সরকারি কর্তৃপক্ষ স্বাস্থ্যগত নানান পরামর্শ নিয়ে পাশে থাকবে, এমনটাই চান করোনাভাইরাসে আক্রান্ত মানুষ। সেরে উঠতে কোন ওষুধ খেতে হবে, কোয়ারেন্টিনের সঠিক নিয়ম কী অথবা অবস্থা খারাপ হলে কোথায় যেতে হবে, সেটাই জানতে চান সবাই।
তবে জাপানের ওসাকা শহরে আক্রান্ত ব্যক্তিদের কাছে সরকারিভাবে চলে এসেছে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার বিজ্ঞাপন!
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে কোয়ারেন্টিনে থাকা অনেকেই আঁতকে উঠেছেন নগর কর্তৃপক্ষের পাঠানো একটি চিঠির খাম দেখে। কারণ, ওই খামের ওপরেই ছিল মারা যাওয়ার পর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার সেবা দেয়া প্রতিষ্ঠানের বড়সড় এক বিজ্ঞাপন।
গত মাসে এই কাণ্ডের পর ওসাকার স্বাস্থ্যকেন্দ্রের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জাপানের আশাহি শিম্বুন পত্রিকাকে বলেছেন, বিজ্ঞাপনটি ছিল ‘চরম গাফিলতিজনিত ত্রুটি’।
তিনি বলেন, ‘আমরা বুঝতে পারছি চিঠির প্রাপকেরা কতটা আঘাত পেয়েছেন, এজন্য আমরা আন্তরিক ক্ষমাপ্রার্থী।’
তবে এই ক্ষমাপ্রার্থনায় মনের ধকল কাটেনি বহু প্রাপকের। তাদেরই একজন আশাহি শিম্বুনকে বলেছেন, ‘এমন দায়িত্বহীনতায় আমি মনের দিক থেকে ভেঙে পড়েছি।’
অর্থকড়ির জোগান বাড়াতে ওসাকার নগর সরকার ২০০৬ সাল থেকে তাদের অফিসিয়াল চিঠির খামের ওপরে বিজ্ঞাপনের জায়গা বিক্রি করছে। করোনা মহামারির সময়টিকে ‘উপযুক্ত’ বিবেচনা করে এই জায়গাটি সম্প্রতি বিজ্ঞাপনের জন্য কিনে নেয় ওসাকা নগর ফিউনেরাল হল কর্তৃপক্ষ। সব মিলিয়ে ছয় লাখ খামে ছাপা হয়েছে তাদের বিজ্ঞাপন।
বিজ্ঞাপনে ব্যবহার করা ফোন নম্বরটিও বেশ আতঙ্কজনক। পুরো নম্বরের মাঝখানে পাশাপাশি থাকা ৫-৬-৭ নম্বরটি জাপানি ভাষায় উচ্চারণ হয় গো-রো-না হিসেবে, যার সঙ্গে অনেকটাই মিল রয়েছে করোনার।
ওসাকা নগর কর্তৃপক্ষ অর্থের জন্য বিজ্ঞাপনের এই দরজা উন্মুক্ত করলেও তাতে খুব একটা আয় বাড়েনি। প্রতি দুই লাখ খামের বিজ্ঞাপন বাবদ তারা পাচ্ছে মাত্র এক লাখ ইয়েন, বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ৮০ হাজার ৫০০ টাকা।
করোনা আক্রান্ত ওসাকার এক বাসিন্দা এই বিজ্ঞাপনসহ চিঠি পেয়ে প্রচণ্ড বিরক্ত। তিনি বলছিলেন, ‘আমি মোটেই মনে করি না, সামান্য কিছু অর্থের জন্য এ ধরনের বিজ্ঞাপন নেয়া ঠিক হয়েছে। প্রশাসনিক খামের জন্য ব্যক্তিকেন্দ্রিক প্রতিষ্ঠানের এ ধরনের বিজ্ঞাপন একেবারেই অনুপযুক্ত।’