১২ জন করে নারী, পুরুষ, শিশু একসঙ্গে বসে খাবার গ্রহণ করেন। শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠানে খাগড়াছড়ি পৌরসভার মেয়র নির্মলেন্দু চৌধুরীসহ অনেক সরকারি কর্মকর্তার উপস্থিতিও দেখা গেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা সিভিল সার্জন ডা. নুপুর কান্তি দাশ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘একজন সংসদ সদস্য হিসেবে তিনি অবশ্যই নিয়ম ভঙ্গ করেছেন। ঘটনাটি নিঃসন্দেহে স্বাস্থ্যবিধির পরিপন্থি। যেহেতু তিনি একজন এমপি, তাই সে বিষয়টি প্রশাসন দেখবে।’
এ ব্যাপারে খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাসকে কয়েকবার ফোন করলেও তিনি ধরেননি। তবে দিঘিনালা থানার ওসি উত্তম চন্দ্র দেব নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠান হয়েছে, কিন্তু এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারব না।’
অনুষ্ঠানে যোগ দেয়া খাগড়াছড়ি পৌরসভার মেয়র নির্মলেন্দু চৌধুরী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এখনকার পরিস্থিতিতে এমন অনুষ্ঠান করা, এমনকি সেখানে আমার উপস্থিত হওয়া উচিত হয়নি। তবে ধর্মীয় ব্যাপার বলে সেখানে গিয়েছি।’
লকডাউনের সময়ে এ ধরনের আয়োজন নিয়ে এমপি কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরার বক্তব্য জানা যায়নি। একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও তিনি ধরেননি।