সেতুর কারণে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হয়। শুধু যাতায়াতের সুবিধার জন্য নয়, সৌন্দর্য ও নির্মাণ কৌশলের জন্যও খ্যাতি লাভ করেছে বিশ্বের দশটি সেতু।
ডানিয়াং-কুনশান গ্র্যান্ড ব্রিজ, চীন
বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘ সেতু রয়েছে চীনে। ১০২ মাইল লম্বা সেতুটি নির্মাণ করতে সময় লেগেছিল চার বছর। এতে প্রায় ১০ হাজার শ্রমিক কাজ করেছিলেন। এটি খুলে দেয়া হয় ২০১১ সালে। নির্মাণে খরচ পড়েছে প্রায় সাড়ে ছয় বিলিয়ন পাউন্ড। অসাধারণ নির্মাণশৈলীর সেতুটি চীনের সাংহাইয়ের সঙ্গে জিয়াংশু প্রদেশের রাজধানী নানজিংকে যুক্ত করেছে।
মিলাউ ভায়াডাক্ট, ফ্রান্স
ফ্রান্সের মিলাউ ভায়াডাক্ট সেতুটির উচ্চতা আইফেল টাওয়ারের চেয়েও বেশি। এটি বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু সেতু। উচ্চতা ৩৪৩ মিটার। সেতুটি ২০০৪ সালে খুলে দেয়া হয়। এটি টার্ন উপত্যকার ক্লারমন্ট ফেরেন্ড ও বেজিয়ারসকে যুক্ত করেছে। সেতুটির সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য এর নিচে প্যাডেল চালিত নৌকা চালানোর ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
রিবলহেড ভায়াডাক্ট, নর্থ ইয়র্কশায়ার
যুক্তরাজ্যের কুমব্রিয়া ও ইয়র্কশায়ারের সীমান্তে অবস্থিত এই সেতুটি ভিক্টোরিয়ান যুগের স্থাপত্যরীতির এক চমকপ্রদ নিদর্শন। মাটি থেকে ৩২ মিটার উঁচুতে ২৪টি পাথুরে খিলানের উপর দাঁড়িয়ে রয়েছে সেতুটি। ১৮৭০ থেকে ১৮৭৪ সালের মধ্যে এটি নির্মাণ করা হয়। যুক্তরাজ্যের সেটল-কার্লিসল রেলপথে পর্বতমালার মধ্যে এই সেতুটি মনোরম দৃশ্য তৈরি করেছে।
ভাস্কো দা গামা সেতু, পর্তুগাল
মধ্যযুগের অভিযাত্রী ভাস্কো দা গামার নামানুসারে নির্মিত সেতুটি লম্বায় প্রায় ১০ মাইল। এটি ইউরোপের সবচেয়ে লম্বা সেতু। এটি পর্তুগালের উত্তর ও দক্ষিণ অংশকে যুক্ত করেছে। ১৯৯৮ সালে এই সেতুটি খুলে দেয়া হয়। টাগুস নদীর ওপর নির্মিত সেতুটিতে হেঁটে পার হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
বেইপানজিয়াং সেতু, চীন
বিশ্বের সবচেয়ে উঁচুতে ভূমি থেকে ৫৬০ মিটার উপরে বানানো হয়েছে এই সেতুটি। এটি ‘দুগে ব্রিজ’ নামেও পরিচিত।
জটিল কাঠামোতে নির্মিত সেতুটি চীনের লিউপাংশুই ও কুইজিংকে যুক্ত করেছে। এটি নির্মাণে খরচ হয়েছে প্রায় ৮৮ মিলিয়ন পাউন্ড।
গোল্ডেন ব্রিজ, ভিয়েতনাম
ভিয়েতনামের গোল্ডেন ব্রিজ সেতুটি লম্বায় ১৫০ মিটার। এ বছরের জুন মাসে উদ্বোধন হওয়ার পর এটি পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণে পরিণত হয়েছে।
ডা নেং শহরের পর্বতচূড়ায় অবস্থিত সেতুটির নকশাও অভিনব। পর্বতের প্রান্ত থেকে একটি দৈত্যাকার হাত একে ধরে রেখেছে।
পত দ্যু গার্দ অ্যাকুইডাক্ট, ফ্রান্স
রোমান স্মৃতিস্তম্ভ হিসেবে প্রথম শতকে প্রাচীন সেতুটি নির্মিত হয়েছিল। মূলত এর নকশা করা হয়েছিল নিমেস শহরে পানি সরবরাহের উদ্দেশ্যে। হলুদ চুনাপাথরে নির্মিত ভবনের মতো সেতুটিকে ১৮৪০ সালে ঐতিহাসিক স্থাপনা হিসেবে ঘোষণা করে ফ্রান্স সরকার।
গোল্ডেন গেট ব্রিজ, যুক্তরাষ্ট্র
এটি সম্ভবত বিশ্বের সবচেয়ে পরিচিত সেতু। ক্যালিফোর্নিয়ার সান ফ্রান্সিসকোর সেতুটিকে ১৯৩৭ সালে খুলে দেয়া হয়।
প্রকৌশল বিদ্যার উৎকর্ষের সাক্ষী হওয়া ছাড়াও এটি আরও এক কারণে বিখ্যাত। সেতু উদ্বোধনের পর অন্তত ১৭ হাজার মানুষ সেতু থেকে লাফিয়ে পরে আত্মহত্যা করেছেন।
সম্প্রতি ঝাঁপিয়ে পড়া প্রতিরোধে সেতুতে ‘আত্মহত্যা প্রতিরোধক জাল’ জুড়ে দেয়া হয়েছে।
হার্টল্যান্ড ব্রিজ, কানাডা
১৯০১ সালে চালু হওয়া সেতুটির দৈর্ঘ্য ৩৯০ মিটার। এটি বিশ্বের সবচেয়ে লম্বা ঢেকে রাখা সেতু। ১৯৮০ সালে কানাডা সরকার একে ঐতিহাসিক স্থাপনা হিসেবে ঘোষণা করে।
প্রেমিক-প্রেমিকাদের চুমু খাওয়ার জায়গা হিসেবেও সেতুটি পরিচিত হয়ে আছে। ১৯৯৫ সালে এর সম্মানে একটি ডাকটিকিট প্রকাশ করে কানাডা সরকার।
এসিমা ওহাসি, জাপান
জাপানের এই সেতুটিকে দেখলে চোখ ধন্দে পড়ে যেতে পারে। মনে হবে এটি খাড়া আকাশের দিকে উঠে গেছে।
নাকাউমি হ্রদের ওপরে সেতুটি ১৯৯৭ সালে নির্মাণ শুরু হয়। খুলে দেয়া হয় ২০০৪ সালে।