খাবার হাতে নিয়ে বিছানায় বসে আছেন মরিয়ম আল-বালুশীর। তার মনোযোগ পেতে প্রতিযোগিতা করছে কয়েক ডজন বিড়াল-কুকুর। এমন দৃশ্য দেখা গেল ওমানের রাজধানী মাস্কাটের একটি বাড়িতে।
৫১ বছর বয়সী মরিয়ম পেশায় অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা।
প্রতিবেশীদের আপত্তি আর বাড়তি খরচ উপেক্ষা করে নিজের বাড়িতে জায়গা দিয়েছেন ৪৮০টি বিড়াল ও ১২টি কুকুরকে। এদের মধ্যে আবার ১৭টি অন্ধ। ‘মানুষের চেয়ে ভালো’ এই বিড়াল বিড়াল-কুকুরেরা মরিয়মের মন খারাপের সঙ্গী।
‘প্রাণীরা মানুষের চেয়ে বিশ্বস্ত’ বলছিলেন মরিয়ম।
তিনি এই বিড়াল-কুকুরদের বিভিন্ন জায়গা থেকে সংগ্রহ করেছেন।
ওমানে রাস্তার বিড়াল-কুকুরের সংখ্যা বেড়েছে। অথচ সেখানে একটি পোষা প্রাণী ফেলে দেয়ায় জরিমানা গুণতে হয় প্রায় ২৫ ডলার।
বিড়াল-কুকুরদের পেছনে মরিয়মের মাসে সাড়ে সাত হাজার ডলার (প্রায় ৬ লাখ টাকা) খরচ হয়। এদের খাবার, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও চিকিৎসায় এই ব্যয় হয়। পালা করে বিড়াল-কুকুরের সঙ্গে খেলতে হয় মরিয়মের।
মরিয়ম বলেন, ‘২০০৮ সালে আমার ছেলে একটি ছোট্ট পারসিয়ান বিড়াল নিয়ে আসে। তখন থেকেই এদের সঙ্গে আমার সংসারের শুরু।’
অন্য মায়েদের মতোই প্রথমে সন্তানকে বকা দিয়েছিলেন তিনি। প্রাণীদের ঘরে রাখা পছন্দ করতেন না মরিয়ম। কিন্তু তার ছেলে ঠিক মতো বিড়ালটির যত্ন নিচ্ছিল না।
দুই বছর পার না হতেই বদলে যান মরিয়ম। নিজেকে নতুন করে আবিষ্কার করেন অন্য একটি বিড়ালের যত্ন নিতে শুরু করার পর।
মরিয়ম বলেন, ‘আমার খুব ভালো লেগে যায়। যত্ন নিতে থাকি, খাওয়াই, গোসল করাই ও বিড়ালটার সঙ্গে অনেক সময় কাটাই’।
মরিয়মের বিড়ালদের প্রতি এমন যত্নের খবর অচিরেই এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে লোকজন তার দরজার সামনে বিভিন্ন জাতের বিড়াল-কুকুর রেখে যেতে শুরু করে।
২০১৪ সালে নিজের বাড়ি কেনার পর মরিয়ম আরও কুকুর-বিড়াল পালার সুযোগ পান।
ইনস্টাগ্রামে বিড়াল-কুকুরদের সঙ্গে সময় কাটানোর ছবি-ভিডিও আপলোড করেন মরিয়ম।
শুধু ইনস্টার ফলোয়ার বাড়ানোই নয়, এই কুকুর-বিড়ালগুলো তার বিষণ্ণতা কমাতেও সাহায্য করেছে।
মরিয়ম বলেন, ‘আমি অন্ধকারে ডুবে যাচ্ছিলাম, এরা আমাকে টেনে তুলেছে।’