প্রাচীন মিসরের ২২ জন রাজা-রানীর মমিযাত্রা দেখতে যাচ্ছে কায়রোবাসী। মনোমুগ্ধকর রাজকীয় আয়োজনে নতুন ঠিকানায় আশ্রয় নেবে মমিগুলো।
বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, ‘ফারাও’স গোল্ডেন প্যারেড’ শিরোনামে মমি নিয়ে কুচকাওয়াজের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে কর্তৃপক্ষ। এটি অনুষ্ঠিত হবে শনিবার।
জাঁকজমকপূর্ণ যাত্রার পুরোটাই সাজানো হয়েছে প্রাচীন মিসরীয় কায়দায়। ১৮ জন রাজা এবং চারজন রানীর শাসনকালের ধারাবাহিকতা অনুযায়ী মমিগুলোকে সোনালী কফিনে করে পরপর সারি বেঁধে নিয়ে যাওয়া হবে নতুন গন্তব্যে।
কায়রোর তাহরির এলাকায় অবস্থিত ইজিপ্শিয়ান মিউজিয়ামে গত কয়েক দশক ধরে ছিল মমিগুলো। সেখান থেকে তাদের নেয়া হবে রাজধানীর দক্ষিণে ২০১৭ সালে চালু হওয়া ন্যাশনাল মিউজিয়াম অফ ইজিপ্শিয়ান সিভিলাইজেশনে।
এই মমিযাত্রার প্রথমেই থাকবেন যিশুখ্রিস্টের জন্মেরও ১৬শ’ বছর আগে রাজত্ব করা সম্রাট দ্বিতীয় সেকেনেনরে তাও। আর একদম শেষে থাকবেন খ্রিস্টপূর্ব ১২ শতকের সম্রাট নবম রামেসিস।
সবচেয়ে প্রভাবশালী ফারাও সম্রাট দ্বিতীয় রামেসিস ও সম্রাজ্ঞী হাৎশেপসুতের মমিও থাকবে এ শবযাত্রায়।
৪০ মিনিটের যাত্রায় মমিগুলো যেন কোনোরকম আঘাত না পায়, তা নিশ্চিতে আঘাত প্রতিরোধক থাকবে সব কফিনবাহী গাড়িতে।
১৮৮১ সালে লুক্সরের কাছে একটি প্রত্নতাত্ত্বিক এলাকায় আবিষ্কৃত মমিগুলো ঊনবিংশ শতাব্দীর শুরু থেকেই তাহরিরের ইজিপ্শিয়ান মিউজিয়ামে সংরক্ষিত ছিল।
৫০’র দশকের শুরুতে জাদুঘরের ছোট একটি কক্ষে মমিগুলোকে প্রদর্শনীর জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়।
কায়রোর আমেরিকান ইউনিভার্সিটির মিসরতত্ত্বের গবেষক অধ্যাপক সেলিমা ইকরাম জানান, নতুন জাদুঘরে আরও উন্নতমানের বাক্সে রাখা হবে মমিগুলোকে। থাকবে তাপমাত্রা ও আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রিত আরও ভালো পরিবেশে।
মূলত মমিগুলোকে আরও দীর্ঘদিন সুরক্ষিত রাখতে এবং দর্শনার্থীদের জন্য সুন্দর পরিবেশে মমি দেখার ব্যবস্থা নিশ্চিতে নেয়া হয়েছে এ পদক্ষেপ।
নতুন জাদুঘরে স্থানান্তরের ১৫ দিন পর আবারও প্রদর্শনীর জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে মমিগুলো।
কয়েক মাসের মধ্যে গিজার পিরামিডের কাছে গ্র্যান্ড ইজিপ্শিয়ান মিউজিয়াম নামে একটি বিশালাকৃতির জাদুঘর চালু করবে মিসর সরকার। সেখানে থাকবে কিশোর সম্রাট তুতেনখামেনসহ ফারাও সাম্রাজ্যের অনেক উল্লেখযোগ্য নিদর্শন।